শতকরা ৯৫ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশে নব্য নাস্তিকদের ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে একের পর এক ইসলাম রিরোধী বিল পাস করে, বক্তব্য রেখে মুসলমানদের হৃদয়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে মহাজোট সরকার। হয়ত বা আর কোনকালে আওয়ামীলীগ এ ক্ষতের দাগ হৃদয় থেকে মুছে দিতে পারবে না। অপর দিকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের নামে যে পরিমাণ সংখ্যালঘুদের ধন-সম্পত্তি কারা লুন্ঠন করছে সবার কাছে তা জানা আছে। তবে ভয়ে সবাই মুখে কুলুপ দিয়ে রেখেছে। বাঙ্গালীর একটা বদ অভ্যাস হল তাদের যখন আমও যায় ছালাও যায় তখন তারা সম্বিত ফিরে পায়। মুন্সিগঞ্জের অধিবাসী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক নুহ-উল-আলম লেলিন সাহেবকে মুন্সিগঞ্জবাসী ভাল করেই চিনেন। তাকে সবাই জমি খেকো নামেই ভাল করে জানেন। সুযোগ পেলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও সরকারি খাস জমি দখল করে নেন। পত্রপত্রিকায় এসব নিয়ে অনেক রিপোর্ট হয়েছে। রিপোর্ট হলে কি হবে কথায় বলে না-“ চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী”। তবে তিনি ঢাকার আসন্ন সিটি কর্পোরেশনের দক্ষিণ কি উত্তর অংশে মেয়র নির্বাচনে আওয়ামীলীগের হয়ে অংশ গ্রহণ করবেন বলে খবরে প্রকাশ হয়েছে। ক্ষমতায় পুনরায় যাওয়ার বাসনায় দলের অভ্যন্তরে চলছে কামড়া-কামড়ি। এরপরও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুঁজি করে যুদ্ধাপরাধের নামে কিছু নিরপরাধ মানুষকে ফাঁসিয়ে সাধারণ দেশপ্রেমিক জনগণকে ধোঁকা দেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে; আবার এ ও বলে বেড়াচ্ছে আমরা যদি পুনরায় ক্ষমতায় আসতে না পারি তা হলে এ বিচার ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাবে; দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
মুসলমান হিসাবে অন্তত যারা নিজেদের পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তারা না খেয়ে মরতে রাজি কিন্তু আল্লাহ, রাসূল ও ইসলাম এসব নিয়ে কেউ গালিগালাজ করুক ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রাখুক তা কেউ সহ্য করবেনা তা আমি হলফ করে বলতে পারি। তাই যেহেতু বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলমান ও ধর্মপরায়ণ সেহেতু তারা আওয়ামীলীগের ধর্ম নিয়ে চরম বাড়াবাড়ির জবাব জাতীয় নির্বাচনে দিবে এতে সন্দেহের কোন কারণ নেই। কারণ ইতোমধ্যে সিটি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের রাম-বাম ১৪ দলকে লালকার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ নামে খ্যাত গাজিপুর সিটি কর্পোরশনে বিপুল ভোটে হারার পর আ’লীগ নড়ে চড়ে বসেছে। অল্প সময়ে নিজেদের শুধরিয়ে কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন পরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রধানমন্ত্রী যেখানে যাচ্ছেন জনগণের কাছে করজোড়ে পুনরায় আগামী নির্বাচনে পুন:নির্বাচিত করার কথা বলেই চলছেন। বেচারীর কপালে কী আছে আল্লাহই ভাল জানেন। সংখ্যালঘুদের বড় একটা অংশ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গিয়ে বারবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করুক, তারা এদেশে অশান্তিতে নিপতিত হোক তাও চাননা। আর সত্যি কথা বলতে কি- তারা সংখ্যালঘু হলেও এদেশের অধিবাসী আর ভারত গিয়ে থাকার মত সক্ষমতাও সবার নেই। তাই তারাও মাঝে মাঝে দাবি তোলে সারাদেশে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা হারে সংসদীয় আসন বন্টন হলে তারা তাদের হৃদয়ের কথাগুলো সংসদের মাধ্যমে জাতিকে জানাতে পারত। তবে ঘরের শত্রু বিভীষণ। যারা আওয়ামীলীগকে সবচেয়ে কাছের লোক মনে করে তারাই সবচেয়ে বড় শত্রু। আওয়ামীলীগ মনে করে সংখ্যালঘুরা যদি রাজনীতিতে তাদের জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসন বণ্টননীতি চালু হয় তাহলে আওয়ামীলীগের রাজনীতির কবর রচিত হবে। আর জামায়াতে ইসলামী দাবী করেছিল সংখ্যালঘুদের মধ্য হতে দেশের সেই ভোটারের শতকরা হারে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা হলে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের নামে যে রঙবাজি খেলা হয় সেটি আর কখনো হবেনা। অবশ্য এটি নতুন কোন ফর্মুলা নয় এটি লেবাননসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে। একদিকে আমরা সংবিধান ও গণতন্ত্রের ভাষায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য বলব অপর দিকে সম্প্রীতি বিনষ্টের কার্যক্রম অব্যাহত রাখব এটি স্ব-বিরোধী নীতি বৈ কি হতে পারে? তবে অদূরভবিষ্যতে দেশের হাজার বছরের ঐতিহ্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হলে সকল দলকে উল্লেখিত নীতিমালা তৈরীতে ঐকমত্য হতে হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব সৈয়দ আশরাফ তার নেত্রীর সাথে সুর মিলিয়ে বলেছিলেন যে, ৪ মে ২০১৩ বিএনপি ৪৮ ঘন্টার সরকার পতনের ট্রাম্প কার্ড দিয়েছিল। তাতে সরকারকে ঘায়েল করা যায়নি। ক্ষমতার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু করা সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক জনাব আবদুল জলিলও তো ৪ এপ্রিল ২০০৪ সালে সরকার পতনের ট্রাম্প কার্ড দিয়েছিলেন তাতে কি লাভ হয়েছিল? তবে নেতাদের ট্রাম্প কার্ডের চাইতে জনগণ যদি সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায় তাহলে ট্রাম্প কার্ড ভাল ভাবেই দেখায়; তার প্রমাণ সম্প্রতি সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় নির্বাচনসমূহ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল , সরকারের শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারী,পদ্মা সেতু, কুইক রেন্টাল ও হলমার্ক দুর্নীতি, নির্বিচারে গণহত্যা, ৫ মে’র ঘুমন্ত ও ইবাদতরত আলেম-ওলামা হত্যা,সরকারের ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব, আলেমদের সাথে অশোভন আচরণ, জনমত উপেক্ষা করে পার্লামেন্টে বিভিন্ন আইন পাস, ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাস, শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রহত্যা,ভর্তি বাণিজ্য,ছাত্রীদের ধর্ষণ ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের দিয়ে নেতাদের ফুর্তির জন্য পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করণ, মানবতা বিরোধী বিচারের নামে বিরোধী দলের নেতৃত্ব বিচ্ছিন্নকরণ, বিরোধী দল-মতের নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে হত্যা, গুম, রিমান্ডের নামে ভয়াবহ নির্যাতন, গণগ্রেফতার বাণিজ্য, প্রশাসনের সর্বস্তরে দলীয়করণ, রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণতকরণ ও প্রশাসনসহ সর্বস্তরে দুর্নীতিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। যার কারণে সরকার বাহাদুর সংসদে, বিটিভিতে ও অন্য গণমাধ্যমকে জোর করিয়ে উন্নয়নের প্রচার অব্যাহত রাখলেও জনগণ আওয়ামী মহাজোটের নিষ্পেষণ থেকে পরিত্রাণ পেতে চায়। যার কারণে সব দিকে জালিমশাহী মহাজোটকে জনগণ টা টা ,গুডবাই দেয়া শুরু করেছে।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো সংসদে দাঁড়িয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন প্রয়োজনে নির্বাচন হবে না, তখন ২০১৪ সালের নির্বাচন আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কিনা এটি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ করার সুযোগ আছে। আইনের মারপ্যাঁচেও নাকি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সরকার ক্ষমতায় থাকারও সুযোগ রয়ে গেছে বলে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে। তাই আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য সর্বশেষ মরণ কামড় দেবে এতে কোন সন্দেহ নেই। এক্ষেত্রে যে সকল ইঞ্জিনিয়ারিং করতে পারে সে গুলো হল-
প্রথমত: “আগেই বলেছিলাম সংসদ ভেঙে গেলেও প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের আওতায় পরবর্তী কয়েক বছর বা ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। এবার এর পুরো পরিকল্পনাটাই জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রকাশ করলেন দফতরবিহীন মন্ত্রী বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এতে প্রকাশ্য হয়ে গেল গুপ্ত বাবুর আজীবন ক্ষমতায় থাকার গুপ্ত বাসনার নীলনকশাটি। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সুরঞ্জিত বাবু বলেন, 'আপনারা নির্বাচন করলেন না, আমরাও করলাম না, সংসদও নেই, তখন কী হবে? তখন রাষ্ট্রপতি যদি সর্বোচ্চ আদালতের পরামর্শ নিয়ে বর্তমান সংসদকে পুনরুজ্জীবিত করেন তখন আপনারা কী করবেন?' তার এই আবিষ্কৃত তত্ত্বে আশ্চর্যজনকভাবে মিলে গেল আমাদের পূর্বের শঙ্কা! আমরা বলেছিলাম যে, সংবিধানের ৫৭(৩) অনুচ্ছেদ মতে প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বহাল থাকবেন। পঞ্চদশ সংশোধনীর পর বর্তমান সংবিধানের ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ মতে, সংসদ ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী নব্বই দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন হবে এবং বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নবনির্বাচিত সংদস্যরা কার্যভার গ্রহণ করতে পারবেন না।”(ক্ষমতায় থাকার নীলনকশা জাতীয় নির্বাচন না হলে যা হবে-ড. তুহিন মালিক, ২ জুলাই বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে লিখিত)। যদি এহেন হটকারী সিদ্ধান্ত সরকার নেয় তাহলে দেশে কি ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি হতে পারে ক্ষমতাধরদেরকে ক্ষমতায় পুনরায় স্ব-ঘোষিতভাবে অধিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বেই চিন্তা করে নেয়া ভাল। কথায় বলে “ লোভে পাপ পাপে মৃত্যু”। শাসক দলের ভেবেচিন্তে কাজ করা দেশ-দল উভয়ের জন্যই কল্যাণ হবে।
দ্বিতীয়ত: ইলেকশান ইঞ্জিনিয়ারিং দিবালোকের মত স্পষ্ট। সেটি হলো রাজনৈতিক বিভিন্ন মামলায় ইতোমধ্যে ১৮ দলের বিভিন্ন এলাকার সম্ভাব্য যোগ্য প্রার্থীদেরকে দ্রুত বিচারাধীন মামলায় মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে প্রহসনের নির্বাচনে অযোগ্য করে খালি মাঠে গোল দেয়ার দুরভিসন্ধি কোর্টের কাঁধে বন্দুক রেখে ফায়ারিং শুরু হয়ে গিয়েছে। সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে আদালতের রায়ের পর মুখ ফসকে বলে দিয়েছেন যে যারা মানবতাবিরোধী অভিযুক্ত হয়েছেন তাদের কেউ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবেনা। অধ্যাপক গোলাম আজমের ৯০বছর কারাদ- ঘোষণার পাশাপাশি বলা হয়েছে এসব অভিযুক্ত ব্যক্তিরা রাষ্ট্রের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারবে না। অথচ বিচার হলো গোলাম আযমের বিরুদ্ধে, আইনের বরাত দিয়ে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা বলেন যে বিচারকদের এ রায় দেয়ার কোন ইখতিয়ার নেই; এটি সম্পূর্ণ পলিটিক্যালি মটিভেটেড। আমার ক্ষুদ্র এনালাইসিস হলো যে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিরোধী দলকে বেকায়দায় ফেলার জন্য যতই নতুন নতুন রায় ঘোষণা ও নয়া আইন প্রণয়ন করলেও আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের মাত্রাতিরিক্ততা এত বেশি যে যেকোন আসনে আওয়ামী লীগের বিপরীত কোন প্রার্থী দেয়া হয় তা হলেও জনগণ আওয়ামী লীগকে লালকার্ড দেখিয়ে দিবে জনমের তরে। গ্রাম্য ভাষায় বলে “কলাগাছ দাঁড় করালেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গো-হারা হারবে আ’লীগ”। তবে মজার বিষয় হলো যে আওয়ামী লীগ এত দিন পর্যন্ত সংসদে এসে তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু অথবা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে কথা বলার জন্য বারবার আহ্বান জানায় ১৮ দলকে । বর্তমানে আওয়ামী লীগ চিন্তায় বিষণœ! ১৮ দলের এমপিরা এসে জাতির সামনে সরকারের সব ২ নম্বর খবর গুলো ফাঁস করে দিচ্ছেন। তাই আওয়ামী লীগ নয়া কৌশল অবলম্বন করলেন যে, যারাই বাজেট নিয়ে বক্তব্য রাখতে গেলেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নিয়ে কুৎসিত ও কদাকার বক্তব্য উপস্থাপন করলেন। যাতে তারা সংসদ ছেড়ে চলে যায়। তবেই নিজেরা নিজেরা সব কিছু পাস করে ফেলতে পারবেন নিজেদের মত করেই। তবে বিরোধী দলের এমপিরা আঁটলেন নয়া ফঁন্দি- “আমাদের নেত্রী ও তার পরিবার নিয়ে যাই বলা হোক না কেন প্রয়োজনে তারা ওয়াক আউট করবে তবে এর সকল পাল্টা জবাব দিতে থাকব”, ঘটনা তাই ঘটছে। সংসদে চলছে ব্যাপক উত্তেজনা। বিএনপির সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি রানু আক্তার বললেন যে-“আমরা বক্তব্যের পাল্টা যুক্তিতে বক্তব্য রাখব তবে মজার বিষয় হলো যে আপনারা বান্দরের মত লাফাবেন কিন্তু সংসদ থেকে ওয়াক আউট করতে পারবেন না।” উভয় পক্ষের এমপিদের বক্তব্যগুলো ছিল খুবই উত্তেজিত, অমার্জিত ও অশোভনীয় যা সামলানো আমাদের দেশের অনির্বাচিত সংসদ সদস্য প্রথম নারী স্পিকার ড. শিরিন শারমিন হিমশিম খাচ্ছিলেন। তবে এসব কুরুচিপূর্ণ শব্দ অপব্যবহারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন অধিকাংশ তরুণ এমপিরা। কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করলে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে বলেও তারা প্রস্তাবনা দিয়েছেন। সংসদে বিরোধী দলের মহিলা এমপি রানু দাঁড়িয়ে বলেছিলেন যে,“ সংসদের প্রধানের ভাষা যদি ঠিক হয়ে যায় তবে সব ঠিক হয়ে যাবে”। আমার মতে দেশের কোটি কোটি মানুষ প্রয়াত ব্যক্তিদের নামে সংসদ সদস্যরা কুৎসা রটনা করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট করবে নিঃসন্দেহে আমরা কেউ চাইব না। আমরা সংসদে দেশের মানুষের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলনের আলোচনা- সমালোচনা শুনতে চাই। আওয়ামী লীগ সরকার সংসদে আলাপ আলোচনা ছাড়াই নারায়ণগঞ্জ বন্দর চুক্তি, সুন্দরবন কয়লাখনি চুক্তি পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে কি স্বার্থে চুপিসারে চুক্তির পর চুক্তি করেই চলছে তা দেশবাসী জানতে চায়। প্রধানমন্ত্রীর একটা উক্তি খুব মুখস্থ আছে সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রীকে ঘায়েল করার খাতিরে প্রায়শই বলেন যে,“ সর্প হয়ে দংশন করে ওঝা হয়ে ঝাড়ে”। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার প্রশ্ন আপনি দেশের জন্য আপনার বক্তব্যে মায়াকান্না প্রদর্শন করেন অন্যদিকে চুপিসারে দেশবিরোধী দস্তখত চুক্তি করে দংশনের পর দংশনে দেশকে বসবাসের জন্য অনুপযোগী করে তুলছেন এটি কি দেশপ্রেম? এটিই কি মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন?
তৃতীয়ত: ইলেকশান ইঞ্জিনিয়ারিং দিবালোকের মত স্পষ্ট সেটি হল- বিরোধী দল ও মতের মাঠ পর্যায়ের এ্যাকটিভ ব্যক্তিবর্গকে খুন-গুম করে আন্দোলন স্তব্ধ করে দিয়ে ভয়ভীতি ছড়ানো। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ বেশ কিছুটা সফল হয়েছে। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী গুম হলো, চৌধুরী আলমের খোঁজ নেই, সিলেটের ছাত্রদল নেতা দিনারের স্বজনদের অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে না। তার পাশাপাশি বিএনপির অন্যতম জোট রাজপথ কাঁপানো সংগঠন, যার কাছে সরকার তাদের কু-এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবিরকেই সারা দেশে চলমান আন্দোলন তীব্র হওয়ার মুল শক্তি হিসেবে দায়ী করে মামলা মোকদ্দমা করেছে লক্ষাধিক। ছাত্রশিবিরের সভাপতিকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে পঙ্গু করে দিয়ে জনশক্তির মনোবল ভাঙ্গার কাজটা তারা রীতিমত করে যাচ্ছে। হাইকোর্টে তার অসুস্থতার কারণে রিমান্ড বাতিল করে মুক্তি দেয়ার জন্য দীর্ঘ দেড় মাস ধরে রিটের শুনানি করার জন্য
আদালতের পক্ষ হতে বার বার অনুরোধ করলে ও এটর্নি জেনারেল তা তোয়াক্কা না করে রিটের শুনানি স্থগিত রেখেছেন।
জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরও আইনের শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে শ্যোন এরেস্ট করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অসংখ্য কেন্দ্রীয় নেতা ও কর্মীকে অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাসা-বাড়ি, মেস থেকে ধরে নিয়ে কথিত নাশকতার অভিযোগে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করে পঙ্গু করে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠছে। ২ বছর বছর হলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’মেধাবী ছাত্র আল-মোকাদ্দাস ও ওয়ালীউল্লাহকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুম করেছে, রাজশাহী মহানগর শিবিরের অফিস সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম মাছুমকে সরকারি বাহিনী র্যাব গ্রেফতার করেছে, তিনমাসব্যাপী তার বৃদ্ধ মা-বাবা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও তার কোন হদিস খুঁজে পেলো না। আদালতে রিট করার পর আইনের খাতিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বারবার আদালতে হাজির করার তাগিদ দেয়; কিন্তু এগুলোর কোন সদুত্তর এখন পর্যন্ত মিলেনি। আদাবর থানার ছাত্রশিবির সভাপতি হাফেজ জাকির হোসেন ২.০৪.২০১৩ ঢাকা ডেন্টাল কলেজে যাবার জন্য মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে যাবার উদ্দেশে রওনা দেন, এ পর্যন্ত তার কোন সন্ধান মিলেনি; তাকে র্যাব সদস্যরা গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে বলে তার পরিবার দাবি করেছে। ২৩.০৬.১৩ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক আজিজুর রহমান মাস্টার্সের শেষ বর্ষের আরবি বিভাগের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ সম্পাদক, তাজাম্মুল স্টাডি বিভাগের মাস্টার্সের শেষ বর্ষের ছাত্র ঢাকায় ব্যক্তিগত কাজে এলে ঢাকার পিপলস্ ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের গ্রেফতার করে এখনও তাদের আদালতে হাজির করেনি। এরপর গত ২৬শে জুন আবারও রাবি শাখার ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আবদুস সালাম ও ঢাকা মহানগর উত্তরের শিবির নেতা নুরুল আমিনকে গুলশান থানা সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ ধরনের ধারাবাহিক আইন পরিপন্থী ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী আচরণের তীব্র নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। জয়পুরহাটের জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জনপ্রিয় এই নেতাকে অনেক দিন গুম করে রাখার পর পাবনা ঈশ্বরদীতে রেখে যায়, এসব নাটকের হেতু কি? বিরোধী দলের নাম প্রকাশ না হওয়া কত ব্যক্তির লাশ, গুম, পঙ্গুত্ব, গ্রেফতার, বুলেটের আঘাতে আহত বনি আদমের আর্তনাদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রক্তপিপাসা মিটবে, আরো কত লাশের গন্ধে আর সন্তান হারা পিতা-মাতার আহাজারিতে বাতাস ভারী হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হৃদয়ে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন মিটবে? আমার জানা নেই। রাবিতে অন্তঃকোন্দলে ছাত্র ফারুক হত্যাকা-ে সরকার মহল থেকে শিবিরের বিরুদ্ধে চিরুনী অভিযান শুরু হল হাজার হাজার ছাত্রকে কারারুদ্ধ করা হল। কিন্তু ছাত্রলীগের আন্তঃকোন্দলে কত শত ছাত্রের জীবন দিতে হল একবারও কি প্রধানমন্ত্রী বা তার কর্তাব্যক্তিরা ছাত্রলীগের নিষিদ্ধের কথা উচ্চারণ করলেন? যারা চুরি, ডাকাতি, টেন্ডারবাজি, ইভটিজিং, মানুষ খুন ও কত শ্রেণী-পেশার জনগণকে লাঞ্ছিত তা আর চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে না। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির জন্য ছাত্রলীগ নামক কু-ছাত্ররাই যথেষ্ট। রাষ্ট্রের গৃহপালিত শাবক মানবাধিকার চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান শুধু জামায়াত-শিবিরের তিলকে তাল করেন, চট্টগ্রামে টেন্ডার ভাগাভাগি করতে গিয়ে যুবলীগের নেতার হাতে এক শিশুসহ ২ জন নিহত হয়েছে; কই একবারও তো মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বললেন না। ৫ মে হেফাজত ইসলামের উপর গণহত্যার কথা বললেন না, শুধু বল্লেন- গোলা-গুলির আওয়াজে তিনি ঘুমাতে পারেননি। বলবেন কি করে এর চেয়ে বেশি বললে কি আর চাকরি থাকে? মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণহত্যা, ছাত্রহত্যা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে কথা বলেন না, বললে তো কোটের বল যাবে বিরোধী শিবিরে ; আর বললে তো চাকর হারাতেন, আবার পুনরায় নয়া করে নিয়োগ পেতেন না। এসব মানবাধিকার কমিশনের মুখে থুথু ছিটায় বাংলাদেশের নির্যাতিত-নিপীড়িত জনতা। যারা দায় ছাড়া গোছের কিছু কথা বলে কর্তব্য কর্ম শেষ করতে চায় যাদের মুখে সন্তানহারা মায়ের অবিরত যন্ত্রণার আহাজারী পর ও খুনিদের পরিচয় দরাজ কণ্ঠে উচ্চারিত করতে পারে না, আহত, পঙ্গুত্ব বরণকারী নাগরিকদের গোঙানির কথা বলতে পারে না এসব মানবাধিকারের মুখে ছাই। তোমাদের মুখ দেখা আমাদের পাপ আর কলঙ্ক।
চতুর্থত : ইলেকশান ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে গত মাস খানেক ধরে রাজনীতির মাঠে এরশাদের জাতীয় পার্টি রহস্যজনক খেলা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় শিবিরের সাথে ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারার সুবিধা যেমন যাচাই করছেন একইভাবে নির্বাচন করার হুমকি দিচ্ছেন। এতে সন্দেহে ভুল ধরার অবকাশ আছে বলে মনে করি না যে-যদি কোন কারণে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট আওয়ামী লীগের প্রত্যাশিত ফাঁদে পা না দেয় তা হলে এরশাদ এককভাবে নির্বাচনে যাবে এবং জোর করে যে কোন মূল্যে সরকার গঠন করে আ’লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার শেষ মরণ কামড় দিবে। এখন এ ইস্যুতে ১৮ দলীয় জোট কি তাদের প্রত্যাশিত নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদায় করতে পারে কি না? এটিই দেখার বিষয়।
পঞ্চমত: ইলেকশান ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে যেকোন মূল্যে নিজের তত্ত্বাবধানে জনগণের প্রত্যাশিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার তোয়াক্কা না করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা। তবে আওয়ামী লীগ দেশের ইতিহাসে নির্বাচনে ভোটবাক্স চুরির নজির আছে, তাতে আগামী ইলেকশান সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বললেও শয়তান তো দূরে থাক, জাত শত্রুও বিশ্বাস করবে না। তাই মনে হচ্ছে সম্প্রতি পাঁচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জোরদার হচ্ছে এতে শেখ কন্যা নিজের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের খায়েশ ধোপে টিকবে না। এর পরও যদি জোরদার আন্দোলনের মাধ্যমে গণমতকে প্রাধান্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির দাবি আদায় করতে না পারে তাহলে বিরোধী দলের কপালে ঝাঁটা-জুতা ছাড়া আর কিছু অপেক্ষা করছে বলে আমার জানা নেই। তখন সাধারণ জনগণ এ দুর্বিষহ যন্ত্রনার রাহু থেকে বাঁচার জন্য হয়তো নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিবে।
ষষ্টত: ইঞ্জিনিয়ারিং হতে পারে ইভিএম ভোট পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ এবং মঈন উদ্দীন ও ফখরুদ্দীনের আমলের ন্যায় নির্ধারিত ব্যক্তিরাই নির্বাচনে জিতবেন। এখন বিরোধী দল ইভিএম পদ্ধতি মেনে নিবেন কিনা এটা দেখার বিষয়। তবে এটি বলে রাখার বিষয় যে বিশ্বের অনেক আধুনিক রাষ্ট্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের কারচুপির অভিযোগে এই পদ্ধতি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। সে যাই হোক যেহেতু ভারত আমাদের ইভিএম টেকনিকেল সাপোর্ট দিচ্ছে সেহেতু এখানে কিছুটা সন্দেহ বিরোধী দলের থাকতেই পারে। তবে বিরোধী দল ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট চুরির যে অবারিত সুযোগ আছে তা বারবার প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। তবে সরকার বাহাদুর বারংবার এ পদ্ধতি ভাল আধুনিক ইত্যাদি বলে এর পক্ষে জনমত তৈরি করার জন্য সরকারি অর্থ খরচ করে যথেষ্ট প্রচার চালাচ্ছে।
সপ্তমত: ইলেকশান ইঞ্জিনিয়ারিং হতে পারে সম্প্রতি পাঁচ সিটিতে আ’লীগ প্রার্থী গো হারার পর নেতারা যথেষ্ট গলাবাজি করে নেতা-কর্মী ও দেশবাসীকে মিডিয়ার কল্যাণে বুঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যে লোকাল ইলেকশান ও জাতীয় ইলেকশান এক নয়। ১৪ দল দেশের কল্যাণে যা করেছে জাতি অবশ্যই ১৪ দলকে আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করাবেন এবং ভিশন- ২০২১ বাস্তবায়ন করে দেশের চেহারা পাল্টে দেবেন। আওয়ামী ঘরনার অনেক বুদ্ধিজীবী মনে করেন যে আ’লীগ সিটি নির্বাচনগুলোতে প্রশাসনের উপর ভরসা রেখেছিল এবং প্রচার-প্রচারণায় বিরোধী দলের মত তাক লাগানো মাল-মসলা খরচ করতে পারেনি। তাই যারা এ সরকারের আমলে অনেক নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ব্যাংক ও টেলিভিশনের অনুমোদন পেয়েছেন, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার মালিক হয়েছেন, শেয়ারবাজার লুট করেছেন, পদ্মা সেতু দুর্নীতি করেছেন, হল মার্ক কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত ছিলেন, কুইক রেন্টাল প্রকল্পকে কুইকলি জনগণের কাছে পৌঁছানোর পরিবর্তে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন, তাদের ইতোমধ্যে চৈতন্য ফিরে এসেছে। যে কোন মূল্যে ১৪ দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য যত মাল-মসলার প্রয়োজন হয় তা তারা বরাদ্দ করবে। নচেৎ এসব টিভি চ্যানেল, ব্যাংক ও ব্যবসা ঘ্যাচাং হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এক্ষেত্রে আওয়ামী দেশী-বিদেশী এনজিও খয়ের খাঁ দেশগুলো উজাড় করে অর্থ বিলাবে। নতুবা যে অনেকের অপরাধের মাত্রাতিরিক্ততা এত বেশি তাদের জন্য দেশের প্রচলিত আইনে কি শাস্তি অপেক্ষা করছে তা আল্লাহ মালুম।
অষ্টমত: ইলেকশান ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিষয় হলো আগে কে বিজয়ী প্রার্থী হবে তা ঠিক করে নেয়া। সেটি ইতোমধ্যে গত নির্বাচনে বাংলাদেশে ঘটে গেছে। যেখানে ভোট যা নেই তার চাইতে বেশি ভোট পড়েছে, এটি কি করে সম্ভব? তবে জনগণ প্রত্যাশা করে আমার ভোট টা আমার পছন্দসই ব্যক্তিকে দিতে পারতো? ভোটবাক্সে পড়লে গণনা হবে তো? সাধু সাবধান! এরপর হল ভোট গণনায় ইঞ্জিনিয়ারিং সারা দেশে গোপালগঞ্জের লোক দিয়ে প্রশাসন যে ভাবে সাজানো হয়েছে তাতে বিজয় ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রগুলো ঘিরে রাখতে হবে।
সর্বশেষ: ইঞ্জিনিয়ারিং যেটি একটি গণতান্ত্রিক দেশে কাম্য নয়। সেটি হল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৮ দল বা জনগণের তত্তাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে না নিলে হয়ত বা তখন বিরোধী দল ও দাবি আদায়ে চরম আন্দোলনে গেলে দেশজুড়ে চরম অস্থির অবস্থা শুরু হবে। ব্যাপক জান-মালের ক্ষয় ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিবে। তখন অনন্য উপায় হয়ে দেশ জাতির জান মাল ও ক্ষয়ক্ষতি রোধে দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীই ক্ষমতা গ্রহণ করবে। এর পর জাতির ভাগ্যে কি ঘটবে সময়েই বলে দেবে।
কতক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কথা এখানে তুলে ধরা হলে ও ডিজিটাল যামানায় আরো অনেক ধরনের ডিজিটাল ইঞ্জিনিয়ারিং হতে পারে; এটি যে কোন দলের বেলায়। ক্ষমতায় ও হয়তোবা আসা যায় কিন্তু জনগণের সুখে-দুঃখে একাকার হয়ে যদি দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের আসনে নেতা-নেতৃত্বরা স্থান করে নিতে না পারেন তা হলে আমরা স্বাধীনতার চেতনা, গণতন্ত্র, সম-অধিকারের মত সস্থা বুলি যতই আওড়াই না কেন এসব এখন জনগণের কাছে বিষালো শব্দে পরিণত হয়েছে। আমরা চাই না ইঞ্জিনিয়ারিং, আমরা চাই না গৃহযুদ্ধ, জনজীবনে অশান্তি-ভোগান্তি, চাই সাম্যের বাংলাদেশ। দেশের জনগণ যাকে রায় দেবে সেই দেশ চালাবে, এটাই হওয়া স্বাভাবিক ও অতিব জরুরি। অনেক হতাশার পর ও এক বুক আশা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের প্রতিক্ষায় রইলাম । যেখানে সূক্ষ্ম অথবা স্থূল কারচুপির অভিযোগ আসবে না, যিনিই নির্বাচিত হবেন তিনি দেশের একজন, তিনি হবেন দেশের সকলের; সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সত্য ও সাম্যের বাংলাদেশ গড়ার জন্য ১৭ কোটি মানুষের ৩৪ কোটি হাত এক যোগে দেশ-দশের তরে এগিয়ে যাক, আর নয় পিছুটান, আর নয় হতাশা আগামী দিনগুলো হবে শুধু সম্ভাবনার।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন