বাংলাদেশের রাজনীতির অন্দরে হেফাজত একটা শক্ত অবস্থান করে নিয়েছে। আমার যত দূর মনে পড়ে আমরা প্রথম হেফাজতের নাম শুনেছি ফতোয়াবিষয়ক আদালতের রায়ের পরে। ওই রায়ের সমালোচনা করে তখন আমিও একটি কলাম লিখেছিলাম। ফতোয়া ইসলামিক আইনের একটি শাখা। বিচারপতি গোলাম রাব্বানী ফতোয়ার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ফতোয়া নিষিদ্ধ করা হোক। তখনই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। ফতোয়া বিষয়ে অনেক বইও প্রকাশিত হয়েছিল। তখন হেফাজতই ওই ফতোয়াবিষয়ক রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিল। এখন হেফাজত নামটি বাংলাদেশের ঘরে ঘরে। সরকার ও আওয়ামী লীগ হেফাজতকে ঘরে ঘরে পরিচিত করার কাজটি করেছে। প্রথম দিকে হেফাজতকে নিজেদের দলে টানার জন্য বা সরকারের কাজে লাগানোর জন্য আওয়ামী লীগ অনেক চেষ্টা তদবির করেছে। হেফাজতকে দু’বার রাজধানীতে গণজমায়েত করার সুযোগ দিয়েছে সরকার। প্রথমবার ছিল ৬ এপ্রিল আর দ্বিতীয়বার ছিল ৫ মে। হেফাজত এক মাস সময় নিয়ে সারা দেশে জেলায় জেলায় সমাবেশ করেছে। স্থানীয় প্রশাসন তাদের সহযোগিতা করেছে কেন্দ্রের নির্দেশে। ক’দিন আগে মানবজমিনে প্রকাশ করা হয়েছে আওয়ামী লীগ বা সরকার আগামী নির্বাচনে হেফাজতকে ৫০টি সিট দিতে চেয়েছে। কিন্তু হেফাজত নেতাদের কথা হলো তারা কোনো রাজনৈতিক দল নয়, রাজনীতিতেই জড়িত হতে চান না। হেফাজত নেতারা অবশ্য বারবার বলেছেন, তারা কাউকে মতায় বসাতে চান না বা কাউকে ক্ষমতা থেকে নামাতে চান না। তারা ইসলামিক বিধান বা শরিয়া মোতাবেক সংবিধান সংশোধনের পরিবর্তন চান। সেই সুবাদেই তারা ১৩ দফা দিয়েছেন। সেই ১৩ দফায় রাজনীতির কোনো কথা নেই। পর্দার অন্তরালে সরকার হেফাজতের সাথে সমঝোতা বা হেফাজতকে বাগে আনতে না পেরে দেশী-বিদেশী বন্ধুদের সাথে আলোচনা করেই সরকার ৫ মে মধ্য রাতে সব আলো নিভিয়ে দিয়ে হেফাজতকে আক্রমণ করে কয়েক হাজার পুলিশ, র্যাব ও আধা সামরিক বাহিনী দিয়ে। সরকার বা তার বিদেশী বন্ধুরা মধ্য রাতের এই অপারেশনের নাম দিয়েছেন ‘অপারেশন ফ্যাশ আউট’। আঘাত হানার কায়দাটা ছিল অনেকটা ২৫ মার্চের রাতের অপারেশনের মতো। ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুকে আটক করে পাকিস্তান নিয়ে যাওয়া হয় এবং আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। ৫ মে রাতেও একই কায়দা বা একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার সরকার হেফাজতকে উচ্ছেদ করার জন্য। সকালবেলা নগরবাসী দেখলেন শাপলা চত্বরে যে কিছু হয়েছে তার কোনো নিশানা নেই। মনে হয়েছে গত রাতে ওখানে কিছুই হয়নি। সরকারি বাহিনীর আক্রমণের মূল কেন্দ্র ছিল শাপলা চত্বর। আর হেফাজতের নেতাদের আটক করা হয় লালবাগে। ২৫ মার্চ পাকিস্তান বাহিনী আক্রমণ চালিয়েছে সারা ঢাকা নগরে। ২৬ ও ২৭ মার্চ সকালে দেখা গেছে বহু বস্তি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বহু মানুষের লাশ পড়ে আছে। হলগুলোতেও ছাত্র-শিকদের লাশ পাওয়া গেছে। পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের মুসলমান জেনেও দমনের জন্য আক্রমণ চালিয়েছে। কিন্তু শাপলা চত্বরের ঘটনাটা আজো জনসাধারণের কাছে অজানা রয়ে গেছে। সরকার বলছে ওখানে কিছুই হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হেফাজতের লোকেরা গায়ে রঙ মেখে মরার ভান করেছে। পুলিশ কমিশনার বলেছেন, সে রাতে কোনো লোক মারা যায়নি। শেখ সেলিম বলেছেন, সে রাতে একজন লোকও মারা যায়নি। কেউ মারা গেছে তা প্রমাণ করতে পারলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। সুরঞ্জিত সেন বলেছেন, ‘হুজুরেরা মার খেয়ে সুবহানাল্লাহ সুবহানাল্লাহ বলতে বলতে পালিয়ে গেছেন’। সুরঞ্জিত বাবু হয়তো সুবহানাল্লাহর অর্থ জানেন না বলেই অমন মশকরা করেছেন। এরপর আওয়ামী লীগের হানিফ সাহেব, আশরাফ সাহেব, মখা সাহেব, কামরুল সাহেব, দীপু মনিসহ আরো অনেকে ৫ মে’র অপারেশন নিয়ে মজার মজার কথা বলেছেন। কিন্তু দেশবাসী তা একবিন্দুও বিশ্বাস করেননি। বারবার বলার পরও সরকার একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেনি। সেই রাতে কী হয়েছে স্থানীয় ও বিদেশী মিডিয়ার বদৌলতে দেশবাসী অনেক কিছুই দেখেছে ও জানতে পেরেছে। অপারেশনকে সরাসরি দেখানোর অপরাধে দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ বন্ধ করে দেয়া হয়। সরকারবিরোধী শক্ত অবস্থান নেয়ায় এর আগে সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক আমার দেশ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং এর সাহসী সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আটক করে ১৩ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। জগতের কোনো সম্পাদককে আটক করে ১৩ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়নি। কাগজ বন্ধ করা ও সম্পাদকদের হেনস্তা করা আওয়ামী লীগের পুরনো অভ্যাস। বঙ্গবন্ধুও চারটি ছাড়া সব কাগজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা দৈনিক বাংলা ও বিচিত্রা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতকে দমন করলে তার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে তা সরকার বা আওয়ামী লীগ ভালো করে আগে থেকে বিশ্লেষণ বা অনুধাবন করেনি। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। একইভাবে সরকার না বুঝে কয়েক মাস ধরে শাহবাগীদের পিজি ও বারডেমের চৌমোহনায় মঞ্চ বানিয়ে দিয়ে নানা ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারব্যবস্থাকে প্রভাবান্বিত করার কাজে ব্যবহার করেছে। ল্য অর্জনের পর বা সমালোচনা দেখে সরকার পুলিশ দিয়ে তথাকথিত ‘সরকার জাগরণ’ মঞ্চ গুঁড়িয়ে দিয়েছে। জাগরণ নেতাদের কিছু দিনের জন্য হলেও গা ঢাকা দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এখন আবার ওই মঞ্চ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। তবে আগের মতো জৌলুশ নেই। তবুও তারা শাহবাগের চৌমোহনীতে মিলিত হচ্ছে। খবর বেরিয়েছে ছাত্রলীগের নেতারা নাকি শাহবাগীদের তাড়িয়ে দিয়েছে। এরশাদ সাহেব সে জন্য ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। পরে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রনেতা এরশাদ সাহেবকে এ জন্য গালাগাল দিয়েছেন। শাহবাগীদের নিয়ে ইতোমধ্যে দেশব্যাপী নানা কথা হয়েছে। ওদের অনেকেই নাস্তিক বলে গালাগাল দিয়েছে। পরে দেশবাসী ভাবতে শুরু করেছে ওই মজমা আসলেই নাস্তিকদেরই। ওখানে নাকি ছেলেমেয়েরা দল বেঁধে রাত যাপন করত সে নিয়েও মজাদার গল্প বেরিয়েছে। সরকার ওদের পুলিশ দিয়ে প্রটেকশন দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সভা করার জন্য সুযোগ করে দিয়েছে। ইমরান সরকারসহ কয়েকজন শাহবাগী নেতাকে জামাই আদরে খেদমত করেছে। ওরা নাকি নিরাপত্তার কারণে রূপসী বাংলায় রাত যাপন করত। সেই সময়ে নাকি ওই মঞ্চের জন্য দেশের বড় বড় শিল্প গ্রুপ খাজানা খুলে দিয়েছিল। বিশেষ করে স্কয়ার ও প্রাণ গ্রুপ এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। শুনেছি স্কয়ার পরিবারে সর্বধর্মের অনুশীলন করা হয়। তারা মহান আকবর বাদশাহর ভক্ত। বাদশাহ আকবরের অন্দর মহলে বেগম সাহেবারা যে যার ধর্ম পালনের সুযোগ পেতেন। অন্দর মহলে দেব-দেবীর পূজামণ্ডপও থাকত। প্রাণ গ্রুপের বড় সাহেব কাদিয়ানী মন্ত্রে বিশ্বাসী বলে কেউ কেউ অভিযোগ করেন। আদর্শগতভাবে শাহবাগীরাও নাকি সেকুলার ধর্মে বিশ্বাস করে। এটিও একটা পুরনো ধর্ম। হিন্দু মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই নাকি সেকুলার হতে পারে। অনেকেই হয়তো না বুঝে সেকুলার হতে ভালোবাসেন। সমাজে দামি দামি লোকেরা সেকুলার। এমনকি আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাও সেকুলারিজমে বিশ্বাস করেন। তিনি ও তার দল আওয়ামী লীগ ও মিত্ররা সবাই মনোরম ধর্ম সেকুলারিজমে বিশ্বাস করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ (ধর্মীয় নেতা) আশরাফ সাহেব নাকি কোনো ধর্মেই বিশ্বাস করেন না। তিনি শুধুই একজন সেকুলারিস্ট। সেকুলারিজম সম্পর্কে আমি এর আগেও বহুবার লিখেছি। বাংলাদেশে এই ইংরেজি শব্দের অনুবাদ করা হয়েছে ধর্মনিরপে। কিন্তু তবুও বিষয়টি খোলসা হয়নি। এর মানে কি যিনি কোনো ধর্মে বিশ্বাস করেন না? ধর্মের ব্যাপারে নিরপেতা মানে তিনি কোনো ধর্মে নেই। বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরা বলেন, তারা ধর্মকে ব্যক্তিগত বিষয় মনে করেন। তাই রাষ্ট্র বা সমাজ ধর্মের ব্যাপারে নিরপে থাকবে। স্লোগান হলো, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। এ থিওরি দিয়ে ধর্মীয় মেজরিটি বা সংখ্যাগরিষ্ঠের অধিকারকে অস্বীকার করা হয়েছে। এর মানে রাষ্ট্রের কাছে ৯০ আর একের মূল্য সমান। এসব কথা যারা বলেন, তারা হচ্ছেন জ্ঞানপাপী ভণ্ড। রাজনীতি ও সমাজনীতিতে এদের কোনো অবদান নেই। এরা শুধু কথায় আছে, কাজে নেই। এদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের মাথায় প্রবেশ করেছে। এর বাইরে যারা আছে তারা ভারতের ব্রিফিং নিয়ে চলে। দামি লোক হয়ে সমাজের মাথায় বসে থাকে। শুধু প্রয়োজনে খবরের কাগজে বিবৃতি দিয়ে হুক্কাহুয়া করে। এদের কারণেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইমেজে ক্রাইসিস দেখা দিয়েছে। কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তি মন্ত্রী হয়ে বসে আসেন যাদের কোনো ভোট নেই। এদের দল আছে, কিন্তু দলে লোক নেই। এরা বিবৃতিজীবী। খবরের কাগজ ছাড়া এদের কোথাও দেখা যায় না। খবরের কাগজওয়ালারা এদের একটু বেশি গুরুত্ব দেয়। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী বলতেন, খবরের কাগজের দরকার নেই। হাট-বাজারে নিউজপ্রিন্টের লিফলেট বিতরণ করো, দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগাও। মাইকের বদলে চুঙ্গা ফুঁকিয়ে তোমার কথা প্রচার করো। জনগণের কথা সঠিকভাবে বলতে পারলে ও তোমার কথা শুনবেই। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন ছিল চুঙ্গা আর লিফলেটের নির্বাচন। এখন আর সেই দিন নেই। এখন রাজনীতিতে অঢেল টাকার খেলা। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হতে খরচ হয়েছিল তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এখন নাকি খরচ হয় তিন কোটি থেকে পাঁচ কোটি টাকা। একবার কেউ এমপি হলে বাকি জীবনের জন্য তিনি ধনী হয়ে যান। আইনি পথেই তিনি একটি জমির প্লট ও শুল্কমুক্ত গাড়ি পান। এতেই তার দু-তিন কোটি টাকা আয় হয়ে যায়। রাজনীতির চেহারা এখন একেবারেই বদলে গেছে। গণজাগরণ মঞ্চ যা সরকার জাগরণের জন্য আত্মপ্রকাশ করেছিল এখন তা সরকারের বা আওয়ামী লীগের বোঝায় পরিণত হয়েছে। অনেকেই বলেন, এ মঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দিল্লির নির্দেশেই। দিল্লির কাগজে সেই রকম ইঙ্গিতই পাওয়া যায়। দিল্লির রাষ্ট্রপতি প্রণব বাবু ওই মঞ্চের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, তার মন ওই মঞ্চে পড়ে থাকে। তিনি আদালতকে বলেছিলেন, রায় দেয়ার সময় মঞ্চ ও জন রায়ের কথা মনে রাখার জন্য। এ ছাড়া তিনি নাস্তিক একটা ছেলে, যে আল্লাহ ও রাসূল সা:-এর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেছে সে নিহত হওয়ায় তাকে শহীদের মর্যাদার কথা ঘোষণা করেছেন। আরো যারা এ ধরনের অপরাধ করেছে তিনি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। একটি ছেলে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু বলার অপরাধে আদালত সাত বছর জেল দিয়ে দিয়েছে। দেশের মানুষ জানতে পেরেছে এ সরকারের আমলে আল্লাহ ও নবী-রাসূল সা:-দের বিরুদ্ধে বললে কোনো শাস্তি হয় না। ক’দিন ধরে প্রধানমন্ত্রী নিজে, তার দল ও মিত্ররা কোমর বেঁধে ইসলামিক স্কলার আল্লামা শফীর বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ দিয়ে নানা ধরনের অশ্লীল কথা বের হচ্ছে। সিটি নির্বাচনগুলোতে হেরে তিনি সংযত হবেনÑ এটি দেশবাসীর আশা ছিল। কিন্তু না, তিনি এখন আরো েেপ গিয়ে ভোটারদের গালাগাল দিচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ভোটারেরা অসৎ লোকদের ভোট দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, আমরা চোর ধরেছি বলে লোকজন আমাদের চোর বলছে। তিনি বলেছেন, ঈদের পর বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে জনগণকে শাস্তি দেবেন। কারণ তিনি বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর পরও দেশবাসী তাকে বা তার দলকে ভোট দিচ্ছে না। এতে তিনি খুবই কষ্ট পেয়েছেন মনে। লোকজন বলছেন, সরকার জনগণের টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছেন। গণতান্ত্রিক দেশে জনগণ সরকার বদলাতে পারে, দল বদলাতে পারে। এটি তাদের অধিকার। এতে প্তি হয়ে প্রধানমন্ত্রী তাদের শাস্তি দেয়ার কথা বলতে পারেন কি? নির্বাচনে কেন হেরেছে সরকারি দল, সে বিশ্লেষণ প্রধানমন্ত্রী করেছেন বলে মনে হয় না। মূল কারণের দিকে নজর না দিয়ে তিনি অন্য দিকে নজর দিয়েছেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উন্নয়নের জোয়ারের জন্য ঢোল বাজাবেন। এ জন্য তার পে ‘আপ খোরাকি বিনা বেতনে’ কাজ করার জন্য বহু ত্যাগী মানুষ আছেন। এখন তো ঢোল বাজানোর প্রধান হাতিয়ার হলো টিভি ও খবরের কাগজ। এসব অস্ত্র বা যন্ত্র তার পে আছে। তার পে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক টনি দুই টনি ওজনের বুদ্ধিজীবীরা আছেন। তারা গোত্রীয় নির্বাচনেও জয়লাভ করেন। আগেই বলেছি, ২০০৮ সালে যারা আওয়ামী লীগকে মতায় বসিয়েছেন, তারা তাকে মানে শেখ হাসিনাকে আবারো মতায় বসাবেন এমনটি বিশ্বাস করা উচিত হবে না। বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারত সব সময় উতলা থাকে। এবার হয়তো ভারতও নিজের দেশের স্বার্থে মত বদলাতে পারে। সে দেশের কাগজপত্র দেখে তাই মনে হচ্ছে। গণজাগরণ বা হেফাজত সরকারের জন্য বুমেরাং হয়ে গেছে। সরকারের সবচেয়ে বেশি নির্বাচনী তি করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। লোকে মনে করে এটি নাস্তিকদের মঞ্চ। সেই মঞ্চের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সরকার। এর মানে সরকার নাস্তিকদের প।ে সুতরাং এই দল ও সরকার মুসলমানদের ভোট পেতে পারে না। তার ওপরে রয়েছে হেফাজতের সাথে সরকারের ব্যবহার। হেফাজত এখন বাংলাদেশে ইসলামের প্রতীক হয়ে গেছে। সেই সংগঠনের ওপরে সরকার হামলা চালিয়েছে রাতের অন্ধকারে। দেশবাসী ও বিদেশীদের ধারণা, সে রাতে শাপলা চত্বরে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে। সরকার এ অভিযোগ থেকে নিজে মুক্ত করতে পারেনি। বরং সরকারি লোকেরা চিৎকার করে বলছে, সে রাতে কিছুই হয়নি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে এ দুটো বিষয়ই হবে প্রধান আলোচনার বিষয়
মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০১৩
হেফাজত ও শাহবাগ রাজনীতির নতুন অঙ্ক
Posted on ৪:৩৬ PM by Abul Bashar Manik
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন