বৃহস্পতিবার, ১ নভেম্বর, ২০১২

শৃঙ্খলা রক্ষায় নিবিড় নজরদারি দরকার

অস্ত্র ব্যবসায়ে পুলিশ
অপরাধ দমন করে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পুলিশের প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধে এখন নানা ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের মতো অপরাধের পাশাপাশি এখন অস্ত্র ব্যবসায়ের মতো গুরুতর অপরাধে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশবাহিনীর ব্যবহারের জন্য অস্ত্র বিক্রির সাথে পুলিশ সদস্যরা জড়িয়ে পড়ছেন।
সম্প্রতি রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে একজন এসআই ও একজন কনস্টেবলকে বিপুল গুলি ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। এরা হলেন আইজিপি রিজার্ভ অফিসে কর্মরত আর্মড এসআই জাহিদ হোসেন ও কনস্টেবল সায়েম। তাদের কাছ থেকে ১১০৩ রাউন্ড গুলি, ২৪১৫টি গুলির খোসা, একটি রিভলবার ও একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়। এর আগে রাজধানীর কাফরুল এলাকা থেকে গ্রেফতার হন জেনাল চাকমা ও প্রেম চাকমা নামে দুই পুলিশ সদস্য। তাদের কাছ থেকে বিপুল গুলি উদ্ধার করা হয়। এই দুই পুলিশ সদস্য একসময় জনসংহতি সমিতির অস্ত্রধারী ছিলেন। শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর এরা পুলিশ বিভাগে চাকরি নেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে এদের  যোগাযোগ ছিল। এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে এরা বিভিন্ন সময় অস্ত্র ও গুলি সরবরাহ করেছে। অস্ত্রধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবসায়ে জড়িয়ে পড়া সাধারণ মানুষ শুধু নয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্যও বড় ধরনের হুমকি।
পুলিশের বিরুদ্ধে এর আগে বিভিন্ন সময় যখন নানা ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে, তখন তার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এসব তদন্তে সব সময় অপরাধী পুলিশ সদস্যদের আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে। এর পরিণামে পুলিশের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বেড়েছে। বিশ্বের সব দেশে সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে পুলিশের শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়; কিন্তু বাংলাদেশে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে। ফলে ধীরে ধীরে পুলিশ বাহিনীতে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। ছোট ছোট অপরাধ থেকে পুলিশ এখন অস্ত্র ব্যবসায়ের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
আমরা মনে করি, পুলিশ বিভাগের এসব অপরাধীকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় না আনতে পারলে দেশে বড় ধরনের অপরাধের বিস্তার ঘটতে পারে। এ বাহিনীর শৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়তে পারে। জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি হতে পারে। তাই এখনই সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের ওপর নজরদারি ছাড়াও পুরো পুলিশ বিভাগে নিবিড় নজরদারি দরকার।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads