দক্ষ ও যোগ্য চিকিৎসকদের চাকরিচ্যুত করা হলেও এ সরকার সাড়ে চার হাজার মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগ দিয়েছে অ্যাডহক ভিত্তিতে। এই সাড়ে চার হাজার মেডিক্যাল অফিসারের বেশির ভাগ নিয়োগ পেয়েছেন দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে, যোগ্যতার ভিত্তিতে নয়। বাকিরা টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আরো অভিযোগ রয়েছে, সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা ছাড়াই এত অধিক মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে দলীয় সমর্থকদের আনুকূল্য দেয়ার জন্য।
যে ১৭০ জন মেডিক্যাল অফিসারের চাকরি উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় টিকে আছে, তাও রাজনৈতিক কারণে। কারণ, দলান্ধ পেশাজীবী সংগঠন এদের নিয়োগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদের হয়রানি করার উদ্যোগ নেয়। এই উদ্যোগই মামলা পর্যন্ত গড়ায়।
অন্য দিকে বর্তমান সরকারের গত চার বছরেও স্নাতকোত্তর মেডিক্যাল শিক্ষার সম্প্রসারণ হয়নি। চিকিৎসার উচ্চশিক্ষায় আসন না বাড়ালে শিক্ষকশূন্যতা সহজে পূরণ হবে না। সরকারি মেডিক্যাল কলেজে এবং অর্ধশতাধিক বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে শিক্ষকসঙ্কট মেটাতে হলে আসন বাড়ানোর সাথে সাথে উচ্চশিক্ষাকে সম্প্রসারিত করার কোনো বিকল্প নেই। সেই সাথে স্নাতকোত্তর কোর্স করানোর প্রতিষ্ঠানও বাড়াতে হবে। পুরনো আট মেডিক্যাল কলেজে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করেছিল আগের সরকার। তাদের এ কাজকে প্রতিপক্ষও সাধুবাদ জানিয়েছিল। তবে এসব কোর্স করানোর জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক দেয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমান সরকারও এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
শুধুই দলীয় লোকদের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য বর্তমান সরকার চিকিৎসকদের পদোন্নতি দিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশনকে পাস কাটিয়ে বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির মাধ্যমে। পরীক্ষার ফল বের না হওয়ার আগেই কোনো কোনো চিকিৎসককে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। যাদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে, তারা সবাই দলীয় সমর্থক। এ ছাড়া মেধার মূল্যায়ন করা হয়নি।
আমরা মনে করি, এই অবস্থার উত্তোরণ জরুরি। রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে পেশাজীবীদের পেশাগত মান সংরক্ষণ করাই কাম্য। তা ছাড়া চিকিৎসা পেশার মতো স্পর্শকাতর ও জনগুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে দলীয়করণের ফলাফল কোনো দিন শুভ হতে পারে না। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপই সঙ্কট কমাতে সাহায্য করবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন