প্রধানমন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীনদের মুখে সাফল্যের বয়ান যেন শেষ হয় না। তাদের কথা শুনে মনে হয়, বাংলাদেশ সব ক্ষেত্রেই উন্নতির শিখরে পৌঁছে গেছে। এটা ঠিক যে, একশ্রেণীর মানুষের প্রাপ্তিতে মোটেই ঘাটতি নেই। রাজনৈতিক ক্ষমতার জোরে তারা অবাধে সুযোগ-সুবিধা, অর্থবিত্ত সবকিছুই হাতিয়ে নিয়েছে। এদের পাওয়ার যেন শেষ নেই। ফলে কোনো সমস্যাই তাদের কাতর করে না। শাসকদের মুখের কথায় তাদের অবস্থাই ফুটে ওঠে। কিন্তু আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে যন্ত্রণাদগ্ধ জীবনে সংখ্যাধিক মানুষ কীভাবে গুমরে গুমরে মরছে সেটা তারা দেখেও দেখে না। আম জনতার সামনে অসহনীয় দুঃশাসন থেকে বাঁচার সব স্বাভাবিক পথই যেন বন্ধ হওয়ার যোগাড়। আইনের আশ্রয় নিতে গিয়ে মানুষ প্রতারকের খপ্পরে পড়ছে, নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বিচারের আশায় আদালতে গিয়েও রক্ষা নেই। বছরের পর বছর ঘুরে অর্থের শ্রাদ্ধ আর হয়রানিই সার। মামলার খরচ জোগাতে নিঃস্ব হলেও বিচার শেষ হয় না। দুর্নীতির ভয়াল থাবা যেন চারদিক থেকে চেপে ধরেছে সমাজকে। এমন অবস্থার কথা বাংলাদেশের কারও অজানা নয়। এখন বিদেশেও এ নিয়ে আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের প্রশাসন ও আদালতগুলোর দুর্নীতি-অযোগ্যতা সীমা ছাড়িয়েছে বলে সম্প্রতি প্রকাশিত আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট (ডব্লিউজেপি) প্রকাশিত ‘আইনের শাসন সূচক-২০১২’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থাকে বিশ্বের নিকৃষ্টতম বলা হয়েছে। আইনের শাসনও একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বের ৯৭টি দেশের ওপর জরিপ চালিয়ে এমন সিদ্ধান্তে এসেছে সংস্থাটি। এখানে সরকারের ক্ষমতা ও স্বচ্ছতা, দুর্নীতি, আইন-শৃঙ্খলা, মৌলিক অধিকার আইনের প্রয়োগ, দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাসহ প্রতিটি সূচকেই বাংলাদেশের অবস্থা নিম্নগামী দেখা গেছে। দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থায় ৯৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৭তম। গত বছর এই অবস্থান ছিল ৬৬টি দেশের মধ্যে ৬২তম। এক বছরেই দেওয়ানি আদালতে ঘুষ-দুর্নীতি, দীর্ঘসূত্রতা ও বিচারহীনতাসহ সার্বিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে চরমভাবে। এমনটি উঠে এসেছে জরিপের ফলাফলে। সরকারের প্রশাসনিক অবস্থাও একেবারে ধসে পড়েছে। কোথাও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বালাই দেখা যায় না। অদক্ষতা আর দুর্নীতি গ্রাস করেছে প্রশাসন ও আদালতসহ সবকিছু। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘন আর পুলিশি হয়রানি। এসবের কোনোটাই মানুষের অজানা নয়। দলীয় ক্যাডারদের মতোই পুলিশ অস্ত্রহাতে বিরোধী দল ও আন্দোলনকারীদের ওপর কীভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটা নিত্যদিনই দেখতে হচ্ছে সবাইকে। তাই বলা যায, বিদেশি সংস্থাটি টেবিলে বসে এমন সিদ্ধান্ত নেয়নি। বাস্তবতাও তাই। তারা ২৫ হাজারের বেশি বিশেষজ্ঞ ও ৯৭ হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতেই প্রতিবেদন তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে। তারা আরও বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার ৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থা শোচনীয়। এখানে ক্ষমতাসীনদের দলবাজি আর দুর্নীতির কারণে আইনের শাসন হারিয়ে যেতে বসেছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের অস্বচ্ছতা ও জবাবদিহিহীনতা এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, সাধারণ মানুষ পরিস্থিতির উন্নতি নিয়ে চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছে—এমন বাস্তবতা খালি চোখেই দেখা যায়।
তাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে আন্তর্জাতিক সংস্থার এমন মতামতে বিস্মিত হওয়ার সুযোগ নেই। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে হাড়ে হাড়ে তারা যে যন্ত্রণা ভোগ করছে, তারই প্রতিফলন ঘটেছে সেখানে। সুশাসনের আশায় সরকার পরিবর্তন কোনো কাজে আসেনি, এটাই চরম বাস্তবতা। এ থেকে উদ্ধারের পথ খোঁজাই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট (ডব্লিউজেপি) প্রকাশিত ‘আইনের শাসন সূচক-২০১২’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থাকে বিশ্বের নিকৃষ্টতম বলা হয়েছে। আইনের শাসনও একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বের ৯৭টি দেশের ওপর জরিপ চালিয়ে এমন সিদ্ধান্তে এসেছে সংস্থাটি। এখানে সরকারের ক্ষমতা ও স্বচ্ছতা, দুর্নীতি, আইন-শৃঙ্খলা, মৌলিক অধিকার আইনের প্রয়োগ, দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাসহ প্রতিটি সূচকেই বাংলাদেশের অবস্থা নিম্নগামী দেখা গেছে। দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থায় ৯৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৭তম। গত বছর এই অবস্থান ছিল ৬৬টি দেশের মধ্যে ৬২তম। এক বছরেই দেওয়ানি আদালতে ঘুষ-দুর্নীতি, দীর্ঘসূত্রতা ও বিচারহীনতাসহ সার্বিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে চরমভাবে। এমনটি উঠে এসেছে জরিপের ফলাফলে। সরকারের প্রশাসনিক অবস্থাও একেবারে ধসে পড়েছে। কোথাও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বালাই দেখা যায় না। অদক্ষতা আর দুর্নীতি গ্রাস করেছে প্রশাসন ও আদালতসহ সবকিছু। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘন আর পুলিশি হয়রানি। এসবের কোনোটাই মানুষের অজানা নয়। দলীয় ক্যাডারদের মতোই পুলিশ অস্ত্রহাতে বিরোধী দল ও আন্দোলনকারীদের ওপর কীভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটা নিত্যদিনই দেখতে হচ্ছে সবাইকে। তাই বলা যায, বিদেশি সংস্থাটি টেবিলে বসে এমন সিদ্ধান্ত নেয়নি। বাস্তবতাও তাই। তারা ২৫ হাজারের বেশি বিশেষজ্ঞ ও ৯৭ হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতেই প্রতিবেদন তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে। তারা আরও বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার ৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থা শোচনীয়। এখানে ক্ষমতাসীনদের দলবাজি আর দুর্নীতির কারণে আইনের শাসন হারিয়ে যেতে বসেছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের অস্বচ্ছতা ও জবাবদিহিহীনতা এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, সাধারণ মানুষ পরিস্থিতির উন্নতি নিয়ে চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছে—এমন বাস্তবতা খালি চোখেই দেখা যায়।
তাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে আন্তর্জাতিক সংস্থার এমন মতামতে বিস্মিত হওয়ার সুযোগ নেই। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে হাড়ে হাড়ে তারা যে যন্ত্রণা ভোগ করছে, তারই প্রতিফলন ঘটেছে সেখানে। সুশাসনের আশায় সরকার পরিবর্তন কোনো কাজে আসেনি, এটাই চরম বাস্তবতা। এ থেকে উদ্ধারের পথ খোঁজাই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন