চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্রে এই উন্নয়নকাজের সার্বিক তদারকি করার কথা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের, কিন্তু সে ধরনের কোনো তদারকি ছিল না। এ ধরনের ফাইওভার নির্মাণের ক্ষেত্রে যে নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকা দরকার, তার কিছুই ছিল না। এমনকি নির্মাণাধীন এলাকায় যে বেষ্টনী দেয়া দরকার তা-ও দেয়া হয়নি।
প্রকৃতপক্ষে যাকেতাকে বড় বড় ঠিকাদারি কাজ দিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যে লুটপাট চলছে, সেই লুটপাটের ফল হিসেবে ভয়ঙ্কর বিপদ এখন আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। টেন্ডার-বাণিজ্য এ ক্ষেত্রে একটি বড় কারণ। শত কোটি টাকার এসব উন্নয়নকাজে সামান্যতম নিরাপত্তাব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। যেখানে একবার দুর্ঘটনার পরও তদারকিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, সেখানে এসব অবকাঠামো কতটা মানসম্পন্নভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কিছু দিন পর পুরো ফাইওভার যে ভেঙে পড়বে না তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ সরকারি এসব কাজের টাকা দলবাজ ঠিকাদার ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পকেটে গেছে। জনগণকে দেখানোর জন্য শুধু একটি প্রকল্পের চেহারা হাজির করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের এই ফাইওভার ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের বিপদের কারণ হতে পারে। এ জন্য প্রথমে দরকার এর নির্মাণকাজ বন্ধ রেখে যে পর্যন্ত কাজ হয়েছে তা কতটা মানসম্পন্ন ও বিপদমুক্ত হয়েছে তা পর্যালোচনা করা। যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এই কাজে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের এ ধরনের উন্নয়নকাজে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। যাতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান দেশের আর কোনো উন্নয়নকাজে অংশ নিতে না পারে। সর্বোপরি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যে সীমাহীন গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া।
মনে রাখতে হবে, উন্নয়নের স্বার্থে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত। দেশের মানুষ উন্নয়নের নামে বিশেষ কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অর্থ উপার্জনের প্রকল্প চায় না। উন্নয়নের নামে প্রাণহানি বন্ধ করতে হবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন