নাছির উদ্দিন শোয়েব
রাজনৈতিক বন্দি দিয়ে ঠাসা দেশের ৬৬টি কারাগার। দেশের ১১টি কেন্দ্রীয় এবং ৫৫টি জেলা কারাগারের ধারণক্ষমতা ২৭ হাজার ২৯১ জন হলেও গতকাল পর্যন্ত বন্দি ছিল ৭৪ হাজারেরও বেশি। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ধারণক্ষমতার চেয়ে তিন গুণের বেশি বন্দি রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের রিমান্ডে আনার পর কারাগারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। গ্রেফতারকৃতদের অনেকেই জামিন না পাওয়ায় দিনের পর দিন কারাগারে আটক রয়েছেন।
এছাড়া বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী ঐক্য জোটের প্রথম সারির নেতাসহ বিরোধী জোটের তিন হাজারেরও বেশি নেতাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারাগারে আরও আটক রয়েছেন শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানসহ বেশ কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত জওয়ান।
অভিযোগ রয়েছে, নানা অজুহাতে একের পর এক গ্রেফতার করা হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক জোটের নেতাকর্মী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় জামায়াত নেতা ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ারকে। ভিআইপি বন্দিদের জন্য করাগারগুলোতে নেই উপযুক্ত সেল। অপরি-কল্পিতভাবে নির্মিত কারাগারে বন্দিরা মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। বিপুলসংখ্যক বন্দি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। এর ওপর নিরাপত্তার অজুহাতে বন্দিদের এক কারাগার থেকে অন্য কারাগারে স্থানান্তর করায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে।
আটক ব্যক্তিদের স্বজন ও কারা সূত্রে জানা যায়, একুশে আগস্ট ১০ ট্রাক অস্ত্র, কিবরিয়া হত্যা, বিডিআর বিদ্রোহ, যুদ্ধাপরাধ মামলায় আটক হয়ে দীর্ঘদিন ধরে কারা অভ্যন্তরীণ রয়েছেন বিরোধী জোটের ২০ প্রথম সারির নেতা। এরা হচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম, বর্তমান আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএ আজহারুল ইসলাম ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাশেম আলী।
এছাড়া দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই’র সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাবুদ্দিন, উপ-পরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, মাওলানা আবদুস সালাম প্রমুখ।
জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতের আমির, সেক্রেটারি জেনারেল, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় এবং জেলা পর্যায়ের তিন হাজার নেতাকর্মী কারাগারে আছেন। বন্দি রয়েছেন ছাত্রদল, যুবদল, ছাত্রশিবির, হিযবুত তাহরিরের প্রধানসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্রেফতার হয়েছে দুই সহস্রাধিক জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী। নিখোঁজ রয়েছেন ৮০। এ নিয়ে বর্তমান সরকারের ৪৬ মাসের শাসনামলে বিভিন্ন সময় জামায়াত-শিবিরের প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহিলা কর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয় প্রায় ৮০ জনকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের সব কারাগারের পরিবেশ অত্যন্ত নাজুক। অতিরিক্ত বন্দির চাপে সৃষ্টি হয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের। দেশের ৬৬টি কারাগারের ধারণক্ষমতা ২৭ হাজার ২৯১ জন। সেখানে বর্তমানে বন্দির সংখ্যা প্রায় ৭৪ হাজার। মহিলা বন্দির জন্য থাকার জায়গা রয়েছে এক হাজার ১২৮ জনের। সেখানে মহিলা বন্দির সংখ্যা তিন হাজারের চেয়েও বেশি। কারাগারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের। এর ধারণক্ষমতা দুই হাজার ৭০০। অথচ বর্তমানে সাড়ে ৯ হাজার বন্দি রয়েছে এখানে। ১৩৪ জনের জায়গায় বর্তমানে রয়েছেন ৬০০ মহিলা বন্দি। অতিরিক্ত বন্দির কারণে কারাগারে ঠাঁই নেই দশা। ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বন্দিরা। বন্দিদের চিকিত্সার জন্য একটি কারা হাসপাতাল থাকলেও সেখানে উন্নত চিকিত্সার ব্যবস্থা নেই।
জানা যায়, ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী কাশিমপুর-২ কারাগারে আটক রয়েছেন। তাকে ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোরে গ্রেফতার করা হয়। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের আমল থেকে আটক রয়েছেন। ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু কারাগারে দিন দিন শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তার একটি চোখের অবস্থা খুবই খারাপ। প্রতি সপ্তাহে দু-একবার করে ঢাকার আদালতে আনা-নেয়ায় পিন্টুর শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। গত ২ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও গাড়ি পোড়ানোসংক্রান্ত দুটি মামলায় যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন। জামায়াতের সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী কাশিপুর কারাগারে আটক আছেন। প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ কারাগারে। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক রয়েছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা রয়েছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ। ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ১৭ জুন মতিঝিলে দৈনিক নয়া দিগন্ত কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহানকে পাবনা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। অন্যদিকে বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় ২০০৯ সাল থেকে প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক বিডিআর জওয়ান কারাগারে আটক রয়েছেন। এ ব্যাপারে গতকাল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের আইজি (প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আশরাফুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অপর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, স্থান সংকুলান না হওয়ায় কখনও বন্দিদের একটু কষ্ট সহ্য করে থাকতে হয়, এ কথা সত্য। ভিআইপি বন্দি এবং আদালত থেকে ডিভিশন প্রাপ্তদের তাদের প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা কারা বিধি অনুযায়ী প্রদান করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।সুত্রঃ আমারদেশ
এছাড়া বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী ঐক্য জোটের প্রথম সারির নেতাসহ বিরোধী জোটের তিন হাজারেরও বেশি নেতাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারাগারে আরও আটক রয়েছেন শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানসহ বেশ কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত জওয়ান।
অভিযোগ রয়েছে, নানা অজুহাতে একের পর এক গ্রেফতার করা হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক জোটের নেতাকর্মী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় জামায়াত নেতা ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ারকে। ভিআইপি বন্দিদের জন্য করাগারগুলোতে নেই উপযুক্ত সেল। অপরি-কল্পিতভাবে নির্মিত কারাগারে বন্দিরা মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। বিপুলসংখ্যক বন্দি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। এর ওপর নিরাপত্তার অজুহাতে বন্দিদের এক কারাগার থেকে অন্য কারাগারে স্থানান্তর করায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে।
আটক ব্যক্তিদের স্বজন ও কারা সূত্রে জানা যায়, একুশে আগস্ট ১০ ট্রাক অস্ত্র, কিবরিয়া হত্যা, বিডিআর বিদ্রোহ, যুদ্ধাপরাধ মামলায় আটক হয়ে দীর্ঘদিন ধরে কারা অভ্যন্তরীণ রয়েছেন বিরোধী জোটের ২০ প্রথম সারির নেতা। এরা হচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম, বর্তমান আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএ আজহারুল ইসলাম ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাশেম আলী।
এছাড়া দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই’র সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাবুদ্দিন, উপ-পরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, মাওলানা আবদুস সালাম প্রমুখ।
জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতের আমির, সেক্রেটারি জেনারেল, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় এবং জেলা পর্যায়ের তিন হাজার নেতাকর্মী কারাগারে আছেন। বন্দি রয়েছেন ছাত্রদল, যুবদল, ছাত্রশিবির, হিযবুত তাহরিরের প্রধানসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্রেফতার হয়েছে দুই সহস্রাধিক জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী। নিখোঁজ রয়েছেন ৮০। এ নিয়ে বর্তমান সরকারের ৪৬ মাসের শাসনামলে বিভিন্ন সময় জামায়াত-শিবিরের প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহিলা কর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয় প্রায় ৮০ জনকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের সব কারাগারের পরিবেশ অত্যন্ত নাজুক। অতিরিক্ত বন্দির চাপে সৃষ্টি হয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের। দেশের ৬৬টি কারাগারের ধারণক্ষমতা ২৭ হাজার ২৯১ জন। সেখানে বর্তমানে বন্দির সংখ্যা প্রায় ৭৪ হাজার। মহিলা বন্দির জন্য থাকার জায়গা রয়েছে এক হাজার ১২৮ জনের। সেখানে মহিলা বন্দির সংখ্যা তিন হাজারের চেয়েও বেশি। কারাগারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের। এর ধারণক্ষমতা দুই হাজার ৭০০। অথচ বর্তমানে সাড়ে ৯ হাজার বন্দি রয়েছে এখানে। ১৩৪ জনের জায়গায় বর্তমানে রয়েছেন ৬০০ মহিলা বন্দি। অতিরিক্ত বন্দির কারণে কারাগারে ঠাঁই নেই দশা। ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বন্দিরা। বন্দিদের চিকিত্সার জন্য একটি কারা হাসপাতাল থাকলেও সেখানে উন্নত চিকিত্সার ব্যবস্থা নেই।
জানা যায়, ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী কাশিমপুর-২ কারাগারে আটক রয়েছেন। তাকে ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোরে গ্রেফতার করা হয়। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের আমল থেকে আটক রয়েছেন। ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু কারাগারে দিন দিন শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তার একটি চোখের অবস্থা খুবই খারাপ। প্রতি সপ্তাহে দু-একবার করে ঢাকার আদালতে আনা-নেয়ায় পিন্টুর শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। গত ২ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও গাড়ি পোড়ানোসংক্রান্ত দুটি মামলায় যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন। জামায়াতের সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী কাশিপুর কারাগারে আটক আছেন। প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ কারাগারে। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক রয়েছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা রয়েছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ। ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ১৭ জুন মতিঝিলে দৈনিক নয়া দিগন্ত কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহানকে পাবনা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। অন্যদিকে বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় ২০০৯ সাল থেকে প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক বিডিআর জওয়ান কারাগারে আটক রয়েছেন। এ ব্যাপারে গতকাল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের আইজি (প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আশরাফুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অপর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, স্থান সংকুলান না হওয়ায় কখনও বন্দিদের একটু কষ্ট সহ্য করে থাকতে হয়, এ কথা সত্য। ভিআইপি বন্দি এবং আদালত থেকে ডিভিশন প্রাপ্তদের তাদের প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা কারা বিধি অনুযায়ী প্রদান করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।সুত্রঃ আমারদেশ
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন