বাড়ছে ডাকাতি-অপহরণ
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটছে। খুন, গুম, অপহরণ ও ডাকাতির মতো বড় ধরনের অপরাধের ঘটনা বেড়েই চলেছে। মহাসড়কগুলোতে ডাকাতির মতো ঘটনা কয়েক বছর যাবৎ কমে এলেও এখন আবার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। ঢাকা-কক্সবাজার মহাসড়কে গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন বাসচালকসহ ৩০ যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। এর আগে রাজধানীতে মা ও বোনকে গুলি করে এক শিশু অপহরণের ঘটনা ঘটে। ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। গত কয়েক মাসে রাজধানীতে আরো বেশ কয়েকটি ডাকাতিজনিত খুনের ঘটনা ঘটেছে। দেশজুড়ে এ ধরনের খুন-ডাকাতি বা গুমের ঘটনা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দিয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও মামলা নিয়ে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে, স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে তারা আর মনোযোগ দিতে পারছে না। রাজধানীসহ সারা দেশে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধির এটি প্রধান কারণ। পুলিশকে যদি এভাবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার চলতে থাকে তাহলে পুলিশ ধীরে ধীরে অপরাধ দমনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে পড়বে। কারণ অপরাধীদের দিকে সব সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর রাখতে হয়। সময়ের ব্যবধানে অপরাধীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। অপরাধ ও অপরাধীদের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় পর্যবেক্ষণ না থাকলে অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়। কিন্তু পুলিশের এখন সে সময় নেই। প্রত্যেক থানায় থানায় এখন চলছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী গ্রেফতার অভিযান। বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের নামে পুলিশ এখন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে অনেক সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে অপরাধীরা। পুলিশের রাজনৈতিক ভূমিকার কারণে অপরাধীদের সাথেও ক্ষমতাসীন দলের সম্পর্ক গড়ে উঠছে। রাজধানীতে সংখ্যালঘু পরিবারের শিশুটি অপহরণের সাথে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় এক যুবনেতা ও একজন প্রভাবশালী প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু পুলিশ তাকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতারের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। শুধু তা-ই নয়, অপহরণকারীদের সাথে পুলিশের যোগসূত্র থাকার অভিযোগ উঠেছে। এভাবে পুলিশের শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়ছে।
আমরা মনে করি সারা দেশে যেভাবে অপরাধ বাড়ছে তা বন্ধ করতে হলে যত দ্রুত সম্ভব পুলিশের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের কাজে পুলিশকে ব্যবহার বন্ধ করা জরুরি। না হলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন