নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসকে আবারও পাকড়াও করেছেন অর্থমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ড. ইউনূসই নাকি বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের প্রধান বাধা। ড. ইউনূস বিদেশে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন বলেই নাকি দেশে বিনিয়োগ আসছে না! অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, তাদের আমলে বিনিয়োগ ‘তেমন বাড়েনি’ এবং এফডিআই তথা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগও কমে গেছে। অর্থমন্ত্রী আরও বলেছেন, বিনিয়োগের অভাবে তারা ‘মরে যাচ্ছেন’! আর এজন্য ‘একমাত্র’ দায়ী ড. ইউনূস! একজন ব্যক্তি কীভাবে এত ‘জনপ্রিয়’ কোনো সরকারকে বিপাকে ফেলতে পেরেছেন তারও জবাব দিয়েছেন মিস্টার মুহিত। স্বভাবসুলভ ঢংয়ে ইংরেজিতে বলেছেন, ড. ইউনূসের নাকি ‘ওয়ান্ডারফুল পাবলিসিটি মেশিনারি’ রয়েছে! ড. ইউনূসের কথিত এই মিথ্যা প্রচারণার কারণ জানাতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘উনি’ কোনোভাবেই গ্রামীণ ব্যাংক ছাড়বেন না। এটাই হলো ‘উনার’ সমস্যা।
ড. মুহম্মদ ইউনূসকে আরও অনেকভাবেই ধোয়ামোছা করেছেন অর্থমন্ত্রী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের দীর্ঘ ফর্দও হাজির করেছেন তিনি। কিন্তু সাফল্য তার ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেছে। অর্থমন্ত্রীর কথাগুলোর মধ্য দিয়ে বরং মহাজোট সরকারের ব্যর্থতা ও অক্ষমতাই প্রাধান্যে এসেছে। কারণ, বাস্তবতা হলো, যত ক্ষমতাধরই হোন না কেন, কোনো ব্যক্তি কখনও একটি রাষ্ট্রের বা কোনো সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেন না। এখানে অবশ্য পূর্বশর্ত রয়েছে। সে পূর্বশর্ত হলো, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য সরকারের সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুমতি পাওয়া, কারখানা স্থাপন ও উত্পাদনে যাওয়ার ব্যবস্থা করাসহ বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে মুহিত সাহেবরা কিন্তু প্রথম থেকেই এসব বিষয়ে চরম অবহেলা ও ব্যর্থতা দেখিয়ে চলেছেন। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইলই এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে যায় না। ঘুষও আবার ‘উচ্চ’ পর্যায় থেকে শুরু করে নানাজনকে দিতে হয়। অর্থমন্ত্রী নিজেও স্বীকার করেছেন, ঘুষ লেনদেন হচ্ছে ‘এখনও’। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও শুরুতেই বড় ধরনের ধাক্কা খেয়ে থাকেন। ঘুষের বিনিময়ে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অনুমতি পাওয়া গেলেও এরপর রয়েছে গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যা। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গ্যাসের সংযোগ দেয়া বন্ধ রেখেছে। এই ঢালাও সিদ্ধান্তের কারণে নতুন কোনো কারখানা উত্পাদনে যেতে পারছে না। চালু কারখানাগুলোকে পর্যন্ত বেশিরভাগ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের উত্পাত তো রয়েছেই।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশে বিদেশিরা কোন ভরসায় বিনিয়োগ করতে আসবেন সে জিজ্ঞাসার উত্তর অর্থমন্ত্রীর না জানার কথা নয়। এসব কারণেই এফডিআইসহ বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না, যার ফলে মুহিত সাহেবদের ‘মরে’ যাই-যাই অবস্থা হয়েছে। এখানে ড. মুহম্মদ ইউনূসকে টেনে আনার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। তা সত্ত্বেও অর্থমন্ত্রী যেহেতু বেচারা ড. ইউনূসকেই ‘প্রধান বাধা’ এবং ‘একমাত্র’ দায়ী ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন সেহেতু সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন করা দরকার, কাজে-অকাজে বিদেশ চষে বেড়ানোর জন্য বিখ্যাত হয়ে ওঠা ডা. দীপু মনির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাহলে করছেটা কী? বিদেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরাও কি তাহলে কেবল ঘাসই কেটে বেড়াচ্ছেন? ব্যক্তি ড. ইউনূসের ‘ওয়ান্ডারফুল পাবলিসিটি মেশিনারি’র সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে মহাজোট সরকারের সব মেশিনারি কি তাহলে একেবারে বিকল হয়ে পড়েছে? ডা. দীপু মনি তো শোনা যায় একজন চিকিত্সকও বটেন। ড. ইউনূসের ‘ওয়ান্ডারফুল পাবলিসিটির’ কোনো প্রতিষেধকই কেন দিতে পারছেন না তিনি? বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ-এর মতো সংস্থাগুলোর কাছে হাতজোড় করে ভিক্ষা চাওয়ার মতো কাজ কারবারে অর্থমন্ত্রী নিজেও তো কম খ্যাতি অর্জন করেননি। তিনিও কেন ড. ইউনূসকে প্রতিহত করতে পারছেন না?
বলাবাহুল্য, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সব প্রশ্নের জবাবেই সরকারের ঘুষ-দুর্নীতি, ব্যর্থতা ও অক্ষমতার কথা এসে যায়। আমরা মনে করি, ড. মুহম্মদ ইউনূস কিংবা অন্য কারও ঘাড়ে নিজেদের অপকর্মের দায়দায়িত্ব চাপানোর পরিবর্তে অর্থমন্ত্রীর তথা সরকারের উচিত ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধের জন্য সততার সঙ্গে এমনভাবে ব্যবস্থা নেয়া, বিদেশিরা যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে আস্থা ফিরে পান। সরকারকে একই সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতারও অবসান ঘটাতে হবে। পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা তো করতেই হবে। সব মিলিয়েই এমন আয়োজন নিশ্চিত করা দরকার, যাকে বিনিয়োগবান্ধব বলা যায়। তেমন অবস্থায় ড. ইউনূসের মতো হাজারজন চেষ্টা চালালেও বিদেশি বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবেন না। মুহিত সাহেবরাও ‘মরে’ যাই-যাই হয়ে পড়বেন না। আমরা অবশ্য মোটেও আশান্বিত হতে পারছি না। কারণ, উচিত যেখানে ছিল বিশেষ করে পদ্মাসেতুকেন্দ্রিক ঘটনাপ্রবাহ থেকে
শিক্ষা নেয়া সেখানে সরকার এখনও এর-ওর ওপর ব্যর্থতার দায় চাপানোর ব্যাপারেই
বেশি উত্সাহ দেখিয়ে চলেছে। এর মধ্যে আর যা-ই হোক, ক্ষমতাসীনদের সদিচ্ছার
কোনো প্রমাণ মেলে না।
ড. মুহম্মদ ইউনূসকে আরও অনেকভাবেই ধোয়ামোছা করেছেন অর্থমন্ত্রী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের দীর্ঘ ফর্দও হাজির করেছেন তিনি। কিন্তু সাফল্য তার ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেছে। অর্থমন্ত্রীর কথাগুলোর মধ্য দিয়ে বরং মহাজোট সরকারের ব্যর্থতা ও অক্ষমতাই প্রাধান্যে এসেছে। কারণ, বাস্তবতা হলো, যত ক্ষমতাধরই হোন না কেন, কোনো ব্যক্তি কখনও একটি রাষ্ট্রের বা কোনো সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেন না। এখানে অবশ্য পূর্বশর্ত রয়েছে। সে পূর্বশর্ত হলো, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য সরকারের সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুমতি পাওয়া, কারখানা স্থাপন ও উত্পাদনে যাওয়ার ব্যবস্থা করাসহ বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে মুহিত সাহেবরা কিন্তু প্রথম থেকেই এসব বিষয়ে চরম অবহেলা ও ব্যর্থতা দেখিয়ে চলেছেন। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইলই এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে যায় না। ঘুষও আবার ‘উচ্চ’ পর্যায় থেকে শুরু করে নানাজনকে দিতে হয়। অর্থমন্ত্রী নিজেও স্বীকার করেছেন, ঘুষ লেনদেন হচ্ছে ‘এখনও’। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও শুরুতেই বড় ধরনের ধাক্কা খেয়ে থাকেন। ঘুষের বিনিময়ে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অনুমতি পাওয়া গেলেও এরপর রয়েছে গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যা। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গ্যাসের সংযোগ দেয়া বন্ধ রেখেছে। এই ঢালাও সিদ্ধান্তের কারণে নতুন কোনো কারখানা উত্পাদনে যেতে পারছে না। চালু কারখানাগুলোকে পর্যন্ত বেশিরভাগ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের উত্পাত তো রয়েছেই।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশে বিদেশিরা কোন ভরসায় বিনিয়োগ করতে আসবেন সে জিজ্ঞাসার উত্তর অর্থমন্ত্রীর না জানার কথা নয়। এসব কারণেই এফডিআইসহ বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না, যার ফলে মুহিত সাহেবদের ‘মরে’ যাই-যাই অবস্থা হয়েছে। এখানে ড. মুহম্মদ ইউনূসকে টেনে আনার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। তা সত্ত্বেও অর্থমন্ত্রী যেহেতু বেচারা ড. ইউনূসকেই ‘প্রধান বাধা’ এবং ‘একমাত্র’ দায়ী ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন সেহেতু সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন করা দরকার, কাজে-অকাজে বিদেশ চষে বেড়ানোর জন্য বিখ্যাত হয়ে ওঠা ডা. দীপু মনির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাহলে করছেটা কী? বিদেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরাও কি তাহলে কেবল ঘাসই কেটে বেড়াচ্ছেন? ব্যক্তি ড. ইউনূসের ‘ওয়ান্ডারফুল পাবলিসিটি মেশিনারি’র সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে মহাজোট সরকারের সব মেশিনারি কি তাহলে একেবারে বিকল হয়ে পড়েছে? ডা. দীপু মনি তো শোনা যায় একজন চিকিত্সকও বটেন। ড. ইউনূসের ‘ওয়ান্ডারফুল পাবলিসিটির’ কোনো প্রতিষেধকই কেন দিতে পারছেন না তিনি? বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ-এর মতো সংস্থাগুলোর কাছে হাতজোড় করে ভিক্ষা চাওয়ার মতো কাজ কারবারে অর্থমন্ত্রী নিজেও তো কম খ্যাতি অর্জন করেননি। তিনিও কেন ড. ইউনূসকে প্রতিহত করতে পারছেন না?
বলাবাহুল্য, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সব প্রশ্নের জবাবেই সরকারের ঘুষ-দুর্নীতি, ব্যর্থতা ও অক্ষমতার কথা এসে যায়। আমরা মনে করি, ড. মুহম্মদ ইউনূস কিংবা অন্য কারও ঘাড়ে নিজেদের অপকর্মের দায়দায়িত্ব চাপানোর পরিবর্তে অর্থমন্ত্রীর তথা সরকারের উচিত ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধের জন্য সততার সঙ্গে এমনভাবে ব্যবস্থা নেয়া, বিদেশিরা যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে আস্থা ফিরে পান। সরকারকে একই সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতারও অবসান ঘটাতে হবে। পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা তো করতেই হবে। সব মিলিয়েই এমন আয়োজন নিশ্চিত করা দরকার, যাকে বিনিয়োগবান্ধব বলা যায়। তেমন অবস্থায় ড. ইউনূসের মতো হাজারজন চেষ্টা চালালেও বিদেশি বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবেন না। মুহিত সাহেবরাও ‘মরে’ যাই-যাই হয়ে পড়বেন না। আমরা অবশ্য মোটেও আশান্বিত হতে পারছি না। কারণ, উচিত যেখানে ছিল বিশেষ করে পদ্মাসেতুকেন্দ্রিক ঘটনাপ্রবাহ থেকে
শিক্ষা নেয়া সেখানে সরকার এখনও এর-ওর ওপর ব্যর্থতার দায় চাপানোর ব্যাপারেই
বেশি উত্সাহ দেখিয়ে চলেছে। এর মধ্যে আর যা-ই হোক, ক্ষমতাসীনদের সদিচ্ছার
কোনো প্রমাণ মেলে না।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন