ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের পৌনে চার বছরে ঢাকার বাইরে থেকে প্রকাশিত দু-শ’ সংবাদপত্রের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারের গণমাধ্যম দলন, পত্রিকা পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা তথা বিজ্ঞাপন না পাওয়া, আর্থিক সঙ্কট আর কাগজের (নিউজপ্রিন্ট) দাম বাড়ায় এসব পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হওয়া সংবাদপত্রের বেশিরভাগই ভিন্নমতের। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তি, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়সহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতার অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় গত তিন বছর দশ মাসে অনেক পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে দেয় সরকার। প্রকাশনা বন্ধ করার আগে ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অনেক পত্রিকার কার্যালয়ে ভাংচুর ও সাংবাদিকদের নির্যাতন করে। শাসক দলের নেতাকর্মীদের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, জমি দখল ইত্যাদি এসব অপতত্পরতার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সরকারের রোষানলের শিকার হচ্ছে স্থানীয় সংবাদপত্র। জাতীয় পর্যায়ের মতো স্থানীয় গণমাধ্যমও মহাজোট সরকারের টার্গেট। দৈনিক আমার দেশ-এর অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠনের কয়েক মাস পর অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত হওয়ার অভিযোগে প্রায় একশ’ পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল করে দেয় সরকার। পরে ওই বছর বন্ধ হয় আরও কয়েকটি পত্রিকার প্রকাশনা। ২০১১ সালে পাঁচটি ও চলতি বছর প্রায় পনেরোটি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়। সরকারের বিজ্ঞাপনবৈষম্য ও রোষানলের শিকার হয়ে বন্ধ আছে সারাদেশের অর্ধশত পত্রিকা। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের তথ্য মতে, অর্থনেতিক সঙ্কটের পাশাপাশি কাগজ ও অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় ঢাকার বাইরের সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক মিলিয়ে প্রায় নব্বইটি পত্রিকা বছরখানেক ধরে প্রকাশ হচ্ছে না। নিয়ম অনুযায়ী এসব পত্রিকারও প্রকাশনা বন্ধ বলে জানিয়েছে অধিদফতর। সরকারের গণমাধ্যম দমনের কৌশলের শিকার হয়ে বন্ধ হওয়ার পথে স্থানীয় পর্যায় থেকে প্রকাশিত আরও শতাধিক পত্রিকা। অনলাইন পত্রিকাগুলো নিয়ন্ত্রণে সরকার ‘অনলাইন গণমাধ্যম পরিচালনা নীতিমালা ২০১২’ খসড়া তৈরির পর ঢাকার বাইরের অনলাইন পত্রিকাগুলোর সঙ্গে জড়িতরা আতঙ্কিত। এ নীতিমালা প্রণয়ন হলে সারাদেশ থেকে প্রকাশ হওয়া কয়েকশ’ অনলাইন সংবাদপত্র বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারের গণমাধ্যম দমন নীতির কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া পত্রিকার সাংবাদিকরা বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে জীবনযাপন করছেন।
তথ্য মতে, বাকশাল প্রতিষ্ঠার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরকার প্রবর্তিত ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী স্থানীয় পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হচ্ছে। নানা অজুহাতে অনেক পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে প্রকাশনা বন্ধ রাখছেন জেলা প্রশাসকরা। কোনো কোনো পত্রিকা আদালতের রায়ে আবার প্রকাশের সুযোগ পেলেও অনেক পত্রিকা পুনঃপ্রকাশ হচ্ছে না। এতে পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে ঢাকার বাইরের গণমাধ্যম শিল্প যাত্রা শুরুর পর যে শক্তিশালী অবস্থানে এসে পৌঁছায়, সে অবস্থা এখন ধ্বংসের মুখে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আগে স্থানীয় পত্রিকাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারলেও এখন বেশিরভাগ পত্রিকা অস্তিত্ব সঙ্কটে।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের প্রকাশিত নির্বাচনী ইশতেহারে ‘সব ধরনের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও তথ্যপ্রবাহের অবাধ চলাচল সুনিশ্চিত’ করার কথা বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে প্রতিশ্রুতির উল্টো। একদিকে সরকার পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল করছে, অন্যদিকে আর্থিক সঙ্কটে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক পত্রিকা। আর্থিক সঙ্কটে পতিত হয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া পত্রিকাকে সহায়তা না করে রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকার একের পর পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি দিচ্ছে। গত ৩ জুন জাতীয় সংসদে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও সংস্কৃতি আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘বর্তমান সরকার ৫৫৫টি পত্রিকা প্রকাশনার অনুমতি দেয়। এর মধ্যে ২২২টি দৈনিক ও ৩৩৩টি সাপ্তাহিক। এগুলোর মধ্যে সারাদেশে ৫৩টি পত্রিকা সরকারের মিডিয়াভুক্ত।’ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আবুল কালাম আজাদ সংসদে জানান, ‘৭৫৪টি নতুন পত্রিকার নামের ছাড়পত্র দিয়েছে সরকার।’ ঢালাওভাবে স্থানীয় পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি দিলেও গত জরুরি অবস্থার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া দুইশ’ পত্রিকার মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি বাদে বাকি স্থানীয় পত্রিকাগুলো প্রকাশনার সুযোগ দেয়নি মহাজোট সরকার।
জানা যায়, সরকারদলীয় এক সংসদ সদস্যের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় চলতি বছরের ১৫ মার্চ সিরাজগঞ্জ থেকে প্রকাশিত ‘সীমান্ত বাজার’ ও ‘যমুনা সেতু’ নামের দুটি দৈনিকের প্রকাশনা বাতিল হয়। তখনকার সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে পত্রিকা দুটির মালিককে জানানো হয়, ‘পত্রিকা দুটি নিয়মিত প্রকাশ করা হচ্ছে না। বিষয়টি ডিক্লারেশন ও রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ৯ (৩) (খ) এবং ২৬ ধারার পরিপন্থী হওয়ায় প্রকাশনা বাতিল হয়’। সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত দৈনিক দৃষ্টিপাত-এর প্রকাশনা বাতিল হয় গত ১১ এপ্রিল। জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন করার কারণে পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিল হয়। প্রকাশনা বাতিলের আগে পত্রিকা কার্যালয়ে তাণ্ডব চালায় ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা। সম্পাদককেও হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এর আগে ‘কেন পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিল হবে না’ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চেয়ে পত্রিকার সম্পাদককে চিঠি পাঠান সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক ওই চিঠি পাঠান গত ৪ এপ্রিল। দৃষ্টিপাত-এর প্রকাশনা বাতিলের আদেশের অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে জেলা প্রশাসক পাঠান ১১ এপ্রিল।
ছাত্রলীগ, যুবলীগের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ফরিদপুরের ‘দৈনিক গণসংহতি’র প্রকাশনা সরকার বাতিল করে। গত ২৮ মে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক হেলালুদ্দিন স্বাক্ষরিত এক আদেশে পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিল হয়। পত্রিকাটি অন্য প্রেস থেকে প্রকাশ হওয়ার অভিযোগে প্রকাশনা বাতিল হয়। এরপর ‘গণসংতি’ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল আজম আবদুর রবকে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সদস্য পদ থেকেও বাদ দেয়া হয়।
ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের চাপে তাকে প্রেস ক্লাবের সদস্যপদ থেকে বাদ দেয়া হয়। রাজবাড়ীর ‘সাপ্তাহিক তদন্ত প্রতিবেদন’-এর প্রকাশনা বাতিল হয় চলতি বছরের ৩ জুলাই। ভিন্ন মতের হওয়ায় ২০১০ সালে সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত ‘জাগো মুজাহিদ’-এর প্রকাশনাও বাতিল হয়। একইভাবে ২০১১ সালের মাঝামাঝি বাতিল হয় ‘আল-হুদা’ নামের আরবি ভাষায় প্রকাশিত পত্রিকার প্রকাশনা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক, সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক মিলিয়ে দশটি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে দেন জেলা প্রশাসক। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘দৈনিক আমার চাঁদপুর’, ‘দৈনিক আলোকিত চাঁদপুর’, ‘দৈনিক মতলবের আলো’, ‘সাপ্তাহিক চাঁদপুর কাগজ’, ‘সাপ্তাহিক দিবাচিত্র’, ‘সাপ্তাহিক শাহরাস্তি’, ‘সাপ্তাহিক মতলব কণ্ঠ’, ‘সাপ্তাহিক রুপালি চিত্র’ ও ‘পাক্ষিক চাঁদনগর’। পত্রিকাগুলোর সম্পাদক-প্রকাশকরা ছাপাখানা ও প্রকাশনা অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করেছেন দাবি করে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে প্রথমে অভিযোগ তোলা হয়। সাতদিনের সময় বেঁধে দিয়ে গত ১৪ জুন পত্রিকাগুলোর মালিক ও সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এরপর প্রকাশনা বাতিল করা হয়। বন্ধ হওয়া এসব পত্রিকার মধ্যে কয়েকটি পত্রিকা নানা কাঠখড় পুড়িয়ে আবার চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। সরকারের বিজ্ঞাপন বৈষম্য ও আর্থিক সঙ্কটের কারণে চাঁদপুরের তিন চারটি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেছে। চলতি বছরের শুরুতে চাঁদপুরের ‘দৈনিক মেঘনা বার্তা’র প্রকাশনাও বাতিল করা হয়। পরে পত্রিকাটি আদালতের রায়ে প্রকাশনা শুরু করে। ‘দৈনিক আমার চাঁদপুর’ পত্রিকাটি ভিন্নমতের হওয়ায় মহাজোট সরকারের শুরুতে রোষানলে পড়ে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ায় নিয়মিত প্রকাশ না করতে পেরে একপর্যায়ে সম্পাদক পত্রিকাটির মালিকানা বিক্রি করে দেন। ‘সাপ্তাহিক রুপালী চিত্র’ পত্রিকার প্রকাশনার অনুমতি চাঁদপুর থেকে নেয়া হলেও এটি প্রকাশিত হতো ঢাকা থেকে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী দু’জন শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতাদের ক্ষমতার অপব্যবহার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় গত ৮ আগস্ট কুষ্টিয়ার ‘দৈনিক দিনের খবর’-এর প্রকাশনা বাতিল হয়। কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের রায়ে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়। ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে ‘দিনের খবর’ কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতে রিট করেন। তবে উচ্চ আদালত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের রায় বহাল রাখেন। ফলে পত্রিকাটি আর প্রকাশ হচ্ছে না।
মহাজোটের সাড়ে তিন বছরে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন না হওয়ার চিত্র তুলে ধরায় গত ৩১ আগস্ট বাগেরহাট থেকে প্রকাশিত দুটি পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল হয়। এগুলো হলো জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার সাপ্তাহিক ‘পানগুছি’ ও পাক্ষিক ‘মোড়েলগঞ্জ বার্তা’। ‘৭৩ সালের আইন অনুযায়ী পত্রিকা দুটির প্রকাশনা বাতিল হয় বলে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দাবি।
জানা যায়, পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল করতে সরকার ‘৭৩ সালের আইনের ব্যবহার করলেও ওই আইন অমান্য করলেও দলীয় বিবেচনায় অনেক পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমনকি ওই আইন অনুযায়ী বাতিল হওয়া পত্রিকা প্রকাশের অনুমতিও দিচ্ছে। গত জরুরি অবস্থার তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বাতিল হওয়া ঝালকাঠির ‘দৈনিক অজানা বার্তা’ ও ‘সাপ্তাহিক অজানা খবর’-এর প্রকাশনা পুনর্বহাল করে মহাজোট সরকার। ২০০৭ সালে তখনকার জেলা প্রশাসক পত্রিকা দুটির প্রকাশনা বাতিল করেন। একইভাবে বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বরিশাল থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক বিপ্লবী বাংলাদেশ’-এর প্রকাশনা ২০০৮ সালে বাতিল করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালে পত্রিকাটি প্রকাশের অনুমতি দেয়। ১৯৯১ সালে ‘সাপ্তাহিক বিপ্লবী বাংলাদেশ’ বরিশাল থেকে দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এরপর নিয়মিত কয়েক বছর পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত থাকলেও আর্থিক দৈন্যের কারণে এর প্রকাশনা বন্ধ থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সরকারের গণমাধ্যম দমন-পীড়নের বেশি শিকার হচ্ছে স্থানীয় সংবাদপত্র ও সাংবাদিকরা। সারাদেশে ঘটছে স্থানীয় সংবাদপত্র দলন, সাংবাদিক নির্যাতন, হত্যা, লাঞ্ছনা, হামলা ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনা। ক্ষমতাসীনদের দমন নীতিতে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বেশি আক্রান্ত হয় বলেও বিশেষজ্ঞদের মত। সরকারের সমালোচনা করায় একাত্তরে স্বাধীনতা লাভের ১২ মাসের মধ্যে ঢাকার বাইরের অনেক পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে সরকার। ‘৭২ সালে সরকারের বন্ধ করে দেয়া পত্রিকার তালিকায় ঢাকার বাইরের পত্রিকাও ছিল। ’৭৩ সালে সরকারের বন্ধ করে দেয়া ১০৮টি পত্রিকার মধ্যেও স্থানীয় পত্রিকা ছিল অনেক। ’৭৪ সালে সরকারি নির্দেশ মেনে সংবাদ না ছাপানোয় যে আটটি পত্রিকার ওপর খড়গ নেমে আসে সেগুলোর মধ্যেও তিনটি ছিল ঢাকার বাইরের। ‘৭৫ সালের ১৬ জুন সরকার ২২২টি পত্রিকার প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে। সেদিন ঢাকার বাইরের সব পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ সরকারের ৯ বছরের সামরিক শাসনের মধ্যে ঢাকার বাইরে থেকে প্রকাশিত দৈনিক ও সাপ্তাহিক মিলিয়ে প্রায় ৪০টি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।
জানা যায়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠনের কয়েক মাস পর অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত হওয়ার অভিযোগে প্রায় একশ’ পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল করে দেয় সরকার। পরে ওই বছর বন্ধ হয় আরও কয়েকটি পত্রিকার প্রকাশনা। ২০১১ সালে পাঁচটি ও চলতি বছর প্রায় পনেরোটি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়। সরকারের বিজ্ঞাপনবৈষম্য ও রোষানলের শিকার হয়ে বন্ধ আছে সারাদেশের অর্ধশত পত্রিকা। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের তথ্য মতে, অর্থনেতিক সঙ্কটের পাশাপাশি কাগজ ও অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় ঢাকার বাইরের সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক মিলিয়ে প্রায় নব্বইটি পত্রিকা বছরখানেক ধরে প্রকাশ হচ্ছে না। নিয়ম অনুযায়ী এসব পত্রিকারও প্রকাশনা বন্ধ বলে জানিয়েছে অধিদফতর। সরকারের গণমাধ্যম দমনের কৌশলের শিকার হয়ে বন্ধ হওয়ার পথে স্থানীয় পর্যায় থেকে প্রকাশিত আরও শতাধিক পত্রিকা। অনলাইন পত্রিকাগুলো নিয়ন্ত্রণে সরকার ‘অনলাইন গণমাধ্যম পরিচালনা নীতিমালা ২০১২’ খসড়া তৈরির পর ঢাকার বাইরের অনলাইন পত্রিকাগুলোর সঙ্গে জড়িতরা আতঙ্কিত। এ নীতিমালা প্রণয়ন হলে সারাদেশ থেকে প্রকাশ হওয়া কয়েকশ’ অনলাইন সংবাদপত্র বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারের গণমাধ্যম দমন নীতির কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া পত্রিকার সাংবাদিকরা বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে জীবনযাপন করছেন।
তথ্য মতে, বাকশাল প্রতিষ্ঠার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরকার প্রবর্তিত ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী স্থানীয় পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হচ্ছে। নানা অজুহাতে অনেক পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে প্রকাশনা বন্ধ রাখছেন জেলা প্রশাসকরা। কোনো কোনো পত্রিকা আদালতের রায়ে আবার প্রকাশের সুযোগ পেলেও অনেক পত্রিকা পুনঃপ্রকাশ হচ্ছে না। এতে পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে ঢাকার বাইরের গণমাধ্যম শিল্প যাত্রা শুরুর পর যে শক্তিশালী অবস্থানে এসে পৌঁছায়, সে অবস্থা এখন ধ্বংসের মুখে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আগে স্থানীয় পত্রিকাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারলেও এখন বেশিরভাগ পত্রিকা অস্তিত্ব সঙ্কটে।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের প্রকাশিত নির্বাচনী ইশতেহারে ‘সব ধরনের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও তথ্যপ্রবাহের অবাধ চলাচল সুনিশ্চিত’ করার কথা বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে প্রতিশ্রুতির উল্টো। একদিকে সরকার পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল করছে, অন্যদিকে আর্থিক সঙ্কটে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক পত্রিকা। আর্থিক সঙ্কটে পতিত হয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া পত্রিকাকে সহায়তা না করে রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকার একের পর পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি দিচ্ছে। গত ৩ জুন জাতীয় সংসদে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও সংস্কৃতি আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘বর্তমান সরকার ৫৫৫টি পত্রিকা প্রকাশনার অনুমতি দেয়। এর মধ্যে ২২২টি দৈনিক ও ৩৩৩টি সাপ্তাহিক। এগুলোর মধ্যে সারাদেশে ৫৩টি পত্রিকা সরকারের মিডিয়াভুক্ত।’ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আবুল কালাম আজাদ সংসদে জানান, ‘৭৫৪টি নতুন পত্রিকার নামের ছাড়পত্র দিয়েছে সরকার।’ ঢালাওভাবে স্থানীয় পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি দিলেও গত জরুরি অবস্থার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া দুইশ’ পত্রিকার মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি বাদে বাকি স্থানীয় পত্রিকাগুলো প্রকাশনার সুযোগ দেয়নি মহাজোট সরকার।
জানা যায়, সরকারদলীয় এক সংসদ সদস্যের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় চলতি বছরের ১৫ মার্চ সিরাজগঞ্জ থেকে প্রকাশিত ‘সীমান্ত বাজার’ ও ‘যমুনা সেতু’ নামের দুটি দৈনিকের প্রকাশনা বাতিল হয়। তখনকার সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে পত্রিকা দুটির মালিককে জানানো হয়, ‘পত্রিকা দুটি নিয়মিত প্রকাশ করা হচ্ছে না। বিষয়টি ডিক্লারেশন ও রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ৯ (৩) (খ) এবং ২৬ ধারার পরিপন্থী হওয়ায় প্রকাশনা বাতিল হয়’। সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত দৈনিক দৃষ্টিপাত-এর প্রকাশনা বাতিল হয় গত ১১ এপ্রিল। জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন করার কারণে পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিল হয়। প্রকাশনা বাতিলের আগে পত্রিকা কার্যালয়ে তাণ্ডব চালায় ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা। সম্পাদককেও হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এর আগে ‘কেন পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিল হবে না’ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চেয়ে পত্রিকার সম্পাদককে চিঠি পাঠান সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক ওই চিঠি পাঠান গত ৪ এপ্রিল। দৃষ্টিপাত-এর প্রকাশনা বাতিলের আদেশের অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে জেলা প্রশাসক পাঠান ১১ এপ্রিল।
ছাত্রলীগ, যুবলীগের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ফরিদপুরের ‘দৈনিক গণসংহতি’র প্রকাশনা সরকার বাতিল করে। গত ২৮ মে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক হেলালুদ্দিন স্বাক্ষরিত এক আদেশে পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিল হয়। পত্রিকাটি অন্য প্রেস থেকে প্রকাশ হওয়ার অভিযোগে প্রকাশনা বাতিল হয়। এরপর ‘গণসংতি’ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল আজম আবদুর রবকে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সদস্য পদ থেকেও বাদ দেয়া হয়।
ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের চাপে তাকে প্রেস ক্লাবের সদস্যপদ থেকে বাদ দেয়া হয়। রাজবাড়ীর ‘সাপ্তাহিক তদন্ত প্রতিবেদন’-এর প্রকাশনা বাতিল হয় চলতি বছরের ৩ জুলাই। ভিন্ন মতের হওয়ায় ২০১০ সালে সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত ‘জাগো মুজাহিদ’-এর প্রকাশনাও বাতিল হয়। একইভাবে ২০১১ সালের মাঝামাঝি বাতিল হয় ‘আল-হুদা’ নামের আরবি ভাষায় প্রকাশিত পত্রিকার প্রকাশনা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক, সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক মিলিয়ে দশটি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে দেন জেলা প্রশাসক। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘দৈনিক আমার চাঁদপুর’, ‘দৈনিক আলোকিত চাঁদপুর’, ‘দৈনিক মতলবের আলো’, ‘সাপ্তাহিক চাঁদপুর কাগজ’, ‘সাপ্তাহিক দিবাচিত্র’, ‘সাপ্তাহিক শাহরাস্তি’, ‘সাপ্তাহিক মতলব কণ্ঠ’, ‘সাপ্তাহিক রুপালি চিত্র’ ও ‘পাক্ষিক চাঁদনগর’। পত্রিকাগুলোর সম্পাদক-প্রকাশকরা ছাপাখানা ও প্রকাশনা অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করেছেন দাবি করে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে প্রথমে অভিযোগ তোলা হয়। সাতদিনের সময় বেঁধে দিয়ে গত ১৪ জুন পত্রিকাগুলোর মালিক ও সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এরপর প্রকাশনা বাতিল করা হয়। বন্ধ হওয়া এসব পত্রিকার মধ্যে কয়েকটি পত্রিকা নানা কাঠখড় পুড়িয়ে আবার চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। সরকারের বিজ্ঞাপন বৈষম্য ও আর্থিক সঙ্কটের কারণে চাঁদপুরের তিন চারটি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেছে। চলতি বছরের শুরুতে চাঁদপুরের ‘দৈনিক মেঘনা বার্তা’র প্রকাশনাও বাতিল করা হয়। পরে পত্রিকাটি আদালতের রায়ে প্রকাশনা শুরু করে। ‘দৈনিক আমার চাঁদপুর’ পত্রিকাটি ভিন্নমতের হওয়ায় মহাজোট সরকারের শুরুতে রোষানলে পড়ে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ায় নিয়মিত প্রকাশ না করতে পেরে একপর্যায়ে সম্পাদক পত্রিকাটির মালিকানা বিক্রি করে দেন। ‘সাপ্তাহিক রুপালী চিত্র’ পত্রিকার প্রকাশনার অনুমতি চাঁদপুর থেকে নেয়া হলেও এটি প্রকাশিত হতো ঢাকা থেকে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী দু’জন শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতাদের ক্ষমতার অপব্যবহার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় গত ৮ আগস্ট কুষ্টিয়ার ‘দৈনিক দিনের খবর’-এর প্রকাশনা বাতিল হয়। কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের রায়ে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়। ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে ‘দিনের খবর’ কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতে রিট করেন। তবে উচ্চ আদালত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের রায় বহাল রাখেন। ফলে পত্রিকাটি আর প্রকাশ হচ্ছে না।
মহাজোটের সাড়ে তিন বছরে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন না হওয়ার চিত্র তুলে ধরায় গত ৩১ আগস্ট বাগেরহাট থেকে প্রকাশিত দুটি পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল হয়। এগুলো হলো জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার সাপ্তাহিক ‘পানগুছি’ ও পাক্ষিক ‘মোড়েলগঞ্জ বার্তা’। ‘৭৩ সালের আইন অনুযায়ী পত্রিকা দুটির প্রকাশনা বাতিল হয় বলে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দাবি।
জানা যায়, পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল করতে সরকার ‘৭৩ সালের আইনের ব্যবহার করলেও ওই আইন অমান্য করলেও দলীয় বিবেচনায় অনেক পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমনকি ওই আইন অনুযায়ী বাতিল হওয়া পত্রিকা প্রকাশের অনুমতিও দিচ্ছে। গত জরুরি অবস্থার তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বাতিল হওয়া ঝালকাঠির ‘দৈনিক অজানা বার্তা’ ও ‘সাপ্তাহিক অজানা খবর’-এর প্রকাশনা পুনর্বহাল করে মহাজোট সরকার। ২০০৭ সালে তখনকার জেলা প্রশাসক পত্রিকা দুটির প্রকাশনা বাতিল করেন। একইভাবে বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বরিশাল থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক বিপ্লবী বাংলাদেশ’-এর প্রকাশনা ২০০৮ সালে বাতিল করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালে পত্রিকাটি প্রকাশের অনুমতি দেয়। ১৯৯১ সালে ‘সাপ্তাহিক বিপ্লবী বাংলাদেশ’ বরিশাল থেকে দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এরপর নিয়মিত কয়েক বছর পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত থাকলেও আর্থিক দৈন্যের কারণে এর প্রকাশনা বন্ধ থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সরকারের গণমাধ্যম দমন-পীড়নের বেশি শিকার হচ্ছে স্থানীয় সংবাদপত্র ও সাংবাদিকরা। সারাদেশে ঘটছে স্থানীয় সংবাদপত্র দলন, সাংবাদিক নির্যাতন, হত্যা, লাঞ্ছনা, হামলা ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনা। ক্ষমতাসীনদের দমন নীতিতে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বেশি আক্রান্ত হয় বলেও বিশেষজ্ঞদের মত। সরকারের সমালোচনা করায় একাত্তরে স্বাধীনতা লাভের ১২ মাসের মধ্যে ঢাকার বাইরের অনেক পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে সরকার। ‘৭২ সালে সরকারের বন্ধ করে দেয়া পত্রিকার তালিকায় ঢাকার বাইরের পত্রিকাও ছিল। ’৭৩ সালে সরকারের বন্ধ করে দেয়া ১০৮টি পত্রিকার মধ্যেও স্থানীয় পত্রিকা ছিল অনেক। ’৭৪ সালে সরকারি নির্দেশ মেনে সংবাদ না ছাপানোয় যে আটটি পত্রিকার ওপর খড়গ নেমে আসে সেগুলোর মধ্যেও তিনটি ছিল ঢাকার বাইরের। ‘৭৫ সালের ১৬ জুন সরকার ২২২টি পত্রিকার প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে। সেদিন ঢাকার বাইরের সব পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ সরকারের ৯ বছরের সামরিক শাসনের মধ্যে ঢাকার বাইরে থেকে প্রকাশিত দৈনিক ও সাপ্তাহিক মিলিয়ে প্রায় ৪০টি পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন