মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৩

আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলেও হারবে


ড. আব্দুল হাই তালুকদার

ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য ইকোনমিস্ট লিখেছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলেও বাংলাদেশ হারবে। মন্তব্যটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বয়স দুই দশকের বেশি। এর মধ্যে রাজনীতিকদের চাতুর্য ও কৌশলের কাছে বারবার গণতন্ত্র বিপদগ্রস্ত হচ্ছে। রাজনীতিবিদেরা গণতন্ত্রকে বিকশিত করতে কার্যকর ও ফলপ্রসূ কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো সবল ও বিকাশলাভ করতে পারেনি। যেসব প্রতিষ্ঠান গণতন্ত্র বিকাশে কার্যকর ও ফলপ্রসূ অবদান রাখার কথা সেগুলো নামসর্বস্ব^, প্যাডসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠতে না দিয়ে ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে। সে কারণে নির্বাচন কমিশনকে নিজ অধিকার ও মতা বিলিয়ে দিতে দেখে দেশের মানুষ একযোগে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। অবশ্য সঠিক জায়গায় সঠিক ব্যক্তি জায়গা না পাওয়াও একটি কারণ। যতটুকু স্বাধীনতা ও মতা আছে মেরুদণ্ডহীন দুর্বল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন আমলাদের নিয়োগে তা-ও অনুশীলন করতে পারেন না। সবল ব্যক্তিত্বের অধিকারী ব্যক্তিরা অর্পিত স্বাধীনতা ও মতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করেন এবং প্রাপ্য ন্যায্য অধিকার ও মতা আদায় করে নিতে সচেষ্ট থাকেন। অযোগ্য লোকজনকে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে নির্বাচন করে দায়িত্ব দেয়ায় তারা কর্তার ইচ্ছায় কর্ম করতে সদা সচেষ্ট থাকেন। গত পাঁচ বছরে দলীয়করণের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে নিয়োগ দেয়ায় জনগণ তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত আচরণ ও সেবাবঞ্চিত হচ্ছে। সে কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্লজ্জ সিলেকশনে সরকার গঠনের মতো ১৫৪ জন এমপি নির্বাচিত হলেও নির্বাচন কমিশনারেরা কোনো রকম বিব্রত না হয়ে স্বপদে অধিষ্ঠিত থাকেন।
নির্বাচন কমিশন আরিক অর্থে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হলেও কাজকর্মে স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের সামান্যতম নিদর্শন দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনারেরা যেন পুতুল। সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছায় পুতুলের মতো নাচছে। এবারের মতো বাংলাদেশের ইতিহাসে সরকারের আজ্ঞাবহ ও দাশানুদাশ মনোবৃত্তির অধিকারী কোনো কমিশন দেখা যায়নি। কমিশনের যতটুকু অধিকার আছে তা-ও বিলিয়ে দিয়ে কত অধিক পরিমাণ সরকারে আজ্ঞাবহ হওয়া যায় তার প্রতিযোগিতা চলছে। তফসিল ঘোষণার আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বললেন, কয়েক দিন দেরি করা হবে। সংলাপ হচ্ছে, দেখা যাক দুই দলের মধ্যে কোনো সমঝোতা হয় কি না। তারানকোর দূতিয়ালি চলছিল। মানুষ অনেকটা আশান্বিত হয়ে অধীর আগ্রহে সমঝোতার জন্য উদগ্রীব হয়েছিল। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অপোর কথা বলে হঠাৎ করে কার ইশারায় পর দিন তফসিল ঘোষণা করলেন। সমঝোতা ছাড়া তফসিল ঘোষণা করায় মানুষ হতাশ ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। শুধু উদ্বিগ্ন নন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সরকারি নেতারা ও নির্বাচন কমিশন। তারা দেশের ভয়াবহ ও সঙ্কটজনক পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে শক্তি প্রয়োগ করে নির্বাচন অনুষ্ঠানে অগ্রসরমান। শক্তি প্রয়োগ করে মানুষের আকাক্সা ও প্রয়োজনকে দমন করা যায় না এ কথাটি কর্তাব্যক্তিরা অস্বীকার করছেন।
তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি তথা আঠারোদলীয় জোট ও দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি। দু-চারটি নামসর্বস্ব ও প্যাডসর্বস্ব দলকে নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনয়নপত্র জমা দেয়। জাতীয় পার্টি মনোনয়পত্র জমা দিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যথাসময়ে প্রেসিডেন্ট এরশাদ নিজে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার আবেদন করেন ও দলীয় নেতাকর্মীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। তার নির্দেশ মেনে অনেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন এরশাদের আবেদন গ্রহণ করেননি। তিনি দলীয় চেয়ারম্যান হিসেবে লাঙ্গল প্রতীক কাউকে বরাদ্দ না দেয়ার অনুরোধ করে কমিশনকে পত্র দেন। তার আবেদন অগ্রাহ্য করে লাঙ্গল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রত্যাহারের তারিখ অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও সমঝোতা করে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ দেয়া হলেও জাতীয় পার্টির আবেদন নিবেদন সত্ত্বেও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করা হয়নি। নির্বাচন কমিশন চোখ বন্ধ করে সরকারের হুকুম তামিলে ব্যস্ত। ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেও কমিশনকে পুলকিত মনে হয়। যে ১৪৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তার বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের বিদ্্েরাহী প্রার্থী; অর্থাৎ আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের নির্বাচন অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে ৫ জানুয়ারি। বেগম জিয়া একে নির্বাচন কমিশনের দ্বারা আওয়ামী লীগের জন্য আওয়ামী লীগের নির্বাচন বলে অভিহিত করেছেন। এরশাদকে জোর করে নির্বাচনের আনার জন্য অনেক নাটক দেশবাসী প্রত্য করছেন। নির্লজ্জ নাটকের মহড়া দেখে দেশবাসীর সাথে বিশ্ববাসীও হাসাহাসি করছেন।
ফাঁকা মাঠে গোল দেয়া খেলার নিয়মে পড়ে না। প্রতিদ্বন্দ্বী অনুপস্থিত হলে খেলা বন্ধ করা হয় অথবা ওয়াক ওভার দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ ফাঁকা মাঠ পেয়ে গোল দিয়ে আনন্দ করছে ও সেসব বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে গর্বভরে প্রকাশ করছে। এভাবে গণতন্ত্র বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের বিষময় ফল আঁচ অনুমান করতে না পেরে সরকার বাহাদুরি করছে। ইইউ, কমনওয়েলথ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্ধেকের বেশি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া দেখে নির্বাচনে পর্যবেক পাঠাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। সবজান্তা প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলছেন, পর্যবেক না পাঠালেও নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। দেশীয় পর্যবেকেরাও পর্যবেণে অনীহা প্রকাশ করছে। সরকার এসবকে মোটেই গুরুত্ব না দিয়ে নানারকম কূটযুক্তি উপস্থাপন করছে। বিরোধী দলহীন নির্বাচনকে সবাই একবাক্যে তামাশার নির্বাচন বলছেন ও অনেক একে কোনো নির্বাচনই বলতে চাচ্ছেন না। সরকারের লোকেরা একে নিয়ম রার নির্বাচন বলছেন ও বৈধতা দাবি করছেন। অংশগ্রহণমূলক প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান হলো গণতন্ত্রের চালিকাশক্তি। একদলীয় নির্বাচনকে কোনো দেশে কোনোকালে নির্বাচন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৪ জন নির্বাচিত হওয়ায় গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘটেছে। এরূপ নির্বাচন দেশ-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। সরকারের কর্মকাণ্ড পরিচালনার নৈতিক অধিকার থাকবে না। পাঁচ কোটি ভোটারকে অধিকারবঞ্চিত করে সরকার আনন্দ-উল্লাসে থাকলেও ওই ভোটারেরা কিন্তু খুবই দুঃখ প্রকাশ করবে।
সরকার সংলাপ বিষয়ে কোনো সময় আন্তরিকতার পরিচয় দেয়নি। গত ২৪ নভেম্বরের সংবাদ সম্মেলনে বেগম জিয়া সঠিক বলেছেন, বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা অবৈধ। সংলাপের নামে সরকার জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। সংলাপ, সংলাপ খেলার পর সরকার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে একটি নির্বাচনী নাটক মঞ্চস্থ করতে চলেছে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করবে ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে মতায় টিকে থাকার চেষ্টা করবে। সরকারের এসব তামাশাপূর্ণ কর্মকাণ্ড দেখে বিদেশীরা ইতোমধ্যে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। অবৈধ সরকারের সাথে তারা কতটা সম্পর্ক রাখে সেটি এখন দেখার বিষয়। এক স্বনামধন্য ব্যারিস্টার বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ মতায় এলে এ রকম হয়। তার কথাটি সম্পূর্ণ সত্য। সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনে আজীবন মতায় থাকার নেশায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়কপদ্ধতি তুলে দিয়ে সঙ্কট ডেকে এনেছেন। ব্যবস্থাটি পুনঃপ্রবর্তনের দাবিতে বিরোধী দল সংগ্রাম করে চলেছে। আন্দোলন সংগ্রামে মানুষের জীবন ও সম্পদের অপূরণীয় তি হচ্ছে। সরকার মোটেই বিচলিত নয়। তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই। অনেকে বলেছেন বেগম জিয়া যেহেতু তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হতে চান। কেউ বলছেন, অবৈধ পথে শত শত কোটি টাকার সম্পদকে বৈধ করতে আর একবার মতায় যাওয়া চাই। আহত, নিহত, আহাজারি শুনার অবকাশ কোথায়? ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধাপরাধীদের রায়কে নির্বাচনের সময় দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। জঙ্গি দমনের নামে পাখির মতো গুলি করে নিরীহ মানুষ খুন করা হচ্ছে। গুলি থেকে নারী, পুরুষ বাদ যাচ্ছে না, এমনকি শিশু ও স্কুলের ছাত্র পর্যন্ত রা পাচ্ছে না। আগুনে দগ্ধ হয়ে কত মানুষ হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। সরকার ঘাতক শনাক্ত করতে ব্যর্থ। নিরপে তদন্তে অপরাধী শনাক্ত করার বদলে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপিয়ে সরকার দায়িত্ব এড়াতে চাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতিতে মানুষের জীবন-জীবিকা ঝুঁকিপূর্ণ। মানুষের জীবনের স্বস্তি দিতে সরকার শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ।
অনেকে বলছেন, বেগম জিয়া নির্বাচনে অংশ নিলে জনগণ তাকে মতায় বসাতেন। কথাটি যুক্তিযুক্ত মনে হয় না। তিনি আন্তরিকতার সাথে সমঝোতায় আগ্রহ প্রকাশ করে ব্যর্থ হয়েছেন। এক ইঞ্চিও ছাড় দিতে রাজি না হওয়ায় সরকারের দুরভিসন্ধি ধরা পড়েছে। নির্বাচনে কারচুপির রেকর্ড আওয়ামী লীগের ভালো না। ৭৩ সালে বেশির ভাগ আসনে বিজয়ী হয়েও      অন্তত পাঁচটি আসন জোর করে ছিনিয়ে নেয়া হয়। সখীপুর উপনির্বাচনের কারচুপি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কথায় মাগুরা উপনির্বাচনের ১০ গুণ হয়েছিল। আরো অনেক উদাহরণ দেয়া যায়। প্রয়োজনে তারা ছলে বলে কৌশলে বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারে। পাঁচ বছরে সম্পদের পাহাড় গড়াকে অর্থমন্ত্রী বলছেন মতায় থাকলে সম্পদ বাড়বেই। নির্বাচনে কারচুপির পর তারা বলতে পারতেন মতায় থাকলে একটু-আধটু কারচুপি হতেই পারে। তবে এটি উপো করা উচিত। দলীয়কৃত পুলিশ ও সাজানো প্রশাসনে পরিচালিত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে বেগম জিয়া অত্যন্ত বিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের সংগ্রাম বৃথা যাবে না। বিজয় হবেই।
এক জায়গায় সরকার অবশ্য খুবই দতার পরিচয় দিয়েছে। বিরোধী দল দমনে সরকার যথেষ্ট পারদর্শিতা প্রদর্শন করেছে। ৬০-৭০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে জেলখানা ভরাট করা হয়েছে। জামায়াতের দোষ দেয়া হলেও গাড়ি পোড়ানো, আগুন দেয়া প্রভৃতি বানোয়াট মামলায় বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের রিমান্ডে নিয়ে অত্যাচার-নির্যাতনের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বেশুমার মামলা ও আসামির তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করা হচ্ছে। দমনপীড়ন চালিয়ে সরকার মতায় ফেরা ও টিকে থাকার ফন্দিফিকির অব্যাহত রেখেছে। এভাবেই ১৯৭৫ সালে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে ও চারটি পত্রিকা বাদে সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে বাকশাল কায়েম করে আজীবন মতায় টিকে থাকার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই সময় বিরোধী দল ছিল না। আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে জাসদ গঠন করা হয়েছিল। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে জাসদের শাজাহান সিরাজ, মেজর জলিল, রাশেদ খান মেনন ও ন্যাপের আলীম আলরাজীসহ অন্তত নির্বাচিত পাঁচজনকে জোর করে পরাজিত করানো হয়। রীবাহিনী দিয়ে জাসদের হাজার হাজার কর্মীকে খুন করা হয়। তবে জনগণের প্রতিরোধের কাছে মতা চিরস্থায়ী করা যায়নি। ১৯৭৫-এর দুঃখজনক ঘটনার পর আওয়ামী লীগ প্রায় নিস্তেজ নিঃশেষ হতে চলেছিল। ২২ বছর মতার বাইরে থেকে জামায়াতের সহযোগিতায় তত্ত্বাবধায়কপদ্ধতি প্রবর্তন করে নিয়ে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে মতা পায়। এবার মতায় এসে আওয়ামী লীগ বীরবিক্রমে বিরোধী দল নিধনে সর্বশক্তি নিয়োগ করে। তত্ত্বাবধায়কপদ্ধতি তুলে নিজ অধীনে নিজে নির্বাচত হয়ে প্রধানমন্ত্রী আবার মতায় ফিরে আসতে চান। এ কাজে হয়তো তিনি সফল হবেন। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে মতা কারো চিরস্থায়ী নয়। একবার মতা চলে গেলে মতায় ফিরে আসতে আওয়ামী লীগের জন্য কঠিন হবে। জনগণ লেন্দুপ দর্জির মতো সেবাদাস সরকার চায় না। তাই বলছি, আওয়ামী লীগ স্বল্পমেয়াদে জিতবে, তিগ্রস্ত হবে দীর্ঘ মেয়াদে। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। দীর্ঘ ৬৩ বছর ধরে যে দল গণতন্ত্রের জন্য লড়াই সংগ্রাম করে আসার দাবি করে আসছে এবার তারা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে গিয়ে এবারো বাকশাল গঠনের মতো কলঙ্কের তিলক নিতে চলেছে। আওয়ামী লীগের যে কলঙ্কতিলক পরবে তা মুছতে বহু সময় লাগবে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ও নৈতিক উভয় দিক দিয়ে হারবে। ১৫৪ জনের বিজয় আওয়ামী লীগের নিঃসঙ্গ নির্দেশক। তাই এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, আওয়ামী লীগের বিজয়ে দেশ হারবে না, জিতেও হারবে আওয়ামী লীগ।


 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads