হরতাল-অবরোধ-আন্দোলন-সংগ্রামের শেষ পর্যায়ে গণতন্ত্রের জন্য পদযাত্রা বা মার্চ ফর ডেমোক্রেসি-এর ডাক দেয়া হয়েছে। সবার নজর এখন ঢাকার দিকে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যাত্রার দিকে। আর একদিন পরেই ২৯ ডিসেম্বর রোববার রাজধানী ঢাকায় বিএনপি-জামায়াতসহ সম্মিলিত বিরোধী দলের আহ্বানে অনুষ্ঠিত হবে একদলীয় নির্বাচন বাতিলের দাবিতে এবং জনতার ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে এই সর্বাত্মক কর্মসূচি।
বাংলাদেশে যে একদলীয় নির্বাচন ও অগণতান্ত্রিক ধারা চলছে, তার বিরুদ্ধে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশবাসী সর্বাত্মক আন্দোলন করছেন। হরতাল-অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর বর্তমান সরকারের প্রতি দেশব্যাপী অনাস্থা দেখে বলেছেন, এই সরকার টিকে আছে কেবল ঢাকায়। এখন জনতা এই ঢাকার দিকে ছুটছে সামনের রোববারের মার্চ ফর ডেমোক্রেসি পদযাত্রায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫ জানুয়ারির ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলের দাবিতে এটাই বিরোধীদের চূড়ান্ত কর্মসূচি। বিএনপি-জামায়াতসহ আন্দোলনরত প্রধান দলগুলোর পক্ষ থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এই আন্দোলনের আহ্বানে সাবেক প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরীর বিকল্পধারা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের জাতীয় পার্টি, বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তমের কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ, আসম আবদুর রবের জাসদসহ গণতন্ত্রমনা বহু সংগঠন ও দল সমর্থন জানিয়েছে। ফলে মার্চ ফর ডেমোক্রেসি সরকার বিরোধী ব্যাপক আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। সবাই মিলে সরকার ও একদলীয় নির্বাচনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী জনতার ঢল নামাতে চায়।
কেন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য পদযাত্রা করতে হচ্ছে? এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলেও উত্তরটি কারও কাছে অজানা নয়। বেগম খালেদা জিয়া গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে ধারাবাহিক আন্দোলনের শেষ ধাপে কেন গণতন্ত্রের জন্য পদযাত্রার ডাক দিয়েছেন, সেটার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন। তার বক্তব্য সুলিখিত, সব্যাখ্যাত, তথ্য ও যুক্তিপূর্ণ। এই ব্যাপারে নতুন করে আর কিছুই বলার নেই। বস্তুতপক্ষে, যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা এখন চলছে, সেটার ব্যাপারে দেশ-বিদেশের আপত্তি নতুন কিছু নয়। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানুষের বাক-ব্যক্তি-সাংবিধানিক নিরাপত্তা ও অধিকারের দাবিতেই বিরোধীদের চলমান আন্দোলন। বিশেষত, গণতন্ত্রকে রক্ষার প্রয়োজনে এবং গণমানুষের ভোটের অধিকার বাঁচাতে একান্ত বাধ্য হয়েই এরূপ আন্দোলন-সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে বিরোধী দলকে।
প্রসঙ্গত, সবাইকে একথা মনে রাখতে হবে যে, গণতন্ত্রকে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন বলা হলেও আসলে সেটা সংখ্যালঘুর শাসন। বিশেষ করে প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রে যে ৩০০ জন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন, তারা সবসময় সংখ্যাগরিষ্ঠ হবেন, এমন নয়। যেমন, ধরা যাক কোথাও ১০০ জন মানুষ বাস করেন। সেখানে সবাই ভোটার হন না; কিছু মৃত ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক লোকও থাকে। যদি ৮০ জন ভোটার হন তাহলেও ভোটের দিন দেখা যায়, খুব বেশি হলে ৫০% ভোটার নির্বাচনে ভোট দেন। তার মানে ৮০ জনের ৫০% হিসাবে ৪০ জন ভোটার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ৬০% ভাগ নাগরিকই ভোটের বাইরে অবস্থান করছেন। আবার সেই ৪০ জনের কাছ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দলগুলো ২৫%, ২০%, ১৫%, ১০% ইত্যাদি হারে ভোট পেলো। এইক্ষেত্রে ২৫% ভাগ ভোট পাওয়া দলটিই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করবে। অথচ প্রদত্ত ভোটের ২৫% ভাগ হারে দলটি আসলে পেলো মাত্র ১০ জনের সমর্থন। ১০০ জন নাগরিকের মধ্যে ৮০ জন ভোটারের কাছ থেকে মাত্র ১০ জনের সমর্থনেই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হলে বাকী ৯০ জনকে শাসনের ম্যান্ডেট পাওয়া সম্ভব। আর এখন যখন ১০ম জাতীয় সংসদের বহুল আলোচিত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচনে ১৫৪ জন আগেই নির্বাচিত হয়ে গেছেন, তখন বাকী আসনের বিপরীতে দেশের কত শতাংশ ভোটার ভোটে অংশ নিলেন? বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের কারণে বিরাট অংশ ভোটার তো ভোটই দিতে পারলেন না। তাছাড়া বাকী যেসব স্থানে নির্বাচন হবে, প্রধান বিরোধী দলের আন্দোলন ও দাবির প্রতি সমর্থন করে সেখানেও বিপুলসংখ্যক ভোটার নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোট দেবেন কি-না সন্দেহ। ফলে ১০ম সংসদ গঠিত হচ্ছে খুবই কমসংখ্যক মানুষের ভোটে। এই নির্বাচনে বিজয়ীদের সংখ্যালঘিষ্ঠ না বলে লঘিষ্ঠতম বলাই ভালো। মূলত উন্নয়নশীল দেশের গণতন্ত্র এমনিতেই একদিনের উৎসব। কেবল ভোটের দিন মানুষ গণতন্ত্র চাক্ষুষ করেন। সেই গণতন্ত্রও এবার বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে স্পর্শ করছে না। গণতন্ত্রের মূল কথা ভোটারদের ক্ষমতায়ন, সেটাই তো সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তদুপরি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আরও তিনটি উপাদান, যথা : ইনক্লুসিভ (সকলকে নিয়ে), ক্র্যাডিবল (বিশ্বাসযোগ্য), ফেয়ার (অবাধ ও নিরপেক্ষ) ইত্যাদি উপাদানও কাজ করার কোনই সুযোগ পাচ্ছে না। এ ধরনের নির্বাচনের জন্মের সঙ্গেই যে বৈধতার সঙ্কট জড়িয়ে থাকবে, সে কথা তাত্ত্বিকভাবে সুস্পষ্ট। দেশে ও বিদেশে এমন নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করা সম্ভব হবে কি-না সন্দেহ। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ও কমনওয়েলথসহ কেউই এহেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণেরও প্রয়োজন বোধ করছেন না। বাংলাদেশ এখন এমনই এক অভিনব নির্বাচনের পথে হাঁটছে। বড়ই একাকী ও নিঃসঙ্গ এই যাত্রাপথ। বিতর্কিত তো বটে। সামরিক শাসনামলে নির্বাচন ব্যবস্থা যেভাবে পবিত্রতা ও বিশুদ্ধতা হারিয়েছিল, সেটারই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে গণতন্ত্রের বাতাবরণে। তখন গোপনে মিডিয়া ক্যু বা রেজাল্ট ক্যু-এর মাধ্যমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হতো। এখন সেটাই হয়েছে খালি মাঠে ও প্রকাশ্যে। বিদেশী এক মিডিয়া বিষয়টিকে বলেছে, ‘দল জিতেছে, দেশ হেরেছে’ শিরোনামে। খালি মাঠে গোল হলে যেমন খেলার দরকার হয় না; তেমনি একক ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হলেই নির্বাচন হয় কি-না, সেটা তর্ক সাপেক্ষ। গণতন্ত্র কতটুকু চর্চিত হয়েছে, সে প্রশ্নও তখন প্রাসঙ্গিকভাবে এসে যায়। গণতন্ত্র মানলে, সকলের সম্মতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠরাও কখনও কখনও শাসন করে। সবাই সেটা মেনেও নেয়। গণতান্ত্রিক বিধি-ব্যবস্থা ও নির্বাচনী প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই সেটা হয়ে থাকে। কিন্তু গণতান্ত্রিক নির্বাচনী লড়াই ছাড়াই সংখ্যালঘিষ্ঠতমদের একদলীয় নির্বাচনোত্তর শাসন প্রতিষ্ঠা হলে সেটা কি হবে? সর্বোপরি, যে অভিনব ও একক নির্বাচনকে ঘিরে এত বিরোধ, মতপার্থক্য, সংঘাত, সংঘর্ষ ও রক্তপাত, সেসবের কি অবসান হবে? গণতন্ত্রের জন্য সামনের দিনে চ্যালেঞ্জ নাকি ডেঞ্জার অপেক্ষা করছে, সেটা কেউই জানে না। বরং আশঙ্কা হচ্ছে, সঙ্কটাপন্ন নির্বাচনের গর্ভ থেকে সৃষ্টি হবে আরও অনেক সঙ্কটের। ৫ জানুয়ারির আশ্চর্যতম নির্বাচনের সঙ্কুল ও রক্ত-পিচ্ছিল পরিস্থিতির সামনে বিমূঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে পুরো জাতি এখন এসব মৌলিক রাজনৈতিক প্রশ্নের মুখোমুখি।
মার্চ ফর ডেমোক্রেসি জনতার পুঞ্জীভূত প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসার গণতান্ত্রিক সমাধান এনে দেবে বলেই বিরোধী দলসমূহ আশা করছে। এই আন্দোলনের যৌক্তিকতাও তারা বার বার উল্লেখ করেছেন। এখন যদি সাম্প্রতিক অতীতের মতো সরকার শক্তি প্রয়োগে এই আন্দোলনকে বানচাল করতে চায়, তাহলে চরম অবস্থার সৃষ্টি হবে বলে বিরোধী নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। বাধা দিলে চলমান সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির বিস্ফোরণ ঘটবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কারণ, আন্দোলনরত বিরোধীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাদের দাবি ও বক্তব্যের প্রতি সামান্যতম সম্মান জানানো হয়নি। সব কিছুই করা হচ্ছে একতরফাভাবে। ফলে দেশের বৃহত্তরসংখ্যক মানুষ চরম একতরফা ব্যবস্থা মেনে না নেয়ারই সঙ্কল্প জানিয়েছে। তাই সরকারকে কেবল শক্তি নয়, সমঝোতার মাধ্যমেই বিষয়টিকে সামলাতে হবে। এটাকে সমঝোতার শেষ সুযোগও বলা যায়। এই সুযোগ হারালে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে যে দূরত্ব ও বিভেদ সৃষ্টি হবে, সেটা থামবে তো না-ই, বরং সামনের দিনগুলোতে প্রবল আকার ধারণ করবে।
১০ম সংসদ নির্বাচনে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ভোট দিতে পারছে না; সকল দল অংশও নিতে পারছে না। বিদেশীরাও এই নির্বাচনকে মানছে বলে মনে হয় না। বৈধতার সঙ্কট নিয়ে এই সংসদ অস্তিত্ব লাভ করতে সক্ষম হবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন। ১০ম সংসদের আগে ও পরে বৈধতার সঙ্কটের সঙ্গে সঙ্গে জন-অনাস্থা ঘোষিত হলে, সেই সংসদের জন্য সেটা মোটেও সুখকর হবে না। যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই প্রহসনে পরিণত হয়, সেই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করা একেবারেই সম্ভব নয়।
বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিরোধী দল মার্চ ফর ডেমোক্রেসি-এর মাধ্যমে প্রহসনের সাজানো নির্বাচনকে নাকচ করবে সম্মিলিত প্রতিবাদে। স্বাধীনতার লাল-সবুজ পতাকায় গণতন্ত্রের যে মূলমন্ত্র সুপ্ত হয়ে আছে, সেটাই সেদিন দেশবাসীর অযুত কণ্ঠে উচ্চারিত হবে রাজধানী ঢাকায়। জনতার এই বজ্রকণ্ঠ নিশ্চয় অগণতান্ত্রিক প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করবে। আশা করা যায় জনচাপে ক্ষমতাসীনদের বোধোদয় ঘটাবে। বাংলাদেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পরিবেশও এই আন্দোলনের মাধ্যমেই সৃষ্টি হবে। ভোটের মৌলিক অধিকারকে ছিনিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা রুখে দেয়ার জন্য মার্চ ফর ডেমোক্রেসি শেষ গণতান্ত্রিক অবলম্বন।
বিশ্বের ইতিহাসে গণতন্ত্রের জন্য অভিযাত্রা নতুন নয়। গণতন্ত্রের জন্য দেশে দেশে মানুষ পথে নেমেছেন; মিছিলে প্রকম্পিত করেছেন রাজপথ। বাংলাদেশেও এখন পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্রের জন্য সেই ঐতিহাসিক মিছিলের আয়োজন করতে হচ্ছে। মানুষকে অধিকার আদায়ের জন্য সোচ্চার হতে হচ্ছে। জনতার এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা সফল হয়েই বিজয় অর্জন করবে। ইতিহাসের শিক্ষা এ কথাই বলে।
সাম্প্রতিক গণআন্দোলনের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের বল প্রয়োগ ও সন্ত্রাস ব্যর্থ করে দিয়ে দেশের সর্বত্র অধিকারের দাবিতে মানুষ সোচ্চার। শক্তি দিয়ে গণতান্ত্রিক জনতাকে দমন করা অসম্ভব, তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। রোড ফর ডেমোক্রেসি আন্দোলনে বল প্রয়োগের নীতি গ্রহণ করলে ক্ষমতাসীনরা ঐতিহাসিক ভুল করবেন।
বিপদ দেখলে স্বৈরাচারীরা সাধারণত বড় বড় ভুল করে এবং সে ভুলের মাসুল তাদেরকে চরমভাবে দিতে হয়। স্বাধীনতার পর পর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে একদলীয় শাসনে নিয়ে যাওয়ার ভুলের প্রায়শ্চিত্ত ছিল বড়ই নির্মম। দলগতভাবে আওয়ামী লীগও এজন্য একুশ বছর ক্ষমতার মুখ দেখতে পারেনি। আবার কোনও ভুল তাদেরকে তেমনই প্রায়শ্চিত্তের মধ্যে ফেলতে পারে। অতএব ভুল, একগুঁয়েমি, বলদর্পী আচরণ যা হয়ে গেছে, সেটাকে থামিয়ে গণতান্ত্রিক শুদ্ধতার রাজনীতিতে ফিরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। গণমানুষ তার ভোট ও নাগরিক অধিকারের যে মৌলিক-সাংবিধানিক স্বীকৃতি চায়, সেটাকে ফিরিয়ে দেয়াই হবে সুবিবেচনাপ্রসূত কাজ। জনগণের দাবি ও অধিকার নিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ ও দলগত লাভের জন্য ছিনিমিনি খেলার পরিণাম কখনওই ভালো হতে পারে না। এই সাধারণ কথাটা যত তাড়াতাড়ি ক্ষমতাসীনরা বুঝতে পারবে, ততই তাদের জন্য মঙ্গল আর দেশের জন্যও কল্যাণকর।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার এক গণতান্ত্রিক দেশ। গণতন্ত্র ও অধিকারের জন্য এদেশ পিন্ডির জিঞ্জির ছিন্ন করে স্বাধীন হয়েছে। এদেশ অপর কোনও দেশ বা দলের শৃঙ্খলে কখনই বন্দী হবে না। গণতন্ত্রের সঙ্গে সঙ্গে এদেশের মানুষের আরেক জোরালো আদর্শ ইসলাম। ইসলাম নিয়েও এখানে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। ইতিহাসের নানা সময়ে অগণতান্ত্রিক ও অনৈসলামিক অপশক্তি এই বাংলার সবুজ মাটিতে বার বার পরাজিত হয়েছে। তাদের আস্ফালন স্থায়ী হতে পারেনি। কোনও তাঁবেদার ও দখলদার এখানে স্থায়ী ঘাঁটি গড়তে পারেনি। মুঘলদের হটে যেতে হয়েছে। ইংরেজদের পালাতে হয়েছে। দখলদার অপশক্তির স্থান এই পবিত্র মাটিতে নেই। এখনও যারা গণতন্ত্রকে ধূলিসাৎ করে এবং ইসলামী চেতনাকে আঘাত করে তল্পীবাহকদের মাধ্যমে নিজেদের হীন স্বার্থ হাসিল করতে চায়, তাদেরও সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে। মার্চ ফর ডেমোক্রেসি-এর গণতান্ত্রিক পতাকা নিয়ে বাংলাদেশের সম্মিলিত জনতা সকল কুচক্রী ও অপশক্তিকেই সাবধান বাণী জানিয়ে দিতে চায়। বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছা, আকাক্সক্ষা ও চেতনার জানান দিতে চায়। বিভেদের খলনায়কদের গালে চপেটাঘাত করে এদেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, আলেম, মুক্তিযোদ্ধা, পাহাড়ি ও সমতলবাসী সর্বস্তরের সকল বাংলাদেশী জনতা জাতীয় ঐক্য ও সংহতির চূড়ান্ত প্রদশর্নীর মাধ্যমে গণতন্ত্রের পক্ষে নিজেদের অবস্থান ঘোষণা করতে চায়। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে ২৯ ডিসেম্বরের মার্চ ফর ডেমোক্রেসি বা গণতন্ত্রের পদযাত্রা ঐতিহাসিক গৌরবের এক নতুন দিন হয়ে থাকবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন