এরশাদ মজুমদার
ইস্যুটা কিছুটা পুরনো।
বিদেশে টাকা পাচার বা মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় তারেক রহমান বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিনের সরকার তারেক রহমানকে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করার চেষ্টা
করেছিল। এর একটা সুদূরপ্রসারী ল্য ছিল। দেশবাসী ভাবতে শুরু করেছিল, তারেক রহমান আগামী দিনে বিএনপির নেতৃত্ব
কাঁধে তুলে নিতে পারবেন। যদিও আওয়ামী লীগসহ ওই ঘরানার অনেকেই তারেক রহমানের
রাজনীতিতে আগমন ভালো চোখে দেখেনি। আমার কাছেও বিষয়টি তেমন ভালো লাগেনি। ভাবটা এমন, কী দরকার ছিল। কিন্তু পরে আমার মনে হয়েছে, রাজনীতিতে আসার বয়স তারেক রহমানের হয়েছে।
নিদেনপে প্রশিণের জন্য হলেও ওই সময়ে তার রাজনীতিতে আসা সঠিক হয়েছে। এ ব্যাপারে শেখ
হাসিনা পেছনে পড়ে গেছেন। এখন যদিও সজীব ওয়াজেদ রাজনীতিতে নিজেকে কিছুটা জড়িয়েছেন।
যদিও দেশবাসী মনে করে সজীব রাজনীতিতে থাকবেন না। তিনি একজন প্রবাসী। শেখ হাসিনা
নিজেই বলেছেন, তার পুত্রবধূ একজন খ্রিষ্টান, যিনি শেষনবী মুহাম্মদ সা: ও শেষ কিতাব আল
কুরআনে বিশ্বাস করেন না। এই খ্রিষ্টানেরাই স্পেনে ক্রুসেড শুরু করে লাখ লাখ
মুসলমানকে হত্যা করেছিল। মুসলমানদের মসজিদে ঢুকিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। ইতিহাসের
উদ্ধৃতি দিয়ে আমি বলছি না যে, সজীব ওয়াজেদের বউ
এসবের জন্য দায়ী। তবে তিনি এসব ঘটনার কখনো নিন্দাও করেননি।
এখনো
প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশকে রাজনীতি ও
অর্থনীতিশূন্য করাই ছিল ভারত সমর্থিত এক-এগারোর সরকারের ল্য।
দুই
প্রধান দলের নেতৃত্ব পরিবর্তনের জন্য ওই সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। এক-এগারোর
ঘটানোর জন্য তার আগে ২৮ অক্টোবর ঘটানো হয়েছে। ওই ঘটনার বীভৎস দৃশ্য টিভিতে
বিশ্ববাসী দেখেছে। শুধু দেখেনি এক-এগারোর সরকার। দুর্নীতি দমনের নামে মইন ইউ
আহমদের সরকার সারা দেশে তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়েছে। গ্রামগঞ্জে হাটবাজার চুরমার করে
গ্রামীণ অর্থনীতির কোমর ভেঙে দিয়েছে। ওই সময়ে সারা দেশে জেলা-উপজেলায় যারা
দায়িত্বে ছিলেন তারা মানুষের কাছ থেকে কোটি টাকা আদায় করেছেন ভয়ভীতি দেখিয়ে।
কিন্তু মইনউদ্দিনের সরকার নতুন নেতৃত্বের কথা বলে বহু লোককে নেতা হওয়ার স্বপ্ন
দেখিয়েছেন। অনেককে টাকাপয়সা দিয়ে সাহায্য করেছেন। বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক
মান্নান ভূঁইয়াকে আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী বানানোর স্বপ্ন দেখিয়ে ধ্বংস করা
হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বেচারা মান্নান ভূঁইয়া মারা গেলেন। তার সাথে তখন যারা সাপলুডু
খেলেছিলেন এরা সবাই ভোল পাল্টিয়ে আগের জায়গায় ফিরে গেছেন। তাদেরকে এখন আমাদের
আশপাশেই দেখতে পাই। তখনকার টিভিতে টকশো করার জন্য তালিকাভুক্তরাও ভোল পাল্টিয়ে বেশ
ভালো তবিয়তে আছেন। তখনকার মিডিয়া যারা এক-এগারোর সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল তারাও আছে
দেশের মানুষের খেদমতে। আইয়ুব-ইয়াহিয়ার সময়েও বেশ কিছু মিডিয়া লিডারকে দেখেছি। এরা
জনগণের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। যদিও মইনউদ্দিনের সরকার শুরুতে দুই নেত্রীকে আটক
করেছিল, শেষ অবধি দেখা গেল এরা
দিল্লি সরকারের পে থেকে দিল্লির ল্য বাস্তবায়ন করেছে। অদ্ভুত এক নির্বাচনের
মাধ্যমে এরা খালেদা জিয়াকে পরাজিত করে শেখ হাসিনার কাছে মতা দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে
গেছেন। হয়তো গোপন কথা ফাঁস হয়ে যাবে তাই তাদের কাউকেই দেশে রাখা হলো না। শেখ
হাসিনাও খুব হাসতে হাসতে বলেছিলেন, তার
আন্দোলনের ফসল এক-এগারোর সরকার। মতায় এলে তাদের বৈধতা দেবেন। মতায় এসে হাসিনা
বিএনপিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলার পর
মামলা দিতে থাকেন। এক-এগারোর সরকারের দায়ের করা সব মামলা জারি রেখেছেন। সেসব মামলা
এখনো চলছে।
ওই
সময়ে সবচেয়ে বেশি সাহসী মতামত প্রকাশ করেছিলেন ফরহাদ মজহার ও মাহমুদুর রহমান। দু’জনের মধ্যে মাহমুদুর রহমান এখন জেলে আছেনÑ কারণ তিনি সত্য কথা বলতেন। আমাদের দেশে আইন
সত্যের পে নয়, তথ্যের প।ে আদালত তথ্য নিয়ে
কাজ করেন, সত্য নিয়ে নয়। এক-এগারোর
সরকারের ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার মাহমুদুর রহমানকে সহ্য করতে
পারেনি। তাই নানা ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। মাহমুদ একজন প্রখ্যাত ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ।
ইতোমধ্যেই তিনি নিজের মেধার পরিচয় দিয়েছেন। আমাদের রাজনীতিতে তার মতো একজন মেধাবী
মানুষের অতীব প্রয়োজন। এরাই বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তন করে উচ্চ মর্যাদায় পৌঁছে
দিতে পারবে। এ কারণেই পরিকল্পিত উপায়ে মাহমুদের ওপর হামলা চলছে। এই তো ক’দিন আগে ফরহাদ মজহারকে গ্রেফতার করার একটা
জিকির তুলেছিল সরকার ও হালুয়া-রুটির বরকন্দাজ তথাকথিত কিছু মিডিয়া নেতা ও কর্মী।
বাংলাদেশের মিডিয়া জগৎ এমনিতেই সম্প্রসারণবাদী শক্তির তাঁবেদারের জীবনযাপন করছে।
মিডিয়াতেও সিইওরা ঢুকে পড়েছে। শোনা যায়, এদের
মজুরি নাকি লাখ লাখ টাকা। এরা আবার শ্রমিক নেতাও। এরাই ফরহাদ মজহারের মতো একজন
সাচ্চা দেশপ্রেমিককে হেনস্তা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
এক-এগারোর
সরকার সবচেয়ে বেশি হামলা চালায় খালেদা জিয়া, তার
পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বিএনপির ওপর; এর কারণ নির্বাচনের পর স্পষ্ট হয়ে গেছে।
এখন এরা মতায় আছেন তারাও সমানভাবে অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া, তার দুই ছেলে ও দলের ওপর। এই সরকারের
সীমাহীন আক্রোশ হলো জিয়া ও তার পরিবারের ওপর। জিয়ার নাম মুছে ফেলার জন্য চলছে নানা
আয়োজন। আওয়ামী নেতারা বলে চলেছেন, জিয়া মুক্তিযুদ্ধ
করেননি, তিনি পাকিস্তানের চর ছিলেন।
একজন মন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি কোনো রাজনৈতিক
দল নয়। এর জন্ম সেনাছাউনিতে। আওয়ামী লীগ কেন যে সেনাছাউনিকে ভয় পায় জানি না। অথচ
আমাদের সেনা অফিসার ও সৈনিকেরাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রাণপণ করে যুদ্ধ করেন। আর
মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দেন এ দেশের কৃষক শ্রমিক ছাত্র জনতা। এখন আওয়ামী লীগ সৃষ্টি
করেছে প্রপাগান্ডা মেশিন।
এসব
হলো প্রাসঙ্গিক কথা। মূল কথা হলো, আমাদের দেশের রাজনীতিতে
আগামী দিনের নেতৃত্ব এখন কোথায়? মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক
মহান মুক্তিযোদ্ধা সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়া ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার
বড় ছেলে তারেক রহমান রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য নিয়েই। এটা উড়ে এসে জুড়ে
বসা নয়। তারেক জিয়ার এখন যা বয়স তা ভারতের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য
রাহুল গান্ধীর মতোই। রাজনীতিতে না হলেও সামাজিকভাবে তারেকের পরিবারেরও শত বছরের
ঐতিহ্য রয়েছে। পিতার দিক থেকে তারেক বগুড়ার আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের উচ্চশিতি পরিবারের
সন্তান। বাংলাদেশের বহু ঐতিহ্যবাহী পরিবার তাদের আত্মীয়। মায়ের দিক থেকে তারেকের
শিকড় রয়েছে ফেনী জেলার ঐতিহ্যবাহী শ্রীপুর মজুমদার বাড়িতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রথম মুসলিম ভাইস চ্যান্সেলর স্যার এ এফ রহমান ওই বাড়ির সন্তান। এই উপমহাদেশের চা
শিল্পের সাথে জড়িত বহু বিখ্যাত পরিবার এই পরিবারের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে যুক্ত।
অবিভক্ত বাংলায় শেরেবাংলার মন্ত্রিসভার সদস্য নবাব বাহাদুর মোশাররফ হোসেনও এই
পরিবারের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ। আপনাদের পরিচিত রাজনীতিক মির্জা গোলাম
হাফিজ, কাজী জাফর, কর্নেল জাফর, আহমদুল কবীর, শহীদ সাইদুল হাসান, ফরিদা হাসান, লায়লা রহমান কবীর এই বৃহৎ পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। ভাগ্যের
অদৃশ্য নদী জিয়া পরিবারকে প্লাবনের মতো ভাসিয়ে নিয়ে এসেছে রাজনীতির মঞ্চে। ’৭১ সালের ২৬/২৭ মার্চ ভাগ্য জিয়াউর রহমানকে
টেনে নিয়ে গেছে কালুরঘাট রেডিও স্টেশনে। তিনিই পাঠ করেন স্বাধীনতার ঘোষণা। ঘোষণার
পেছনে নানা জনের নানা কথা আছে। আমি এখন এখানে সেসব বিষয় নিয়ে কিছু বলব না। সময়-সুযোগ
হলে আরেক নিবন্ধে সেসব কথা লিখব। সেই জিয়ার গলার আওয়াজ দেশবাসী আবার শুনতে পেল ৭ নভেম্বর, ১৯৭৫। প্রথমবার ছিলেন মেজর, দ্বিতীয়বার ছিলেন মেজর জেনারেল, আর শহীদ হওয়ার সময় ছিলেন দেশের রাষ্ট্রপতি।
মা খালেদা জিয়া পারিবারিকভাবে বিশাল ঐতিহ্যের অধিকারী হলেও সংসারজীবন শুরু করেছেন
একজন সেনা অফিসারের স্ত্রী হিসেবে। জীবনযাপন চলেছে কঠোর নিয়মানুবর্তিতার ভেতর।
তিনি কখনো ভাবেননি একদিন তাকে এ দেশের বিশাল রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতৃত্বের হাল
ধরতে হবে। এসবই হচ্ছে ভাগ্যের অদৃশ্য রশির টান। কিচেন থেকে বেরিয়ে এসে তিনি
রাজনীতির বিশাল রাজপথে নেমেছেন এবং খ্যাতি লাভ করেছেন একজন আপসহীন নেত্রী হিসেবে।
সেই থেকে তিনি রাজপথেই আছেন।
ভারতীয়
কংগ্রেসের বর্তমান সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীও সেভাবে রাজনীতিতে এসেছেন। তিনি একজন
বিদেশী নারী। বৈবাহিকসূত্রে ভারতে এসেছেন। তার স্বামী রাজিব গান্ধী একজন পেশাদার
পাইলট ছিলেন। মা ইন্দিরা গান্ধী নিহত হওয়ার পর তিনি দল ও দেশের প্রয়োজনে রাজনীতিতে
আসেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন। রাজিব গান্ধী নিহত হওয়ার পর সোনিয়া গান্ধী
রাজনীতিতে আসেন এবং কংগ্রেসের নেতৃত্বের হাল ধরেন। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন
পাওয়ার পর সোনিয়ারই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল। বিজেপি তাকে বিদেশিনী বলে
সমালোচনা করায় তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনমোহন সিংয়ের নাম প্রস্তাব করেন। এখন
সোনিয়া কংগ্রেস সভানেত্রী আর তার ছেলে রাহুল গান্ধী সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়ে ভারতে
কোনো সমালোচনা নেই। প্রতিপক্ষের নিন্দাবাদ যাই থাকুক রাহুল ইতোমধ্যেই বেশ আলোচিত
হয়ে উঠেছেন। ভারতের আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত হচ্ছেন।
কিন্তু
বাংলাদেশের হাওয়া অন্য রকম বইছে। মিডিয়া এবং বিএনপিবিরোধী শক্তি তারেক জিয়ার
রাজনীতিতে আগমন কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। সুতরাং তার চরিত্র হনন করতে হবে। এক-এগারোর
সরকারই শুরু করেছিল চরিত্র হননের অভিযান। সেই অভিযান এখনো চলছে। আওয়ামী লীগ নেতারা
প্রায় প্রতিদিনই তাকে দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করে বক্তৃতা দিচ্ছেন। পুরো আওয়ামী লীগই
এখন তারেকের ইমেজ ধ্বংস করার স্থায়ী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কেয়ারটেকার সরকারের
সামরিক নেতা মইনউদ্দিন বলেছিলেন, তারেক বিদ্যুৎ খাতের ২০
হাজার কোটি মেরে দিয়েছেন। কোনো অভিযোগই এখনো প্রমাণিত হয়নি। সরকারের নির্দেশে দুদক
তারেকের বিরুদ্ধে এখনো দুর্নীতির মামলা খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু বিএনপি আওয়ামী লীগ
আর সরকারের এই প্রপাগান্ডার সঠিক জবাব দিতে পারছে না। অন্য দিকে আমার দেশ-এর
সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এখন জেলে আছেন কেন সবার জানা। তার ওপর সরকারের আক্রোশ এখনো
কমেনি। তারেককে রাজনীতি থেকে নির্বাসন দেয়ার সরকারি উদ্যোগ একেবারেই অমূলক নয়।
নিশ্চিতভাবেই আগামী দিনের একজন নেতা জেনেই সরকার ও আওয়ামী লীগ তাকে মঞ্চ থেকে
সরিয়ে দিতে চায়। মাকে মতায় রেখে সব রকম সরকারি প্রটোকল নিয়ে রাজনীতি করা খুবই সহজ।
তারেক কিন্তু রাজনীতি শুরু করেছেন তৃণমূল থেকে। তার জন্য কোনো প্রটোকলের দরকার
হয়নি।
রাজনৈতিক
নেতা, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিদের সন্তানদের
দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এ অভিযোগ বিশ্বব্যাপী। ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে রাজিব
ও সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বহু অভিযোগ এসেছিল। রাজিবের বিরুদ্ধে বফোর্স
কেলেঙ্কারির খবর বহু দিন মিডিয়ায় এসেছে। পশ্চিম বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জ্যোতি
বসুুর ছেলের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। জ্যোতি বসুুর ছেলে একজন
প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। কলকাতার পার্ক হোটেলের মালিক জ্যোতি বসুুর বেয়াই। ভারতের
সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশাইয়ের ছেলের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। পাকিস্তানের
দিকে তাকালেও দেখতে পাবেন জুলফিকার আলী ভুট্টোর মেয়ে বেনজিরের বিরুদ্ধে সুইস
ব্যাংকে টাকা রাখার তদন্ত এখনো চলছে। সেই বেনজির দু’বার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। এখন বেনজিরের ছেলে
বিলাওয়াল রাজনীতিতে আসছেন। পিপিপির আগামী দিনের নেতৃত্বে তার নাম ঘোষিত হয়েছে।
নওয়াজ শরিফ সৌদি আরবে বেশ কয়েক বছর সপরিবারে নির্বাসিত জীবনযাপন করেছেন। জেনারেল
মোশাররফ এই দু’জনকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন।
দীর্ঘকাল নির্বাসনে থেকে তিনি দেশে ফিরে এখন জেলে আছেন। জেনারেল এরশাদের আমলে
ব্রিটেন থেকে এটিপি বিমান কেনার ব্যাপারে থ্যাচারের ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির
অভিযোগ উঠেছিল। মায়ের প্রভাব খাটিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যেও ব্যবসায় করার চেষ্টা
করেছেন বলেও ব্রিটিশ মিডিয়া অভিযোগ করেছে। রাজনীতিতে এসব নোংরামি থাকবেই।
ভবিষ্যৎ
বিএনপির নেতৃত্ব আসলে রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা ও মিডিয়ার বিরাট শিকার। এর পেছনে দেশী-বিদেশী
যড়যন্ত্রও থাকতে পারে। বিএনপি আসলেই বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের দল। এই দলের
মাধ্যমেই মানুষ নিজেদের আকাক্সার প্রতিফলন দেখতে চায়।
আমি
তো মনে করি, ভারতের পরামর্শে সরকার
বর্তমান সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। এক-এগারোর সরকারকেও মতায় বসিয়েছিল আজকের মদদদাতারাই।
ঠিক পাঁচ বছর পর আবার সেই পুরনো সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ২০০৬ সালে সঙ্কট সৃষ্টি
করেছিলেন শেখ হাসিনা। এবারের সঙ্কটও তিনিই সৃষ্টি করেছেন। তাই ভারত প্রকাশ্যে
মোড়লিপনা শুরু করে দিয়েছে। তারেক এখনো নির্বাসনে আছেন। একটি মামলা থেকে খালাস
পেয়েছেন। দেখা যাক, ভারত শেষ কী চাল দেয়, দেশের জনগণই বা কিভাবে প্রতিক্রিয়া
প্রদর্শন করে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন