যে কোনো দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে দ-প্রাপ্ত ব্যক্তির আপীল করতে পারা একটি শাশ্বত অধিকার। তবে দ- প্রদানকারী আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তার চেয়ে যে কোনো উচ্চ আদালতে এই আপীল শুনানি প্রযোজ্য হবে। আন্তর্জাতিক ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল-২ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন দ-াদেশ দিয়েছে গত ৫ ফেব্রুয়ারী। বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৩ (৪) অনুচ্ছেদ অনুসারে তিনি আপীলের সুযোগ পান, সুপ্রীম কোর্টের এ্যাপিলেট ডিভিশনে যদিও এই অনুচ্ছেদে ট্রাইব্যুনালের কথা উল্লেখ নেই। সরকার শাহাবাগীদের চাপে গত ১৮ ফেব্রুয়ারী আইনটি সংশোধন করে এই মামলার বাদীপক্ষের জন্য আপীল করার সুযোগ সৃষ্টি করে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যখন কোনো ব্যক্তি কোনো আদালতে দ-প্রাপ্ত হন তখন তিনি তার উচ্চ আদালতে আপীল করার শাশ্বত সুযোগ গ্রহণ করে থাকেন। এখানে সমস্যা হচ্ছে, যখন ট্রাইব্যুনালের কোন যাবজ্জীবন দ-াদেশের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষ শাহবাগীদের চাপে আইন সংশোধন করে ফাঁসীর দাবিতে আপীল বিভাগে আপীল করল এবং ঐ আপীল মঞ্জুরও হলো অর্থাৎ আসামীর তাতে ফাঁসীও হলো। এখন আসামীর এই ফাঁসি একটি ফ্রেশ রায় হলো যে রায়ের বিরুদ্ধে যে কোনো আদালতে আপীল করার সুযোগ থাকা আসামীর জন্য বাঞ্ছনীয়। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের আইনে এখানেই খটকা। আসামীকে আপীল বিভাগ কোনো ফ্রেশদ- দিলে তার জন্য কোনো আদালত নেই যেখানে আসামীপক্ষ আপীল করার সুযোগ পাবেন। অর্থাৎ ইন্টারন্যাশানাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল এ্যাক্টে হাইকোর্টকে যে অযৌক্তিভাবে বাইপাস করা হয়েছে যাতে সুস্পষ্টভাবে আসামীপক্ষ তার শাশ্বত অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখানে এ্যাপিলেট ডিভিশনকে একমাত্র আপীল আদালত হওয়াতেই সমস্যা হয়েছে। বাদীপক্ষের আপীলের বিধান না সৃষ্টি হলে কোনভাবে মেনে নেয়ার সুযোগ ছিল। অর্থাৎ বাদীপক্ষের আপীলের অধিকার এবং হাইকোর্টকে বাইপাস এক সাথে চলতে পারে না। সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি অধ্যায়ে ১৯(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে “সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হবে।” এই বিধান লংঘন করে সাংবিধানিক বিড়ম্বনা সৃষ্টি করেছেন। যেহেতু সরকার এই ইন্টারন্যাশানাল ক্রাইমস ট্রাইবুনাল এ্যাক্টে অজ্ঞাত কারণে এই ফাঁক সৃষ্টি করেছে তাই আপীল বিভাগের উচিৎ আইনের এই ফাঁকের কারণে এই মামলা মুলতবী রাখা যাতে এই ভারসাম্যপূর্ণ আইন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত বিচার কার্যক্রম স্থগিত রাখা।
ইন্টারন্যাশানাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল এ্যাক্ট ১৯৭৩ একটি রাজনৈতিক আইন। যেখানে আইনের চেয়ে আবেগই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। এই আইনের সংশোধনী এমনভাবে করা হয়েছে যাতে আইনের সকল কলাকৌশল হলো আসামীকে শাস্তি দেয়া। তদন্ত কর্মকর্তার নিকট সাক্ষীর দেয়া জবানবন্দী বা তদন্ত কর্মকর্তার তৈরি করা জবানবন্দী আদালতে এসে সাক্ষী নিজে প্রমাণ না করলেও তার কথিত জবানবন্দীকে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করার বিধান এখানে করা হয়েছে। এই হলো আন্তর্জাতিক মানের আইনের নমূনা। যে আইনের সাফাই আমাদের সরকার দেশে বিদেশে করে বেড়াচ্ছে। যে কোন আসামীর নিজ প্রয়োজনে তিনি দেশী-বিদেশী আইনজীবি নিয়োগ করতে পারা তার স্বীকৃত অধিকার কিন্তু আমাদের দেশে হচ্ছে তার বিপরীত। কোনো আসামীকে বিদেশ থেকে কোনো আইনজীবী আনতে দেয়া হচ্ছে না।
ইন্টারন্যাশানাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল এ্যাক্ট ১৯৭৩ সালে প্রণীত হয় এবং তা ২০০৯ সালে সংশোধিত হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, ঘটনা সংঘটনকাল হচ্ছে ১৯৭১ সাল, আইন প্রণয়নকাল হচ্ছে ১৯৭৩ তাও আবার সংবিধানের ৪৭ (৩) সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য কিংবা যুদ্ধবন্দী আটক ব্যক্তির কথা থাকলেও পরে সংশোধন করে বর্তমান রাজনৈতিক সরকার বিরোধী ব্যক্তিদের বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছে। তাছাড়া ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের বিচার পরিচালনা করতে আইন তৈরি হলেও ২০০৯-এর আইন অনুযায়ী সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশনা অনুসারে ঐ আইনে বিচার চলে নাই। অর্থাৎ এই আইনের জবঃৎড়ংঢ়বপঃরাব বভভবপঃ এখানে প্রযোজ্য হলো না। তাহলে ১৯৭১ সালের ঘটনায় এবং ১৯৭৩ সালের আইন অনুসারে কিভাবে এখানে জবঃৎড়ংঢ়বপঃরাব বভভবপঃ প্রযোজ্য হবে? ১৯৭১ সালে ঘটনাকালে পাকিস্তানের আইন বলবত ছিল কিন্তু ১৯৭৩ সালে ভিন্ন দেশের সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনে পাকিস্তান আমলের অপরাধের বিচার কিভাবে চলতে পারে? তাও আবার সংবিধানের মৌলিক অধিকার সংবলিত ২৭ ধারা আইনের আশ্রয়ের অধিকার সম্বলিত ৩১ ধারা এবং ৩৫ ধারার বিধান উপেক্ষা করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অধিকার ক্ষুণœ করে চলছে এই ব্যবস্থায়।
পৃথিবীর সব দেশেই ফৌজদারী আইনে বিচারিক কোর্টের উপর কমপক্ষে দু’টি কোর্ট থাকে আপীল করার জন্য কিন্তু এখানে মাত্র একটি। তাও ট্রাইব্যুনাল কোন বিষয়ে কোন আদেশ দিলে সেখানেই রিভিউ আবেদন করতে হবে মামলার চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত কোন বিষয়ে আপীল বিভাগে যাওয়া যাবে না। এই মামলার মূল আসামী ছিল ১৯৫ জন সামরিক ব্যক্তি কিন্তু তাদের বিচার না করে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের এখানে সম্পৃক্ত করে বিচারের নামে অবিচার নাটক মঞ্চস্থ করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল কভেন্যান্ট অন সিভিল এ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস (আই.সি.সি.পি.আর) চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসাবে কোন ফৌজদারী মামলার শাস্তির ক্ষেত্রে Retrospective effect বাস্তবায়ন করতে পারে না।
ইন্টারন্যাশানাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল এ্যাক্ট ১৯৭৩ একটি রাজনৈতিক আইন। যেখানে আইনের চেয়ে আবেগই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। এই আইনের সংশোধনী এমনভাবে করা হয়েছে যাতে আইনের সকল কলাকৌশল হলো আসামীকে শাস্তি দেয়া। তদন্ত কর্মকর্তার নিকট সাক্ষীর দেয়া জবানবন্দী বা তদন্ত কর্মকর্তার তৈরি করা জবানবন্দী আদালতে এসে সাক্ষী নিজে প্রমাণ না করলেও তার কথিত জবানবন্দীকে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করার বিধান এখানে করা হয়েছে। এই হলো আন্তর্জাতিক মানের আইনের নমূনা। যে আইনের সাফাই আমাদের সরকার দেশে বিদেশে করে বেড়াচ্ছে। যে কোন আসামীর নিজ প্রয়োজনে তিনি দেশী-বিদেশী আইনজীবি নিয়োগ করতে পারা তার স্বীকৃত অধিকার কিন্তু আমাদের দেশে হচ্ছে তার বিপরীত। কোনো আসামীকে বিদেশ থেকে কোনো আইনজীবী আনতে দেয়া হচ্ছে না।
ইন্টারন্যাশানাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল এ্যাক্ট ১৯৭৩ সালে প্রণীত হয় এবং তা ২০০৯ সালে সংশোধিত হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, ঘটনা সংঘটনকাল হচ্ছে ১৯৭১ সাল, আইন প্রণয়নকাল হচ্ছে ১৯৭৩ তাও আবার সংবিধানের ৪৭ (৩) সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য কিংবা যুদ্ধবন্দী আটক ব্যক্তির কথা থাকলেও পরে সংশোধন করে বর্তমান রাজনৈতিক সরকার বিরোধী ব্যক্তিদের বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছে। তাছাড়া ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের বিচার পরিচালনা করতে আইন তৈরি হলেও ২০০৯-এর আইন অনুযায়ী সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশনা অনুসারে ঐ আইনে বিচার চলে নাই। অর্থাৎ এই আইনের জবঃৎড়ংঢ়বপঃরাব বভভবপঃ এখানে প্রযোজ্য হলো না। তাহলে ১৯৭১ সালের ঘটনায় এবং ১৯৭৩ সালের আইন অনুসারে কিভাবে এখানে জবঃৎড়ংঢ়বপঃরাব বভভবপঃ প্রযোজ্য হবে? ১৯৭১ সালে ঘটনাকালে পাকিস্তানের আইন বলবত ছিল কিন্তু ১৯৭৩ সালে ভিন্ন দেশের সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনে পাকিস্তান আমলের অপরাধের বিচার কিভাবে চলতে পারে? তাও আবার সংবিধানের মৌলিক অধিকার সংবলিত ২৭ ধারা আইনের আশ্রয়ের অধিকার সম্বলিত ৩১ ধারা এবং ৩৫ ধারার বিধান উপেক্ষা করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অধিকার ক্ষুণœ করে চলছে এই ব্যবস্থায়।
পৃথিবীর সব দেশেই ফৌজদারী আইনে বিচারিক কোর্টের উপর কমপক্ষে দু’টি কোর্ট থাকে আপীল করার জন্য কিন্তু এখানে মাত্র একটি। তাও ট্রাইব্যুনাল কোন বিষয়ে কোন আদেশ দিলে সেখানেই রিভিউ আবেদন করতে হবে মামলার চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত কোন বিষয়ে আপীল বিভাগে যাওয়া যাবে না। এই মামলার মূল আসামী ছিল ১৯৫ জন সামরিক ব্যক্তি কিন্তু তাদের বিচার না করে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের এখানে সম্পৃক্ত করে বিচারের নামে অবিচার নাটক মঞ্চস্থ করা হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল কভেন্যান্ট অন সিভিল এ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস (আই.সি.সি.পি.আর) চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসাবে কোন ফৌজদারী মামলার শাস্তির ক্ষেত্রে Retrospective effect বাস্তবায়ন করতে পারে না।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন