সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৩

জনগণের জয় হবেই হবে


ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী

আমরা এমনিতেই তামাশাপ্রিয় জাতি। কোথায়ও বাঁদরের খেলা হচ্ছে সেটা দেখার জন্য আমরা গোল হয়ে দাঁড়িয়ে ভিড় করি। বাঁদরের খেলার নানা তামাশা দেখি। সাপের খেলায়ও তাই। অনেক সময় দুই ব্যক্তি মারামারি করে, মারামারি না থামিয়ে আমরা একইভাবে গোল হয়ে তামাশা দেখি। দেখি না, কে জেতে। ২০১৪ সালে আমরা তেমনি এক নির্বাচনী তামাশার ভেতর পড়েছি। এই তামাশার প্লেয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার রকিবউদ্দীন আহমদ। এই দুজনের সম্মিলিত খেলা আমাদের এক দারুণ মজার তামাশা দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশে আগামী ৫ জানুয়ারি এক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিরোধী দল দাবি করে আসছিল যে, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া হোক। তা না দিলে সে নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলগুলোর জোট অংশ নেবে না। এই পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দেয়া হয়। ১৯৯১ সাল থেকেই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। ৯১ সালে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধান অনুযায়ী গঠিত হয়নি। কিন্তু সব দল মিলে এই মর্মে একমত হয়েছিল যে, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তারা নির্বাচনে যেতে রাজি। সে ক্ষেত্রে বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের শর্ত ছিল, তিনি নির্বাচন সম্পন্ন এবং নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে প্রধান বিচারপতি পদে ফেরত যাবেন। রাজনৈতিক দলগুলো তার এই শর্ত মেনে নেয়। সেভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদও স্বপদে ফিরে যান। সংবিধান সংশোধন করে আনুষ্ঠানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তিত হয় ১৯৯৬ সালে। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারী সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে বিরোধী দলগুলো। তাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এবং বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত জোট সমানভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। অবশ্য ১৯৮৬ সালেই স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারকে বৈধতা দেয়ার জন্য শেখ হাসিনা হঠাৎ এরশাদের পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার এক দিন আগে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, এরশাদের পাতানো নির্বাচনে যে অংশগ্রহণ করবে সে হবে জাতীয় বেঈমান। মাত্র এক দিন পরেই তিনি নির্বাচনে যোগ দেয়ার ঘোষণা প্রদান করেন। তখন আমরা ভেবে পাচ্ছিলাম না যে, হাসব না কাঁদব। এতে আওয়ামী লীগে অবশ্য কিছুই যায় আসেনি। তখন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নাম ছিল বিশ্ববেহায়া। পটুয়াশিল্পী কামরুল হাসান এই কার্টুন একে দারুণ সুনাম অর্জন করেছিলেন।
এখন বাংলাদেশে নির্বাচনী চিত্র তার চেয়ে খুব বেশি ভিন্ন নয়। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা এমন এক নির্বাচন করতে যাচ্ছেন, যে নির্বাচনে বিরোধী দল নেই। ফলে ইতোমধ্যেই ১৫৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এর মধ্যে রয়েছেন হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন বহুধা বিভক্ত জাসদের একাংশ। আর রয়েছেন একাধিক খণ্ডে বিভক্ত ওয়ার্কার্স পার্টির একাংশের নেতা রাশেদ খান মেনন। তবে এই দুজনকে হয়তো বিশ্বাস করা যায়নি। আর তাই তারা নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে যাওয়ার অনুমতি পাননি। ফলে গতবারের মতো এবারো এদের নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচনে যেতে হয়েছে। এদের আত্মমার্যাদাবোধ ও লজ্জা আছে কি না, জনমনে প্রশ্ন। আর শেখ হাসিনা বোধহয় অনুমান করেছেন, যেকোনো সময় এরা মোচড় দিতে পারেন। মোচড় দিলে সংসদ সদস্য পদ বাতিল।
শেখ হাসিনা খুব দৃঢ়কণ্ঠে বলেছেন, পৃথিবীর কাউকে দিয়ে ফোন করিয়েও কোনো ফল হবে না এবং পৃথিবীর কোনো শক্তি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। তার আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করতে হয়। এ রকম গর্ব তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানও করেছিলেন। তাতে শেষপর্যন্ত কোনো ফল লাভ হয়নি। তিনি গণতন্ত্র হত্যা করে দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিলেন। সে শাসনও মাত্র কয়েক মাস স্থায়ী হয়েছিল। তবে  সে শাসন কায়েম করা ছিল ভিন্ন রকম। তিনি পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধন করে চতুর্থ সংশোধনী পাস করেছিলেন। তাতে তিনি নিজ দল আওয়ামী লীগসহ দেশের সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। সংসদীয় সরকারপদ্ধতির বদলে কায়েম করেছিলেন রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থা। আর সেই রাষ্ট্রপতি পদে নিজেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অধিষ্ঠিত করেছিলেন। সে সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, যেন তিনি নির্বাচিত হয়েছেন।
বর্তমান সরকার হুবহু সে কাজটি করেনি।  শেখ হাসিনা নির্বাচন দিয়েছেন। মন্ত্রীদের সব ক্ষমতা তিনি নিজ হাতে নিয়ে নিয়েছেন। মন্ত্রীরা এখন কার্যত তার কৃপাধীন। কারণ কোনো মন্ত্রী নিজ মন্ত্রণালয়ের কোনো পিয়নকেও এখন বদলি করার ক্ষমতা রাখেন না। বিরোধী দল যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারপদ্ধতি ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন শুরু করল, তখন সরকার তাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য কম করেনি। এখন ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে বললেন, মাঠে খেলোয়াড় নেই। তাই গোল তো হবেই। আর যে ১৪৬ আসনে নির্বাচন বাকি রয়েছে তার কোনোটিতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। দিনাজপুরের কথাই ধরা যাক, সেখানে ছয়টি আসনের একটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। আর পাঁচটি আসনে আওয়ামী প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ওয়ার্কার্স পার্টি। তারা আগের তিনটি নির্বাচনে ১০ লাখ ভোটারের মধ্যে এক হাজার ৫০০ ভোট পেয়েছিল।
এই নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৪টি আসনে জয়লাভ করে কার্যত জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে  নেয়া হয়েছে। বাকি ১৪৬টি আসনের পরিস্থিতিও তাই দাঁড়াবে। ফলে এই নির্বাচন হবে ভোটারবিহীন। কার্যত এই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন করে দেশে পুনরায় একদলীয় শাসন কায়েম করার আকাক্সাই বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। বহুবার জনগণের ভোটের অধিকারের কথা বলেছেন। কিন্তু এই নির্বাচনে সে অধিকার কেড়ে নিয়েছে এ সরকার। অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র অচল। এ ধরনের নির্বাচন ছাড়া যে সংসদ গঠিত হয়ে থাকে, তা-ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল নয়।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট প্রায় এক মাস ধরে সারা দেশে বাস-লঞ্চ-ট্রেন অবরোধ কর্মসূচি পালন করে এবং এই কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষ সর্বাত্মকভাবে অংশগ্রহণ করেছে। এরপর ২৯ ডিসেম্বর বেগম জিয়া মার্চ ফর ডেমোক্র্যাসিকর্মসূচি হিসেবে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দেন। অবরোধ চলাকালে বিজিবি-র‌্যাব-পুলিশ-ছাত্রলীগ-যুবলীগ মিলে দেশের বিভিন্ন স্থানে বহু মানুষ হত্যা করে। গ্রামে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। যৌথবাহিনী বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় অনেক বাড়ি। সে অভিযান এখনো চলছে। চলছে পাইকারি হারে গ্রেফতার ও গুম।
এর মধ্যে ঘটেছে আরেক কাণ্ড। সরকারের আজ্ঞাবহ  মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্দেশনার বাইরে কিছুই করতে পারছে না। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি-নেতাদের যারা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন, তারা নিজেরাই তাদের সম্পত্তির হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন। সে এক আলী বাবা ও চল্লিশ চোরেরকাহিনী। পাঁচ বছর আগে এরা তাদের সম্পত্তির যে হিসাব দিয়েছিলেন, এখন সে সম্পদ বেড়ে শত-সহস্র গুণ হয়েছে। এমনকি পাঁচ হাজার গুণ পর্যন্ত সম্পদ বেড়েছে। অর্থাৎ যার সম্পদ ছিল এক কোটি টাকা, তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এর বেশির ভাগই জনগণের অর্থ লুণ্ঠন করে। শেয়ার মার্কেট থেকে যারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠন করেছে, যারা বিভিন্ন ব্যাংক ফতুর করেছে, যারা কুইক রেন্টালের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, তারা প্রার্থী। তার ওপর তো টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ছিলই। পত্র-পত্রিকায় যখন আওয়ামী মন্ত্রী-এমপি-নেতাদের সম্পদ বৃদ্ধির হিসাব প্রকাশিত হতে শুরু করল, তখন শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশনে এক প্রতিনিধিদল পাঠালেন। তারা কমিশনকে জানালেন, যে বিপুল সম্পদের হিসাব তারা দিয়েছেন, তা কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলা হোক। কী আশ্চর্য! নির্বাচন কমিশন সেই বিবরণ সরিয়ে ফেলল। এ রকম একটি নতজানু ও মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন বিবেকবান নির্বাচনে যাবে! আর তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং এই নির্বাচন কমিশনের বিদায়ে মাধ্যমে সমস্যার সুরাহা হওয়া সম্ভব।
এ দিকে ঢাকায় মার্চ ফর ডেমোক্র্যাসিকর্মসূচিতে যাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোক আসতে না পারে তার জন্য সরকারই দূরপাল্লার লঞ্চ, বাস, ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছে। ঢাকার ভেতরও টাউন সার্ভিস বাস চলাচল করতে দিচ্ছে না। এখন ব্যবসায়ী সমাজ কোথায়? তারা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সাদা পতাকা মিছিল করলেন। মানববন্ধন করলেন। এখন আসুন সরকারের বিরুদ্ধেও সাদা পতাকা মিছিল, মানববন্ধন করুন। সেটি তাদের কাছ থেকে আশা করা  যায় কি? ঢাকায় সমবেত হতে মানুষ এসেছে বন্যার স্রোতের মতো। যখন জোয়ার আসে, তখন বাঁধ দিয়ে তার কতটুকুইবা রক্ষা করা যায়!
সরকারও এই জনস্রোতকে রোধ করার জন্য পথে পথে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েছে। এমনকি বস্তা সাজিয়ে বাঙ্কার তৈরী করে বন্দুক তাক করে রেখেছে। জনগণের বিরুদ্ধে সরকারের যুদ্ধ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের নিকটজন কেউ ছিল না। কিন্তু বর্তমান হামলা যারা করছে তারা আমাদের পাড়া-প্রতিবেশী। নয়া পল্টনে বেগম খালেদা জিয়া যে সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন, সেটা অনুষ্ঠিত হলে সরকার বোধকরি ধসেই পড়ত। সরকারের প্রতি পদক্ষেপে সে কথাই আমাদের মনে হয়েছে।
২৯ ডিসেম্বরের দুই-তিন দিন আগ থেকে সংবাদপত্রে খবর বেরিয়েছে যে, ১৮ দলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কার্যত গৃহবন্দী। সেটি ২৮ তারিখ রাত থেকে আরো স্পষ্ট হয়ে উঠল। নেতৃত্বের অভাব ছিল এ কথা সত্য। বিএনপি, জামায়াতসহ ১৮ দলীয় জোটের যাকে যেখানে পাওয়া গেছে তাকে সাথে সাথে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরপর চালানো হয়েছে যৌথবাহিনীর নামে নির্যাতন।
২৮ তারিখ রাত থেকেই বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ির দুই দিকের প্রবেশপথই বালুভর্তি ট্রাক দিয়ে আটকে দেয়া হয়। র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি গিজগিজ করতে থাকে। সেখানে সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। মিডিয়া কর্মীরাও পরিস্থিতির সংবাদ প্রচার করতে পারছিলেন না। ২৯ তারিখ সে চিত্র আরো ভয়াবহ রূপ নেয়। পথের বাধা তো আমরা দেখেছি। আর এ কথা সত্য যে, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে নয়া পল্টনে গিয়ে দাঁড়ানোর সে রকম কোনো শক্তিশালী নেতা ছিলেন না। থাকলে সম্ভবত মুহূর্তে লাখো মানুষের সমাগম থাকত সেখানে।
আর সে কারণেই সরকার খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করে ফেলে। ২৯ তারিখের এক দিকে সকাল থেকে বেগম খালেদা জিয়া নয়া পল্টনে আসার চেষ্টা করছিলেন; কিন্তু তাকে আসতে দেয়া হচ্ছিল না। তেমনি চিত্র দেখা গেল জাতীয় প্রেস কাব, সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গন ও কদম ফোয়ারা এলকায়। প্রেস কাবে চলছিল সাংবাদিকদের সমাবেশ। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে আইনজীবীরা বেরিয়ে এসে যোগ দিতে চেয়েছিলেন নয়া পল্টনের সমাবেশে। আর মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আসছিলেন কার্জন হল থেকে। এই তিন স্থানে র‌্যাব, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ একযোগে হামলা চালায়। আশ্চর্য ঘটনা এই যে, আইনজীবীরা যখন বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন, তখন তাদের পুলিশের জলকামান হামলা করেছিল। গেটে তালা দেয়া ছিল। আইনজীবীরা বের হতে পারছিলেন না। কিন্তু এই তালা ভেঙে লাঠিসোটা নিয়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের ক্যাডাররা ভেতরে ঢুকল। তখন পুলিশ কোথায় যে মিলিয়ে গেল বোঝা গেল না। তারা গিয়ে ভাঙচুর করল। আগুন জ্বালাল। মহিলা আইনজীবীকে মাটিতে ফেলে পেটালো। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করল। কেউ কাছ থেকে, কেউ টেলিভিশনের পর্দায় আমরা সে বীভৎস দৃশ্য দেখলাম।
আর দেখলাম বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে পুলিশের বাহাদুরি। তাকে নয়া পল্টনে আসতে না দেয়ায় তিনি বাসার ভেতরেই গণতন্ত্রের অভিযাত্রাঅব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন এবং পরদিন অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বর একইভাবে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের নয়া পল্টনে হাজির হওয়ার আহ্বান জানান। আর ঘোষণা দেন, তিনি সেখানে উপস্থিত থাকবেন। 


 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads