বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ডামাঢোল পিটিয়ে জনগণের কান যথেষ্ট ঝালা পালা করে তুলেছেন। বর্তমানে এটা ব্যঙ্গ স্লোগান হিসেবে যে কোন নেতিবাচক উদাহরণে শব্দটি ব্যবহার লক্ষণীয়। শব্দটি ভালই ছিল। কিন্তু ব্যবহারকারীর অযোগ্যতার কারণে শব্দটি ব্যঙ্গ হয়ে গেছে। কাক নাচলে কি ময়ূরের মত দেখায়? হাসিনার ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমনি হয়েছে।
আগস্ট মাসের শেষ দিকে ডিজিটাল বিলবোর্ডে সরকার দেশবাসীকে দেখালেন উন্নয়নের যত ছবি। দুর্ভাগা জনগণকে ছবি দেখেই ঢোক গিলতে হল। উন্নয়নের সুফল ভোগ নয় উপভোগ কর দেশবাসী। ঐ উন্নয়ন শুধু ক্যামেরা চোখই দেখতে পায়। অপর দিকে দেশের মানুষের চোখে মুখে ও মনের পর্দায় যে ছবি ও ক্ষত চিহ্ন এঁকেছে এ সরকার তা হল ব্যর্থতার ডিজিটাল বিলবোর্ড। যার কিছু অংশ তুলে ধরছি।
* পিলখানা ট্র্যাজেডি : শেখ হাসিনা ক্ষমতা দখলের কয়েক মাসের মাথায় জনগণের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে পিলখানা ট্র্যাজেডির মাধ্যমে। দেশে এই প্রথম স্বশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে নির্মম ইতিহাসের জন্ম হয়। সুবিচারের পরিবর্তে মানুষকে দেখতে হয়েছে মায়াকান্নার অভূতপূর্ব অভিনয়।
* ছাত্রলীগ : শেখ হাসিনার অসামরিক অস্ত্রধারী দলীয় ক্যাডার বাহিনীর নাম ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। এমন কায়দায় গড়ে তোলা হয়েছে বিরোধী দল দমনে, মিছিল মিটিং প-করণে, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ছড়ানো, নিজের অপরাধ অন্যের ঘাড়ে চাপানোসহ হত্যা, খুন, গুম, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, ধর্মের অবমাননাসহ জাহিলিয়া যুগকে হার মানায় এমন সব অপকর্মের প্রবর্তক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। দলীয় কোন্দলে পড়ে অস্ত্রের খাবারে পরিণত হয়েছে শত শত নেতাকর্মী। ২৮ অক্টোবরের লগি বৈঠার ভয়াবহ ট্র্যাজেডি থেকে সরকারের এ পর্যন্ত সময় চালিয়ে যাচ্ছে এহেন কার্যকলাপ। খোদ প্রধানমন্ত্রীর দিকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করতেও তাদের কোন তোয়াক্কা নেই।
* সংবিধান পরিবর্তন : বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংবিধান পরিবর্তনের উৎসবে মেতে উঠে। জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষা করে হীন ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতে যেখানেই সাংবিধানিক বাধার সম্মুখীন হয়েছে সেখানেই সংবিধান পরিবর্তন করেছে। অভিনব পদ্ধতিতে সংবিধান পরিবর্তনের রেকর্ড সৃষ্টি করে সংবিধান থেকে জনমানুষের আস্থা, শ্রদ্ধা তুলে দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্র পরিচালনায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে হাসিনা সরকার।
* দেশবিরোধী চুক্তি : যে কোন দেশের সরকার সে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যতটুকু সম্ভব বিদেশীদের সাথে চুক্তি করে। অথচ বর্তমান সরকার দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে দেশবিরোধী চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে চুক্তিকরণ নিয়ম রক্ষা করে। এ জন্য কোন কোন সাংবাদিককে রহস্যজনক খুনের শিকার হতে হয়। বিশেষ করে ভারতের সাথে এমন সব চুক্তি করেছে যাতে বুঝা যায় শেখ হাসিনা ভারতের ছায়া সরকার। কারণ ভূমি চুক্তি, তিস্তা চুক্তি, পার্বত্য এলাকা থেকে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার, সাংস্কৃতিক চুক্তি, শিল্প ও বাণিজ্য চুক্তি প্রমাণ করে ভারতকে যেন একথা বলাÑ আপনার যত লাগে নেন আমাকে নোবেল পুরস্কার ও আবার ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করেন।
* নাম পরিবর্তন : শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই হীন, ঘৃণ্য ও জঘন্য মানসিকতার পরিচয় তুলে ধরেন বিভিন্ন স্থাপনা, ম্যুরাল ভেঙ্গে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে দিয়ে নিজের পিতার নাম ও নিজের নামে এবং অন্যান্য নামে পরিবর্তন করার মাধ্যমে। এতে একদিকে যেমন ঘৃণ্য প্রতিহিংসা প্রকাশ পেয়েছে অপরদিকে জাতীয় অর্থ অপচয় করে ব্যর্থতার সাইন বোর্ড টাঙিয়েছেন জনগণের সামনে।
* নজীরবিহীন দলীয়করণ : সব সরকারই কিছু না কিছু দলীয়করণ করে। তবে হাসিনার মতো এমন নগ্ন দলীয়করণের উদাহরণ নেই। গার্ড মালি থেকে শুরু করে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত এমন কোন স্তর নেই যেখানে দলীয় ভিত্তিতে নিয়োগ, পদোন্নতিসহ চাকরি দেয়া হয়নি। মেধা ও যোগ্যতার বিচারে নয় সর্ম্পূণ দলীয় বিবেচনায় দলীয় নেতাকর্মী ও ক্যাডারদের নিয়োগ দিয়ে জাতিকে মেধাশূন্য করার হীন চেষ্টা করেছে বর্তমান সরকার।
* ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে আইন-আদালত নিজের মতো ব্যবহার : হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে মরিয়া। সেজন্য সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল, বিরোধী দলের ওপর মিছিল মিটিং না করার বিধি-নিষেধ আরোপ, ফাঁসির আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া, বিরোধী জোটের লাখ লাখ লোককে গ্রেপ্তার, আইন করে নিজেদের নামে ভূমি দখলসহ আদালতের যে কোন রায় নিজের ইচ্ছেমতো প্রদান করে।
* বাংলাদেশকে ধর্মহীন রাষ্ট্রে রূপান্তর : শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে একটি মুসলিম দেশকে আইন করে ধর্মহীন রাষ্ট্রে পরিণত করে; যে দেশের ৯০% জনগণ মুসলমান। ধর্ম নিরপেক্ষতার সুর তোলে ইসলাম ধর্মকে নির্বাসনে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন শেখ হাসিনা। সংবিধান থেকে আল্লাহর ওপর আস্থা তুলে দিয়ে বাংলাদেশকে বেঈমান রাষ্ট্রে পরিণত করেন এ হাসিনা।
* গণতন্ত্রের আড়ালে নব্য বাকশাল : শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাহাত্তরের বাক্য আওড়াতে থাকেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথ এমনভাবে সংকীর্ণ করেন যাতে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন দল আর বাঁচতে না পারে। সে জন্য বৈধ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশি ও দলীয় হামলা, বিএনপি অফিসে তল্লাশির নামে ভাংচুর, দলীয় অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি-ঘর পুড়ানো, বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উৎখাত, সাংবাদিককর্মীদের হত্যা ও নির্যাতন সবকিছু প্রমাণ করে শেখ হাসিনা যতই মুখে গণতন্ত্রের কথা বলুক আসলে পিতার সেই বাকশালের আধুনিক সংস্ককরণ প্রকাশ করেন।
*.আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি : হাসিনা সরকারের শাসনের নিত্যচিত্র হল আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি ও দুরবস্থা। এমন কোন দিন নেই খবরে হত্যা অথবা গুম নয়তো অমুক স্থানে সংঘর্ষ, কিংবা অমুক স্থান রণক্ষেত্র, পুলিশি একশন, ইত্যাদি স্থান পাচ্ছে না।
ক্ষেত-খামারে, নদীতে, পুকুরে, খালে-বিলে, ডোবা-নর্দমায়, নিজ বাসায়, রাস্তার পাশে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত, খ- খ-, গলিত-অর্ধগলিত লাশের ছড়াছড়ি। এমনকি ময়লা-আবর্জনার স্তূপেও পাওয়া যাচ্ছে মানব কঙ্কাল। এসব সংবাদ পড়ে মনেই হয় না এটা কোন স্বাধীন দেশ; এ দেশে সরকার, আইন অথবা বিচার আছে। বরং এটা যেন আরব্য উপন্যাসের কল্পিত মৃত্যুপুরী।
* পুলিশ বাহিনী নয় দেশে আছে হাসিনা বাহিনী : শেখ হাসিনার সাফল্যের আরেক অধ্যায় বাংলাদেশ পুলিশকে নিজের অনুগত বাহিনীতে পরিণত করা। গত পৌনে পাঁচ বছরে পুলিশের ভূমিকা ছিল হাসিনার দলীয় কর্মী বাহিনীর। চাপিয়ে দেয়া অবৈধ আদেশ মানতে পুলিশসহ সকল সরকারি আমলাকে বাধ্য করা হয়। আদেশ না মানলে চাকরিচ্যুত করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয় বারবার। আর তাই শেখ হাসিনার মনোতুষ্টি অর্জনে পুলিশের ভূমিকা ছিল অভূতর্পূব নির্যাতন, নির্বিচারে গুলী করে গণহত্যা, বোমা বিস্ফোরণসহ পুলিশের সামর্থের সর্বোচ্চ শক্তি ও সামর্থ্য নিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা।
বিশেষ করে আল্লামা সাঈদীর রায়পরবর্তী সময়ের পুলিশের দৌরাত্ম্য শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছিল। মনে হয়েছিল পুলিশ বাহিনী নিশ্চিত কোন সামরিক যুদ্ধে ব্যস্ত। এ দৃশ্য মাঝে মাঝেই দেখা যায়।
* হলমার্ক ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু দুর্নীতিসহ নানা আর্থিক অনিয়ম : হাসিনা সরকার ব্যর্থতার যে অতল গহ্বরে নিমজ্জিত তার একটি বৃহৎ অর্জন হলমার্ক, শেয়ারবাজার ও পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি। হাজার হাজার কোটি টাকা যাদুর কাঠি নেড়ে মুহূর্তেই গায়েব করে দেয়া, বিশ্বব্যাংকের তদন্ত রিপোর্ট, প্রতিবছরের সেরা বাজেটের টাকা বিভিন্ন প্রকল্পের নামে ভাউচার দিয়ে নিজেদের পকেটভারী করাসহ জাতীয় অর্থ লোপাটে পারদর্শিতা অর্জন করেছে বঙ্গবন্ধু কন্যা। আর বারবার তেলের দাম বাড়িয়ে দ্রব্যমূল্য বাজারে আগুন, সরকারের মনে ফাগুন আর সাধারণ মানুষের দ্বিগুণ অর্থ গুণতে হচ্ছে প্রতিবছর।
* এমপি-মন্ত্রীদের ব্যর্থতার উপাধি : হাসিনার এমপি- মন্ত্রীদের কুকীর্তির শেষ নেই। এ জন্য সবাই কিছু না কিছু উপনামে পরিচিত হয়ে গেছেন। যেমন কেউ কালো বিড়াল, কেউ আবুল, কেউ ফটকাবাজ, কেউ শকুনের মতো ২৪ ঘণ্টা খুনি ধরেন, আবার কেউ রানা প্লাজা ধসের কারণ জামায়াত-শিবির মন্তব্য করে পাগল বনে গেছেন। এতে কারো বুঝতে কষ্ট হয় না হাসিনার সফলতা কোন দিকে।
* যুদ্ধাপরাধ ইস্যু : বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অদ্ভুত নাটকের নাম যুদ্ধাপরাধ ইস্যু। আবার এটাকে মানবতাবিরোধী অপরাধও বলা হয়। নাটক এজন্য ৪২ বছর পর বিচার, সরকারপক্ষ সাক্ষীদের অসঙ্গতিপূর্ণ সাক্ষ্য, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ, স্কাইপি কেলেঙ্কারি ট্রাইব্যুনাল ছাড়া অন্য কোন উৎস থেকে রায়, অপরাধ যা-ই থাকুক না কেন অভিযুক্তদের ফাঁসি ইত্যাদি। মূলত জামায়াত ও বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে নির্মূল করার জন্যই এ আয়োজন। তাছাড়া বিষয়টিকে সরকারের ব্যর্থতা ঢেকে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে ফিরিয়ে দেয়ার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া এটাকে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় যাওয়ার একটি ট্রাম কার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন হাসিনা।
* ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত : বর্তমান সরকার এ দেশের মুষ্টিমেয় নাস্তিক ও বামপন্থীদের সাথে নিয়ে ক্ষমতায় আসে। এসেই রাষ্ট্রকে বেঈমান বানিয়ে ফেলে। অতপর যুদ্ধাপরাধ মামলায় কাদের মোল্লার রায় ঘোষণার প্রেক্ষিতে নাস্তিক ও বামপন্থীরা গণজাগরণ মঞ্চ বানিয়ে এবং কৌশলে সাধারণ মানুষকে ব্যবহারের ব্যবস্থা করে দেয় সরকার; আর শুরু হয় ইসলাম ধর্মের অবমাননার লীলা খেলা। তাছাড়াও রামুতে কুরআন অবমাননা ও তার পরবর্তী বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা মানুষের মন থেকে ধর্মীয় অনুভূতি তাড়ানোর নগ্ন পৃষ্ঠপোষণ করেন হাসিনা। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ধর্মপ্রাণ আলেম ও মুসলিম জনতা আর সরকার রচনা করে গণহত্যার ইতিহাস।
* হেফাজত ইস্যু : শেখ হাসিনা যখন নাস্তিক ব্লগার ও বাম রামদের জামাই আদরে পোষতে থাকেন আল্লামা আহমদ শফী তাদের শাস্তির দাবিতে ৫ মে ডাক দেন হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে মহাসমাবেশ। শাপলা চত্বর নয় সারা ঢাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। তা দেখে সরকারের ভিত নড়ে উঠে। রাতের আঁধারে ঘুমন্ত ও ইবাদতে রত তওহিদী জনতার ওপর হাসিনার নির্দেশে চালানো হয় গণহত্যা। বিষয়টি চোখ এড়াতে পারেনি আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও বিশ্ববাসীর। শোকে মুহ্যমান হয়ে যায় দেশের মানুষ। এমন কি আওয়ামী লীগের আজন্ম হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থক আওয়ামী লীগকে আর সমর্থন না দেয়ার তাওবা করে। ফলে প্রায় সব সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ফুটে ওঠে সরকারের ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।
* পোশাক শিল্প, আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারসহ বিদেশী বিনিয়োগ ও শিল্প কারখানায় ধস : ধর্মবিদ্বেষী দেশের শত্রু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের কপালে শনি লাগে। দেশের অর্থনীতির অর্ধেকেরও বেশি ভূমিকা রাখে তৈরি পোশাক ও বৈদেশিক রেমিটেন্স। হাসিনার ব্যর্থতায় যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক জিএসপি সুবিধা স্থগিত, পঙ্গু পররাষ্ট্রনীতির ফলে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে মন্দা, শ্রমিক অসন্তোষ, বিদেশী বিনিয়োগ মুখ থুবড়ে পড়াসহ শত শত শিল্প কারখানা বন্ধ হওয়ার মতো ব্যর্থতার বাস্তব চিত্র দেশের গলায় ঝুলিয়েছেন হাসিনা। গার্মেন্টস কারখানায় আগুন এবং ভবন ধস যেখানে কেড়ে নিয়েছে হাজার হাজার শ্রমিকের জীবন সেখানে রেশমা উদ্ধার নাটক করে শ্রমিকের রক্তের সাথে বেঈমানী করেছে হাসিনা সরকার।
* শিক্ষাখাতে গভীর ষড়যন্ত্র : ক্ষমতায় এসেই হাসিনা সরকার শিক্ষাখাতে গভীর ষড়যন্ত্রের জাল বুনে। পরিকল্পিতভাবে কাগজের গুদামে আগুন লাগিয়ে প্রেস সুবিধা ভারতে পাঠায়। আর গল্প করে বছরের প্রথমদিন বই দিয়েছি শিক্ষার্থীর হাতে। শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে ধর্মহীন নাস্তিক্য শিক্ষা সিলেবাস করে জাতি গড়ার আয়োজন করে। শিক্ষকদের এমপিও ও বেতন না বাড়িয়ে মানবেতর জীবন চালানোর ব্যবস্থা করেছে যাতে মেধাবীরা শিক্ষা সেবা দেয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। আধুনিকায়নের নামে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা নির্মূলের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে হাসিনা। আর তার নাম দিয়েছে জাতীয় শিক্ষানীতি।
* মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ : ফ্যাসিবাদী বাকশাল হাসিনা সরকারের ব্যর্থতা ঢাকার একমাত্র অবলম্বন হলো সংবাদপত্র ও মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করা। মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার, দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি চ্যানেল বন্ধ করাসহ সংবাদ সেন্সর করেছেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধ করার মতো ন্যাক্কারজনক স্বৈরাচারিতা পৃথিবীর কোথাও নেই।
* দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি : ক্ষমতায় আসার আগে ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে হাসিনা। ক্ষমতায় আসার পর মিথ্যুক হাসিনা অবলিলায় অস্বীকার করে বসেন। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে দ্রব্যমূল্যে উত্তাপ ছড়ায়। হাসিনা এসে তাতে আরো গরম হাওয়া দিয়ে জনগণকে পিষতে থাকেন। ক্ষমতায় এসে পৌনে পাঁচ বছরে দফায় দফায় তেলের দামসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায়। যার প্রভাবে জনগণ ঈদ আর দুঃসময় পার্থক্য করতে পারে না।
* অতিরিক্ত ভারতপ্রীতি ও গলাবাজি : হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্রনীতি একগুঁয়ে, বিকলাঙ্গ ও ভারতের প্রতি নতজানু। আর এজন্য ভারত বাংলাদেশের প্রভু সেজে বসেছে এবং একতরফা সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে। তার প্রমাণ সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ করতে পারছে না সরকার। ফেলানী হত্যার যেনতেন রায় বাংলাদেশের প্রতি ভারতের তাচ্ছিল্যভরা মনোভাবের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পাকিস্তানের ১৯৪৭ পরবর্তী সময়ে ২৪ বছরের শোষণ এড়াতে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। অথচ ভারত বাংলাদেশকে ৪২ বছর ধরে বিভিন্নভাবে শোষণ করছে। আওয়ামী লীগ সেই ভারতের সুবিধার্থে ট্রানজিটসহ বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে। আর হাসিনা ও তার হাইব্রিড নেতারা কোচিং সেন্টারে বক্তব্য শিখে এসে মিডিয়ার সামনে চাপাবাজি ও গলাবাজি করেন। এটা ব্যর্থতার অন্য রকম বহিঃপ্রকাশ। কথায় আছে “চোরের মার বড় গলা, খায় দুধ আর কলা।”
পরিশেষে বলব হাসিনা যা নিয়ে গলাবাজি করছেন তা মূলত একটা দেশের চলমান উন্নয়নেরই অংশ মাত্র। এ সরকারের সাফল্য বলতে যা কিছু উল্লেখ করা হয়েছে তা-ই।
দেশ স্বাধীন করতে দেশের মানুষ এজন্যই কি রক্ত দিয়েছিল? এভাবে আর চলতে দেয়া যায় না। দেশের মানুষের কাছে সময় আসন্ন সিদ্ধান্ত নেয়ার। ‘রক্ত পিপাসু হাসিনার পতন চাই’ এ একটি স্লোগান ধরে গণবিপ্লবে তলিয়ে যাক আওয়ামী ব্যর্থ নৌকা।
আওয়ামী জাহিলিয়াত কেটে ধর্ম ও দেশের সাফল্যে অরুণোদয় হোক সবুজের দেশে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন