স্বার্থান্বেষী মানুষের একটা স্বাভাবিক প্রবণতা হচ্ছে, শক্তি ও সাহসিকতার পুজো করা, অকুতোভয়
শক্তিকে সমীহ করে চলা। সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ বীরত্বকে শ্রদ্ধা করে আসছে, বীরের জয়গান গেয়ে আসছে। কাপুরুষতা,
ভীরুতা ও দুর্বলতাকে ঘিরে পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো গণ-অভ্যুত্থান বা
গণজোয়ার সৃষ্টির একটি নজিরও নেই।
রাজনৈতিক অভ্যুত্থান বা রাজনীতির মাঠে টিকে থাকার লড়াইয়ে এ কথা যেন আরো কঠিনভাবে প্রযোজ্য। বিষয়টি খোলাসা করতে সুদূর অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করে শুধু বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতির দিকে একটি সতর্ক দৃষ্টি দিলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।
শুধু গত এক বছরের বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা দেখেছি, একটি শক্তির অবিশ্বাস্য উত্থান। তারা দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সফলভাবে সম্পন্ন করছে। মতার পালাবদলে যাদের ভূমিকা সামান্য শরিক দল হিসেবেই সীমাবদ্ধ। অথচ এক বছর আগে কারো কল্পনায়ও হয়তো ছিল না এ ধরনের সংগঠন দেশব্যাপী হরতালের ডাক দেয়ার দুঃসাহস রাখে। দেখা গেল শুধু এই দুঃসাহস দেখানোই নয়, তা সফলভাবে একাধিকবার বাস্তবায়ন করেও দেখাল তারা।
অথচ তাদের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তর পর্যন্ত সব কেন্দ্রীয় নেতা কারাগারে বন্দী। কিন্তু এর পরও রাজপথে তারা সরকারের জন্য এক মূর্তিমান আতঙ্ক। সচেতন সমাজের অনেকেই মনে করেন, এই রাজপথ কাঁপানো আন্দোলন সফল হবে তাদের বীরত্বপূর্ণ সাহসিকতার কারণে।
ঢাকা থেকে শুরু হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিবৃষ্টির সামনে বীরের বেশে একাধিকবার মানুষ দেখেছে কিভাবে তারা আন্দোলন করছে।
দেশে টেলিভিশন মিডিয়ার ব্যাপক বিস্তারের ফলে মানুষ শুধু মুখেই নয়, জলজ্যান্ত ভিডিওতে দেখেছে তাদের হার না মানা আন্দোলন। একের পর এক লাশ, লাশের মিছিল বেড়েই চলছে; কিন্তু আন্দোলনে এতটুকু ভাটা পড়ছে না।
যতই দিন যাচ্ছে এই অনমনীয় রূপ যেন দিন দিন আরো জোরালো হয়ে উঠছে। কোনো কিছুই যেন তাদের প্রতিরোধ করতে পারছে না। বোদ্ধা মহলের মতে, একবার কেউ যখন নিজেকে বীরের বেশে স্বজাতির সামনে আবির্ভূত করতে সম হন, তখন সেই বীরের জন্য জীবন বিলিয়ে দিতে টগবগে তরুণ ও গরম রক্তের যুবকের আর অভাব হয় না। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে একাত্তরে দেশের সর্বস্তরের মানুষের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়াই এ েেত্র প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
দেশের প্রধান বিরোধী দলের বর্তমান চিত্র ঠিক অতটা নয়। দিন দিন নিজেদের দুর্বল অবস্থান কাটিয়ে উঠে প্রতিবাদমুখর হতে চেষ্টা করছে। হরতালের ডাক দিয়ে রাজপথে কোনো নেতাকে দেখা যায় না। দলটির এই দৈন্যদশা দেখে শুধু সাধারণ মানুষই নয়, মতাসীন আওয়ামী লীগও প্রতিনিয়ত ঠাট্টাবিদ্রƒপ করছে। অথচ জোটনেত্রীর অবস্থান স্বচ্ছ এবং আপসহীন।
যেই পুরনো ঢাকায় একসময় দেখা যেত কোনো-না কোনো কেন্দ্রীয় নেতার নেতৃত্বে বিরাট মিছিল, সেই নেতারাও রহস্যজনকভাবে আক্রোশের শিকার। তবে রহস্যজনক হলেও এই রহস্য অনেকের কাছেই স্পষ্ট। খিলগাঁও শাহজাহানপুরের অলিগলিতে এখনো যেই নেতার নাম, সেই নেতাকেও দমনপীড়ন
তাড়িয়ে ফেরার কারণে দেখা যায় না আগের মতো রাজপথে।
শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, পিলখানায় নারকীয় হত্যাকাণ্ড, সেনাবাহিনী তদন্ত রিপোর্ট পর্যন্ত প্রকাশ না করেই সেই হত্যাকাণ্ডের একতরফা বিচার, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, একের পর এক শীর্ষ নেতা গুম-খুন, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু দুর্নীতি, বেগম জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদÑ এমন ডজন ডজন ইস্যু গত পাঁচ বছরে বিরোধী দলের পায়ের কাছে লুটোপুটি খেয়েছে।
আসলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে বিরোধী দলকে এমন জায়গায় ঠেলে দিয়েছে সরকার, এই মুহূর্তে তাদের কঠোর আন্দোলন ছাড়া কোনো উপায় নেই। আর একেবারে শেষপর্যায়ে এসে আন্দোলনের ডাক দিয়েও মাঠে না থাকলে পরিস্থিতি জনগণের অনুকূলে আনা যাবে কিভাবে!
রাজনীতির মাঠে প্রতি ফোঁটা রক্ত, প্রতি মুহূর্তের জেল-জুলুমের মধ্য দিয়ে রাজনীতির ময়দান উর্বর হয়। বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সর্বশেষ এই ধরপাকড় রাজনীতিকে মজবুত করবে নাকি আবারো সেই পুরনো স্টাইলে ষড়যন্ত্রকারীদের সুবিধা করে দেবেÑ মাঠপর্যায়ে এখন বিরোধী দল কর্মীবাহিনী নিয়ে কতটা সক্রিয় থাকবে তার ওপরই বিষয়টি নির্ভর করবে।
রাজনৈতিক অভ্যুত্থান বা রাজনীতির মাঠে টিকে থাকার লড়াইয়ে এ কথা যেন আরো কঠিনভাবে প্রযোজ্য। বিষয়টি খোলাসা করতে সুদূর অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করে শুধু বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতির দিকে একটি সতর্ক দৃষ্টি দিলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।
শুধু গত এক বছরের বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা দেখেছি, একটি শক্তির অবিশ্বাস্য উত্থান। তারা দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সফলভাবে সম্পন্ন করছে। মতার পালাবদলে যাদের ভূমিকা সামান্য শরিক দল হিসেবেই সীমাবদ্ধ। অথচ এক বছর আগে কারো কল্পনায়ও হয়তো ছিল না এ ধরনের সংগঠন দেশব্যাপী হরতালের ডাক দেয়ার দুঃসাহস রাখে। দেখা গেল শুধু এই দুঃসাহস দেখানোই নয়, তা সফলভাবে একাধিকবার বাস্তবায়ন করেও দেখাল তারা।
অথচ তাদের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তর পর্যন্ত সব কেন্দ্রীয় নেতা কারাগারে বন্দী। কিন্তু এর পরও রাজপথে তারা সরকারের জন্য এক মূর্তিমান আতঙ্ক। সচেতন সমাজের অনেকেই মনে করেন, এই রাজপথ কাঁপানো আন্দোলন সফল হবে তাদের বীরত্বপূর্ণ সাহসিকতার কারণে।
ঢাকা থেকে শুরু হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিবৃষ্টির সামনে বীরের বেশে একাধিকবার মানুষ দেখেছে কিভাবে তারা আন্দোলন করছে।
দেশে টেলিভিশন মিডিয়ার ব্যাপক বিস্তারের ফলে মানুষ শুধু মুখেই নয়, জলজ্যান্ত ভিডিওতে দেখেছে তাদের হার না মানা আন্দোলন। একের পর এক লাশ, লাশের মিছিল বেড়েই চলছে; কিন্তু আন্দোলনে এতটুকু ভাটা পড়ছে না।
যতই দিন যাচ্ছে এই অনমনীয় রূপ যেন দিন দিন আরো জোরালো হয়ে উঠছে। কোনো কিছুই যেন তাদের প্রতিরোধ করতে পারছে না। বোদ্ধা মহলের মতে, একবার কেউ যখন নিজেকে বীরের বেশে স্বজাতির সামনে আবির্ভূত করতে সম হন, তখন সেই বীরের জন্য জীবন বিলিয়ে দিতে টগবগে তরুণ ও গরম রক্তের যুবকের আর অভাব হয় না। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে একাত্তরে দেশের সর্বস্তরের মানুষের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়াই এ েেত্র প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
দেশের প্রধান বিরোধী দলের বর্তমান চিত্র ঠিক অতটা নয়। দিন দিন নিজেদের দুর্বল অবস্থান কাটিয়ে উঠে প্রতিবাদমুখর হতে চেষ্টা করছে। হরতালের ডাক দিয়ে রাজপথে কোনো নেতাকে দেখা যায় না। দলটির এই দৈন্যদশা দেখে শুধু সাধারণ মানুষই নয়, মতাসীন আওয়ামী লীগও প্রতিনিয়ত ঠাট্টাবিদ্রƒপ করছে। অথচ জোটনেত্রীর অবস্থান স্বচ্ছ এবং আপসহীন।
যেই পুরনো ঢাকায় একসময় দেখা যেত কোনো-না কোনো কেন্দ্রীয় নেতার নেতৃত্বে বিরাট মিছিল, সেই নেতারাও রহস্যজনকভাবে আক্রোশের শিকার। তবে রহস্যজনক হলেও এই রহস্য অনেকের কাছেই স্পষ্ট। খিলগাঁও শাহজাহানপুরের অলিগলিতে এখনো যেই নেতার নাম, সেই নেতাকেও দমনপীড়ন
তাড়িয়ে ফেরার কারণে দেখা যায় না আগের মতো রাজপথে।
শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, পিলখানায় নারকীয় হত্যাকাণ্ড, সেনাবাহিনী তদন্ত রিপোর্ট পর্যন্ত প্রকাশ না করেই সেই হত্যাকাণ্ডের একতরফা বিচার, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, একের পর এক শীর্ষ নেতা গুম-খুন, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু দুর্নীতি, বেগম জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদÑ এমন ডজন ডজন ইস্যু গত পাঁচ বছরে বিরোধী দলের পায়ের কাছে লুটোপুটি খেয়েছে।
আসলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে বিরোধী দলকে এমন জায়গায় ঠেলে দিয়েছে সরকার, এই মুহূর্তে তাদের কঠোর আন্দোলন ছাড়া কোনো উপায় নেই। আর একেবারে শেষপর্যায়ে এসে আন্দোলনের ডাক দিয়েও মাঠে না থাকলে পরিস্থিতি জনগণের অনুকূলে আনা যাবে কিভাবে!
রাজনীতির মাঠে প্রতি ফোঁটা রক্ত, প্রতি মুহূর্তের জেল-জুলুমের মধ্য দিয়ে রাজনীতির ময়দান উর্বর হয়। বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সর্বশেষ এই ধরপাকড় রাজনীতিকে মজবুত করবে নাকি আবারো সেই পুরনো স্টাইলে ষড়যন্ত্রকারীদের সুবিধা করে দেবেÑ মাঠপর্যায়ে এখন বিরোধী দল কর্মীবাহিনী নিয়ে কতটা সক্রিয় থাকবে তার ওপরই বিষয়টি নির্ভর করবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন