‘রক্তবাহিত পথের
কোনো সত্য ভিত্তি নেই। অন্যের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কেউ জীবন পেতে পারে না’ এটা সেক্সপিয়ারের
বাণী। আজ নিজের কাছে দুর্বোধ্য লাগে, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে কী করে মানুষ হত্যা করা হয়? অপহরণের পর নিখোঁজ হয়।
মহাজোট ক্ষমতাসীন
হওয়ার পর থেকেই রাজধানীসহ দেশব্যাপী শুরু হয়েছে অপহরণ, খুন, গুপ্ত হত্যা ও
আতঙ্ক। রাজধানীবাসীর অভিযোগ, সবকটি ঘটনায়ই
অপহরণকালে সাদা মাইক্রোবাস ব্যবহার করা হয়েছে। এ পর্যন্ত যতগুলো অপহরণ ও গুপ্ত
হত্যা ঘটেছে তার কোনটিই ডিটেক্ট
করতে পারেনি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের এক
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১০ সালের
জানুয়ারি থেকে ২০ মাসে দেশে ৩২ টি
গুম ও পরবর্তীতে খুনের ঘটনা ঘটেছে। (সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময় ১১ ডিসেম্বর ২০১১)
অভিযোগ রয়েছে, দেশের এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র
সমালোচনার মুখে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ে এখন নতুন কৌশল নেয়া হয়েছে। ক্রসফায়ার
সংক্রান্ত বিষয় উল্লেখ করে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো প্রেস
বিজ্ঞপ্তি বর্তমানে মিডিয়ায় পাঠানো হচ্ছে না। ক্রসফায়ারকে শূন্যের কোঠায় আনা
হয়েছে, তা প্রমাণ করতে আইন-শৃংখলা
রক্ষাকারী বাহিনীর এই কৌশল। ১৩ নভেম্বর ২০১০ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা
খাতুনও বলেছেন, দেশে ক্রসফায়ার বলতে কিছু নেই।
দুর্বৃত্তদের
দ্বারা অপহরণ ও গুমের অভিযোগগুলো ভিন্ন মাত্রার। এখন সেসব গুম হচ্ছে যেসব ক্ষেত্রে
অভিযোগ সরাসরি আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে। ৭ এপ্রিল ২০১০ ঢাকা সিটি
কর্পোরেশনের (ডিসিসি) ৭০ নং ওয়ার্ড কমিশনার আহাম্মদ হোসেন হত্যা মামলায় বসুন্ধরা
গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের একটি শুনানিতে রিট আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস
বলেন, ‘আমার এলাকার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারির ছোট ভাইকে র্যাবের
কয়েকজন সদস্য ২০ মার্চ ধরে নিয়ে গেছে। এখনো তাঁর সন্ধান করতে পারছি না। এ হলো
দেশের অবস্থা। সরকারি দলের লোক হয়েও আমি নিরুপায়।’ (সূত্রঃ দৈনিক
কালের কন্ঠ ৮ এপ্রিল ২০১০)
২৬ মার্চ ২০১০ র্যাবের
ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে র্যাবের মহাপরিচালক হাছান
মাহমুদ খন্দকার বলেছেন, ‘আমাদের কারও কারও নৈতিক অবক্ষয় ও স্খলন
হয়েছে। তবে এ সংখ্যা খুবই সামান্য। আমরা সততা নিয়ে কাজ করছি, চেষ্টা করছি গুটিকয়েক মানুষের জন্য আমরা যেন কলঙ্কিত
না হই।’ তিনি অসৎ র্যাব সদস্যদের উদ্দেশে হুশিয়ারি উচ্চারণ
করে বলেন, ‘কথায় কাজ না হলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নিতে
বাধ্য হবো।’
প্রতিদিন ঢাকার
আশপাশ থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার হচ্ছে। অথচ পুলিশ এসব খুনের রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ
হচ্ছে। এ কারণে বারবার একই ঘটনা ঘটছে। অপহরণের পর যে জিডি দায়ের হয় তা সঠিকভাবে
তদন্ত করা প্রয়োজন। পুলিশ জিডি নিয়ে বসে থাকে তদন্তে গাফিলতি করে। এর ফলে অনেককে
জীবিত উদ্ধার করতে তারা ব্যর্থ হন।
যাদের লাশ মিলছে
তাদের খুনের রহস্য উদ্ঘাটিত হচ্ছে না। অনেকের পরিচয়ও মিলছে না। আবার নিহতের
পরিচয় মিললেও মিলছে না খুনির পরিচয়। মামলা হলেও তদন্তে অগ্রগতি না থাকায় জানা
যাচ্ছে না খুনের কারণ। ধরা যাচ্ছে না হত্যাকা-ে জড়িতদের। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী
বাহিনীর বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রমে চরম গাফিলতির অভিযোগ করছে নিহতদের স্বজনরা। এসব
গুপ্তহত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে সরকারি পর্যায়ের কোনো উদ্যোগ বা তৎপরতা দেখা যায় না।
রাজধানীসংলগ্ন
আশুলিয়া, সাভার, বিরুলিয়া, ডিএনডি বাঁধ, বুড়িগঙ্গা নদী বা
তুরাগ নদী, গাজীপুরের শালবন, কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জে যত্রতত্র লাশ উদ্ধারের ঘটনা
বেড়েছে আশঙ্কাজনকহারে। এমনকি অপহৃতদের যেন পরিচয় শনাক্ত না করা যায় সেজন্য কোনও
কোনও ঘটনায় মৃতদেহ নদীতে ফেলার পূর্বে রশি দিয়ে তাদের পেটের সঙ্গে ভারি ব¯ুÍ বেঁধে দেয়া হচ্ছে। যেন লাশ ভেসে উঠতে না পারে।
আঞ্জুমান মুফিদুল
ইসলামের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে
রাজধানীতে ছয় হাজার ৫৭৬টি বেওয়ারিশ লাশ দাফন করেছে তারা। রাজধানীর বাইরে দাফন
হয়েছে আরো প্রায় ছয় হাজার বেওয়ারিশ লাশ।
ভৌগোলিক কারণে
ঢাকার কাছে মুন্সীগঞ্জ জেলাকে ডাম্পিং স্পট হিসেবে বেছে নিয়েছে ঘাতকরা। একদিকে
মুন্সীগঞ্জ জেলার সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক
ও পদ্মা, মেঘনা ও ধলেশ্বরী নদী থাকায় লাশ
ফেলে যেতে নিরাপদ মনে করছে তারা। অনেক সময় মহাসড়ক ব্যবহার না করে ঘাতকরা হত্যার
পর লাশ নদীতে ফেলে দেয়। পরে তা ভাসতে ভাসতে চলে আসে মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে।
২০১১ সালে ২২টি, ২০১২ সালে ৮টি ও চলতি বছরে
জানুয়ারি মাসে ৪ লাশ নিয়ে বিগত ২৫ মাসে মোট ৩৪টি লাশ উদ্ধার করা হয়। এসব
হত্যাকা-ের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে একাধিক হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও কোন
ঘটনারই রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। বেশিরভাগ মামলাই ঝুলে রয়েছে। এছাড়া
উদ্ধার হওয়া কিছু লাশের ঘটনায় হত্যা মামলার পরিবর্তে সংশ্লি-ষ্ট থানাগুলোতে
অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় হতভাগ্য বেশ
কয়েকজনের লাশ দাফন করা হয়েছে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে। (সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর ৩১ জানুয়ারি
২০১৩)
সব মিলিয়ে মহাজোট
সরকারের গত সাড়ে চার বছরে অন্তত ১৫০ জন মানুষের নাম গুম, খুন ও নিখোঁজের তালিকায় উঠেছে। অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
যাদের নাম কোনো তালিকাতেই নেই। ২০১৩ সালের
প্রথম ৫ মাসে গুমের শিকার হয়েছেন ১২ ব্যক্তি। এতে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ
মানুষও রয়েছেন। (সূত্রঃ দৈনিক নয়াদিগন্ত ২৯ মে ২০১৩)
১৭ এপ্রিল ২০১৩ ঢাকায়
হিউম্যান রাইটস ফোরামের এক সংবাদ সম্মেলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
আইন সালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, বর্তমান সরকারের চার বছরে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর
হাতে নিহত হয়েছে ৪৬২ জন। বিভিন্নভাবে গুম হয়েছে ১৫৬ জন। এর মধ্যে লাশ উদ্ধার হয়েছে ২৮ জনের।
দেশ-বিদেশের
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখেও কমছে না গুম-খুনের ঘটনা। ২০১২ সালের
জানুয়ারিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘......ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করার ঘটনা অনেক বেড়ে
গেছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এক ধরনের নির্যাতনের বদলে অন্য ধরনের নির্যাতন
চালাচ্ছে-এমন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।’
সেন্টার ফর
মিডিয়া রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (এমআরটি) এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে দেশে গুপ্তহত্যা হয়েছে এক হাজার ৮৪টি। তবে
ওই সময়ে সারা দেশে খুন হয়েছে চার হাজার ৪১২ জন।
১৯ এপ্রিল ২০১৩ যুক্তরাষ্ট্রের
পররাষ্ট্র দপ্তর প্রকাশিত ২০১২ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে
বাংলাদেশের গুম ও গুপ্তহত্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এক নজরে বছরওয়ারী
কিছু ঘটনা
বর্ষÑ২০০৯
৪ ডিসেম্বর
সাতক্ষীরার কৃষক আন্দোলনের নেতা সাইফুল্লাহ লস্করের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে
পুলিশ তাঁর বাসায় অভিযান চালায়। এর পরই তার লাশ পাওয়া যায় বাড়ির পাশে। তার
গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন ছিল।
১৯ ডিসেম্বর
সাভারে ভাকুর্তা এলাকার কলাবাগান থেকে অজ্ঞাত যুবকের গুলীবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা
হয়েছে।
২১ ডিসেম্বর ঢাকা-আরিচা
সড়কের বলিয়রপুর এলাকা থেকে অজ্ঞাত যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আজ পর্যন্ত
এই দুই হতভাগা যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়েও
রয়েছে নানা প্রশ্ন।
২৩ ডিসেম্বর
খুলনার মংলায় হোটেল পারিজাতের পার্শ¦বর্তী কাশবনের ভেতর থেকে পূর্ব বাংলার
কমিউনিস্ট পার্টি জনযুদ্ধের আঞ্চলিক প্রধান শহীদুল ইসলাম শহীদের গুলীবিদ্ধ লাশ
পাওয়া যায়। তার বুকে ৩টি বুলেট বিদ্ধ ছিল। কয়েকদিন আগে সাদা পোশাকের লোকজন তাকে
ধরে নিয়ে যায়।
বর্ষÑ২০১০
১৭ এপ্রিল
রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে অপহৃত হন ঝালকাঠীর রাজাপুর থানা যুবদল নেতা মিজানুর
রহমান জমাদ্দার এবং তার দুই সহযোগী মুরাদ ও ফোরকান। কয়েক মাস পর ফোরকান বেরিয়ে এসে তাদের নিখোঁজ হওয়ার কাহিনী
মিডিয়ার সামনে তুলে ধরেন। কয়েক দিন পরে আবারো নিখোঁজ হন ফোরকান। মিজানের কোনো
হদিস মেলেনি আজো। এরপর মিজানের শ্যালক মিজান শিকদার এবং তার ভাতিজা সুমনকেও
একইভাবে গাজীপুর ও মিরপুর থেকে অপহরণ করা হয়। সে থেকে তারাও নিখোঁজ।
১৯ জুন মোহাম্মদপুরের
যুবদল নেতা মনজুর মোর্শেদ শিপুকে আইন-শৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। আট ঘণ্টা পর শিপুর
গুলীবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের ঈদগাহ মাঠে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলে মাত্র
ছয় মাসের মাথায় পুলিশ মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে।
২৫ জুন রাতে
রাজধানীর ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড থেকে আইন-শৃংখলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ধরে
নিয়ে যায় চৌধুরী আলমকে। ঘটনার পর তার পরিবার বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেছেন; কিšুÍ আজো সন্ধান মেলেনি
চৌধুরী আলমের।
২২ আগস্ট অপহৃত হন
ঢাকার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ আহ্বায়ক
মামুনুর রশিদ। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে
যোগদান শেষে ফার্মগেটে ফেরার পথে আইন-শৃংখলা
বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তাঁকে অপহরণ করা হয়। পরদিন গাজীপুরের জঙ্গল থেকে তাঁর লাশ
উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় দায়ের হওয়া মামলাটিরও কোনো অগ্রগতি
নেই।
বর্ষ২০১১
২৯ জুন ফার্মগেট
এলাকা থেকে অপহৃত হন ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান ও তাঁর
বন্ধু আকবর আলী। ২ জুলাই দুজনের লাশ পাওয়া যায় তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের পাশে। এ
ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা হয়। পুলিশ এত দিনেও ঘাতকদের চিহ্নিত করতে
পারেনি।
৪ জুলাই টিকাটুলির
রাজধানী সুপার মার্কেটের সামনে থেকে সজল ও ইমরান নামে দুই তরুণকে তুলে নিয়ে যায়
অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসীরা। ১২ জুলাই সজলের লাশ পাওয়া যায় ঢাকা বাইপাস সড়কের
পাশে সমরসিংহ গ্রামে। পরদিন ইমরানের গুলীবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় ঢাকা-মাওয়া সড়কের
পাশে কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ার একটি ইটভাটায়।
৩১ জুলাই রাজধানীর
গে-ারিয়া থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় জুয়েল সরদার ও তাঁর
চাচাতো ভাই রাজিব সরদারকে। একই সময়ে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাঁদের বন্ধু মিজানুর
রহমানও অপহৃত হন। এরপর ৩ আগস্ট জুয়েল ও মিজানের লাশ পাওয়া যায় গাজীপুরের পুবাইল
এলাকায়। আর রাজিবের লাশ পাওয়া যায় সিরাজদিখানের নিমতলী এলাকায়। তাঁদের শরীরে
গুলীর চিহ্ন ছিল। তিনটি লাশের গলায় একটি করে নতুন গামছা পেঁচানো ছিল। কী কারণে, কারা তাঁদের হত্যা করেছে, তা আজও জানতে পারেননি নিহতদের স্বজনরা। এ বিষয়ে মামলার অগ্রগতি নেই।
৩ সেপ্টেম্বর
রাজধানীর গে-ারিয়া এলাকা থেকে নিখোঁজ হন তপন দাস।
২৯ সেপ্টেম্বর আইন-শৃংখলা
বাহিনীর পরিচয়ে পল্টনের নিজ বাসার সামনে থেকে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি কে
এম শামীম আখতারকে অপহরণ করা হয়। তাঁর স্ত্রী মানবাধিকার কর্মী ঝর্ণা খানমের
অভিযোগ, ‘আমার স্বামীকে আমাদের বাসার কাছ থেকে তুলে নেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে বেঁধে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। আজ পর্যন্ত স্বামীর
কোন খোঁজ পেলাম না।’ (সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো ২২ এপ্রিল ২০১২)
১৯ অক্টোবর
সাভারের কাতলাপুর এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ঢাকা মহানগর ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী
লীগের সভাপতি হাজী নুর মোহাম্মদ। এরপর ৩ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ হন নূর হাজীর মেয়ের
জামাই আব্দুল মান্নান ও তার বন্ধু ইকবাল হোসেন।
১৭ নভেম্বর
মালিবাগ থেকে অপহরণ করা হয় ভোলার আরিফ, জসিম, জুয়েল, শেখ সাদী, দিদার, আকাশ ও মিরাজকে।
তারা ওই দিন সকালে ভোলার বোরহানউদ্দিন থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। তাঁরা পরস্পরের
আত্মীয়। ধরে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর মিরাজ ও শেখ সাদী নামের দুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। ১০ দিন পর আশুলিয়া এলাকা থেকে উদ্ধার হয় জসীমউদ্দীন
নামে একজনের লাশ।
২৮ নভেম্বর
রাজধানীর মিরপুর এলাকার ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসায়ী মাসুম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের
ছাত্র সূর্যসেন হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও গবেষণা সম্পাদক শামীম হাসান ওরফে সোহেল এবং
ঢাকা মহানগর ৫০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেনকে হাতিরপুল
এলাকা থেকে আইন-শৃংখলা বাহিনীর নামে অপহরণ করা হয়। ৮ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের
ধলেশ্বরী নদীতে দুটি ভাসমান লাশ পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি ইসমাইলের বলে শনাক্ত
করেছেন তাঁর স্বজনরা। সোহেল ও মাসুম এখনো নিখোঁজ।
১ ডিসেম্বর রাতে
ফার্মগেট এলাকা থেকে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক
মাহমুদুল হক খান দিপু অপহৃত হন। ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাই
এলাকার একটি পরিত্যক্ত ইটভাটা থেকে উদ্ধার হয় দুটি গুলীবিদ্ধ লাশ।
৮ ডিসেম্বর
রাজধানীর মিরপুর থেকে নিখোঁজ হন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কালাম শেখ, তার মামাতো ভাই আবুল বাশার শেখ, আব্দুল করিম ও আতাউর রহমান ওরফে ইস্রাফিল। একই দিনে
নিখোঁজ হন কামরাঙ্গীরচর আব্দুল আজিজ লেনের বাসিন্দা সুলতান হাওলাদার।
বর্ষÑ২০১২
৪ ফেব্রুয়ারি
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আল মুকাদ্দাস ও ওয়ালিউল্লাহ
নিখোঁজ রয়েছেন। ঢাকা থেকে হানিফ পরিবহনের একটি গাড়িতে কুষ্টিয়া যাওয়ার পথে
ইসলামী ছাত্রশিবিরের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এ দুই নেতা অপহৃত হন। আইন-শৃংখলা
বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তাদের অপহরণ করা হয়।
১৫ ফেব্রুয়ারি
শাহজাহানপুর থেকে অপহৃত হন দোকান কর্মচারী রফিকুল ইসলাম।
৪ এপ্রিল আশুলিয়া
থেকে নিখোঁজ হওয়ার এক দিন পর টাঙ্গাইল থেকে উদ্ধার করা হয় শ্রমিক নেতা আমিনুল
ইসলামের লাশ। আমিনুলের পরিবার ও সহকর্মীরা দাবি করেন, তিনি গুপ্তহত্যার শিকার। এ হত্যাকা-ের সঙ্গে একটি
গোয়েন্দা সংস্থার জড়িত থাকার কথা দাবি করেছেন তাঁরা। এক বছরেও এ হত্যা রহস্যের
কিনারা হয়নি।
৮ এপ্রিল পুরান
ঢাকার ফরাশগঞ্জ এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী তাবির উদ্দিন আহম্মেদ রানা।
১৭ এপ্রিল ঢাকা
মহানগর হাকিম আদালত থেকে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী রেজাউল করিম রিজভী।
১৭ এপ্রিল রাজধানীর
বনানী এলাকা থেকে নিখোঁজ হন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলী
এবং তার গাড়ীচালক আনসার আলী। ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারের জন্য স্ত্রী-সন্তানেরা
প্রধানমন্ত্রীর সাথেও সাক্ষাৎ করেছেন; কিন্তু কোনো ফল মেলেনি।
ইলিয়াস আলী
গুম হওয়ার মাসখানেক আগে অপহরণের শিকার হন সিলেট জেলা ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক
দিনার ও ছাত্রদল নেতা জুনায়েদ। তাদেরও সাদা পোশাকধারীরা অপহরণ করে বলে অভিযোগ
উঠেছে।
৪ মে রাত থেকে
চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ পাঠানটুলি ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক জিয়াউর রহমান
জিয়া নিখোঁজ হন।
২৪ মে রাজধানীর
জিন্দাবাহার লেন এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী আয়নাল মোল্লা।
২ অক্টোবর
রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম নিখোঁজ হন।
২৪ অক্টোবর
রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর ভাটাপা জামে মসজিদের ইমাম ও গোদাগাড়ী পালপুর ধরমপুর
মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক আমিনুল ইসলাম নিখোঁজ হন।
২৬ অক্টোবর
ফকিরাপুলের হোটেল অবসরের সামনে থেকে ফেনীর সারোয়ার জাহান বাবুল নিখোঁজ হন।
৮ নভেম্বর
রাজধানীর সূত্রাপুর থেকে ব্যবসায়ী মমিন হোসেন নিখোঁজ হন।
২৬ ডিসেম্বর
গোপালগঞ্জের বোড়াশী পশ্চিমপাড়ার মান্দারতলা এলাকা থেকে অপহরণ হন উবায়দুর নামে
এক যুবক। কালো পোশাকধারী লোকজন তাকে গাড়ীতে তুলে নিয়ে যায়।
বর্ষÑ২০১৩
৩ জানুয়ারি
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ঢালজোর ইউনিয়নের পাকুরাইল গ্রাম থেকে সজীব নামে
একটি শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
৫ জানুয়ারি ঢাকার
আশুলিয়ার শিমুলিয়ায় অজ্ঞাত পরিচয়ধারী এক যুবতীর ধর্ষণের পর লাশ পাওয়া যায়।
৯ জানুয়ারি
কেরানীগঞ্জের ফুলপুর ভাইটকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা শামীমা ফাতেমা
ফুলপুর থেকে বাসে ঢাকায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পরের দিন দুপুরে পুলিশ
উত্তর বাহেরচর গ্রামের বিলের সরিষার ক্ষেত থেকে শামীমার লাশ উদ্ধার করে।
১১ জানুয়ারি
নারায়ণগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ এলাকা থেকে অমল চন্দ্র দাস নামক এক যুবকের ঝুলন্ত
লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
১২ জানুয়ারি
মাসুম নামে এক ব্যক্তিকে রাজধানীর উত্তরা থেকে অপহরণের পর আশুলিয়ার ষোষবাগ
এলাকায় হত্যা করে লাশ মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে যায় ঘাতকরা।
১৫ জানুয়ারি
আশুলিয়ার কাঁঠালবাগান এলাকা থেকে চান মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর হত্যা
করা হয়। একই দিনে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আবুল খায়ের নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার
করে পুলিশ।
১৬ জানুয়ারি
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার খাদুন এলাকায় একটি ডোবা থেকে আসাদ
মোল্লা নামে একজন ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
১৭ জানুয়ারি
রূপগঞ্জ উপজেলায় গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের আধুরিয়া এলাকার একটি পুকুর থেকে অজ্ঞাত
পরিচয় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
১৯ জানুয়ারি
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বেগুনবাড়ি ব্রিজের নীচ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ধারী
যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
২১ জানুয়ারি
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরার মিল্টন বাজার এলাকা থেকে অপহৃত হন
মাহবুব নামে অপর এক যুবক। এই ঘটনায়ও থানায় মামলা হয়। কিন্তু উদ্ধার হয়নি
মাহবুব।
২১ জানুয়ারি
সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জের সিরাজদিখানের তেলিপাড়া গ্রামের নির্জন এলাকা থেকে
অজ্ঞাত পরিচয় এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। আজও যার পরিচয় মেলেনি।
২২ জানুয়ারি
আশুলিয়ার কুরগাও এলাকায় এক যুবতীর হত্যাকান্ডে পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়।
২৪ জানুয়ারি
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের রশুনিয়া বেইলি ব্রিজের নিচ থেকে ইব্রাহীম, ইমামগঞ্জ গ্রামীণ ব্যাংকের কাছ থেকে আবদুল কুদ্দুস এবং
শ্রীনগরের শ্রীধরপুর সড়কের পাশ থেকে মাসুদ ওরফে রাঢ়ী মাসুদ নামের তিনজনের লাশ
উদ্ধার হয়। খুব কাছ থেকে গুলী করে হত্যার পর নতুন গামছা বেঁধে দেয়া হয় তাদের
গলায়। ঘটনার ১৫ দিন আগে তারা নিখোঁজ হন। এই তিন খুনের রহস্য উদ্ঘাটনে কোনো তদন্ত
হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্বজনদের।
২৫ জানুয়ারি
আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পুরিন্দা এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের
খাদের পাশ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে
পুলিশ। নিহতের শরীরে ধারালো অস্ত্রের প্রচুর আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে পুলিশ জানায়।
ওই দিনই অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান
আলী ৩ নম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামের সামনের ময়লার স্তূপ থেকে হারাধন নামের নিখোঁজ এক
দোকানির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত হারাধনের বাবার নাম হরেন্দ্রনাথ দে। হারাধন
শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় বর্ষণ সুপার মার্কেটের সামনে
চায়ের দোকানি। সর্বশেষ ১৮ জানুয়ারি শহরের মীনা বাজার এলাকায় মেয়ের বাড়িতে
দাওয়াত খেতে গিয়েছিল হারাধন। এর পর থেকে হারাধনের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
২৬ জানুয়ারি
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার গজারী বনের ভিতর থেকে অজ্ঞাত
পরিচয়ধারী এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
একইদিনে ঢাকা-ময়মনসিংহ
রেল রুটের ভাওয়াল গাজীপুর ও সাতখামাইর রেলস্ট্রেশন সংলগ্ন রেললাইন থেকে
জামালউদ্দিন নামে এক লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ দিন বেলা ৪টার দিকে গাজীপুরের
ভাওয়াল মীর্জাপুর রেলস্ট্রেশনের আউটার সিগন্যালের সামনে থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ধারী
এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।
২৯ জানুয়ারি
নারায়ণগঞ্জ শহরের কালীরবাজার চারারগোপ থেকে নিখোঁজ হওয়ার ৩ দিনের মাথায় রংসূতা
ব্যবসায়ী গোবিন্দ সাহার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়।
৪ এপ্রিল রাজধানীর
মিরপুর মাজার রোডের দ্বিতীয় কলোনির ডায়মন্ড গার্মেন্টের সামনে থেকে অপহৃত হন
ছাত্রদল নেতা মফিজুল ইসলাম রাশেদ। ডিবির জ্যাকেট পরা একদল লোক রাশেদকে মাইক্রোবাসে
তুলে নিয়ে যায়। সে থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন রাশেদ।
৪ এপ্রিল অপহৃত হন
রাজশাহী মহানগর শিবিরের দফতর সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম মাসুম। শহরে মামার বাসা থেকে
আইন-শৃংখলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অপহরণ করা হয় মাসুমকে। সেই থেকে নিখোঁজ
রয়েছেন তিনি। স্বজনেরা বিভিন্ন দফতরে ধরনা দিয়েও কোনো হদিস পাননি মাসুমের।
১১ এপ্রিল রাতে
জয়পুরহাট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও জয়পুরহাট তালিমুল ইসলাম স্কুল অ্যান্ড
কলেজের শিক্ষক নজরুল ইসলামকে থানা রোডের সাহেবপাড়ার তার বাসা থেকে আইন-শৃংখলা
বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অপহরণ করা হয়। সে থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন নজরুল।
নিখোঁজ এবং
অপহরণের পর হত্যার ঘটনা বেড়ে গেছে। যা চরম উদ্বেগের বিষয়। এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে
সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জড়িত থাকার যে অভিযোগ বরাবরই পাওয়া যায় তা রোধ
করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুপ্তহত্যার ঘটনাগুলোয় কার্যকর তদন্ত না হওয়ায়
রহস্য সৃষ্টি হচ্ছে। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আস্থা কমছে, অবিশ্বাস বাড়ছে। প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে তদন্তের
প্রক্রিয়া। এর সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। গুপ্তহত্যা বা রহস্য
উন্মোচিত না হওয়ায় উৎকণ্ঠা বাড়ছে। তাই কার্যকর তদন্ত হওয়া জরুরি।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন