গণতন্ত্রের একটি অর্থ মনে করা হয় অধিকাংশ মানুষের শাসন। কিন্তু
বাংলাদেশে যে গণতন্ত্রের চর্চা হচ্ছে, তা মোটেই অধিকাংশ মানুষের শাসন
নয়। দু-একবারের ব্যতিক্রমের কথা বাদ দেয়া হলে বাংলাদেশে এযাবৎ কোনো নির্বাচনেই
গরিষ্ঠ মানুষের রায় নিয়ে সরকার গঠন হয়নি। সাধারণভাবে যা হয়েছে তা হলো
তুলনামূলকভাবে বেশি মানুষের ভোট যিনি বা যে দল পেয়েছে তারাই সরকার গঠন করেছে।
কিন্তু সরকার গঠনকারী দলের বিপক্ষে ভোট পড়েছে পক্ষের চেয়ে বেশি। ব্রিটেন থেকে
উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া এই ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন পদ্ধতির জন্য ভোট পাওয়ার সাথে
আসন পাওয়ার কোনো মিলই থাকে না। আবার এমন নির্বাচনও হয়েছে, যেবার শতাংশের
হিসাবে কম ভোট পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী একটি দল অধিক আসনে জয়ী হওয়ার মাধ্যমে সরকার
গঠন করেছে। সে সময় বিজিত দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি উত্থাপন করা হলেও
নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কারের ব্যাপারে কোনো দাবি সেভাবে করা হয়নি। সেবারের অধিক
ভোট পেয়ে হেরে যাওয়া দল অবশ্য গত নির্বাচনে ঠিক উল্টো সুবিধা পেয়ে গেছে। তারা
প্রাপ্ত ভোটের প্রায় দ্বিগুণ আসন পেয়েছে।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩৩.৭ শতাংশ ভোটের বিপরীতে আসন
পেয়েছিল ৩০.৬ শতাংশ আর বিএনপি ৩০.৬ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন লাভ করেছিল ৪০.৬ শতাংশ।
সেবার জাতীয় পার্টি ১২.১ শতাংশ ভোট পেয়ে ১০.৩ শতাংশ আসন আর জামায়াত ১২.১ শতাংশ
ভোট পেয়ে ৫.৩ শতাংশ আসন লাভ করেছিল। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩৭.৪ শতাংশ
ভোট পেয়ে ৪৮ শতাংশ আসন লাভ করে আর বিএনপি ৩৩.৬ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন লাভ করে ৩৮.৩ শতাংশ।
২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোট প্রাপ্তি এবং আসন প্রাপ্তির হিসাব এক কথায়
বিস্ময়কর। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট ভোট পেয়েছিল ৪৬.৮ শতাংশ আর আসন পেয়েছিল ৭১.৬ শতাংশ।
সেবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট ৪০.১ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন লাভ করে মাত্র ১৯.৬
শতাংশ । ঠিক এর উল্টো চিত্র দেখা যায় ২০০৮ সালে। এবার চারদলীয় জোট ৩৭ শতাংশ ভোট
পেয়ে আসন লাভ করে মাত্র ১০.৬ শতাংশ। আর মহাজোট ৫১.৬৫ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন লাভ
করেছে ৮১ শতাংশ। সর্বশেষ দুই নির্বাচনে প্রচলিত নির্বাচন-পদ্ধতির ত্রুটি বিশেষভাবে
স্পষ্ট হয়েছে। যদিও প্রতিপক্ষ দুই জোট দু’বার এই সুবিধা পেয়েছে।
বাংলাদেশে বিদ্যমান পদ্ধতিতে যেসব দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেসব
দেশে কম-বেশি বিতর্ক উঠেছে ও উঠছে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে মালয়েশিয়ায় ৬০ শতাংশ
আসন পেয়ে বিজয়ী হওয়া সরকারি জোট বারিসান ন্যাশনাল বিরোধী জোট পাকাতান
রাকায়েতের চেয়ে প্রায় ৮ শতাংশ কম ভোট পেয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে বিরোধী দল ও
সুশীলসমাজ নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংস্কারের জন্য আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টাও করছে।
পাকিস্তানের সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলাফলেও অনেকটা একই অবস্থা দেখা গেছে।
নির্বাচনে বিজয়ী নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগ প্রাপ্ত ভোটের তুলনায় আসন সংখ্যা অনেক
বেশি পেয়েছে। জারদারির পিপিপির তুলনায় ইমরান খানের পিটিআই বেশি ভোট পেয়েও আসনের
দিক থেকে এখন তৃতীয় অবস্থানে চলে গেছে। এ ধরনের নির্বাচনব্যবস্থা যে দেশটি
প্রবর্তন করেছে, সেই ব্রিটেনেও এ নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ক্ষমতাসীন
সরকারের কোয়ালিশন অংশীদার সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি যে পরিমাণ ভোট গত
নির্বাচনে পেয়েছিল তার চেয়ে আসন পায় অনেক কম। ফলে তারা রক্ষণশীল টোরি দলকে
ক্ষমতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে কোয়ালিশনে অংশ নিতে শর্ত দিয়েছিল যে, সরকার গঠনের পর
নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কারের ব্যাপারে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। সে গণভোটে দেশের
প্রধান দুই দল লেবার পার্টি ও কনজারভেটিভ পার্টি বিদ্যমান ব্যবস্থার পক্ষে সমর্থন
দেয়ায় সংস্কারের প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারের সমর্থন পায়নি। এতে তৃতীয়
শক্তিমান দল হিসেবে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ক্ষমতায় যাওয়া দুরূহ হয়ে
পড়ল। প্রতিবেশী ভারতেও বিদ্যমান ব্যবস্থার ত্রুটিবিচ্যুতি নিয়ে আলোচনা শুরু
হয়েছে। ভারতের বিষয়টি কিছুটা অন্য রকম। অন্য দেশে যেখানে এই ব্যবস্থায় বড়
দলগুলো লাভবান হয়, ভারতে সেখানে বড় দলগুলো হয় ক্ষতিগ্রস্ত। ভারতে সর্বভারতীয় দল বলতে
আছে এখন মূলত দু’টিÑ কংগ্রেস ও বিজেপি। এই দু’টি দলের সারা দেশে প্রার্থী
দেয়ার ক্ষমতা আছে। কিন্তু দেশটিতে অনেক আঞ্চলিক দলের শক্তিশালী অবস্থান সৃষ্টি
হওয়ার ফলে দেখা যায় এসব দল তুলনামূলকভাবে অনেক কম ভোট পেয়ে আসন পাচ্ছে বেশি।
তারা একটি বা দু’টি রাজ্যে প্রার্থী দিতে সক্ষম হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে জাতীয়
পর্যায়ের প্রধান দলের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত আসন পাচ্ছে। তাদের প্রাপ্ত আসনের
তুলনায় ভোট প্রাপ্তি অনেক কম। এতে আসন জয়ের রাজনীতির জন্য সর্বভারতীয় দলগুলোকে
বাধ্য হয়ে আঞ্চলিক দলগুলোর সাথে নির্বাচনী জোট করতে হচ্ছে। এর ফলে সর্বভারতীয়
দলগুলো সাংগঠনিকভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে সর্বভারতীয়
জাতীয়তাবোধেও। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে একসময় হয়তো দেখা যাবে সর্বভারতীয় দলগুলো
কেন্দ্রীয় সরকার থেকে ছিটকে পড়েছে। এটি ভারতের ফেডারেশন টিকিয়ে রাখার জন্য
মোটেই অনুকূল অবস্থা নয়।
ব্রিটিশরা বর্তমান নির্বাচনব্যবস্থা অনুসরণ করত বলে দেশটির উপনিবেশ
থেকে মুক্ত হওয়া দেশগুলোতে এটি অনুসরণ শুরু হয় স্বাধীনতা লাভের পর। এ ব্যবস্থায়
প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে যিনি বেশি ভোট পান তিনি নির্বাচিত বলে
ঘোষিত হন। অথচ যিনি বিজয়ী হন তার বিপক্ষের ভোট অনেক সময় তার প্রাপ্ত ভোটের চেয়ে
বেশি থাকে। এ কারণে ফ্রান্স, ইরান, মিসরসহ অনেক দেশের প্রেসিডেন্ট ও কোনো কোনো দেশের সংসদ নির্বাচনে
প্রথম দফায় যে প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট লাভ করেন তাকে সরাসরি বিজয়ী ঘোষণা
করা হয়। কিন্তু এর চেয়ে কম ভোট পেলে শীর্ষ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে
দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে জয়ী হওয়া প্রার্থী চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হয়। এতে আগের
বার বেশি ভোট পাওয়া ব্যক্তি দ্বিতীয় দফায় হেরে যেতেও দেখা যায়।
ইউরোপের অধিকাংশ এবং এশিয়ার অনেক দেশে সংসদ নির্বাচনের আসন দেয়া
হয় দলের প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে। প্রচলিত ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে বিশ্বের অনেক
দেশ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের নির্বাচন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ ব্যবস্থাও সব দেশ
একভাবে অনুসরণ করে না। কোনো কোনো দেশে শুধু দলীয় ভিত্তিতে ভোট হয়। যে দলের পক্ষে
যতসংখ্যক মানুষ ভোট দেয়, সেই অনুপাতে সেই দলকে আসন দেয়া হয়। দলের পক্ষ থেকে আগে থেকেই
প্রার্থীর তালিকা দেয়া হয়। সেই তালিকার অগ্রাধিকার অনুসারে এমপি নির্বাচিত ঘোষণা
করা হয়। কোনো কোনো দেশে সব এলাকার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য গোটা দেশের
নির্বাচনী এলাকাকে বিভিন্ন ব্লকে ভাগ করা হয়। যে অঞ্চলে যে দল যে হারে ভোট পায়
সেভাবে আসন বণ্টন করা হয়। এ ব্যবস্থায় জনগণ প্রত্যক্ষভাবে তার প্রতিনিধি বাছাই
করতে না পারার সমালোচনা রয়েছে বলে অনেক দেশ দুই ব্যবস্থার মধ্যে একটি সমন্বয়
এনেছে। এই সমন্বিত ব্যবস্থা যেসব দেশে অনুসরণ করা হয় সেখানে অর্ধেক বা এর কম-বেশি
আসন নির্বাচনে যে দল যত ভোট পায় তার ভিত্তিতে বণ্টন করা হয়। বাকি আসনে নির্বাচিত
প্রতিনিধি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে বাছাই হয়। এ পদ্ধতির অনুসরণকারী
দেশগুলোর যুক্তি হলো, একটি নির্বাচনী এলাকার মানুষ কোনো এক দলের প্রার্থীর পক্ষে এক লাখ
ভোট দেয়ার পরও অন্য প্রার্থী এর চেয়ে কিছু ভোট বেশি পাওয়ার কারণে নির্বাচনে
হেরে হেলেন। এতে বিজিত প্রার্থীর এক লাখ ভোট কোনো কাজে লাগল না। কিন্তু অর্ধেক আসন
দলের প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে হলে সেই ভোটের একটি মূল্য থাকবে এবং তার দল এ ভোটের
ভিত্তিতে আসন পেতে পারে।
সাধারণভাবে মনে করা হয় পুরোপুরি আনুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থায় ছোট
দলগুলো অধিক লাভবান হয়। কিন্তু এ ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা কারো
থাকে না। দলের অনেক বড় বড় নেতা সাধারণ মানুষের সমর্থন না পেলেও এমপি হয়ে যেতে
পারেন। যদিও এতে জনগণের কাছে প্রত্যক্ষ জবাবদিহিতা থাকে না বলে সাধারণ মানুষের
কাছে দলের বাইরে ব্যক্তির খুব একটা দায় না থাকার একটি সমালোচনা রয়েছে। এ ছাড়া এ
ব্যবস্থায় দলের বাইরে স্বতন্ত্র সদস্য হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু যদি অর্ধেক আসন সরাসরি
নির্বাচন আর বাকি অর্ধেক প্রাপ্ত ভোটের মাধ্যমে আসন বণ্টন হয় অথবা লিবিয়ার মতো
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হয় তাহলে এই সমালোচনা থাকে না। অবশ্য
এ ব্যবস্থায় আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে ন্যূনতম ভোটপ্রাপ্তির একটি শর্ত
থাকে। কোনো দল জাতীয় পর্যায়ে ২ থেকে ৫ শতাংশ ভোট না পেলে তাদের আসন দেয়া হয় না।
গণতন্ত্র চর্চাকারী ব্রিটিশ উপনিবেশ উত্তরাধিকারের দেশগুলোর অনুসৃত
এই ব্যবস্থা থেকে অনেক দেশই সরে এলেও ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলো এই পুরনো পদ্ধতি
আঁকড়ে আছে। এখন সময় এসেছে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই নির্বাচনী পদ্ধতি সংশোধন করার।
এমনকি বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ইচ্ছা করলে এককভাবেও এই ব্যবস্থার সংশোধন করতে
পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থার কারণেই আওয়ামী লীগকে একবার অধিক ভোট পেয়েও কম আসনে
জেতার কারণে বিরোধী দলে থাকতে হয়েছিল। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোর ফলাফলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের
আসন সংখ্যা কোনো সময় ৩০ শতাংশের নিচে আসে না। ফলে আনুপাতিক নির্বাচনের ব্যবস্থা
চালু হলে দলটি এক-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিশ্চিতভাবেই লাভ করবে। আর এ ক্ষেত্রে
তাদের দিক থেকে ইতিবাচক হলো আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানে যে সংশোধনীগুলো এনেছে তা
আর পরিবর্তন করা হয়তো যাবে না। আনুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থায় বঞ্চিত কেউ হবে না।
তৃতীয় বা চতুর্থ অবস্থানের ছোট দলগুলোও এ ব্যবস্থায় তাদের ন্যায্য আসন পাবে। এ
ক্ষেত্রে একেবারে ছোট দলগুলো জোট করে নির্বাচনে গেলে ন্যূনতম ভোট পাওয়ার পর্যায়
পেরোতে পারবে।
বাংলাদেশের জন্য একেবারে পুরোপুরি দলভিত্তিক আসন বণ্টনের আনুপাতিক
নির্বাচন গ্রহণযোগ্য মনে নাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অর্ধেক বা এক-তৃতীয়াংশ আসনে
সরাসরি নির্বাচন হতে পারে, যেখানে স্বতন্ত্র বা দলের জনপ্রিয় ব্যক্তিরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে
পারেন। বাকিরা দলের পক্ষ থেকে আগে দেয়া তালিকা অনুসারে নির্বাচিত হতে পারেন।
ভোটের ভিত্তিতে আসন বণ্টন প্রশ্নে সারা দেশকে কয়েকটি ব্লকেও ভাগ করা যেতে পারে, যাতে আঞ্চলিক
মতামতের প্রতিফলন সংসদ সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে থাকতে পারে। এ সংস্কারে সংসদে
আসন বাড়ানোর বিষয়ও বিবেচনা করা যেতে পারে। স্বাধীনতার পর দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণ
হলেও সংসদের সদস্য সংখ্যা সংরক্ষিত মহিলা আসন ছাড়া আর বাড়েনি।
এমনকি দেশের বিপুল জনসংখ্যার বিষয় বিবেচনা করে ফেডারেল বা প্রাদেশিক
ব্যবস্থাও চালু করা যেতে পারে বাংলাদেশে। এ ব্যবস্থায় কিছু ক্ষমতা কেন্দ্র ও কিছু
প্রাদেশিক সরকারের জন্য থাকতে পারে। দেশের বড় দলগুলো এখন নির্বাচনে জয়ী হতে না
পারলে একেবারে ক্ষমতার বাইরে থাকে। এতে এক দিকে শাসক দল বিরোধী দল দমনের জন্য
বেপরোয়া হয়ে ওঠে, অন্য দিকে বিরোধী দল নেতিবাচক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। ফেডারেল
ব্যবস্থায় কোনো দল কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় যেতে না পারলেও প্রাদেশিক সরকার
গঠন তাদের পক্ষে সম্ভব হতে পারে। পাকিস্তানের সাম্প্রতিক নির্বাচনে দুটো বিরোধী দল
দু’টি ভিন্ন প্রদেশে
সরকার গঠন করেছে। ফেডারেল ব্যবস্থা হলে বাংলাদেশেও সেটি হতে পারত। বাংলাদেশে
বর্তমানে যে রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে তাতে শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থার সার্বিক বিন্যাস
নিয়ে ভাবার কোনো বিকল্প নেই। দেশের সব রাজনৈতিক দল ও সুশীলসমাজ বিষয়টি নিয়ে
আলোচনা শুরু করতে পারে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন