লায়লাতুল বরাত এক মহিমান্বিত রজনী, যাকে আমরা শবেবরাত হিসেবেও
জানি। পুণ্যময় এ রজনী মানবজাতির জন্য আল্লাহ পাকের এক বিরাট নেয়ামত। সৃষ্টিকুলের
একমাত্র খালেক মহান আল্লাহ সুবহানুহু তায়ালা তাঁর গুনাহগার বান্দাদের পাপ মোচন
এবং নেককার বান্দাদের মর্যাদা বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু সুযোগ করে দিয়েছেন। এর
একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে বান্দা যাতে এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাবুদের নৈকট্য অর্জন
করতে সক্ষম হয়। আল্লাহ পাক দয়ালু ও মেহেরবান। বড় দয়া ও করুণা করে তিনি
বান্দাদের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সুযোগ করে দিয়েছেন। এ সব সুযোগের মধ্যে
লায়লাতুল বরাত একটি। হাদিস শরিফের বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছেÑ পাঁচটি রাত বেশ মর্যাদাপূর্ণ।
আল্লাহ সুবহানুহু তায়ালা এসব রাতের দোয়া কবুল করেন, প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। দোয়া
কবুল হওয়ার বিশেষ রাতগুলো হচ্ছেÑ
১. রজব মাসের
প্রথম রাত। ২. শাবান মাসের মাঝখানে অবস্থিত রাত (নিছ্ফে শা’বান), লায়লাতুল বরাত। ৩. দুই ঈদের
দুই রাত। ৪. লায়লাতুল কদর বা কদর রজনী। ৫. লায়লাতুল মেরাজ।
উপরোল্লিখিত রাতগুলোর মধ্যে লায়লাতুল কদর ও লায়লাতুল মেরাজের বর্ণনা সরাসরি কুরআন শরিফে এসেছে। এ দু’টি রাতের নামে কুরআন শরিফের দু’টি সুরার নামকরণও করা হয়েছে। বাকি রাতগুলোর মর্যাদার বিবরণ হাদিস শরিফে পাওয়া যায়। এসব রাতে আল্লাহ পাকের বিশেষ করুণা ও দয়া বর্ষিত হয় এবং বান্দার দোয়া কবুল হয়।
দোয়া কবুল এবং আল্লাহ পাকের করুণাসিক্ত রজনীগুলোর একটি লায়লাতুল বরাত। বরাত শব্দের অর্থ পবিত্র হওয়া। যেহেতু গুনাহ মাফের মাধ্যমে এ রাতে বান্দার জন্য পাক-পবিত্র হওয়ার সুযোগ রয়েছে, তাই এর নাম লায়লাতুল বরাত বা শবেবরাত। হাদিস শরিফে লায়লাতুল বরাতের বর্ণনায় নিছ্ফে শাবান শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ শাবান মাসের মাঝামাঝি, চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত। বরকতময় এ রাতে আল্লাহর বিশেষ রহমত বর্ষিত হয় বলেই এর অপর নাম লায়লাতুর রাহমাহ বা রাহমতের রাত।
লায়লাতুল বরাতের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের বিবরণ হাদিস শরিফে বিভিন্নভাবে এসেছে। যেমনÑ
এ রাতে রহমত ও মাগফেরাতের বার্তা নিয়ে এক শ্রেণীর বিশেষ ফেরেশতা অতরণ করেন।
লায়লাতুল বরাত ক্ষমার রাত। আল্লাহর বান্দারা যখন এ রাতে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ পাক তাদের ক্ষমা করে দেন। এটি তাওবা কবুল হওয়ার রাত। বান্দা যখন আল্লাহর দরবারে স্বীয় কৃতকর্মের জন্য শরমিন্দা হয়ে অপরাধ মাফ চায়, এ রাতের উসিলায় আল্লাহ পাক বান্দাকে মাফ করে দেন।
এ রাত দান-সদকা কবুল হওয়ার রাত। তাই সামর্থ্যবানদের উচিত এ রাতে ফকির-মিসকিন, এতিম ও অসহায়দের বেশি বেশি করে দান-সদকা করা।
চিরস্থায়ী শান্তির জায়গা জান্নাত লাভের এক পরম সৌভাগ্য এই লায়লাতুল বরাত। তাই বান্দার উচিত এ রাতে বেশি বেশি জিকর করা, নফল ইবাদত করা, কুরআন তিলাওয়াত করা, মুনাজাত করা।
এ রাতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাঁর বিশেষ রহমত উন্মুক্ত করে দেন। তিনি বান্দাদের ডেকে ডেকে বলেনÑ কে আছো আমার কাছে গুনাহ মাফ চাওয়ার, আমি তাদের মাফ করে দেব। কে আছো তওবা করার, আমি তার তওবা কবুল করব। আমার কাছে চাওয়ার জন্য কেউ কি আছো? চাও, আমি দেব।
এ রাতের মর্যাদা সম্পর্কে বলা হয়েছেÑ হাশরের ময়দানে যেসব বান্দার পুণ্যের পরিমাণ কম হবে, পুণ্যের পাল্লা হালকা হবে, সেদিন তাদের তিরস্কার করে বলা হবেÑ তোমাদের এই দশা কেন? তোমরা কি রজব মাসের প্রথম রাতের কথা শোননি? তোমরা কি নিছ্ফে শাবানের কথা শোননি? অর্থাৎ এ রাতগুলোতে ইবাদত-বন্দেগি করলে আজ তোমাদের এ দশা হতো না।
হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেনÑ যে ব্যক্তি নিছ্ফে শাবান রোজা রাখবে, জাহান্নামের আগুন তাকে কখনো স্পর্শ করবে না।
হাদিসের অপর এক বর্ণনায় শবেবরাতের ফজিলত সম্পর্কে এসেছে যে, এই রাতে বনি কেলাব, বনি রবিয়া এবং বনি মুদর গোত্রগুলোর বকরির পশমের সমপরিমাণ গুনাহগার উম্মতের গুনাহ আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দেন।
এই রাতে পিতা-মাতা, মুরুব্বি ও আত্মীয়-স্বজনদের কবর জিয়ারত করতে পারলে ভালো। এই রাতের অসিলায় আল্লাহ পাক তাঁদের মাফ করে দেন এবং একই সাথে কবর জিয়ারতকারীও অনেক সওয়াব লাভ করেন।
হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, লায়লাতুল বরাতে আল্লাহ পাক উম্মতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুনাহ মাফ করে দেন, কিন্তু সাত শ্রেণীর মানুষের মাফ করেন না। বদ নসিব এই সাত শ্রেণীর মানুষ হচ্ছেÑ
১. জাদুকর, যারা জাদু-টোনার সাহায্যে মানুষের ক্ষতি করে। ২. মদ্যপায়ী, মাদকদ্রব্য সেবনকারী, শরাবখোর-নেশাখোর। ৩. ব্যভিচারে লিপ্ত নারী-পুরুষ। ৪. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী। ৫. পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান। ৬. চোগলখোর। ৭. কৃপণ ব্যক্তি এবং প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে যে লোক তিন দিন পর্যন্ত কোনো মুমিন ভাইয়ের সাথে কথা বলা বন্ধ রাখে।
উপরে বর্ণিত ব্যক্তিদের গুনাহ মাফ করা হবে না। তাই এ রাতের পরিপূর্ণ ফায়দা অর্জন করতে হলে ওপরে বর্ণিত দোষগুলো পরিহার করতে হবে এবং খালেছ নিয়তে আল্লাহর দরবারে তওবা করতে হবে। তাহলে আল্লাহ পাক তাদের তওবা কবুল করবেন, তাদের ক্ষমা করবেন এবং লায়লাতুল বরাতের বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করবেন।
নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, জিকরসহ শবেবরাতের বিশেষ ইবাদতের মধ্যে অবশ্যই দরুদ শরিফ পাঠ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহর কাছে সর্বাধিক পছন্দের ইবাদতের মধ্যে হাবিবে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ পাঠ অন্যতম।
উপরোল্লিখিত রাতগুলোর মধ্যে লায়লাতুল কদর ও লায়লাতুল মেরাজের বর্ণনা সরাসরি কুরআন শরিফে এসেছে। এ দু’টি রাতের নামে কুরআন শরিফের দু’টি সুরার নামকরণও করা হয়েছে। বাকি রাতগুলোর মর্যাদার বিবরণ হাদিস শরিফে পাওয়া যায়। এসব রাতে আল্লাহ পাকের বিশেষ করুণা ও দয়া বর্ষিত হয় এবং বান্দার দোয়া কবুল হয়।
দোয়া কবুল এবং আল্লাহ পাকের করুণাসিক্ত রজনীগুলোর একটি লায়লাতুল বরাত। বরাত শব্দের অর্থ পবিত্র হওয়া। যেহেতু গুনাহ মাফের মাধ্যমে এ রাতে বান্দার জন্য পাক-পবিত্র হওয়ার সুযোগ রয়েছে, তাই এর নাম লায়লাতুল বরাত বা শবেবরাত। হাদিস শরিফে লায়লাতুল বরাতের বর্ণনায় নিছ্ফে শাবান শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ শাবান মাসের মাঝামাঝি, চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত। বরকতময় এ রাতে আল্লাহর বিশেষ রহমত বর্ষিত হয় বলেই এর অপর নাম লায়লাতুর রাহমাহ বা রাহমতের রাত।
লায়লাতুল বরাতের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের বিবরণ হাদিস শরিফে বিভিন্নভাবে এসেছে। যেমনÑ
এ রাতে রহমত ও মাগফেরাতের বার্তা নিয়ে এক শ্রেণীর বিশেষ ফেরেশতা অতরণ করেন।
লায়লাতুল বরাত ক্ষমার রাত। আল্লাহর বান্দারা যখন এ রাতে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ পাক তাদের ক্ষমা করে দেন। এটি তাওবা কবুল হওয়ার রাত। বান্দা যখন আল্লাহর দরবারে স্বীয় কৃতকর্মের জন্য শরমিন্দা হয়ে অপরাধ মাফ চায়, এ রাতের উসিলায় আল্লাহ পাক বান্দাকে মাফ করে দেন।
এ রাত দান-সদকা কবুল হওয়ার রাত। তাই সামর্থ্যবানদের উচিত এ রাতে ফকির-মিসকিন, এতিম ও অসহায়দের বেশি বেশি করে দান-সদকা করা।
চিরস্থায়ী শান্তির জায়গা জান্নাত লাভের এক পরম সৌভাগ্য এই লায়লাতুল বরাত। তাই বান্দার উচিত এ রাতে বেশি বেশি জিকর করা, নফল ইবাদত করা, কুরআন তিলাওয়াত করা, মুনাজাত করা।
এ রাতে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাঁর বিশেষ রহমত উন্মুক্ত করে দেন। তিনি বান্দাদের ডেকে ডেকে বলেনÑ কে আছো আমার কাছে গুনাহ মাফ চাওয়ার, আমি তাদের মাফ করে দেব। কে আছো তওবা করার, আমি তার তওবা কবুল করব। আমার কাছে চাওয়ার জন্য কেউ কি আছো? চাও, আমি দেব।
এ রাতের মর্যাদা সম্পর্কে বলা হয়েছেÑ হাশরের ময়দানে যেসব বান্দার পুণ্যের পরিমাণ কম হবে, পুণ্যের পাল্লা হালকা হবে, সেদিন তাদের তিরস্কার করে বলা হবেÑ তোমাদের এই দশা কেন? তোমরা কি রজব মাসের প্রথম রাতের কথা শোননি? তোমরা কি নিছ্ফে শাবানের কথা শোননি? অর্থাৎ এ রাতগুলোতে ইবাদত-বন্দেগি করলে আজ তোমাদের এ দশা হতো না।
হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেনÑ যে ব্যক্তি নিছ্ফে শাবান রোজা রাখবে, জাহান্নামের আগুন তাকে কখনো স্পর্শ করবে না।
হাদিসের অপর এক বর্ণনায় শবেবরাতের ফজিলত সম্পর্কে এসেছে যে, এই রাতে বনি কেলাব, বনি রবিয়া এবং বনি মুদর গোত্রগুলোর বকরির পশমের সমপরিমাণ গুনাহগার উম্মতের গুনাহ আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দেন।
এই রাতে পিতা-মাতা, মুরুব্বি ও আত্মীয়-স্বজনদের কবর জিয়ারত করতে পারলে ভালো। এই রাতের অসিলায় আল্লাহ পাক তাঁদের মাফ করে দেন এবং একই সাথে কবর জিয়ারতকারীও অনেক সওয়াব লাভ করেন।
হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, লায়লাতুল বরাতে আল্লাহ পাক উম্মতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুনাহ মাফ করে দেন, কিন্তু সাত শ্রেণীর মানুষের মাফ করেন না। বদ নসিব এই সাত শ্রেণীর মানুষ হচ্ছেÑ
১. জাদুকর, যারা জাদু-টোনার সাহায্যে মানুষের ক্ষতি করে। ২. মদ্যপায়ী, মাদকদ্রব্য সেবনকারী, শরাবখোর-নেশাখোর। ৩. ব্যভিচারে লিপ্ত নারী-পুরুষ। ৪. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী। ৫. পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান। ৬. চোগলখোর। ৭. কৃপণ ব্যক্তি এবং প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে যে লোক তিন দিন পর্যন্ত কোনো মুমিন ভাইয়ের সাথে কথা বলা বন্ধ রাখে।
উপরে বর্ণিত ব্যক্তিদের গুনাহ মাফ করা হবে না। তাই এ রাতের পরিপূর্ণ ফায়দা অর্জন করতে হলে ওপরে বর্ণিত দোষগুলো পরিহার করতে হবে এবং খালেছ নিয়তে আল্লাহর দরবারে তওবা করতে হবে। তাহলে আল্লাহ পাক তাদের তওবা কবুল করবেন, তাদের ক্ষমা করবেন এবং লায়লাতুল বরাতের বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করবেন।
নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, জিকরসহ শবেবরাতের বিশেষ ইবাদতের মধ্যে অবশ্যই দরুদ শরিফ পাঠ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহর কাছে সর্বাধিক পছন্দের ইবাদতের মধ্যে হাবিবে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ পাঠ অন্যতম।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন