হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফা বিশেষ করে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা বন্ধ করার দাবি উত্থাপন করে দেশ-বিদেশে ভীমরুলের চাকে ঢিল মারার অবস্থা সৃষ্টি করেছে বলে মনে হয়। ভোগবাদী দর্শনে বিশ্বাসী এদেশের কিছু কিছু নারী ও পুরুষ সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং নাস্তিক-মুরতাদরা এই দাবিকে নারী স্বাধীনতা এবং নারী অধিকারের পরিপন্থী হিসেবে আখ্যায়িত করে চিৎকার শুরু করেছেন। তাদের প্রায় সকলেই হেফাজতের এই দাবির মধ্যে আফগানিস্তানের তালেবানদের গন্ধ শুঁকতে শুরু করেছেন। একজন নারী নেত্রী এবং মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল এর মধ্যে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতা আবিষ্কার করে দেশবাসীর প্রতি প্রকারান্তরে এই দেশের মুসলিম শক্তিকে উৎখাত করার আহ্বান জানিয়েছেন। সুলতানা কামালকে যারা জানেন তারা নিশ্চয়ই অবহিত আছেন তিনি তার পিতৃপুরুষের ধর্ম ইসলাম ত্যাগ করে প্রায় সাড়ে তিন দশক আগে এক হিন্দু যুবককে বিয়ে করে তার সাথে সংসার করছেন। সিলেট মহানগরী এবং খাদিম নগর এলাকার অনেক প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগ অনুযায়ী বিয়ের আগে তিনি ঐ যুবকের সাথে বিআরডিটিআই-এর এক নং হোস্টেলের তিন নং কক্ষে প্রায়ই লীভ টুগেদার করতেন। এটা হয়ত তার স্বাধীনতা ছিল এবং তিনি অবাধ মেলামেশার পক্ষপাতী। তাই বলে তার এই স্বাধীনতাকে ধর্মপ্রাণ মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা এবং এই দেশের ইসলামপন্থীদের মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার দোষে দুষ্ট বলে আখ্যায়িত করাকে কোটি কোটি মানুষ স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারছেন না। দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী প্রচারণা জামায়াত-শিবির, হেফাজতসহ আলেম-ওলামা এবং এমনকি আঠার দলীয় জোটের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েও সাফল্য সম্পর্কে আশ্বস্ত হতে না পেরে তারা এখন বিদেশীদের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে মনে হয়।
এক্ষেত্রে তারা তালেবান ও আফগান জুজুর ভয় দেখাচ্ছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সৃষ্ট ওসামা বিন লাদেন এবং তালেবানদের প্রকৃত অপরাধ সম্পর্কে সম্যক অবহিত নই। তালেবানরা যদি অপরাধ করে থাকেন আফগানরাই তার বিচার করতেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সমগ্র বিশ্বশক্তি মিলে তাদের এবং লাখ লাখ আফগানদের ওপর যেভাবে কোটি কোটি টন বোমা ও গোলাবারুদ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল, লাখ লাখ সৈন্য তাদের পাখির মত গুলী করে হত্যা করল এবং তাদের বাড়িঘর, সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থাপনাসমূহ ধ্বংস করল তার যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাদেরকে প্রথমত ইউরোপ-আমেরিকা উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়েছে, অস্ত্র যুগিয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নকে তাড়াতে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু পরে যখন তারা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে, নিজ দেশে নিজের আদর্শ বাস্তবায়নে ব্রতী হয়েছে তখনই কেন তারা মৌলবাদী জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িক শক্তিতে পরিণত হল ইতিহাসই একদিন তার কারণ অবশ্যই খুঁজে বের করবে। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের বুদ্ধি ও বিবেক প্রতিবন্ধী বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের দৃষ্টিতে বর্বরতার দৃষ্টিকোণ থেকে লাখ লাখ নিরপরাধ মানুষ হত্যা ও তাদের সহায়-সম্পদ ধ্বংসের জন্য যারা দায়ী তারা নিকৃষ্ট হওয়ার পরিবর্তে মজলুম আফগানরা কেন নিকৃষ্টতার উদাহরণ হতে যাবেন, তা আমার কাছে বোধগম্য নয়।
দুই. সম্প্রতি রাশিদা মানজু নামে জাতিসংঘের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক একজন র্যাপোটিয়ারকে বাংলাদেশ সরকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি গত ১৯শে মে থেকে ২৯শে মে পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করে বিভিন্ন কর্মকা- পরিদর্শন করেছেন এবং সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। যাবার আগে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘হেফাজতে ইসলাম প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের চলাফেরাসহ যেসব নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে তা এই দেশের সংবিধানসম্মত নয়। নারীর অধিকার রক্ষার স্বার্থে হেফাজতের এই ধরনের দফার বিরুদ্ধে সরকারকেই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।’ রাশিদা মানজুর এই উক্তিটি দেশপ্রেমিক, রাজনীতিক ও সমাজবিশ্লেষকদের বিস্মিত করেছে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ এবং এই দেশের সংবিধানে কি আছে না আছে এবং তার ভিত্তিতে কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, না হবে তা বাতলানোর দায়িত্ব কোন বিদেশীর নয়, জাতিসংঘের একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে রাশিদা মানজু তো নয়ই। যে দাবিটি সম্পর্কে তিনি কথা বলেছেন সে দাবিটি প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের নিছক চলাফেরা নিয়ে ছিল না। দাবিটি হচ্ছে অবাধ ও অশ্লীল মেলমেশা নিয়ে এবং এই দাবিটি এই দেশের কোটি কোটি মানুষের। রাশিদা মানজু এ সম্পর্কে কথা বলে একদিকে যেমন দাবিটিকে বিকৃত করেছেন অন্যদিকে তার নিজের অধিকারেরও সীমা ছেড়েছেন। এটা কাম্য নয়। আমাদের দেশের কিছু রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবী আদর্শিক দিক থেকে ইসলামকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে ইসলামপন্থীদের জঙ্গি মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অমানুষ হিসেবে চিত্রিত করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। তাদের ধারণা তারা যদি এই কাজে সফল হন তাহলে মার্কিন নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের ইসলামবিদ্বেষী শক্তি যেমন নিরস্ত্র আফগানদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে লাখ লাখ মুসলমানের জান-মাল ধ্বংস করেছে এখানেও তারা সেই পরিস্থিতি সৃষ্টিতে সক্ষম হবেন। কিন্তু এ ধরনের পরিস্থিতি যে অনুঘটকদের জন্যও সুখকর হবে না তা সম্ভবত তারা ভুলে গেছেন। রাশিদা মানজুর দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্যের দেশগুলোর নারীদের দুরবস্থার কথা আমি এখানে তুললাম না।
তিন. বাংলাদেশে বর্তমানে অত্যন্ত অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শক্তির ওপর সরকারের অত্যাচার-অবিচার, জুলুম-নির্যাতন, বর্বরতার দৃষ্টিকোণ থেকে শুধু অতীতের রেকর্ডই ভঙ্গ করেনি নতুন রেকর্ডও সৃষ্টি করেছে। পিলখানা হত্যাযজ্ঞের আসল কারণ ধামাচাপা ও প্রকৃত হত্যাকারীদের নিরাপত্তা বিধান, আর্থিক ও ব্যাংকিংখাত, পরিবহন ও যোগাযোগ, রেলওয়ে, বিমান, টেলিকম্যুনিকেশন পদ্মাসেতু এবং বিদ্যুৎ খাতের একটির পর একটি কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের ইদানীংকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাফল্য এবং তুলনাবিহীনভাবে শাপলা চত্বরে গণহত্যার মাধ্যমে হেফাজতের আন্দোলন দমন, দলটিকে শুধু বেপরোয়াই করে তোলেনি বরং বিরোধী দল দমনে আরো দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তুলেছে বলে মনে হয়। এদিকে সারাদেশে মানবাধিকার লংঘন, বিচার বহির্ভূত হত্যা-গুম স্মরণাতীতকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আতঙ্ক তাদের মাথায় এমনভাবে অনুপ্রবেশ করেছে যে, প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের দু’চারজন লোক কোথাও বসে কথা বলার সন্ধান পেলেই তারা তাতে নাশকতার ষড়যন্ত্র খুঁজে পান। সরকারের এই অভিযোগ ও ষড়যন্ত্রের ভূত দলটিকে এতই আচ্ছন্ন করে রেখেছে যে, অনিবার্যভাবে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের পাল্লা হালকা থেকে হালকাতর হচ্ছে। প্রতিশ্রুতি পূরণের কথা তারা ভুলে যাচ্ছেন। তাদের ব্যর্থতার প্রেক্ষাপটে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য নতুন নতুন ঘটনা ও রটনার সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই সুযোগে জননিরাপত্তার ক্রমাবনতির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনসমূহ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর নামে গ্রেফতার বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, লুটপাট, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিবাণিজ্য এবং সন্ত্রাস-নৈরাজ্য অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। ফলে দলটির সামন্তবাদী রাজনীতির প্রকৃত পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে বলে অনেকেরই ধারণা। নির্বাচনের বাকী আর মাত্র সাত মাস আছে। এই সময়টুকুও অত্যন্ত দ্রুত ফুরিয়ে যাবে। এতে প্রত্যাশীদের অসহিষ্ণুতা, অস্থিরতা ও প্রতিযোগিতা বেড়ে যেতে থাকবে। সরকার দ্রুত তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলছে। এই হারিয়ে ফেলাটা অপশাসন, স্বৈরশাসনের অতীত অভিজ্ঞতারই প্রমাণ। অবশ্য এই ক্ষেত্রে সরকার বা সরকার প্রধানের কোন উদ্বেগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। সরকারের জিদ এখানে সুস্পষ্ট। তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে প্রতিবাদী, প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শক্তিকে তারা নির্মূল করতে পারবেন এবং আগামীদিনের রাজনীতিতে জামায়াত, বিএনপিসহ আঠারদলীয় জোট নির্মূল হয়ে যাবে। অবশ্য নারায়ণগঞ্জে কন্টেইনার বন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে ভারত সরকার কর্তৃক নতুন দিল্লী পত্রিকায় টেন্ডার আহ্বানের ঘটনায় এদেশের দেশপ্রেমিক মহলকে সাংঘাতিকভাবে উদ্বিগ্ন করেও তুলেছে। তারা বুঝতে পারছেন না যে, বাংলাদেশের স্বাধীন-সার্বভৌম অবস্থান এখন কোন পর্যায়ে আছে। আওয়ামী লীগ যদি এদেশের স্বাধীনতাকে ক্ষমতার মোহে এবং গদিচ্যুত হবার আশঙ্কার মুহূর্তে উদ্ধার করার শর্তে প্রতিবেশী দেশের কাছে বন্ধক দিয়ে না থাকে তাহলে বাংলাদেশ সরকারের বৈধ অনুমোদন ছাড়া তারা কিভাবে একক সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের স্বাধীন ভূÑখ-ে বন্দর নির্মাণে সাহস করতে পারেন?
চার. কেউ কেউ বলে থাকেন যে, আওয়ামী লীগ যা সৃষ্টি করে তাকেই ধ্বংস করে ছাড়ে। তারা বিশ্বাস করেন বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে আওয়ামী লীগের মুখ্য ভূমিকা ছিল। এতে কোন সন্দেহ নেই। এর পেছনে ছিল মানুষের বঞ্চনা, পাকিস্তানী ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক নিষ্পেষণ এবং রাজনৈতিক অধিকার হরণের নির্মম ইতিহাস। পাকিস্তানী শাসকরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বুকে পদাঘাত করে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে পদক্ষেপ না নিয়ে তা কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে এদেশের মানুষের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী লেলিয়ে দেয়ার ফলে স্বাধীনতা সংগ্রামের সূত্রপাত হয় এবং নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর লাখো মানুষের জীবন ও ইজ্জতের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসে। ক্ষমতায় বসেই তারা দেশকে একটি লুটপাট সমিতিতে পরিণত করে এবং ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় শাসন কায়েম করে এবং ক্ষমতাকে আজীবন কুক্ষিগত করার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করে নেয়। নির্বাচন ছাড়াই দলীয় লোকদের পাঁচ বছরের জন্যে সংসদ সদস্য বলে ঘোষণা করে এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্টকে বিনা নির্বাচনে আজীবন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে। যে স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ দেশ স্বাধীন করেছিল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীনতার সেই মূল্যবোধ ও চেতনাকেই ধ্বংস করে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মানুষকে তাদের সেই অধিকার ফেরত দিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগ দেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য জামায়াতকে সাথে নিয়ে তৎকালীন বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম আন্দোলন চালিয়েছে। এই আন্দোলনে হরতাল, অবরোধ, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগসহ এমন কোন ধ্বংসাত্মক কর্মকা- নেই যা তারা করেন্ িএবং শেষ পর্যন্ত সরকার বাধ্য হয়ে সংবিধানে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সংযোজন করেছিলেন। এই ব্যবস্থার অধীনে দেশে তিনটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন করে দলটি ক্ষমতায় এসেছে। ক্ষমতায় এসে পুরুষানুক্রমে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে আদালতের দোহাই দিয়ে ধ্বংস করেছে। এখন এর বিরুদ্ধে দেশে আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলন দমনের জন্য দলটি সর্বশক্তি দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। দলটির অবস্থান এখন পরিষ্কার। তারা দলীয় ব্যবস্থাপনা এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারের অধীনে ছাড়া আর কোন নির্বাচনে রাজি নন। ছয় বছর আগে এই দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে দেশের বরেণ্য ও নিরপেক্ষ প্রধান বিচারপতি হিসেবে খ্যাত বিচারপতি কে. এম. হাসানের অধীনে নির্বাচন করতে রাজি হননি। কারণ, তিনি চাকরিজীবনের আগে কোন একসময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই অবস্থায় ১০০% আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ প্রধান ও ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে দেশের মানুষ গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচনা করবেন কিভাবে? এই প্রশ্নের জবাব সরকারকেই দিতে হবে এবং মানুষের ভোটের অধিকারের প্রাক্তন প্রবক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকেই এর জবাব দিয়ে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা মেনে নেয়া উচিত বলে আমার ধারণা। এটা করা হলে দেশও বাঁচবে সরকারও বাঁচবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন