সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

তারেক রহমান জনমানুষের আপনজন


৮ মার্চ, বৃহস্পতিবার, ২০০৭ সাল, রাত প্রায় সাড়ে ১২টা, হঠাৎ টিভির দিকে চোখ পড়ল ব্রেকিং নিউজ, তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিছুতেই বিষয়টা মেনে নিতে পারছিলাম না। আমি প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন তারেক রহমান এ দেশের প্রতিটি গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফল করলে উচ্চশিক্ষার জন্য জিয়া ফাউন্ডেশন থেকে আর্থিক অনুদান বিতরণের ব্যবস্থা করেছিলেন রাজধানীর এলজিইডি অডিটোরিয়ামে। আমি তহবিল সংগ্রহের জন্য উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতি সদয়, আন্তরিকতা ও সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য আবেগময়ী ছোট্ট একটি ভিডিও কিপ তৈরি করেছিলাম। মনে পড়ে, নিরক্ষরতা দূর করার জন্য শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময়ে একটি ছোট্ট স্লোগান ছিল ‘ÔEach One, Teach One,এই পদ্ধতিতে প্রতিটি এসএসসি পরীক্ষার্থী একজন করে নিরক্ষর ব্যক্তিকে অক্ষর শিক্ষা দিতে পারলে ঐচ্ছিক নম্বর পেতো। সেটা স্মরণ রেখে আমার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, শহীদ জিয়ার ওই স্লোগানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে 'Each one, sponsor one' ধারণা তুলে ধরা। মিলনায়তনে উপস্থিত প্রায় হাজার দুয়েক বিশিষ্টজনের সবাই যদি একজন অসহায় শিক্ষার্থীর জন্য উদারহস্ত সম্প্রসারিত করেন, তবেই হবে। ভিডিও কিপটি খুবই মর্মস্পর্শী ছিল। প্রথম দৃশ্যেই দেখা যায়, এক মহিলা বাসায় কাজ করে তার পিতৃহীন মেয়েটিকে লেখাপড়া করান, মেয়েটি এ প্লাস পেয়েছে। মঞ্চে উপবিষ্ট তারেক রহমানের সাথে বসে আমি ভিডিও কিপটি উপভোগ করছিলাম। প্রথম দৃশ্যটি দেখেই তিনি আমাকে বললেন, মি. কিন্টন বন্ধ করুন (তারেক ভাই আমাকে মি. কিন্টন বলে ডাকতেন)। ততক্ষণে শ্রোতা দর্শকমণ্ডলীর চোখের কোণে পানি। ভিডিওটি বন্ধ করার পরপরই তিনি আমাকে বললেন, উপস্থিত সবার জন্য বিষয়টি অত্যন্ত টাচি বটে, কিন্তু আপনি কি মেয়েটি ও তার মার কথা ভেবেছেন, মেয়েটির জন্য এটা কতটা লজ্জাজনক, আমি পাথরের মতো স্তব্ধ হয়ে গেলাম। বিদ্যুৎ বেগে আমার মনের মণিকোঠায় নিজেকে একজন নিদারুণ বোকা বলে মনে হতে থাকল, তারেক ভাইয়ের কথাটি খুবই সত্য। আমি রস্টামে দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে উপস্থিত সুধীজনের সামনে পরবর্তী ভিডিও কিপ না দেখানোর কারণ ব্যাখ্যা করে মেয়েটি ও তার মার কাছে ক্ষমা চাইলাম। অনুষ্ঠানটি চলছিল স্বাভাবিক গতিতে। এবার তারেক রহমানের প্রিয় বিষয় কৃষিবিপ্লব নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। তিনি সারা দেশ ঘুরে বীজ, সার, কীটনাশক, ওষুধসহ কৃষকদের উদ্ধুদ্ধকরণের কর্মসূচি হাতে নেন। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া এলাকায় কলাগাছের ভেলায় বা কচুরিপানার ওপর বাঁশের চাটি বিছিয়ে সামান্য কাদামাটি দিয়ে কিভাবে বীজতলা তৈরি করা যায়, বন্যার পানিতে কিভাবে অল্প সময়ে উচ্চবর্ধনশীল মাছ চাষ করা যায় ইত্যাদি প্রদর্শন করা হলো। অর্থাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বাংলাদেশ, তাই বন্যার পানিকে অভিশাপ মনে না করে গবেষণার মাধ্যমে এ দেশের আবহাওয়ার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বীজ, ধান ও নানাবিধ হাইব্রিড ফসল উৎপাদন করা অর্থাৎ 'Living with the Flood' -এর প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রাচ্যের উন্নত দেশগুলোর মতো এ দেশে আলু ও ভুট্টার বহুবিধ ব্যবহার বাড়ানো এবং চাষের অভিনব পদ্ধতি সংস্করণ করা, তা ছাড়া বন্যার পর আলু, ভুট্টা, কাউন ও তিল চাষ করে একই জমিতে বহুবিধ ফলনের উপযোগীকরণ। সবজি চাষে কৃষকের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার ব্যবস্থা ও কিভাবে মধ্যস্বত্বদের বাদ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া যায় তার ওপর প্রতিফলন ছিল। এরপর জিয়া ফাউন্ডেশন থেকে স্বাস্থ্যসেবায় এ দেশের চিকিৎসকদের উদ্বুদ্ধকরণ, জিয়া ফাউন্ডেশন থেকে হাসপাতাল নির্মাণ ও ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার তৈরি করার কাজের ওপর শেষ প্রতিবেদনটি দেখালেন। সন্ধ্যায় বগুড়া শহরে ছয় এমপির উপস্থিতিতে তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জিয়া ফাউন্ডেশনের একটি সভায় আমাকে উপস্থিত হতে হবে প্রধান অতিথি হিসেবে। সুসজ্জিত সভাস্থলে সব দর্শকশ্রোতার উপস্থিতিতে নিয়মতান্ত্রিকভাবে একের পর এক বক্তা ধারাবাহিক বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। একজন সংসদ সদস্য, যিনি আমার (প্রধান অতিথির) বক্তব্যের মাঝামাঝি উপস্থিত হয়েছিলেন। বক্তব্য শেষে ভেবেছিলাম, দেরিতে আসা সংসদ সদস্যকে বক্তব্যদানের সুযোগ হয়তো দেয়া হবে, কিন্তু তা হয়নি। পরে শুনেছিলাম, সেই সংসদ সদস্য বেশ ব্যথিত হয়েছিলেন বক্তব্য দিতে না পারায়। কিন্তু তারেক রহমান সভার নিয়মশৃঙ্খলায় কোনো ব্যত্যয় ঘটাননি। এখানেই শেষ নয়, আমরা অতিথিরা তারেককে নিয়ে টেবিলে খাওয়ার অপেক্ষায় বসে আছি। খাবারের গন্ধে ুধা খানিকটা বেড়ে গেলেও, খাবার আমাদের টেবিলে না এসে তিনি চলে যাচ্ছিলেন অতিথিদের সাথে আসা গানম্যান, গাড়ির ড্রাইভারদের টেবিলে। জানতে পারলাম, তিনি সব সময় অতিথিদের সাথে আসা সদস্যদের খাওয়ানোর পরে গণ্যমান্য অতিথিদের খাবার পরিবেশন করেন। এরপর থেকে আমিও একই পদ্ধতি অনুসরণ করছি। এক-এগারোর সময় আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলা ছিল ১৫টি। আর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মামলা ছিল ১৩টি। ওই সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল। চেকের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণের প্রমাণসহ চার্জশিট দাখিলের পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি মামলার কার্যক্রম আদালতে শুরু হয়েছিল। তিনি জামিন না নিয়ে তখনকার সরকারের নির্বাহী আদেশে বিদেশ গিয়েছিলেন। অপর দিকে তারেক রহমান সব মামলায় হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগ থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৫টি মামলার মধ্যে একটিতে খুনের সহযোগিতা করা এবং বাকি ১৪টিতে চৌদ্দ হাজার কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছিল। প্রায় ২০ কোটি টাকার ঘুষ গ্রহণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ছিল জরুরি সরকারের সময় ব্যবসায়ীদের দায়ের করা কয়েকটি মামলায় ও নাইকো মামলায় সর্বাধিক আর্থিক অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। এদিকে তারেক রহমানের স্বাস্থ্য রিপোর্ট তলব করে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে। বিএনপি সরকারের শেষ দিনে ২৮ অক্টোবর পল্টনে প্রকাশ্যে লগি-বৈঠা দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ছয় নেতাকর্মী হত্যার সরাসরি ইন্ধনদাতা হিসেবে এ মামলা হয়েছিল। কারণ লগি-বৈঠা নিয়ে মাঠে নামার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ মামলায় শেখ হাসিনার নামে চার্জশিটও হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা নিজে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর মামলাটি প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয়া হয়। পরে পুলিশ সরকারি নির্দেশে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেয়। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সেনাসমর্থিত জরুরি সরকারের সময় দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০০৭ সালের মার্চে দ্রুত বিচার আইনে কাফরুল থানায় পুলিশ বাদি হয়ে দায়ের করা প্রথম মামলা। ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেফতারের পর এই মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ৮ মার্চ ব্যবসায়ী আমিন আহমেদ ভুঁইয়াকে দিয়ে জরুরি সরকার এক কোটি টাকা চাঁদাবাজির একটি মামলা দায়ের করায়। আমিন কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ ভুঁইয়ার মামলায় তারেক রহমানকে প্রথম রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল। জরুরি সরকার বিদায় নেয়ার পর বাদি নিজেই মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। সংবাদ সম্মেলনে বাদি নিজেই মামলাটি কিভাবে জোর করে দায়ের করানো হয়েছিল তার বিবরণ দেন। পরে সরকারও এ মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করার জন্য করা হয়েছে উল্লেখ করে এটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। বর্তমান সরকার জরুরি সরকারের দায়ের করা রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয়। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার অনুরূপ সরকারি দলের নেতাদের মামলাগুলো তুলে নেয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু তারেক রহমানের একটি ছাড়া অন্য কোনো মামলা সরকার প্রত্যাহারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বরং তার নামে নতুন নতুন মামলা দায়ের করে। অন্য দিকে রাজনৈতিক মামলা বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর ১১টি মামলা এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আরো তিনটি মামলা বাদি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে তারেক রহমানের সাথে আলাপচারিতার সময় দেশের কয়েকজন প্র্রথিতযশা সাংবাদিকের সামনে তিনি বলেন, আমি দেশের জন্য রাজনীতি করি। এ জন্য যদি জেলখানায় যেতে হয় যাবো। আমি শহীদ জিয়াউর রহমানের ছেলে। যারা বিএনপি তথা জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরোধী, তারাই ওসব অপপ্রচার করে। আপনারা জেনে দেখুন, আমি কোনো মন্ত্রী বা কোনো সচিবকে কোনো কাজের জন্য টেলিফোন করেছি কি না, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি কেউ বলতে পারবেন না। আমার বিরুদ্ধে এ অপপ্রচার ষড়যন্ত্রমূলক। তিনি আরো বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা সবাই, দেশের মানুষও তাই চায়। কিন্তু যেভাবে কেবল বিএনপির ওপর দুর্নীতির ঢালাও অভিযোগ এনে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা কোনোভাবে এ দেশের শান্তিকামী মানুষ মেনে নেবে না। কারণ বিএনপি দেশের মানুষের প্রাণের দল। এই দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু জনগণ তার জবাব দিয়েছে। তারেক রহমানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনি কি কারাগারে যেতে প্রস্তত? জবাবটা ছিলÑ রাজনীতি করি, যদি এ জন্য জেলে যেতে হয় তাতে আক্ষেপ নেই। তবে অন্যায় কোনো অভিযোগে যদি আমাকে এমনটা করা হয়, এর বিচারের ভার দেশের মানুষের কাছে থাকবে। আজ ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সালের এদিনে ৫৪৪ দিন কারা নির্যাতিত হয়ে মুক্তি পান তারেক রহমান। এটা তার জীবনের প্রথম বন্দিজীবন নয়, ১৯৭১ সালের ২ জুলাই যখন তার বয়স ছিল তিন বছর সাত মাস ১২ দিন, তখন সিদ্ধেশ্বরীর এস আবদুল্লাহর বাসা থেকে পাক সেনাদের হাতে ছোট ভাই কোকোসহ মা বন্দী হন। ১৬৭ দিন বন্দী জীবন যাপনের পর ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর মুক্তি পান সবাই। শৈশব থেকেই তারেক রহমান ঘনিষ্ঠভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধ, বাবার সাথে গৃহবন্দী, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার বিরুদ্ধে ১৯টি ক্যুর প্রত্যক্ষদর্শী। সর্বোপরি পিতৃবিয়োগের বেদনা, মায়ের সংসার চালানোর অনটন, প্রিয় নানীর সাহচর্য, সুসময় ও দুঃসময়ের মধ্যেই বেড়ে ওঠেন তারেক রহমান। ছোটবেলা থেকেই পিতার দেশত্ববোধ, বড় হয়ে মায়ের সাথে ক্ষয়ে যাওয়া জাতীয়তাবাদী দলকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং মায়ের পাঁচ বার গ্রেফতারÑ এ সবই ছিল নিয়তির বিধান। মনে মনে ভাবলাম, তাইতো এক-এগারোর ষড়যন্ত্রকারীরা ধ্বংস করতে চায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাংলাদেশের কাণ্ডারি তৃণমূল থেকে উঠে আসা তারুণ্যের অহঙ্কার তারেক রহমানকে। যার বাবা নিজ গুণে স্বাধীনতার ঘোষক হয়ে দেশের চরম দুর্দিনে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক হয়ে শাহাদত বরণ করেন, যার মা নাবালক দুটি ছেলেকে কোলেপিঠে মানুষ করতে করতে ভঙ্গুর জাতীয়তাবাদী দলের কাণ্ডারি হয়ে তিন তিনবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তাদেরই রক্ত ধাবমান তারেক রহমানের শিরা-উপশিরায়। সে জন্যই তারেক রহমান হলেন জেনেটিক্যালি স্মার্ট। 


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads