সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

জিন্নাহর হারানো ভাষণে কী ছিল?

পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর একটি ভাষণের নাকি রেকর্ড করা ভাষণ পাকিস্তানের কাছে ছিল না। তাই পাকিস্তান অনেক দেনদরবার করে আকাশবাণীর মহাফেজখানা (আর্কাইভ) থেকে ওই ভাষণ সংগ্রহ করেছে। বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় দৈনিকে খোলা চোখ কলামে নিউ ইয়র্কের হাসান ফেরদৌস একটি কলাম লিখেছেন, যা ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশ হয়েছে। ১৯৪৭ সালের ১১ আগস্ট জিন্নাহ পাকিস্তানের গণপরিষদে ভাষণটি দিয়েছিলেন। স্বাধীন সার্বভৌম পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এসেছে ১৪ আগস্ট। একই ঘোষণা স্বাধীন সার্বভৌম ভারতের জন্য ১৫ আগস্ট। ব্রিটিশ সরকারের ওই ঘোষণার মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশের দুটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। হাসান সাহেব সন্দেহ করেছেন পাকিস্তানিরা সম্ভবত ওই ভাষণ নষ্ট করে ফেলেছেন। সন্দেহের কারণ হয়তো ফেরদৌস সাহেব মনে করেন পাকিস্তানিরা তার ধারণার সেকুলারিজমে বিশ্বাস করে না। পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে। মানে ভারতে মুসলমানেরা একটি জাতি, সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী নয়। ভারতের হিন্দুরাও ধর্মীয়ভাবে আলাদা একটি জাতি। যদিও ভারতের বড় বড় জ্ঞানীগুণী বলেছেন, হিন্দুত্ব কোনো ধর্ম নয়। এটা ভারতের আচার অনুষ্ঠান বা সংস্কৃতি। ভারতবাসী মানে হিন্দুদের আচার অনুষ্ঠানের মূল উৎস হলো বেদ, উপনিষদ ও গীতা। এসব চলে আসছে পাঁচ হাজার বছর ধরে। আর মুসলমানদের জীবনবোধ ও জীবনচর্চার মূল উৎস হলো আল কুরআন। একই ভৌগোলিক এলাকায় বাস করেও দুটি জীবনধারা পাশাপাশি বয়ে গেছে বা চলছে হাজার বছর ধরে। হিন্দু জীবনধারায় বর্ণবাদ রয়েছে। মুসলমানদের মাঝে ধর্মীয়ভাবে কোনো ধরনের বর্ণবাদ নেই। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনী যারা পাঠ করেছেন তারা জানতে পেরেছেন তিনি স্কুলজীবনে কী ধরনের বর্ণবাদ বা অস্পৃশ্যতা দেখেছেন। হিন্দুবাড়িতে মুসলমানেরা প্রবেশ করতে পারত না। কিন্তু হিন্দুরা অবলীলাক্রমে মুসলমান বাড়িতে থাকতে ও খেতে পারত। ভারতের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. অম্বেদকার শেষজীবনে হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছিলেন বর্ণবাদব্যবস্থার কারণে। প্রাচীন ভারতের আইনপ্রণেতা মহাজ্ঞানী মনু তার রচিত সংহিতায় বর্ণবাদের বিশেষ বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি শূদ্রদের (নিম্নবর্ণ) বলেছেন অর্ধমানব। এখনো ভারতে প্রতি বছরই নানা অপরাধের কারণে সমাজপতিরা শূদ্রদের পুড়িয়ে মারে। ভারতীয় সভ্যতায় মানে হিন্দুসভ্যতায় গরুকে গো-মাতাবলা হয় এবং গরুকে পূজা করা হয়। মুসলমানেরা গরু কোরবানি করে এবং খায়। ভারত কেন বিভক্ত হলো এ নিয়ে হাজার বই রচিত হয়েছে। একইভাবে জিন্নাহ এবং পাকিস্তানকে নিয়েও বহু বই রচিত হয়েছে। বহু মানুষ জিন্নাহকে বা গান্ধীজীকে পছন্দ করেন না। গান্ধীজীকে যারা হত্যা করেছেন তারা বলেছেন, গান্ধী একজন ভণ্ড। গান্ধীজীর পরম ভক্ত কে কে বিড়লা বলেছেন, ÔBirlas used to spend millions to keep bapuji poor.Õ মানে বাপুজীকে গরিব রাখার জন্য বিড়লারা লাখ লাখ টাকা ব্যয় করত। ১৯৪৭ সালের ১১ আগস্টের ভাষণের শুরুতে জিন্নাহ কেন পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছে বা কেন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছে তার প্রেতি বর্ণনা করেছেন। তখন তিনি বলেছেন, এটা অবশ্যম্ভাবী ও অনিবার্য ছিল। জিন্না তো রাজনীতির শুরুতে অখণ্ড ভারতের প্রবক্তা ছিলেন। তাকে তো হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের দূত বলা হয়েছে। ১৮৮৫ সালে যে কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা কালক্রমে হিন্দুদের সংগঠনে পরিণত হয়েছিল। হিন্দু-মুসলমান ঐক্যবদ্ধভাবে নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে কথার পরিবর্তে তা হয়ে ওঠে শুধু হিন্দুদের প্রতিষ্ঠান হিসেবে। ফলে বাধ্য হয়ে ভারতের মুসলমানেরা ১৯০৬ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় এক সম্মেলনের মাধ্যমে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে জিন্নাহ কিন্তু মুসলিম লীগের সাথে জড়িত হননি। একপর্যায়ে তিনি কংগ্রেসের ওপর বিরক্ত হয়ে মুসলিম লীগে যোগদান করেন। জিন্নাহ কখনোই গোঁড়া ছিলেন না। তিনি ভারতের স্বার্থে উদার রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা ছিলেন সাম্প্রদায়িক এবং নিজ সম্প্রদায়ের বাইরে অন্য কারো স্বার্থ চিন্তা করার মতা ছিল না। একটা কথা আমাদের সবাইকেই মনে রাখতে হবে, ইংরেজরা পুরো দখলে নিয়েছিল হিন্দুদের হাত করে। দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছতে তাদের ১০০ বছর লেগেছিল। এই পুরো ১০০ বছরই মুসলমানেরা ইংরেজদের সাথে যুদ্ধ করেছেন। ভারত বিভক্তির পেছনের ইতিহাস যারা জানেন না তারা মনে করেন জিন্নাহ বা মুসলমান নেতাদের সাম্প্রদায়িক বা ধর্মীয় চিন্তাধারার কারণে এমনটি হয়েছে। আসলে ভারত বিভক্তির প্রধান কারণ হচ্ছে কংগ্রেস নেতাদের একগুঁয়েমি ও ভারতে মুসলমানদের উপস্থিতিকে অস্বীকার করা। যদি ভারতকে আদলে একটি সত্যিকারের ফেডারেল রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টা কংগ্রেস মেনে নিত তাহলে হয়তো ভারত ভাগ হতো না। এখন, মানে চলমান সময়ে ভারতের নেতারা বুঝতে পেরেছেন ৪৭ সালে কংগ্রেস ভুল করেছে। জিন্নাহ কখনোই ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাননি। তখনকার কংগ্রেস নেতাদের মনোভাবের কারণে কংগ্রেস একটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠনে পরিণত হয়েছিল। মুসলমানেরা ভারতে একটি আলাদা জাতিÑ এ কথা ভাবতে হিন্দু নেতারাই মূলত দায়ী। কিন্তু এ বিষয়টি পরবর্তীপর্যায়ে মানে ৪৭ সালের পরে তথাকথিত কিছু মুসলমান বুদ্ধিজীবী, যারা নিজেদের প্রগতিশীল বলে দাবি করে তারা পাকিস্তান সৃষ্টিকে অবাস্তব ও সাম্প্রদায়িক বলে প্রচার করতে শুরু করে। এমনকি ভারত থেকে বিতাড়িত হয়েছেন বা সুবিধা পাওয়ার আশায় পাকিস্তানে চলে এসেছেন, এমন কিছু শিতি লোকও পাকিস্তানের বিরোধিতা করতে শুরু করে। প্রসঙ্গত সেকুলার (Secular) শব্দটির ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজন বোধ করছি। বহুকাল ধরে আমাদের সমাজে এই ইংরেজি শব্দটির ভুল অনুবাদ বা ব্যাখ্যা দিয়ে আসা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, সেকুলার মানে ধর্মনিরপে। মানে যারা ধর্মের ব্যাপারে কোনো প গ্রহণ করেন না। কিন্তু এ অনুবাদ বা ব্যাখ্যা ভুল। কারণ, সেকুলার মানে ধর্মহীন। যিনি বা যারা ধর্ম মানেন না, যারা শুধু ইহজগতে বিশ্বাস করেন। কিন্তু জগতের সব ধর্মের লোকেরাই পরকাল, পরলোকে বিশ্বাস করেন। শুধু অবিশ্বাসী ধর্মহীন লোকেরাই জাগতিক বিষয় নিয়ে বেঁচে থাকতে চান। বাংলাদেশে বহু শিতি লোক নিজেদের সেকুলার বলে প্রচার করেন এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য নিজেদের ধর্মবিশ্বাসী বলে দাবি করেন। এদের অনেকেই মনে করেন সেকুলার হলেই প্রগতিশীল হওয়া যায়। এরাই ধর্মবিশ্বাসীদের ফান্ডামেন্টালিস্ট (Fundamentalist) বা মৌলবাদী বলে গাল দেন। শব্দটির জন্ম হয়েছে ব্রিটেনে যখন খ্রিষ্টধর্মে বিভাজন দেখা দেয়। একদল আরেক দলকে মৌলবাদী বলে গালাগাল দিতে শুরু করে। এখন খ্রিষ্টধর্মে দুটি প্রধান বিভাজন রয়েছে; একটি ক্যাথলিক আর অপরটি প্রটেস্ট্যান্ট। ক্যাথলিক গির্জার সদর দফতর হলো ইতালির ভ্যাটিকানে আর প্রটেস্ট্যান্টদের সদর দফতর ইংল্যান্ডে। ব্রিটেনের রাজপরিবারই এর প্রধান। এখন মৌলবাদ শব্দটি মুসলমানদের েেত্র ব্যবহার করা হয়। পশ্চিমারা তো করেই, কিছু প্রগতিশীল আরবি নামধারী মানুষও মুসলমানদের মৌলবাদী বলে গাল দেয়। আরবি নামধারী তথাকথিত মুসলমানেরা নিজেদের মানবধর্মী, প্রগতিশীল, নন-পারফর্মিং বা নন-প্র্যাক্টিসিং মুসলমান বলে দাবি করেন। এরা কেউই মুসলমান নয়। এরা মুনাফেক বা বিশ্বাসঘাতক। এদের ব্যাপারে কুরআন শরিফে সুস্পষ্ট বক্তব্য ও ঘোষণা রয়েছে। এরা রাসূল সা:-এর জমানায়ও ছিল, এখনো আছে। উল্লিখিত দৈনিকটি প্রগতিশীল, সেকুলার, মানবতাবাদীদের কাগজ। তাই সুযোগ পেলেই আকার-ইঙ্গিতে ইসলাম, মুসলমান ও মুসলিম রাষ্ট্রকে আঘাত করে। উপমহাদেশে পাকিস্তান সৃষ্টিকে সেকুলার (ধর্মহীন) চিন্তাধারার লোকেরা মানতে পারেনি। তাই পাকিস্তানকে ধর্মীয় রাষ্ট্র বলে গালাগাল দেয়। এরা মুসলিম লীগের সৃষ্টিকেই মানতে পারে না। জিন্নাহর ১১ আগস্টের ভাষণ সব মহাফেজখানা বা আর্কাইভসে মূল্যবান দলিল হিসেবে আছে। কোনো পাঠাগার বা লাইব্রেরিতে যেতে হবে না। ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই পাওয়া যায়। আগেই বলেছি, ওই ভাষণে জিন্নাহ কেন পাকিস্তান বা মুসলমানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের প্রয়োজন হয়েছিল তার বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন। অখণ্ড হিন্দু ভারতে (যদিও কাগজ-কলমে হিন্দু রাষ্ট্র বলা হয় না) মাইনরিটি বা সংখ্যালঘু হিসেবে মুসলমানদের কী অবস্থা হবে তার কথাও তিনি বলেছেন। এখনো ভারতে প্রতি বছর ছোটখাটো এক হাজার দাঙ্গা হয়। ভারত কথায় কথায় মানবতা, আধুনিকতা, প্রগতিশীলতা, বিজ্ঞানমনস্কতা বললেও কার্যত এটা একটা বর্ণবাদী হিন্দুরাষ্ট্র। হাসান ফেরদৌস নিশ্চয়ই এমন একটি রাষ্ট্র চান যেখানে ধর্ম থাকবে না। এক সময় চীন-রাশিয়াসহ বহু দেশে ধর্মচর্চা নিষিদ্ধ ছিল। ৭০-৮০ বছর পরে এখন আবার মসজিদ, গির্জা ও সিনাগগের দুয়ার খুলে দেয়া হয়েছে। কারণ ধর্মচর্চা করা মানুষের মৌলিক অধিকার। কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলো এই অধিকারকে অস্বীকার করেছিল। আমাদের বাংলাদেশেও রাষ্ট্রের ওপর তথাকথিত সেকুলার প্রগতিশীলদের প্রভাব-প্রতিপত্তি খুবই বেশি। এরা গোপনে বা প্রকাশ্যে রাষ্ট্রের সব জায়গা দখল করে রেখেছে। জিন্নাহ কিন্তু কখনো এ কথা বলেননি যে পাকিস্তান একটি সেকুলার রাষ্ট্র হবে। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানে সবাই পাকিস্তানি হবে। কেউ বাঙালি, সিন্ধি, বালুচ, পাঞ্জাবি বা হিন্দু মুসলমান থাকবে না। সবার রাষ্ট্রীয় পরিচয় হবে পাকিস্তানি। ভারতে যেমন সবাই ভারতীয়। ভারতেও বহু ভাষা, বহু ধর্ম, বহু গোত্র বা জাতি রয়েছে। কিন্তু সবার রাষ্ট্রীয় পরিচয় ভারতীয় বা ইন্ডিয়ান। বাংলাদেশেও বহু ধর্মের, বহু গোত্র বা উপজাতি রয়েছে। কিন্তু সবার পরিচয় বাংলাদেশী। সবার পাসপোর্টে লেখা থাকে বাংলাদেশী। কিন্তু সেকুলার প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীরা নিজেদের বাংলাদেশী বলতে নারাজ। তারা নাকি শুধুই বাঙালি। তারা বাংলাদেশী শব্দের ভেতর যেন কিসের গন্ধ পান। একজন বুদ্ধিজীবী বলেই ফেলেছেন, বাংলাদেশী বললে নাকি বাংলাদেশী গরু, ছাগল, গাছপালা, মাছ ইত্যাদি মনে হয়। এ কারণেই নাকি বলতে হবে বাংলাদেশী মানুষ। শুধু বাংলাদেশী বললে নাকি গরু-ছাগল মনে হতে পারে। জিন্নাহ সাহেব ৪৮ সালের জুলাই মাসে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের উদ্বোধন করতে গিয়ে যে ভাষণ দেন তাতে ইসলামি অর্থনীতি ও ব্যাংকিং-ব্যবস্থার ওপর গবেষণার গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, পশ্চিমা ধনবাদী অর্থনীতির পচন শুরু হয়ে গেছে। তাই ইসলামি অর্থনীতি নিয়ে গবেষণার সময় এসেছে। এটাই ছিল তার জীবনের শেষ ভাষণ। সুতরাং জিন্নাহকে ১১ আগস্টের ভাষণ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কোনো অবকাশ নেই। ভারত যেমন হিন্দুর দেশ, তেমনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ মুসলমানের দেশ। মুসলমানেরা বাংলাদেশে মেজরিটি হলেও সাংবিধানিকভাবে এখানে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার। এ দেশে কোথাও কোনো ধরনের পৃথক নির্বাচন হয় না। পাকিস্তান বা ভারতেও হয় না। এর মানে নাগরিক হিসেবে সবার সমান অধিকার। মদিনা রাষ্ট্রেও সব সমান অধিকার স্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু কেউ দাবি করেননি যে বাংলাদেশকে ইসলামিক রাষ্ট্র করা হোক। বাংলাদেশে কোথাও ইসলামি আইন নেই। এ দেশে কুরআন-সুন্নাহ না জানলেও রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, প্রধান সেনাপতি হওয়া যায়। এমনকি ধর্ম না মানলেও সব কিছু হওয়া যায়। বাংলাদেশ না বাঙালির রাষ্ট্র, না মুসলমানের রাষ্ট্র। ধর্মমুক্ত আদি অকৃত্রিম বাঙালি রাষ্ট্র বানানোর কোনো চেষ্টা কেউ করেননি। ইসলামি রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টাও কেউ করেনি। পূর্ণাঙ্গ সেকুলার রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টাও করেনি। ৫৪ সাল থেকেই বলা হচ্ছে, কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন পাস করা হবে না। এ দেশে সংবিধানে লেখা থাকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। শুক্রবারে ছুটি থাকে। আবার সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ ও আল্লাহর নাম তুলে দেয়া হয়। হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে এখন দেশে বাদশাহ আকবরের দ্বীনে ইলাহি চলছে। আকবর শব্দ ব্যবহার করাও অনেকে পছন্দ করেন না। তারা বলেন আল্লাহ সর্বশক্তিমান। এ দেশে সংবিধানে আল্লাহর সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করা হয় না। বলা হয় জনগণই সার্বভৌম। জনগণকে সার্বভৌম না মানলে বলা হয়, বাংলাদেশ রাষ্ট্রে অবিশ্বাসী।


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads