রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

দেশ গড়ার রাজনীতি কবে চালু হবে?


স্বাধীনতা একটা চাওয়া। একটা আবেগ। মানুষের মনের গভীর চাহিদামিশ্রিত বিরাট প্রত্যাশা। আমাদের পিতা, পিতামহ তাদের বিরাট চাহিদা, ত্যাগ, কোরবানি, অসংখ্য মানব-মানবীর রক্তঝরা ইতিহাসের পিচ্ছিল পথে অবশেষে ব্রিটিশ শাসকেরা হিন্দু ও মুসলমানদের এ দেশটাকে এক রাখতে না পেরে দুই ভাগে স্বাধীন করে দিয়ে গেলেন। অবশ্য মহাত্মা গান্ধী, কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী এক দেশ রেখে স্বাধীনতার ব্যর্থ চেষ্টা করে অবশেষে মেনে নিলেন স্বাধীন ভারত ও স্বাধীন পাকিস্তান। 
ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট ও কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ (লেখক মোহায়মেন, আওয়ামী লীগের প্রয়াত এমপি) পড়লে সেদিনের রক্তঝরা ইতিহাস জানা যাবে। আরো পড়তে হবে বেশি দামে কেনা কম দামে বেচা আমাদের স্বাধীনতা ও আমার দেখা রাজনীতির ৫০ বছর (লেখক : প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম আবুল মনসুর আহমদ)। ৪২ বছর পর সেই স্বাধীন দেশে আমরা কোথায় আছি। সেই সাধের ও ত্যাগের স্বাধীন পাকিস্তান থেকে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে, অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে লাভ করলাম স্বাধীন বাংলাদেশ। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটকে বুঝতে হলে আজকের সচেতন, তরুণ শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ, সমাজ সচেতন সবাইকে এ বইগুলো গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়া দরকার। হৃদয়ঙ্গম করা জরুরি। 
এবার আসা যাক বিরাট জানমালের ক্ষতি, রক্তাক্ত ইতিহাস পার করে পাওয়া সাধের স্বাধীনতা ও স্বাধীন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। দীর্ঘ দিন চলছে বিতর্ক মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে যে বিতর্কের শেষ নেই। সবার ত্যাগ কোরবানিকে স্বীকার করে সবাইকে যথাযথ মর্যাদা দিলেই ইতিহাসের প্রতি ইনসাফ করা সম্ভব, বিতর্কেরও পরিসমাপ্তি টানা সহজ। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার মরহুম মেজর জলিলের অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা পড়লে অনেক কিছু জানা সম্ভব। 
এবার আসা যাক ৩০ লাখ শহীদের পরিসংখ্যান নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে। দিন যত যাচ্ছে প্রশ্ন উঠছে ৩০ লাখ শহীদ কিভাবে স্থির হলো। তথ্যটি সরকারিভাবে কি ঠিক করা হয়েছে, কোথায় তথ্যানুসন্ধান হয়েছে? এত জ্ঞানী-গুণী, কলমসৈনিক, হাজারো লেখক তারপরও এ সত্যটা জানার জন্য কেন কোনো উদ্যোগ সরকারি বা বেসরকারিভাবে নেয়া হলো নাÑ এ এক বিরাট জিজ্ঞাসাÑ নতুন প্রজন্মের কাছে একটা প্রশ্ন রয়েই গেল। 
বিবিসি খ্যাত প্রখ্যাত সাংবাদিক সিরাজুর রহমানের মতে, মুখ ফসকে তিন লাখ বলেছিলেন এটা ইংরেজি ভার্সনে তিন মিলিয়ন ৩০ লাখ হয়ে গিয়েছে। যেহেতু শেখ মুজিবুর রহমান একবার বলেছেন, তা তো আর বদলানো যায় না। কিন্তু ইতিহাস তো এভাবে চলে না। এটারও একটা সুরাহা হওয়া দরকার। 
প্রখ্যাত ভারতীয় লেখিকা ও আমেরিকা প্রবাসী গবেষক ড. শর্মিলা বসু ডেড রেকনিংয়ে শহীদের সংখ্যা এক লাখের কাছাকাছি দেখিয়েছেন, তাও মুক্তিযোদ্ধা। অমুক্তিযোদ্ধাসহ অন্যান্য মিলিয়ে কত হতে পারে? জানা তথ্যানুযায়ী সরকার সে সময় একটা কমিটি করেছিল শহীদদের তালিকা প্রণয়নের জন্য। আরো লক্ষ্য ছিল পঙ্গু ও ক্ষতিগ্রস্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যের জন্য সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার বিষয়টি। সে রেকর্ড কোথায়? সেটা পেলেই তো অন্তত একটা ভিত্তি পাওয়া যেত। 
এরপর মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রসঙ্গে আসা যাক। প্রতি বছর তো মুক্তিযোদ্ধা নতুন জন্ম নেয় না। কেন নতুন তালিকা হচ্ছে? এটা কি বাণিজ্যের বিষয়? টাকা, প্রভাব প্রতিপত্তি দিয়ে নাম ওঠানো হচ্ছে কোন চেতনা লালনের জন্য। 
মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সত্যের প্রয়োজনেই অনেক জিজ্ঞাসার জন্ম দিয়েছে, কিন্তু উত্তর মেলেনি। নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতার বীরযোদ্ধাদের কাছে একটি সত্যনিষ্ঠ বক্তব্য ও ইতিহাস আশা করে। 
অভিযোগ উঠল মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ভারত নিয়ে গেছে। অথচ কিভাবে নিলো, কোন চুক্তি বলে নিলো, আজ পর্যন্ত তার কোনো হদিস বের হলো না। মরহুম মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বলেছিলেন, ২৩ বছরে যা পাকিস্তান নিয়েছে তার বেশি সমরাস্ত্র নিয়েছে ভারত। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির উচিত সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা। আওয়ামী লীগের ভূমিকা এ ব্যাপারে রহস্যজনক কেন জাতি এরও সুরাহা চায়। 
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বৃহৎ শক্তি বিশেষ করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। ইচ্ছা থাকলেও আমেরিকার বিরুদ্ধে বলা কঠিন। সব সাহায্য রসদ বিদেশীদের থেকে পাওয়ার প্রয়োজন, তাই চুপচাপ। মহাচীন অনেক দেরিতে স্বীকৃতি দিলো। ভারতই আগ বাড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়াল। আশ্রয় দিলো লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত আদম সন্তানকে। মুক্তিযোদ্ধাদেরকে দিলো অস্ত্র, ট্রেনিং ও সব ধরনের সাহায্য। সে দুর্দিনে এটা ছিল অকল্পনীয়, যা জাতি আজো শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। 
কিন্তু ভারতের বর্তমান ভূমিকার সাথে ওই ঐতিহাসিক অবদান খুব একটা যেন মিলছে নাÑ এটাও চিন্তা করতে হবে। প্রতিবেশী বড় দেশ হিসেবে তুলনামূলক ুদ্র বাংলাদেশকে তারা কী দৃষ্টি নিয়ে দেখছে? না বড় ভাইসুলভ আচরণ করছে, তাও দেখার বিষয়। জাতিকে না জানিয়ে বিভিন্ন গোপন চুক্তি হচ্ছে অথচ আমরা জানতে পারছি না। আরো কয়েকটি দেশের ভারতের সাথে সীমান্ত আছে, বিরোধও আছে, সেখানে কি প্রতিনিয়ত পাখির মতো গুলি করে নিরীহ চাষাভুষাকে হত্যা করছে, সেসব সীমান্তে ফেলানীর মতো অসহায় কিশোরীকে হত্যা করে কি ঝুলিয়ে রাখে? 
৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল মানিক শর একটি উক্তি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৮ সালের ২৯ এপ্রিল দিল্লিতে। তিনি বলেছিলেনÑ ‘আমাদের সত্যাশ্রয়ী হতে হবে। বাংলাদেশীদের প্রতি আমরা সঠিক আচরণ করিনি। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে নিজ পায়ে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের সব রকম সাহায্য করা উচিত ছিল, কিন্তু আমাদের রাজনীতিবিদেরা তা করেননি, তারা বেনিয়ার মতো আচরণ করেছেন। 
স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত সেনাপতির সারেন্ডার অনুষ্ঠানে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানী কোথায় ছিলেন, ঢাকায় ভারতীয় আঞ্চলিক সেনাপতির কাছে পরাজিত পাকিস্তানি সেনাপতি সারেন্ডার করলেন। যুদ্ধাপরাধী ৯০ হাজার সৈন্য সব ভারত নিয়ে গেল, পরে মুক্তি পেয়ে পাকিস্তান চলে গেল। ১৯৩ জন যুদ্ধাপরাধী সাব্যস্ত হলো, তদন্ত কমিটির মাধ্যমে তারাও ক্ষমার আওতায় চলে গেল। মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, বাঙালি উদার, ক্ষমা করতে জানেÑ চরম শত্রু ভুট্টোকে দাওয়াত দিয়ে এনে রাজকীয় সম্মান দিয়ে অভ্যর্থনা দিলো। কপালে চুমু দিয়ে মিলমিশ হয়ে গেল। অতীত সব ভুলে গিয়ে সামনে মিলেমিশে বন্ধুত্বের নিদর্শন রাখবে, দেশ ও জাতির অগ্রগতির জন্য হাতে হাত ধরে কাজ করবেÑ এমন আশাবাদের কথা শোনানো হলো। 
ভারতের সাথে দীর্ঘ দিন অমীমাংসিত বিষয়গুলো ঝুলিয়ে রেখে এই সরকার ট্রানজিট ও করিডোর দিচ্ছে। এটা কিভাবে দেয়া হচ্ছে, জাতীয় স্বার্থে এটার সুরাহা হওয়া দরকার। ভারতের বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকা লিখেছে, কোনো কিছুর চাহিদার চিন্তা ভারতের মাথায় আসার আগেই বাংলাদেশ স্বত্বপ্রবৃত্ত হয়ে সেটা দিয়ে দিচ্ছে। কোন নীতি ও কোন ধরনের জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে এমনটি করা হচ্ছেÑ তা খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত। 
দেশে দালাল আইনে গ্রেফতার হলো, সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেল। যারা শাস্তি পেল তাদেরকেও সাধারণ ক্ষমার আওতায় ছেড়ে দেয়া হলো। যুদ্ধের ক্ষতি, শত্রুতার আক্রোশ সারা জীবন তো বহন করে চলা যায় না। যে ব্রিটিশের হাতে অসংখ্য ভারতীয় জুলুমের শিকার হলো, জীবন দিলো, সব ভুলে গিয়ে সে ব্রিটিশের কমনওয়েলথের আওতায় পাক-ভারত থাকল। এক দিন অতীত ভুলে গিয়ে আবার মেলামেশা করে চলতে হয়, এটাই দুনিয়ার নিয়ম। 
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অসংখ্য মুসলমান পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দিলো কিন্তু তাদের এলাকাটা ভারতেই রয়ে গেল, তারা মুসলিম লিগ করেছেÑ তারা সবাই পাকিস্তানে হিজরত করে এলো না। আমাদের এখানেও অনেক হিন্দু অখণ্ড ভারতের পক্ষে কংগ্রেসের পক্ষে ভোট দিলো, পাকিস্তানের বিরোধিতা করল তারা সবাই পাকিস্তান ত্যাগ করে ভারতে চলে গেল না। মুসলিম লিগ ও কংগ্রেসের লোকদের তালিকা করে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হলো না। কংগ্রেসের নেতা ধীরেন্দ্রনাথ পাকিস্তানে মন্ত্রী হয়েছেন। এ দেশে রাজনীতি করতে আইন করে বাধা দেয়া হলো না। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, অবশ্য ছিটেফোঁটা কিছু দুষ্কৃতকারী রাজনৈতিক ফায়দা উঠানোর চেষ্টা করছে, সেটা আমাদের ঐতিহ্যকে ম্লান করে, মুছে ফেলে না। 
দেশে রাজনৈতিক খুনোখুনি ও নৈরাজ্যের উসকানি কেন দেয়া হচ্ছে তার কারণ খতিয়ে দেখা দরকার। প্রত্যেকের নিজ নিজ জায়গায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মানবিক আচরণ নিজের কল্যাণের জন্যই করা দরকার। এই সত্যটি আমরা ভুলে যাচ্ছি কেন? 
তৎকালীন সেক্টর কমান্ডার মরহুম মেজর জলিল কিছু মানুষের শ্রেণী চরিত্র তার বইয়ে তুলে ধরেছেন। যারা কাপুরুষের মতো ভারতে পালিয়ে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নাম ভাঙিয়ে হোটেলে নৃত্যগীতে, ভোগবিলাসে, অনৈতিক কাজে মগ্ন ছিলেন, তারাই নিজেদের অপকর্ম ঢাকতেই এখানে এসে হিংসা বিদ্বেষ ছড়িয়ে বিষাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করছে না তো? জনসমর্থনহীন বাম ঘরানার কিছু লোক এমনিতেই অসামাজিক। ভোটে দাঁড়ালে দু-এক শর বেশি ভোট পায় না। তারাই পার্লামেন্টকে বলে শুয়রের খোঁয়াড়। সমাজতন্ত্র পতনের পর এরা জাতিচ্যুত, কর্মচ্যুত, বেকার, বাউন্ডেলে। বিপ্লবের নামে এরাই মানুষ হত্যায় পারঙ্গম। এরা নিজেদের প্রয়োজনে সমাজে হিংসা বিদ্বেষ জিইয়ে রাখে। অপর দিকে এদের একটা বংশীয় বা পৈতৃক আরবি কিংবা ইসলামি নাম রয়েছে, কিন্তু এরা কুরআন, আল্লাহ, রাসূল এবং ইসলামবিদ্বেষী। যদিও পিতা-মাতা মুসলিম, কিন্তু দুর্ভাগ্য ইসলাম, আল্লাহ-রাসূল চেনা তাদের কপালে জোটেনি। কেউ কেউ সামাজিক চাপে অন্তত জুমার নামাজ পড়ে, কিন্তু কেউ কেউ তাও শেখেনি, পড়েও না। এরা নিম্নœমানের প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত। 
বিরাট প্রতিবেশী দেশ ভারত। এরা দেশ স্বাধীনের সময় যে আশা নিয়ে এত বড় অবদান রাখল তা পরে আর গোপন রইল না। ৯-১০ মাস যাদেরকে খাদ্য খোরাক দিয়েছে ভারত, সেই মুক্তিযোদ্ধারাই ভারতীয় লুটপাট রুখে দাঁড়াল। প্রতিবেশীর এই জুলুমের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিল স্বাধীন বাংলায় প্রথম রাজবন্দী হলেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলে দাবিদার চিহ্নিত লোকদের সীমাহীন ঔদ্ধত্য, কম্বল চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি জনগণকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির উষালগ্নেই ুব্ধ করে তোলে। তারা অপেক্ষাকৃত সৎ, ভদ্র ও আদর্শিকভাবে নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদদের দিকে ঝুঁকে পড়ে। তখনই প্রতিবেশীদের টনক নড়ে, গবেষণা শুরু হয় কিভাবে এ দেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ বিসম্বাদ লাগিয়ে তাদেরকে দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। 
এ দিকে বিশ্বমোড়ল ইহুদি-খ্রিষ্টান গোষ্ঠীও তাদের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নিরন্তর যুদ্ধের নামে বাংলাদেশের মানুষের ধর্মবিশ্বাসকে টার্গেট করল। তারা নিজ প্রয়োজনে লাদেন সৃষ্টি করল। আবার লাদেনকে শেষ করতে আফগানিস্তানকে বোমার খোরাক বানাল। গণতান্ত্রিক পরিবেশে বিরোধী দল, বিরোধী মত থাকবে। তাদের গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার স্বীকার করে বাস্তবে গণতান্ত্রিক মর্যাদা সমুন্নত করতে হবে। অপরের সমালোচনা সহ্য করতে হবে। বাম রাজনীতিকেরা ভোটে দাঁড়ালে সর্বমোট ১ শতাংশ ভোট পায় না তারাও তো দাপটের সাথে রাজনীতি করে যাচ্ছে অথচ ইসলামের নামে এ দেশে রাজনীতি করা যাবে নাÑ এটা কি গ্রহণযোগ্য হতে পারে? 
এসব দিক চিন্তা করে সবাইকে সংযত হয়ে চলা, কথা বলা ও আচরণ করা উচিত। এক দল মানববন্ধনের মতো সাধারণ প্রোগ্রাম করতে পারবে না আর এক দল সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে জনগণের বিরুদ্ধে ইন্ধনদাতার ভূমিকা রেখে জনগণের চলার রাজপথ বন্ধ করে অবস্থান করবে তা কি সঠিক হচ্ছে? 
অনেক গবেষণা করে ৪০ বছর পরে স্বাধীনতার শত্রু-বন্ধু নামে বিভাজনের রাজনীতি শুরু করা হলো। আওয়ামী লীগ দেখল বিএনপি-জামায়াত এক থাকলে তাদের কপাল খুলবে না। তারা বিভেদের রাজনীতি লুফে নিলো। তারই অংশ হিসেবে চলছে হামলা-মামলা ও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা ভাষায় বিচার আচারের মহড়া। দেশ আজ বিভক্ত। সুশাসন বিপন্ন। সব কটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ জরুরি।



0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads