সাম্প্রদায়িকতার চারণভূমি ভারত। ইতিহাসের অনাদিকাল থেকে সাম্প্রদায়িকতারবিষবাষ্প লালন করে আসছে ভারত। এই ভারতভূমি একসময় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বাসভূমি ছিল। বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরাই ছিল ভারতের জনসংখ্যারসংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ। সাম্প্রদায়িক সংঘাতের মধ্যদিয়ে বৌদ্ধদেরবিতাড়িত করা হয়েছে ভারত থেকে। সাম্প্রদায়িক জিঘাংসা এমনভাবে কাজ করতো যে তাদের ব্রতছিল বৌদ্ধ মানে বধ্য। অর্থাৎ বৌদ্ধপেলেই বধ কর হত্যাকর।ব্রাহ্মণ্যবাদের জিঘাংসার শিকার হয়ে লাখলাখ বৌদ্ধ নিহত হয়েছে আর যারা কোন প্রকারে প্রাণে বেঁচেছিল তারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পালিয়েছে।দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নিরাপদে বসবাস করে বৌদ্ধদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আজবৌদ্ধদের আবাসভূমি। জাপান থেকে মিয়ানমার সবই বৌদ্ধদের আবাসভূমি।সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প আজও বহমান ভারতে। সাম্প্রদায়িকতাই ভারতের রাজনীতি সমাজনীতিরচালিকাশক্তি। হিন্দুদের সাম্প্রদায়িকতার কারণেই বিশাল ভারতকে বিভক্ত করতে হয়েছে ১৭৪৭ সালে।ওদের হিংসা বিদ্বেষ ও জিঘাংসার কারণেই পাকিস্তান নামক আলাদা একটি মুসলিম রাষ্ট্র ভারতের বুকচিরে বের করতে হয়েছে।জিন্নাহ পাকিস্তানের ¯্রষ্টা হলেও মূল ¯্রষ্টা হলেন গান্ধী, নেহেরু, প্যাটেল ও শ্যামা প্রসাদ গং।তাদের জিঘাংসার শিকার হয়েছে লাখ লাখ মুসলমান। ব্রাহ্মণ্যবাদ অন্য কোন সম্প্রদায়ের সাথেসহঅবস্থানে অভ্যস্ত নয়। তারা যেখানে বসবাস করে একাই বসবাস করতে চায়। তারা প্রতিবেশীদেরনিশ্চিহ্ন করে ফেলতে চায়। ওদের সঙ্গে কোন সম্প্রদায় বসবাস করতে পারে না। পারে না বলেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আজ বৌদ্ধদের প্রাধান্য। পাশাপাশি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নামে দুটি মুসলিম রাষ্ট্রের সৃষ্টি।ভারতে বৌদ্ধ খৃস্টান মুসলমানদের উপর নিপীড়ন চলছেই। ২০০২ সালে গুজরাটে হাজার হাজারমুসলমানকে হত্যা করা হয় মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদীর নেতৃত্বে। এমনকি জীবন রক্ষার্থে কোন কোনমুসলমান হিন্দু পরিচয় দিয়েও প্রাণে বাঁচতে পারেনি। তাদের উলঙ্গ করে দেখা হয়েছে তারা সত্যিই হিন্দুকিনা। মুসলমান প্রমাণিত হওয়ার পর তাদের বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। সাম্প্রদায়িকহত্যাকা-ের নায়ক হিসেবে চিহ্নিত ও প্রমাণিত হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদীকে মার্কিন ভিসা প্রত্যাখ্যানকরা হয়। সেই নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদের জন্যে এখন একজন জনপ্রিয় প্রার্থী।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তো সাম্প্রদায়িক জিঘাংসা প্রতিনিয়ত কাজ করছে। বাংলাদেশ সীমান্তেবিএসএফের হাতে খুন হচ্ছে হাজার হাজার বাঙ্গালী মুসলমান। মুসলিম কিশোরী ফেলানী হত্যা তো বিশ্বমিডিয়ায় প্রধান আলোচ্য বিষয়। ফেলানী হত্যার বিচারের নামে প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে।চিহ্নিত দোষী খুনী অমিয় ঘোষকে প্রহসনের বিচারে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছে। ফেলানী হত্যারপ্রহসনের বিচার এখন বিশ্ব মিডিয়ার প্রধান আলোচ্য বিষয়।
নির্বাচন সামনে আসলেই ভারতীয় রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাদের সাম্প্রদায়িক জিঘাংসা প্রকটথেকে প্রকট আকার ধারণ করে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতীয় নেতাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকজিগির সৃষ্টি হচ্ছে। সম্প্রতি পাক ভারতের মধ্যে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার মূল কারণও সাম্প্রদায়িকজিঘাংসা। ভারতীয় নেতারা আগামী নির্বাচনে পাকিস্তান বিদ্বেষী ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্যসাম্প্রতিক পাক ভারতে কৃত্রিম উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ভারতের জাতীয় নির্বাচন খুব নিকটে। এইপ্রেক্ষাপটে উগ্রবাদী হিন্দুরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নতুন করে ঘৃণা সৃষ্টি করে ২০০২ সালে গুজরাটেসংঘটিত জঘন্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মত নতুন করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টিতে সক্রিয়। ২০০২ সালেবিজেপি নেতারা গুজরাটে ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত করেছিল। দাঙ্গার পর বিজেপি নেতারানির্বাচনী কৌশলে সফলও হয়েছিল। ঐ সময় গুজরাটের মুসলমানদের কৃত্রিম পাকিস্তান প্রীতি জনসমক্ষেতুলে ধরেছিল। এই হীন উদ্দেশ্যে মুসলমানদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়, দলে দলে খুন করা হয়,মেয়েদের ধর্ষণ ও জীবন্ত হত্যা এবং শিশুদের গণহারে হত্যা করা হয়। যার ফলে বিজেপি বিপুলভোটেবিজয়ী হয়েছিল।
এবার তারা সরাসরি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। উদ্দেশ্য পাকিস্তানকেআঘাত করে নির্বাচনে জয়লাভ। এইসব নির্বাচনী অপকৌশল দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির জন্য শুধু ক্ষতিকরইনয় এর দ্বারা ভারতীয় রাজনৈতিক নেতা ও সেনা নায়কদের চরম লোভ, দায়িত্বহীনতা ও হঠকারিতাইপ্রকাশ পায়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন