সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৩

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব


নির্বাচিত হলেই গণতান্ত্রিক সরকার বলা যায় না। জনগণের চাওয়া পাওয়া, প্রত্যাশা আকাক্সা, প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণে যে সরকার নিবেদিতপ্রাণ তাকে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার বলা যায়। প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন তার মেধা, যোগ্যতা, দতা দিয়ে আমেরিকাবাসীর প্রয়োজন, প্রত্যাশা ও আকাক্সা বাস্তবায়নে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। জন-আকাক্সাবিরোধী কর্ম না করে জনগণকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আমেরিকাবাসীর সাথে সারা দুনিয়ার মানুষের জন্য গণতান্ত্রিক সরকারের মডেলে পরিণত হন। তিনি আমেরিকান বিপ্লবের সময় কন্টিনেন্টাল আর্মির সর্বাধিনায়ক ছিলেন। তার সেবাধর্মী কর্মকান্ডে সে দেশের মানুষ এতটা খুশি হন যে, ১৭৮৯ ও ১৭৯২ সাল উভয় নির্বাচনে ১০০ ভাগ ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে তিনি বিজয় পান। প্রচার-প্রচারণা জড়বস্তু, স্থান, ঘটনা বা মানবসৃষ্ট কর্মকাণ্ডের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ায়, বিমূর্ত বিষয়ের প্রতি আকর্ষণ প্রচার-প্রচারণায় বৃদ্ধি পায় না বরং হ্রাস পায়। জনপ্রিয়তা একটি বিমূর্ত বিষয় যার অবস্থান মানবহৃদয়ে। জনগণের হৃদয়ে জায়গা পেতে হলে জনগণের আকাক্সা, প্রত্যাশা ও প্রয়োজন পূরণে দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে। মতার দাপট দেখিয়ে বা জোর করে ভালোবাসা বা সমর্থন আদায় অসম্ভব। বাংলাদেশ সরকার বহু উন্নয়নমূলক কাজ করছে বলে প্রচারণা আছে। দেশে অনেক প্রজেক্ট পাস হচ্ছে। বাস্তবায়নে শোনা যায় বিরাট ঘাপলা। মন্ত্রী, এমপি, সরকারি কর্মচারী, দলীয় নেতাকর্মী, পাতিনেতা সবার মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে যতটুকু অবশিষ্ট থাকে তা-ই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এভাবে চলছে দেশে ঘুষ-দুর্নীতির মহোৎসব। খুবই সাধারণ অবস্থা থেকে গত পাঁচ বছরে অনেকে আঙুল ফুলে কলাগাছ। অনেকে এই স্বল্পকালীন মেয়াদে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সরকার পরিবর্তনের সাথে এসব কোটিপতিরা উধাও হয়ে যাবে। শোনা যায় অনেকে ইতোমধ্যে বিদেশে আবাসস্থলের ব্যবস্থা করেছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে বিদেশে নিরাপদ বসবাসের স্থায়ী ব্যবস্থা করেছেন। দেশের মানুষ অবাক বিস্ময়ে সরকারি দলের কর্মকাণ্ড প্রত্য করছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বারবার উচ্চারণ করা হলেও সরকারের কর্মকাণ্ড মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ প্রতিষ্ঠা, সবার সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা, জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা, সুশাসন পাওয়ার অধিকার, সব ধরনের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনের অধিকার, ন্যায্য দাবি আদায়ে সভা, সমাবেশ, বিােভ, ঘেরাও ইত্যাদি কর্মসূচি পালনের অধিকার, আইনের চোখে সবার সম-অধিকার প্রভৃতি। পাকিস্তান সরকারের গণতান্ত্রিক আচরণ, দমন, পীড়ন, নির্যাতন, শোষণ, বঞ্চনা ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে এ দেশের মানুষ ত্যক্ত, বিরক্ত ও ুব্ধ হয়ে পড়েন। তারা নিজ অধিকার ও মর্যাদা ছিনিয়ে আনতে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মাত্র ৯ মাস সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্তানের দুর্ধর্ষ সেনাবাহিনীকে পর্যুদস্ত ও পরাস্ত করে স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য ছিনিয়ে আনেন। এ দেশের দামাল ছেলেরা আধুনিক অস্ত্রসজ্জিত পাক হানাদার বাহিনীকে পরোয়া করেননি। ৩০ লাখ জীবন ও কয়েক লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। লাখ লাখ আত্মবলিদানের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ থেকে এ দেশের মানুষ বঞ্চিত। লাভ হয়েছে কয়েক লাখ ভাগ্যবানের। তারা স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা বিসর্জন দিয়ে আত্মস্বার্থ, গোষ্ঠীস্বার্থ ও দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর শুরু হয় হরিলুট। অনেকে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান। স্বাধীনতার স্বাদবঞ্চিত এ দেশের গরিব, অসহায়, দুখী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ৪২ বছরে আমরা কাক্সিত উন্নতি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনে চরমভাবে ব্যর্থ। অবশ্য ২২ পরিবার থেকে ইতোমধ্যে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে কয়েক লাখে দাঁড়িয়েছে। গত সাড়ে চার বছরে কোটিপতির সংখ্যা নেহাতই কম নয়। কাদের সিদ্দিকীর আগে জানলে যুদ্ধ করতাম নাকথাটি প্রায় সবার। বর্তমানে গুণীর কদর নেই, মানীর মান নেই, মেধাবীদের মর্যাদা নেই। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সরকার যেসব লোভনীয় আকর্ষণীয় ও চিত্তাকর্ষক প্রতিশ্রতি দিয়েছিল সরকার সেসব ভুলে গেছে বললে বোধ হয় বাড়িয়ে বলা হবে না। সরকার কাজের চেয়ে কথার ওপর জোর দিয়ে টিকে আছে। সরকারের কর্তাব্যক্তির ইচ্ছায় কর্ম সম্পাদন হচ্ছে। বাবু যত বলে, পরিষদ দলে বলে তার শতগুণ। কোথাও কোনো প্রতিবাদ, আপত্তি নিদেনপে ভুল পদপে ধরিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। কয়েক বছরে দেশ ঘুষ, দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। দুর্নীতিকে দলীয়করণ করে সরকার মানুষের সমর্থন আদায় করতে চাচ্ছে যা একেবারে অসম্ভব। নানারকম কলাকৌশল, জনগণের সাথে প্রতারণা ও ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে আবার মতায় যাওয়ার পথ খুঁজছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিগ-২৯ জঙ্গি বিমান ক্রয় দুর্নীতি ও দণি কোরিয়া থেকে ফ্রিগেট ক্রয়সংক্রান্ত দুর্নীতিসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নামে প্রায় সাড়ে সাত হাজার দুর্নীতির মামলা তুলে নেয়া হয়। তারা সবাই উৎসাহিত হয়ে নতুন করে দুর্নীতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দেখার কেউ নেই, প্রতিবাদ-প্রতিরোধের কোনো সুযোগ নেই। খোলা লাইসেন্স পেয়ে প্রকাশ্য দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা লুটপাট, দুর্নীতি করে ফুলে উঠছেন। ভর্তিবাণিজ্য, টেন্ডারবাণিজ্য, ঘুষবাণিজ্য, চাঁদাবাণিজ্য, তদবিরবাণিজ্য, নিয়োগবাণিজ্য ইত্যাদি কর্মকাণ্ড মানুষ অহরহ প্রত্য করছেন। যতই দেখছেন ততই বিস্মিত ও হতবাক হচ্ছেন। এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধাচরণ করার সাহস দেখানো বিপজ্জনক। জনগণ চোখের সামনে এসব অপকর্ম হতে দেখেও কিছু বলা বা করার সাহস দেখাতে পারছেন না। তারা নির্বাচনের অপো করছেন। পাঁচ সিটি নির্বাচনে ভোট দিয়ে জনগণ সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শেয়ারমার্কেট থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে সরকারের যেন করার কিছু নেই। রীতিমতো তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা হয়েছে। মতাধর ব্যক্তিদের ভয়ে সরকার চুপ। ৩৫ লাখ দরিদ্র ুদ্র বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এই লুটের প্রভাব অন্তত দেড় কোটি জনগোষ্ঠীর ওপর পরোভাবে পড়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে পুলিশের লাঠিপেটা ও টিয়ার গ্যাস হজম করতে হয়েছে। তিগ্রস্ত অনেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের লাভবান করার উদ্দেশ্যে কুইক রেন্টাল স্থাপন করা হয়েছে। স্থায়ী টেকসই ব্যবস্থা না করে কুইক রেন্টাল স্থাপন সরকারের অশুভ উদ্দেশ্যের পরিচায়ক। কুইক রেন্টাল থেকে অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের কথা শোনা যায়। হলমার্ক, ডেসটিনি, বিছমিল্লাহ গ্রপ ইত্যাদি দুর্নীতি। সুরঞ্জিত বাবুর রেলওয়ে কালো বিড়াল কেলেঙ্কারির পর দফতরবিহীন মন্ত্রী থাকা সপ্তাশ্চর্যের একটি। মানুষ কিছুই ভুলে যায়নি। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের মামলা উঠানো হলেও বিরোধী দলের প্রতি সরকার খড়গহস্ত। ১-১১ অবৈধ সরকারের দেয়া মামলা তুলে না নিয়ে আরো নতুন নতুন মামলা দিয়ে বিরোধী দলকে ব্যতিব্যস্ত রাখার কৌশল অবলম্বন করে সরকার বিজয়ী হতে চায়। বিচারালয়ের ওপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নানাভাবে দমন, পীড়ন, নির্যাতন ও হয়রানি করছে। গুম, খুন, অপহরণ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। ক্রস ফায়ার ও নির্যাতনে ইতোমধ্যে বিরোধী দলের সাথে অনেক ভালো মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন, পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করার পরও লিমন মামলা থেকে রা পাননি। সাগর-রুনির ঘাতকেরা আজো ধরাছোঁয়ার বাইরে। চৌধুরী আলম, ইলিয়াস আলী ও তার ড্রাইভার নিখোঁজ এক বছরের অধিককাল। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আটক, নির্যাতন, গুম, খুন সর্বকালের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। সরকার বিরোধী দলকে দমনে নতুন নতুন অপকৌশল অবলম্বন করছে। বাঘা বাঘা নেতাকর্মীর ওপর জেল, জুলুম ও নির্যাতন চালাচ্ছে। বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ বন্ধ, বিােভ, মিটিং, মিছিল, মানববন্ধন ইত্যাদি কর্মসূচিতে বাধা প্রদান, ১৪৪ ধারা জারি করে বন্ধ করা ইত্যাদি মানুষ অহরহ প্রত্য করে আসছেন। এসব অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন করে তুলেছে। পুলিশ বাহিনীসহ প্রশাসনের সব স্তরে উৎকট দলীয়করণ করে সরকার বিরোধী দলের জন্য স্পেস রাখেনি। সব কিছু পকেটস্থ করে সরকার একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করছে, যা এ দেশের মুক্তিকামী মানুষ কিছুতেই মেনে নেবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা ছিল সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার; কিন্তু প্রতিদিন দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে ওঠা দেখে মনে হয় দেশে সরকার নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় চলছে। সীমিত আয়ের মানুষ দ্রব্যমূল্যের কশাঘাতে জর্জরিত। একবার দাম বাড়লে আর কমার লণ নেই। পেঁয়াজের ঝাঁঝে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। হঠাৎ করে পেঁয়াজের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে ১৯৭৪-৭৫ সালের লবণ ও মরিচের মূল্যবৃদ্ধির কথা স্মৃতিতে ভেসে উঠছে। সে সময় এক কেজি লবণের দাম ৮০ টাকা, যা কিনতে কয়েক মণ ধানে কুলাত না। মরিচের কেজি উঠেছিল ১০০ টাকা। সরকার তলানিতে পৌঁছানো জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির নানা কৌশল অবলম্বন করছে। জনগণের টাকায় দেশী-বিদেশী পত্রপত্রিকায় ফলাও করে সাফল্য প্রচার করছে। জনগণ কিন্তু সরকারের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের প্রত্য সাী। তাদের বিভ্রান্ত করার কোনো সুযোগ নেই। পদ্মা সেতু নির্মাণে শোচনীয় ব্যর্থতা, চার লেন রাস্তা, এলিভেটেড এক্সপ্রেস রেলওয়ে, বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে স্থায়ী টেকসই ব্যবস্থা করতে না পারা, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি, উৎকট দলীয়করণ, বারবার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, সেবার মান বৃদ্ধি না করে রেলওয়ের ভাড়া দ্বিগুণ বৃদ্ধি ও বারবার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের ওপর স্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। বিনিয়োগ নেই, রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়া, দেশে-বিদেশে চাকরির বাজার সীমিত, তার ওপর দলীয়করণে ও নিয়োগবাণিজ্যের কারণে গরিব মেধাবী ছেলেরা চাকরিবঞ্চিত হচ্ছে। প্রতি বছর হাজার হাজার শিতি যুবক চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে, যার বেশির ভাগ বেকার থেকে যাচ্ছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে মানবাধিকার রার সুস্পষ্ট প্রতিশ্রতি সরকার রা করেনি। ক্রস ফায়ারে দলীয় পুলিশ ও র‌্যাব অহরহ মানুষ হত্যা করে চলেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে পাখির মতো মানুষ মারা দেখে দেশের মানুষ হতবাক। আমেরিকাভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ফেব্রয়ারি থেকে ৬ মে পর্যন্ত ১৫০ জন মানুষ নিহত ও ২০০০ আহতের কথা বলেছে। এ দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিচ্ছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিদেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলো নিয়মিত উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিচ্ছে। শাহবাগীদের প্রতি সুপ্রসন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও সরকারি সহযোগিতা এবং শাপলা চত্বরে সমবেত লাখ লাখ আলেম-ওলামা মুসল্লি ও ছোট ছোট মাদরাসা পড়য়াদের প্রতি বিমাতাসুলভ অমানবিক নিষ্ঠুর আচরণ মানুষকে সরকারের প্রতি বীতশ্রদ্ধ ও ুব্ধ করেছে। অধিকার ৫ মের গভীর রাতে বাতি নিভিয়ে পুলিশের অভিযানে ৬১ জন নিহতের নাম ঠিকানাসহ তালিকা সরবরাহ করতে চেয়েছিল। সরকার তাদের শর্তে রাজি হয়নি, এমনকি সে রাতের ঘটনা তদন্তে কোনো নিরপে তদন্ত কমিটি পর্যন্ত করেনি। অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে ১০ আগস্ট গ্রেফতার করে তাদের মুখ বন্ধ করার অপচেষ্টা চলছে। এসব কিছু সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাসের কারণ। এত সব কারণ দূর না করে জনপ্রিয়তা ফিরে পাওয়া অসম্ভব। প্রধানমন্ত্রী (১৮.০৮.২০১৩) বলেছেন তিনি সংবিধান থেকে একচুলও নড়বেন না।কেউ আসুক বা না আসুক সংবিধান অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সরকারপ্রধানের কথার মধ্যে গণতন্ত্রের সুর অনুপস্থিত। সরকার বিলবোর্ড দিয়ে রাজধানী মুড়ে দিয়েছিল। সরকারের সাফল্য জনগণ ও বিরোধী দল দেখতে পায় না। সে কারণে সরকার ৬০ কোটি টাকা খরচ করে বিলবোর্ড টাঙায়। ব্যাপক সমালোচনা দেখে এগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। জনগণ সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতা সরাসরি প্রত্য করছে। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই। ভালো জিনিসের বিজ্ঞাপন লাগে না। বিজ্ঞাপন দিয়ে নয় বরং জনগণের প্রয়োজন, প্রত্যাশা ও আকাক্সা পূরণে সরকার উদ্যোগী হওয়া উচিত। 


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads