মে. জে. (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক
যেসব ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালগুলোতে বিচারাধীন আছেন তাদের আত্মীয়স্বজন বা পরিচিতজনদের দৃষ্টি নিশ্চিতভাবেই ট্রাইব্যুনালসংশ্লিষ্ট সবার কর্মকাণ্ড, চিন্তাভাবনা, গতিবিধি কথাবার্তা ইত্যাদির ওপর থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। সেই আত্মীয়স্বজন বা পরিচিতগণ দেশেও হতে পারেন বা বিদেশেও হতে পারেন। সময় ও ঘটনাপঞ্জির নিরিখে, পেছনের দিকে তাকিয়ে, এখন আমি অনুমান করছি যে, কেউ-না-কেউ গভীর পর্যবেণের মাধ্যমে আবিষ্কার করেছিলেন যে, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নাসিম মহোদয় বাংলাদেশের বাইরে কারো-না-কারো সাথে নিবিড়ভাবে এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে স্কাইপিতে আলাপ করেন। আমি অনুমান করছি যে, ওইরূপ আবিষ্কারের পর, আবিষ্কারকারী ব্যক্তিগণ, বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করেন। আমি অনুমান করছি যে, বিচারপতি মহোদয়ের আলাপ-আলোচনার বিষয়বস্তু জানার জন্য তাদের মধ্যে গভীর আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল। আমি অনুমান করছি যে, অতএব ওই আবিষ্কারকারী ব্যক্তিগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, কী আলাপ হয় জানতে হবে; অতএব জানার রাস্তাগুলো নিয়ে তারা পর্যালোচনা করেছিলেন; পর্যালোচনা শেষে তারা ভেবেছিলেন যে হ্যাকিং করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আমি অনুমান করছি যে, ওই আলাপ-আলোচনা প্রসঙ্গে জানতে আগ্রহী ব্যক্তিগণ, ইনফরমেশন টেকনোলজি বিষয়ে বা ইলেকট্রনিক যোগাযোগ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। আমি অনুমান করছি যে, এই আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেেিত ওই রূপ বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা বলেছিলেন যে, তোমরা চিন্তা কোরো না, দেখি কী করা যায়। আমি অনুমান করছি যে, বাংলাদেশের বাইরে যেসব ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্যক্রমকে নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গিতে পর্যবেণ করছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই প্রক্রিয়ায় জড়িত হতেও পারেন। অতএব ওই রূপ কোনো এক বা একাধিক ব্যক্তি আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন যে, আসলে স্কাইপি সংলাপে কী আলাপ হচ্ছে এটা জানলে বোঝা যাবে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম স্বচ্ছ না অস্বচ্ছ।
এই কলামের সুধী পাঠকের সামনে আমার বিনীত নিবেদন এই যে, এই পর্যায়ে আমি আমার অনুমানকে আর প্রসারিত করতে পারছি না; এই সীমাবদ্ধতার জন্য আমি দুঃখিত। কোনো-না-কোনো নিয়মে, কারো-না-কারো দ্বারা, কোনো-না-কোনো সময়ে স্কাইপি সংলাপ এবং ইমেইলগুলো, হ্যাকিং হয়েই গেল। হ্যাকিং হয়ে যাওয়ার পর মনে হয়, কিছু দিন এটা পৃথিবীর কোনো-না-কোনো জায়গায় কোনো-না-কোনো মানুষের কাছে জমা ছিল। যারা হ্যাকিং করেছেন বা যাদের কাছে জমা ছিল তারা ভাবলেন হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আবিষ্কার করা তথ্যগুলো কোন জায়গায় কার উপকারে লাগতে পারে? তারা সম্ভবত ভাবলেন, ট্রাইব্যুনালের বাদি প এবং বিবাদি পÑ এই উভয় পই উপকার পাবেন এই তথ্য থেকে এবং এ ঘটনা জানাজানি হলে। সম্ভবত তারা এটা লন্ডনের বিখ্যাত পত্রিকা দি ইকোনমিস্টকে দিলেন এবং বললেন, ভাই এটা দেখেন এবং পারলে প্রকাশ করুন। তারা সম্ভবত আমার দেশ পত্রিকাকেও দিলেন এবং বললেন যে, আপনারাও দেখেন এবং পারলে প্রকাশ করুন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইকোনমিস্ট পত্রিকা সাহসিকতার জন্য প্রসিদ্ধ। দেশীয় অঙ্গনে সাহসিকতার জন্য আমার দেশ পত্রিকা প্রসিদ্ধ। ইকোনমিস্ট পত্রিকা ভাবলেন, একটু খোঁজখবর নেই। এই প্রোপটেই ইকোনমিস্ট পত্রিকা বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমকে ফোন করলেন। বিচারপতি নাসিম মহোদয় প্রতিক্রিয়া দেখালেন বা কর্মপন্থা স্থির করলেন। সেগুলো এখানে পুনরায় উল্লেখ করছি না। বিচারপতি মহোদয় ইকোনমিস্ট এর বিরুদ্ধে রুল জারি করলেন। বাংলাদেশের মানুষ সচেতন হয়ে গেলেন এবং তাৎণিকভাবে অনুসন্ধিৎসু হয়ে উঠলেন এই মর্মে যে, কী হয়েছে দেখো, কী হয়েছে দেখো; সাংঘাতিক কিছু হয়েছে তা না হলে কেন রুল ইস্যু হলো? ধর্মের কল বাতাসে নড়া শুরু হয়ে গেল!
বাংলাদেশের মিডিয়া অঙ্গন এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় সোচ্চার। এক পরে বক্তব্য হচ্ছে এই যে, আমার দেশ পত্রিকা কেন এটা প্রকাশ করল; এটা বড় অপরাধ এবং এর বিচার হওয়া প্রয়োজন। অপর পরে বক্তব্য হলো এই যে, বিচারপতি নাসিম মহোদয় কেন বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বাইরের ব্যক্তির সাথে এত দীর্ঘ এবং নিবিড় আলাপ করলেন? এরূপ আলাপ অকাম্য এবং বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার পরিপন্থী। এরূপ প্রোপটে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম মহোদয় নৈতিক দায়িত্ব স্বীকার করে চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এর দু-এক দিন পর স্কাইপির সংলাপ যেন বাংলাদেশের কোনো মিডিয়ায় কোনো নিয়মে প্রকাশ না পায় ওই প্রসঙ্গে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
এখানে অনেক ‘যদি’ এসে যায়। কয়েকটি ‘যদি’ উল্লেখ করছি। যদি বিচারপতি নাসিম মহোদয় মোটেই স্কাইপি আলাপ না করতেন বিচারাধীন বিষয় নিয়ে, তাহলে কী হতো? যদি আলাপ করার পর, জনাব আহমেদ জিয়াউদ্দিনের কোনো প্রকারের পরামর্শকে আমলে নিবেন বা নিতেও পারেন এই ধরনের কোনো প্রকার ইশারা-ইঙ্গিত সংলাপের মধ্যে না রাখতেন, তাহলে কী হতো? যদি ইকোনমিস্ট পত্রিকার সাংবাদিকের সাথে কথা বলার সময় বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আলোচনার বিষয়টি বিচারপতি মহোদয় অস্বীকার না করতেন তাহলে কী হতো? যদি ইকোনমিস্ট পত্রিকার বিরুদ্ধে রুল ইস্যু না করতেন তাহলে কী হতো? যদি ইকোনমিস্টের বিরুদ্ধে রুল ইস্যু হয়েছে দেখার পর, আমার দেশ পত্রিকা হয় ভীত হতেন অথবা সংযত হতেন এবং প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিতেন, তাহলে কী হতো? যদি স্কাইপি সংলাপটি যাদের কাছে জমা ছিল তারা এই পুরো সংলাপটিকে ইউটিউবে ছেড়ে দিতেন তাহলে কী হতো? যদি আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা না করা হতো তাহলে কী হতো? যদি স্কাইপি সংলাপের পুরো বিষয়টি বাংলাদেশের জনগণের কাছে পুরোপুরি অজ্ঞাত থাকত এবং যথাযথ সময়ে, আপাতদৃষ্টিতে সব নিয়মকানুন মেনে, ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বিচারের রায় ঘোষণা করা হতো, তাহলে কী হতো? এতগুলো ‘যদি’র সঠিক উত্তর পত্রিকার কলামে দেয়া সম্ভব নয়। কিন্তু আগ্রহী সম্মানিত পাঠকের চিন্তার খোরাক হিসেবে এই ‘যদি’ নামক প্রশ্নগুলো উপস্থাপন করলাম।
স্কাইপি সংলাপ পুরোপুরি প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে, এটাই সত্যি। তবে এই নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘ দিন পর্যন্ত টিকবে না এটাও সত্যি। অতএব যতটুকু জনগণের সামনে আছে, সংলাপের ততটুকু অংশকে পুক্সানুপুঙ্খরূপে পড়া এবং পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। যাদের কাছে সময় আছে এবং যাদের মেধায় কুলাবে, তাদের দ্বারা এটা করা সম্ভব। তবে এটাও বাস্তব যে, এটাই সুধীসমাজের সামনে এই মুহূর্তে একমাত্র কাজ নয়। জগৎ-সংসারে আরো অনেক কাজ আছে। অতএব সরকার অমনোযোগী হতে পারেন অন্যান্য কাজের প্রতি কিন্তু সচেতন নাগরিক সমাজ বা প্রশাসনে নিয়োজিত আমলাতন্ত্রের দেশপ্রেমিক অংশ অমনোযোগী হবেন না বলেই আমাদের বিশ্বাস। কারণ, এখন অমনোযোগী হলে তার খেসারত ভবিষ্যতে দেশবাসীকেই দিতে হবে।
এই কলামের দ্বিতীয় অংশে, একটি ভিন্ন বিষয় ও প্রসঙ্গে আলোচনা করি। এই কলামটি লিখে শেষ করলাম বৃহস্পতিবার ২০ ডিসেম্বর। গতকাল ১৯ ডিসেম্বর ২০১২ বুধবার অপরাহ্ণে, ঢাকা মহানগরের গুলিস্তান এলাকা তথা বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অবস্থিত মহানগর নাট্যমঞ্চের বহিরাঙ্গনে, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদানের একটি অনুষ্ঠান হয়েছিল। সংবর্ধনা প্রদানকারী ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং ১৮ দলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। যেই পরিচয়টি বেশির ভাগ সময়েই উহ্য থেকে যায়, সেটি হচ্ছে বেগম জিয়া হচ্ছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সম্মানিত স্ত্রী এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হচ্ছেন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার, মুক্তিযুদ্ধকালীন রণাঙ্গনের তিনটি ব্রিগেড সমমর্যাদার ফোর্সের একটি তথা জেড ফোর্সের অধিনায়ক, অন্যতম অগ্রণী মুক্তিযোদ্ধা এবং ওই ব্যক্তিত্ব যার কণ্ঠ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা নিঃসৃত হয়েছিল, পৃথিবীবাসীর উদ্দেশে।
২০০১ সালের মার্চ মাসে অনেক বড় আকারের একটি মুক্তিযোদ্ধা-সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হওয়ার কথা ছিল বেগম খালেদা জিয়ার। বিবিধ অসুবিধার কারণে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়নি। অক্টোবরে ২০০১-এ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে আসীন হন। সরকারের শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আরো কিছু কাজ করা হয়েছিল। তারপর বেশ কয়েক বছর ফাঁকা যায়। ২০১১ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরের রমনায় অবস্থিত ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সের বহিরাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করেন বেগম খালেদা জিয়া। ওই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় সংবর্ধনা ১৯ ডিসেম্বর ২০১২ অনুষ্ঠিত হলো। আমার চাুস অনুমানে ১৯ ডিসেম্বর ২০১২-এর সংবর্ধনায় দুই হাজারের কিঞ্চিত অধিক মুক্তিযোদ্ধা সারা বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন। সব মুক্তিযোদ্ধা এখন বয়সে জীবনের তৃতীয় অংশে। সব দিক বিবেচনায়, প্রায় ৪০ জন জ্যেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চে আসন গ্রহণ করেছিলেন। কয়েকজনের নাম উল্লেখ করছি। কর্নেল ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম, মেজর ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ডক্টর খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, জনাব মির্জা আব্বাস, জনাব সাদেক হোসেন খোকা, জনাব নুরুল ইসলাম মঞ্জুর, মেজর জেনারেল মো. আইনুদ্দীন বীর প্রতীক, মেজর জেনারেল ইবরাহিম বীর প্রতীক, জনাব রিদোয়ান আহমেদ, জনাব সোহরাব হোসেন, জনাব ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, জনাব সাদেক আহমেদ খান, জনাব আবদুল মালেক চৌধুরী প্রমুখ। বক্তাগণ দুই তিন মিনিট করে সময় প্রায় সবাই পেয়েছিলেন, উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে বা উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের প থেকে সংবর্ধনা প্রদানকারী মাননীয় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামনে কিছু কিছু বিষয় উপস্থাপন করতে। অনেক বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা সৃষ্টিকারী আলোচনা ছিল বর্তমান সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী এবং মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় সংসদের সম্মানিত চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত একটি হুমকির প্রসঙ্গ নিয়ে।
১৯ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখের সংবর্ধনার অব্যবহিত পূর্বে, বলা হয়েছে যে, যারা বিএনপির এই সংবর্ধনায় যাবে, তাদের মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দেয়া হবে বা তাদের নাম গেজেট থেকে কেটে ফেলা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এরূপ হুমকি প্রদান কোনো অবস্থাতেই কাম্য ছিল না, এরূপ হুমকি প্রদান অত্যন্ত অশোভন কাজ ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধিত কর্মচারী নন এবং কোনো একটি মাত্র রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্টতা (ইংরেজিতে এফিলিয়েশন) রাখবেন এ রকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রাণপুরুষ ছিলেন একজন সেক্টর কমান্ডার খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা। বিএনপি এবং তার অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতৃস্থানীয়পর্যায়ে প্রচুর মুক্তিযোদ্ধা এখনো জড়িত। অতএব, মুক্তিযোদ্ধাগণকে সংবর্ধনা দেয়ার বিষয়টি অবশ্যই পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা আরো অধিকতর উজ্জীবিত মনোবল নিয়ে ঢাকা থেকে নিজের নিজের এলাকার ফিরে গেলেন।
সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন নয় নম্বর সেক্টরের প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত মেজর ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম। তাকে সাহায্য করেন অন্যান্য কমিটি বা উপকমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যরা, যেমন কিনা বিশেষ নিমন্ত্রণ ও অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন তিন নম্বর সেক্টরের প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল জয়নুল আবেদিন। সংবর্ধনায় উপস্থিত এবং বক্তব্য দেয়ার জন্য সুযোগ পাওয়া একজন ব্যক্তি হিসেবে, আমি বিনীতভাবে সম্মান জানাচ্ছি সংবর্ধনা আহ্বায়ক কমিটিকে এবং সহায়তাকারী সব কমিটি ও উপকমিটিকে। পূর্ণ অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনায় কয়েকজন ব্যক্তি জড়িত ছিলেন, যাদের মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএনপির বর্তমান ঢাকা মহানগর কমিটির সম্মানিত সম্পাদক বা সেক্রেটারি জনাব আবদুস সালাম। প্রাণবন্ত উপস্থাপনা ও সঞ্চালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এবং বিশেষভাবে জনাব আবদুস সালামকে বিনীত অভিনন্দন জানাচ্ছি। মুক্তিযোদ্ধাদের পারস্পরিক একাত্মতা বৃদ্ধিতে এবং মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মের তথা তরুণ রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের একাত্মতা বৃদ্ধিতে এরূপ সংবর্ধনা প্রদান দারুণ কার্যকর হয় বলে আমি বিশ্বাস করি।
লেখক : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন