গোলাপ মুনীর
বাংলাদেশের জাতীয় খানা জরিপ ২০১২ সালের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দুর্নীতিবিষয়ক নজরদারি প্রতিষ্ঠান বলেছে, দেশের ৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ সেবাগ্রহীতা কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির শিকার হচ্ছে। দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হলো শ্রম অভিবাসন। সব গুরুত্বপূর্ণ খাতে দুর্নীতির ব্যাপকতা উদ্বেগজনক। আর ঘুষ আদায়ের হার আগের চেয়ে বেড়েছে। ঘুষের মাত্রা উদ্বেগজনক। উল্লেখ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকারপ্রতিষ্ঠান, ভূমি প্রশাসন, কৃষি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, বিচারিক সেবা, বিদ্যুৎ, ব্যাংক ব্যবসায়, বীমা, কর ও শুল্ক, শ্রম অভিবাসন, এনজিও, নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, বিআরটিএ, ওয়াসা, পাসপোর্ট, বিটিসিএল প্রভৃতি খাত জরিপের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
গত শুক্রবার প্রকাশিত টিআইবির এই খানা জরিপ মতে, শ্রম অভিবাসন খাতে দুর্নীতির হার ৭৭ শতাংশ। দ্বিতীয় বৃহত্তম দুর্নীতির খাত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ৭৫.৮ শতাংশ। এরপর যথাক্রমে ভূমি প্রশাসন ৫৯ শতাংশ, বিচারিক সেবা ৫৭.১ শতাংশ, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি ৩৩.২ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০.২ শতাংশে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে একই সময়ের তুলনায় ৩৪.১ শতাংশ থেকে বেড়ে উঠেছে ৫৪.৯ শতাংশে। টিআইবি বলেছে, গত ২০১১-১২ অর্থবছরের সেবা খাতে ঘুষ লেনদেন হয়েছে, যা ওই অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ১৬.৬ শতাংশ এবং জিডিপির ২.৪ শতাংশ। জাতীয় জীবনে দুর্নীতিচিত্র যদি এতটা পরিব্যাপক হয়, তবে বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের পরিচয় ‘দুর্নীতিবাজ এক জাতি’ ছাড়া কোনো কিছু হওয়ার কি কোনো অবকাশ আছে। সবচেয়ে বড় কথা, যারা দুর্নীতি প্রতিরোধ করার দায়িত্বে নিয়োজিত, তারাই দুর্নীতির সাথে গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়ছে বেশি থেকে বেশি হারে। সরকারি আমলা থেকে শুরু করে শীর্ষ সারির রাজনীতিবিদদের বড় বড় দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি আজ ওপেন সিক্রেট। সরকারের ও রাজনৈতিক দলের ক্ষমতাসীন অংশের শীর্ষে যারা অবস্থান করছেন, তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা ছাড়া এসব বড় বড় দুর্নীতি সংঘটিত হতে পারে না। এর জায়মান প্রমাণ উদাহরণ তো আমাদের হাতের কাছেই মজুদ রয়েছে। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি, রেলওয়ে নিয়োগবাণিজ্য কেলেঙ্কারি, ভিওআইপি কেলেঙ্কারি, হলমার্ক কেলেঙ্কারি ইত্যাদি ধরনের মহাকেলেঙ্কারির সাথে কারা জড়িত তা আজ কারো অজানা নয়। ছেলে-বুড়ো বোধ-নির্বোধ সবাই জানে এসব কেলেঙ্কারির পেছনে কাদের হাত। কিন্তু দুঃখজনক সত্যিটা হলো, সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে এসব কেলেঙ্কারির নায়কদের বাঁচানোর মরিয়া প্রয়াস চলে। ফলে দুর্নীতি নামের বৃক্ষটির ডালপালা ক্রমেই বৃহত্তর পরিসরে ছড়িয়ে পড়ছে। জাতির কপালে লেপন করছে নতুন নতুন কলঙ্কতিলক।
আজ আমরা শুধু হলমার্ক কেলেঙ্কারি নামের বহুল আলোচিত ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারির কথাই বারবার শুনছি। কিন্তু সোনালী ব্যাংকের এই ঋণ কেলেঙ্কারি শুধু হলমার্ক কেলেঙ্কারির মধ্যেই সীমিত নয়। এখন আমরা নতুন করে শুনছি সরকারি সোনালি ব্যাংকে আরো হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির কথা। অভিনব উপায়ে এসব কেলেঙ্কারির মাধ্যমে এ ব্যাংক থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। আবার নথিতে নাম পরিবর্তন করে অন্য নাম বসিয়ে ব্যাংকে কর্মকর্তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
এর আগে হলমার্ক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের কথা শুনেছি। এখন শুনছি এর বাইরে আরো ৫৮টি প্রতিষ্ঠানকে নানামাত্রিক ঋণ কেলেঙ্কারির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়েছে এই ব্যাংকটি। এর মধ্যে ৪০টি প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব এখন খুঁজে পাচ্ছে না সোনালী ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ৪০ প্রতিষ্ঠানের নামে দেয়া হয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। বাকি ১৮টি কোম্পানির সাইনবোর্ড থাকলেও উৎপাদন বন্ধ বা অন্য ধরনের পণ্য তৈরি করে। প্রতিষ্ঠানগুলো অখ্যাত। এগুলোর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে আবার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে হলমার্কের। দুর্নীতির এসব কেলেঙ্কারির পদ্ধতি প্রক্রিয়া অভিনব। এর সাথে অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তারাও জড়িত। অন্য ব্যাংকে স্থানীয় ঋণপত্র খোলা হয়েছে, আর সেইসব ঋণপত্রের বিল গ্রহণ করেছে সোনালী ব্যাংক। অর্থও পরিশোধ করা হয়েছে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, ঋণপত্র জাল, কোম্পানিও ভুয়া। অতএব সহজেই অনুমেয় এসব অর্থ আদায়ের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞজনেরা বলছেন, এগুলো ঋণ না, সুস্পষ্ট জালিয়াতি। দুর্নীতি দমন কমিশন বলছে, হলমার্ক গ্রুপ ও অন্য পাঁচটি ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংকের তিন হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে। চলতি বছরের মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে জাল দলিলপত্র দেখিয়ে এই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। এর মধ্যে টি অ্যান্ড ব্রাদার্স ৩১৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা, প্যারাগন নিট কম্পোজিট লিমিটেড ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ১৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, ডিএন স্পোর্টস ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান দুই কোটি ৮১ লাখ টাকা, নকশি নিট অ্যান্ড কম্পোজিট লিমিটেড ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ১০ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং খানজাহান আলী সোয়েটার লিমিটেড এক কোটি ১৪ লাখ টাকা নিয়েছে। শুনছি দুদক এসব দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার দায়ে ২৬ জন সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা ও পাঁচটি ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করবে। মামলা করে এই অর্থ আদায় কতটুকু সম্ভব হবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশের সমূহ অবকাশ রয়েছে। হলমার্কের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সত্য, তবে শোনা যাচ্ছে সেখানে জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে পুরো অর্থ আদায়ের সম্ভাবনা কম। অবাক করা ব্যাপার, দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তারা অবৈধ অর্থ আদায়ের মৌরুসি পাট্টা খুলে বসেছে। সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তারা নাকি তথ্য ধামাচাপা দেয়ার জন্য হলমার্ক গ্রুপ থেকে নিয়মিত মাসোয়ারা নিতেন। এবার বুঝুন জালিয়াতির তীব্রতা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে। সোনালী ব্যাংকের একাধিক পরিচালক পর্ষদকে ম্যানেজ করার জন্য হলমার্ক থেকে নিয়মিত ঘুষ নিতেন। তানভীর আহমদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়ে এ কথা বলেছেন। বলেছেন তিনি নিজ হাতে এ ঘুষ দিতেন।
দুর্নীতি আর অনিয়মের আভাস পাওয়া যাচ্ছে এবার বেসিক ব্যাংকেও। এই ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো চলতি হিসাবের বিপরীতে কোনো শাখা ব্যবস্থাপকের ক্ষমতা নেই টিওডি তথা টেম্পরারি ওভারড্রাফট সৃষ্টির। কিন্তু এর গুলশান শাখার শাখা ম্যানেজার সে নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া এই ব্যাংকে অন্য ধরনের অনিয়মের কথাও উঠেছে। এসব ঘটনা বলে দিচ্ছে, ব্যাংকগুলোতে দুর্নীতির যে উৎসব হচ্ছে, তা কার্যত ব্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক ধরনের সঙ্কটের দিকে ঠেলে দেবে। কারণ, একপর্যায়ে গ্রাহকেরা ব্যাংকগুলোর প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবেন। ব্যাংক ব্যবসায়ে গ্রাহকদের আস্থাই হচ্ছে একটি ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ পুঁজি।
যেখানেই হাত দেবেন, সেখানেই দেখবেন দুর্নীতি, অনিয়ম আর নৈরাজ্য। টেলিযোগাযোগ খাতের কথা যদি ধরি, তবে দেখা যাবে অনিয়ম আর নৈরাজ্যে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ খাত। দলীয় লোকদের শুধু টেন্ডারই নয়, স্থায়ীভাবে আর্থিক সুবিধা দিতে গণহারে টেলিযোগাযোগের বিভিন্ন সেবার লাইসেন্স দেয়া হয় সরকারি দলের লোকদের। এসব লাইসেন্স দেয়া নিয়ে সরকারের ভেতরেই বিরোধ দেখা দেয়। তবুও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে তা থেকে সরে আসতে পারেনি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন তথা বিটিআরসি। দুর্নীতির মাধ্যমে বেড়েছে অবৈধ ভিওআইপি কল। একই সাথে ডুবে গেছে সরকারের দোয়েল ল্যাপটপের স্বপ্ন। অবৈধ ভিওআইপি কল অব্যাহত থাকার কারণে সরকার প্রতি বছর বঞ্চিত হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে। আসুন রাজউকে, সেখানেও দুর্নীতির পাহাড়। রাজধানীতে ৪০ বছরে রাজউকের পাঁচ হাজার কোটি টাকার শতাধিক বাড়ি ও প্লট বেহাত হয়ে গেছে। ‘জালিয়াতির মাধ্যমে রাজউকের আরো ৩৮টি বাড়ি আত্মসাতের চেষ্টা করছে সঙ্ঘবদ্ধ সরকারি ভূমি দখলকারী সিন্ডিকেট। খবরে প্রকাশ, চক্রটি সম্প্রতি শত কোটি টাকা মূল্যের ধানমন্ডি ১ নম্বর সড়কের একটি সরকারি বাড়ি হাতিয়ে নিয়েছে। রাজউক এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এসব বাড়ি রক্ষায় তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ। রাজউক ও মন্ত্রণালয়ের এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা বরং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সরকারি বাড়ি দখলকারীদের নানাভাবে সহায়তা করছেন।
এ দিকে অনেক বড় মাপের কেলেঙ্কারির ঘটনা নিয়ে যখন তুমুল হইচই, তখন অনেকটাই আমরা ভুলতে বসেছি ইউনিপেটুইউ, ডেসটিনি ও যুবক ইত্যাদির বহুল আলোচিত প্রতারণার বিষয়। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার জালের ফাঁদে আটকা পড়ে ৭০ লাখ গ্রাহক আর্থিকভাবে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব এমএলএম কোম্পানির চটকদার আকর্ষণীয় সব অফার পেয়ে বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্তÍ হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। সরকারি হিসাব মতে, এমএলএম ব্যবসায়ের নামে ১১টি প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। তবে গ্রাহকদের অভিযোগ, শুধু ইউনিপেটুইউ, ডেসটিনি ও যুবকÑ এ তিনটি প্রতিষ্ঠানেই ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছেন গ্রাহকেরা। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের অভিযোগ, প্রায় এক কোটি গ্রাহক এসব এমএলএম কোম্পানির ফাঁদে পা দিয়েছেন। বিনিয়োগকারীদের বেশির ভাগই স্বল্প ও মধ্য আয়ের পরিবারের লোক। গ্রাহকদের অভিযোগ, এমএলএম ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করা টাকার ৮০ শতাংশই বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা নিয়মিত তাদের বিনিয়োগ করা টাকা উদ্ধারের তাগিদ দিচ্ছেন। কিন্তু হাতিয়ে নেয়া এই হাজার হাজার কোটি টাকা উদ্ধারের কোনো উদ্যোগ নেই। বড় বড় ঘটনার আড়ালে চলে যাচ্ছে ডেসটিনির দুর্নীতি। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা এখন এ ব্যাপারে নীরব।
সবচেয়ে বড় কথা, টিআইবির গত ১৪ অক্টোবরের একটি রিপোর্ট যখন বলেÑ বর্তমান জাতীয় সংসদের অর্ধেকেরও বেশি এমপি অপরাধকর্মে জড়িত। এ রিপোর্টে বলা হয়, বর্তমান জাতীয় সংসদের অর্ধেকেরও বেশি সংসদ সদস্য হত্যা, দখল, চাঁদাবাজি, কমিশনবাজি, সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ প্রভাব বিস্তার, মিথ্যা তথ্যে প্লট বরাদ্দ, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাসহ ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবেদন মতে, সংসদের ৯৭ শতাংশ এমপি কোনো-না-কোনো নেতিবাচক কাজের সাথে জড়িত। তাদের মধ্যে অর্ধেকেরই বেশি অর্থাৎ ৫৩.৫ শতাংশ সরাসরি অপরাধ কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। ২০.১ শতাংশ এমপির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ৫৩.৭ শতাংশ কোনো না কোনো ইতিবাচক কার্যক্রমের সাথে জড়িত। এই হিসাব মতে, বাকি ৪৬.৩ শতাংশের কোনো ইতিবাচক কাজ নেই। নেতিবাচক কাজগুলোর মধ্যে আছেÑ প্রশাসনিক কাজে প্রভাব বিস্তার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ, কমিশন আদায়, উন্নয়ন বরাদ্দের অপব্যবহার, হত্যা, দখলবাণিজ্য, অপরাধকর্মে জড়িত হওয়া বা সমর্থন দেয়া, সরকারি ক্রয় সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তার, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্লট বরাদ্দ নেয়া।
এই যদি হয় অবস্থা। আর এসব এমপি যখন বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে গলাবাজি এই আদর্শ ওই আদর্শ বাস্তবায়নের কথা বলেন, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার কথা বলেন আর অন্যদের দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করে নিজেদের সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার কথা বলেন; তখন আমরা বুঝি না সুশাসনের সংজ্ঞা কী? তাই বিবেকবান মানুষের তাগিদ, এবার থামুন। অনেক হয়েছে। এবার থামলে সবার কল্যাণ। ক্ষতি কারো নয়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন