শেষ হয়ে গেল ২০১২ সাল। এ বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমান তালে তাণ্ডব দেখিয়েছে ছাত্রলীগ। শতাধিক সংঘর্ষে তারা অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল প্রতিপক্ষের ওপর। কখনও বিরোধী সংগঠনের নেতাকর্মী, কখনওবা নিজ দলীয়রাই ছিল প্রতিপক্ষ। নিরীহ পথচারীরাও রেহাই পায়নি ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হাত থেকে। একে একে ৯ জনকে হত্যা করেছে তারা। আহত করেছে ১১শ’র মতো। তাদের তাণ্ডবের মুখে বন্ধ করতে হয়েছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০টি। তাদের সৃষ্ট মারামারিতে অবাধে ভাংচুর হয়েছে। কত শিক্ষার্থী যে তাদের বইপত্র-আসবাবপত্র হারিয়েছে তার হিসাব নেই। কত টেন্ডার ছিনতাই হয়েছে, অগ্নিসংযোগ বা যানবাহন ভাংচুর হয়েছে তারও হিসাব রাখেনি কেউ। তবে একটা কথা মানুষের মনে গেঁথে গেছে, ছাত্রলীগ হলো এমনই সংগঠন যা ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের সেই দানবের মতো, যে নিজের স্রষ্টাকেই ধ্বংস করে।
ছাত্রদের হাতে বই-খাতা-কলমই স্বাভাবিক হলেও ছাত্রলীগারদের হাতে লাঠি, লোহার রড, চাপাতি, হাসুয়া বা রিভলভার-পিস্তলই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। ২০১২ সালের শুরুতেই ২ জানুয়ারি ঢাবিসহ দেশের চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের তাণ্ডবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেধে যায়। আহত হয় কমপক্ষে ৬০ জন। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তাণ্ডবের পরদিনই তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর। সেখানে ৫ ছাত্রীসহ ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়। ৮ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের শিকার হয়ে মারা যান জুবায়ের নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী। এভাবেই সহিংসতা আর রক্তপাতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া বছরের পুরোটা জুড়েই ছাত্রলীগের এই ভূমিকার কমতি দেখা যায়নি। এমন দিন কমই ছিল যেদিন দেশের কোনো না কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংঘর্ষে জড়ায়নি ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। তাদের উন্মত্ততা থেকে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, পথচারী, পুলিশ কেউই রেহাই পায়নি। তারা ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করেছে। ধর্ষণ করেছে শিশুকেও। আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে তারা সিলেটের ১২০ বছরের এতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাসটি জ্বালিয়ে দিতেও দ্বিধা করেনি। এতকিছুর পরও তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনি ব্যবস্থার দেখা মেলেনি। প্রধানমন্ত্রী চক্ষুলজ্জার খাতিরে এক সময় সাংগঠনিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দিতে বাধ্য হলেও ঠিকই শাসক দল ও মন্ত্রী-এমপিদের আশপাশ আলো করে ছিল ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিরোধীদের কঠোরভাবে দমন করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, রাজপথেও আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়েছে প্রকাশ্যেই পুলিশের সহযোগী হিসেবে। নিরস্ত করা দূরে থাক, সরকারের শীর্ষ মহল থেকে তাদের উত্সাহিত করা হয়েছে। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে বিরোধীদের মোকাবিলা করতে আহ্বান জানিয়েছেন তাদের প্রতি। এর ফল পেতে দেরি হয়নি। ৯ ডিসেম্বর বিরোধী জোটের অবরোধ চলাকালে রাজপথে পুলিশের সামনেই নিরীহ পথচারী বিশ্বজিেক নির্মমভাবে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। দেশে-বিদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এমন অপরাধের পরও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের বাঁচানোর অবিশ্বাস্য অপচেষ্টা করায় প্রমাণিত হয়েছে—যাই করুক না কেন, ছাত্রলীগ ছাড়া হাসিনা সরকার চলতে পারে না।
সর্বগ্রাসী দুর্নীতি-দুঃশাসনের কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন এ সরকার আইন রক্ষা বাহিনীর ওপর যে পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছে না, সেটাও প্রমাণিত হয় এতকিছুর পরও ছাত্রলীগের তোষণ অব্যাহত রাখার ঘটনা থেকে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কিছুই করা হয়নি গত চার বছরে। লোক দেখানো পদক্ষেপ যে ফল দেয় না, সেটা বারবারই দেখা গেছে। শেষ বছরে এসে সরকারের সুমতি ফিরবে কি? যদি না ফেরে তবে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সঙ্গেই সরকারের পরিণতিও দেখতে হবে সবাইকে।
ছাত্রদের হাতে বই-খাতা-কলমই স্বাভাবিক হলেও ছাত্রলীগারদের হাতে লাঠি, লোহার রড, চাপাতি, হাসুয়া বা রিভলভার-পিস্তলই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। ২০১২ সালের শুরুতেই ২ জানুয়ারি ঢাবিসহ দেশের চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের তাণ্ডবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেধে যায়। আহত হয় কমপক্ষে ৬০ জন। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তাণ্ডবের পরদিনই তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর। সেখানে ৫ ছাত্রীসহ ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়। ৮ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের শিকার হয়ে মারা যান জুবায়ের নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী। এভাবেই সহিংসতা আর রক্তপাতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া বছরের পুরোটা জুড়েই ছাত্রলীগের এই ভূমিকার কমতি দেখা যায়নি। এমন দিন কমই ছিল যেদিন দেশের কোনো না কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংঘর্ষে জড়ায়নি ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। তাদের উন্মত্ততা থেকে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, পথচারী, পুলিশ কেউই রেহাই পায়নি। তারা ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করেছে। ধর্ষণ করেছে শিশুকেও। আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে তারা সিলেটের ১২০ বছরের এতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাসটি জ্বালিয়ে দিতেও দ্বিধা করেনি। এতকিছুর পরও তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনি ব্যবস্থার দেখা মেলেনি। প্রধানমন্ত্রী চক্ষুলজ্জার খাতিরে এক সময় সাংগঠনিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দিতে বাধ্য হলেও ঠিকই শাসক দল ও মন্ত্রী-এমপিদের আশপাশ আলো করে ছিল ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিরোধীদের কঠোরভাবে দমন করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, রাজপথেও আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়েছে প্রকাশ্যেই পুলিশের সহযোগী হিসেবে। নিরস্ত করা দূরে থাক, সরকারের শীর্ষ মহল থেকে তাদের উত্সাহিত করা হয়েছে। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে বিরোধীদের মোকাবিলা করতে আহ্বান জানিয়েছেন তাদের প্রতি। এর ফল পেতে দেরি হয়নি। ৯ ডিসেম্বর বিরোধী জোটের অবরোধ চলাকালে রাজপথে পুলিশের সামনেই নিরীহ পথচারী বিশ্বজিেক নির্মমভাবে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। দেশে-বিদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এমন অপরাধের পরও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের বাঁচানোর অবিশ্বাস্য অপচেষ্টা করায় প্রমাণিত হয়েছে—যাই করুক না কেন, ছাত্রলীগ ছাড়া হাসিনা সরকার চলতে পারে না।
সর্বগ্রাসী দুর্নীতি-দুঃশাসনের কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন এ সরকার আইন রক্ষা বাহিনীর ওপর যে পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছে না, সেটাও প্রমাণিত হয় এতকিছুর পরও ছাত্রলীগের তোষণ অব্যাহত রাখার ঘটনা থেকে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কিছুই করা হয়নি গত চার বছরে। লোক দেখানো পদক্ষেপ যে ফল দেয় না, সেটা বারবারই দেখা গেছে। শেষ বছরে এসে সরকারের সুমতি ফিরবে কি? যদি না ফেরে তবে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সঙ্গেই সরকারের পরিণতিও দেখতে হবে সবাইকে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন