এযাবতকালের সবচেয়ে সফল সরকারের দাবিদারদের মুখ ফস্কেও যে সত্য বেরিয়ে পড়ে তার প্রমাণ জাতীয় সংসদের স্পিকারের সাম্প্রতিক বক্তব্য। নিজ জেলায় আইনজীবীদের এক সমাবেশে আলোচনাকালে তিনি দেশে দুর্নীতির ভয়াবহ বিস্তারের তথ্য তুলে ধরেছেন। দেশে এখন যেভাবে দুর্নীতির মচ্ছব শুরু হয়েছে, তাতে দুর্নীতির টাকায় বছরে একটি করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেতে পারে বলেও জোরের সঙ্গে বলেছেন তিনি। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে উল্লিখিত গত এক দশকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ এক হাজার ৪০৬ কোটি ডলার বা এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এই তথ্য থেকেই এটা পরিষ্কার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয়েছে ২০০৬ ও ২০১২ সালে—এমন কথাও রয়েছে সেখানে। দুর্নীতি, কর ফাঁকি ও অপরাধমূলক কাজের মাধ্যমে অর্জিত অর্থই বিদেশে পাচার হয়, এতে সন্দেহ নেই। তাই স্পিকারের কথা অসত্য বলা যাবে না। তবে এমন দুর্নীতি আগের মতো বর্তমানেও হচ্ছে, সেটাও কবুল করতে হয়েছে তাকে। সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে নির্বাচনকে সামনে রেখে এমন কথা বলার ভিন্ন অর্থ মনে আসতেই পারে মানুষের। আর নিজ নির্বাচনী এলাকায় এ ধরনের কথাবার্তা নিজের ভাবমূর্তি রক্ষার প্রয়াস হিসেবে দেখলে কাউকে দোষ দেয়া যাবে না। গতকালের আমার দেশ-এ প্রকাশিত কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধির পাঠানো খবরে স্পিকারের স্বীকারোক্তি সত্যের যে বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে, সেটাকেই আমরা গুরুত্ব দিতে চাই।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ২০০৮-কে বড় গলায় দিনবদলের সনদ বলা হয়েছিল। সেখানে অগ্রাধিকারের পাঁচটি বিষয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়ায় অনেকে বিশেষ করে তরুণরা যে আকৃষ্ট হয়েছিলেন একথা সত্য। কিন্তু এ আকর্ষণ হারিয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। হতাশাগ্রস্ত মানুষকে শেয়ারবাজার, পদ্মা সেতু প্রকল্প, রেলওয়ে, হলমার্ক, ডেসটিনির মতো মহাকেলেঙ্কারি ছাড়াও সরকারি ক্রয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি, দেশজুড়ে দখলবাজি-টেন্ডারবাজি, প্রশাসন-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-বিচার বিভাগসহ সর্বত্র দলীয়করণ, নিয়োগ বাণিজ্য, দুস্থ ভাতা-ভিজিডি-কাবিখার মতো ক্ষেত্রেও লুটপাটে ক্ষমতাসীনদের একচ্ছত্র ও বেপরোয়া ভূমিকা সবাইকে চেয়ে চেয়ে দেখতে হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাজে হস্তক্ষেপ, রাজনৈতিক বিবেচনায় ফৌজদারি ও দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারেও পিছিয়ে থাকেনি সরকার। সংসদ সদস্যরাও এসবের বাইরে থাকতে পারেননি। গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে, ৯৭ শতাংশ সংসদ সদস্যই কোনো না কোনোভাবে নেতিবাচক কাজে জড়িত। তারা সংসদ সদস্যপদকে সুযোগ-সুবিধা অর্জন ও টাকা আয়ের উত্স হিসেবে ব্যবহার করেন। অনেকেই হত্যা, দখল, টেন্ডার ও চাঁদাবাজিতে জড়িত। এদের মধ্যে মন্ত্রীরাও রয়েছেন। গত চার বছর ধরে এমন ভয়াবহ অবস্থা জারি থাকলেও এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থার দেখা মেলেনি।
ফলে বাংলাদেশ দুর্নীতির সূচকে উপরে না উঠে নিচেই নেমেছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের ২৪ ধাপ নেমে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি দেশের মধ্যে দুর্নীতিতে আমরা শীর্ষস্থান দখল করেছি এই সরকারের আমলেই। এর আগেও আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদের শেষ বছরেই বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বের এক নম্বর স্থানে উঠেছিল।
এ থেকে পরিষ্কার যে, নির্বাচনের আগে প্রচারণায় দুর্নীতি-বিরোধিতাকে গুরুত্ব দেয়া ছিল উদ্দেশ্যমূলক। ক্ষমতা গ্রহণের পর সরকারের ভূমিকা থেকেই এটা প্রমাণিত। দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের ক্রমাবনতি সত্ত্বেও অন্যদের মতো স্পিকারও ভিন্ন কিছু করেননি বলেই এখন তার স্বীকারোক্তিমূলক উক্তি সন্দেহজনক। ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে এখন নিজের সততার বড়াই করা কতটা গ্রহণযোগ্য, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
জনগণ পরিষ্কারভাবেই বুঝতে পারছে, দুর্নীতিতে ডুবে থাকা এ সরকারের বিদায় ছাড়া পরিস্থিতি উন্নতির আশা নেই। যারা এ সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তা-সমর্থন দিয়েছেন, তারাও দুর্নীতিবাজ হিসেবেই চিহ্নিত হবেন এবং আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। এমন আশঙ্কা থেকেই কি স্পিকার দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন?
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ২০০৮-কে বড় গলায় দিনবদলের সনদ বলা হয়েছিল। সেখানে অগ্রাধিকারের পাঁচটি বিষয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়ায় অনেকে বিশেষ করে তরুণরা যে আকৃষ্ট হয়েছিলেন একথা সত্য। কিন্তু এ আকর্ষণ হারিয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। হতাশাগ্রস্ত মানুষকে শেয়ারবাজার, পদ্মা সেতু প্রকল্প, রেলওয়ে, হলমার্ক, ডেসটিনির মতো মহাকেলেঙ্কারি ছাড়াও সরকারি ক্রয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি, দেশজুড়ে দখলবাজি-টেন্ডারবাজি, প্রশাসন-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-বিচার বিভাগসহ সর্বত্র দলীয়করণ, নিয়োগ বাণিজ্য, দুস্থ ভাতা-ভিজিডি-কাবিখার মতো ক্ষেত্রেও লুটপাটে ক্ষমতাসীনদের একচ্ছত্র ও বেপরোয়া ভূমিকা সবাইকে চেয়ে চেয়ে দেখতে হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাজে হস্তক্ষেপ, রাজনৈতিক বিবেচনায় ফৌজদারি ও দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারেও পিছিয়ে থাকেনি সরকার। সংসদ সদস্যরাও এসবের বাইরে থাকতে পারেননি। গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে, ৯৭ শতাংশ সংসদ সদস্যই কোনো না কোনোভাবে নেতিবাচক কাজে জড়িত। তারা সংসদ সদস্যপদকে সুযোগ-সুবিধা অর্জন ও টাকা আয়ের উত্স হিসেবে ব্যবহার করেন। অনেকেই হত্যা, দখল, টেন্ডার ও চাঁদাবাজিতে জড়িত। এদের মধ্যে মন্ত্রীরাও রয়েছেন। গত চার বছর ধরে এমন ভয়াবহ অবস্থা জারি থাকলেও এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থার দেখা মেলেনি।
ফলে বাংলাদেশ দুর্নীতির সূচকে উপরে না উঠে নিচেই নেমেছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের ২৪ ধাপ নেমে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি দেশের মধ্যে দুর্নীতিতে আমরা শীর্ষস্থান দখল করেছি এই সরকারের আমলেই। এর আগেও আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদের শেষ বছরেই বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বের এক নম্বর স্থানে উঠেছিল।
এ থেকে পরিষ্কার যে, নির্বাচনের আগে প্রচারণায় দুর্নীতি-বিরোধিতাকে গুরুত্ব দেয়া ছিল উদ্দেশ্যমূলক। ক্ষমতা গ্রহণের পর সরকারের ভূমিকা থেকেই এটা প্রমাণিত। দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের ক্রমাবনতি সত্ত্বেও অন্যদের মতো স্পিকারও ভিন্ন কিছু করেননি বলেই এখন তার স্বীকারোক্তিমূলক উক্তি সন্দেহজনক। ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে এখন নিজের সততার বড়াই করা কতটা গ্রহণযোগ্য, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
জনগণ পরিষ্কারভাবেই বুঝতে পারছে, দুর্নীতিতে ডুবে থাকা এ সরকারের বিদায় ছাড়া পরিস্থিতি উন্নতির আশা নেই। যারা এ সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তা-সমর্থন দিয়েছেন, তারাও দুর্নীতিবাজ হিসেবেই চিহ্নিত হবেন এবং আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। এমন আশঙ্কা থেকেই কি স্পিকার দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন?
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন