বর্তমান শাসকদল ও তাদের দোসর বাম দলগুলো জাতিকে বোকা বানাতে চাচ্ছে অথবা তারা গোটা জাতিকে বোকা ভাবছে। ছোট বেলা গ্রামের ছনের বা খড়ের ঘরের চালে চতুর কাকের চুরি করা মাল লুকোতে দেখেছি। কাক তার ঠোঁট চোখ পর্যন্ত ছনের বা খড়ের ভিতর ঢুকিয়ে চুরি করা মাল লুকোতো। পরে আবার সে মাল খুঁজতেও দেখেছি। কিন্তুু খুঁজে পেতে দেখিনি। কারণ কাক যখন তার চুরির মাল লুকোতো তখন চোখ বন্ধ করে লুকোতো। আর ভাবে আমি যেহেতু দেখতে পাচ্ছি না সেহেতু আমাকেও বা আমার চুরির মাল লুকোতেও কেউ দেখবে না। আসলে কাক চোখ বন্ধ করে রাখলেও যারা দর্শক তারা ঠিকই দেখেছেন। আমাদের দেশের শাসকদল ও তাদের দোসর বামেরা চতুর কাকের মতো আচরণ করছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। যারা দেখার আর যারা বুঝার তারা ঠিকই দেখেছেন ও বুঝেছেন। এ জাতিকে এতো বোকা ভাবা এটাই চতুর কাকের মতো বর্তমান সরকার, সরকারি দল ও সরকারের ঘাড়ে চাপা নাস্তিক বাম দলের বোকামী।
বাম দলের হরতালে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সুবাদে দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে পুলিশ আসলেই জনগণের বন্ধু! কোথাও কোথাও বাম দলের নামে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরাই পিকেটিং করেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বাম দলের ডাকা হরতালের দিন অর্থাৎ ১৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার কর্মস্থলে যাওয়ার জন্যে প্রায় ৪০/৪৫ মিনিট বাসষ্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমার পরিচিত আমাদেরই মহল্লার একটি ছেলে মাস তিনেক পূর্বে আমাকে তার একটি বিজনেস কার্ড দিয়েছিলো। তাতে তার পরিচয়ে লিখা ছিলো জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। আমি ছেলেটিকে চিনি ১০/১২ বছর যাবত। কিন্তু তাকে শুরু থেকে এ পর্যন্ত কোন স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে বলে জানি না। বরং তার বাবাকে বলতে শুনেছি যে, ছেলেটিকে লেখাপড়া করাতে পারলাম না। সে ছেলেটি আমার দাঁড়ানো বাসষ্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাকে দেখে সে নিজকে আড়াল করার চেষ্টা করেও আমার চোখে ধরা পরে গেলো। আমি জানতে চাইলাম তুমি এখানে? সে বললো, না এমনিতেই। মানে কাউন্সিলর সাব বলছেতো তাই আর কি? সরকারী দলের নেতারা বিভিন্ন পরিবহন সংগঠনের মালিক, শ্রমিক নেতা ও কর্মীদেরকে বাম দলের ডাকা হরতালে গাড়ি রাস্তায় নামাতে নিষেধ করে দিয়েছিলো। এমনকি সরকারি পরিবহন বিআরটিসির একটি গাড়িও রাস্তায় নামেনি।
অনেক ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সুবাদে দেশবাসী দেখতে পেয়েছে কোথাও কোথাও বাম দলের হাতে গোনা ৮/১০ জনের মিছিল বা পিকেটিং, রাস্তায় গানের আসর বসাতে, রাস্তায় বসে থাকতে, টায়ারে আগুন জ্বালাতে, বাঁশ ও কাঠের গুড়ি ফেলে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে। পেছনে বাস, ট্রাক, টেম্পু দাঁড়িয়ে আছে। পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিবর্তে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে খোশ গল্প করছে। বরং অনেক জায়গায় পুলিশকে বাঁশ দিয়ে, রাস্তায় বেঞ্চ ফেলে রাস্তা বন্ধ করতেও দেখা গেছে। সরকারি বিআরটিসি বাস অন্য সকল হরতালের দিনে চললেও বাম দলের ডাকা হরতালে একটিও বিআরটিসি বাসও রাস্তায় দেখা যায়নি। অনেক পথচারী বলেছেন বাম দলের ডাকা হরতালে পিকেটিং করেছে সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বাহিনী পুলিশ। হরতাল সফল করার জন্যে যা করা প্রয়োজন তাই করেছে পুলিশ। অনেক সিএনজি টেম্পুর ড্রাইভার অভিযোগ করে বললেন যে, অন্য হরতালের দিন পুলিশ গাড়ি চালাতে সহযোগতিা করতো আর আজ পুলিশ গাড়ি চালাতে দিচ্ছে না, গাড়ি ফিরিয়ে দিচ্ছে! এমনকি রিকশা পর্যন্ত চলতে দেয়নি পুলিশ। সংক্ষিপ্তভাবে এ ছিলো বাম দলের হরতাল। তবে বাম দলের পিকেটারদের গাড়ি ভাঙ্গতেও দেখা গেছে, আর পুলিশ হাত জোর করে তাদেরকে ফিরাতেও দেখা গেছে। এখানে পুলিশের মারমুখী আচরণ দেখা যায়নি। পুলিশ কাউকে আঘাত করেনি বা কাউকে গ্রেফতারও করেনি। এমনই এক বিচিত্র হরতাল আহবানকারীদের ধন্যবাদ জানালেন রাজাকার পরিবারের ছেলে বর্তমান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম. খা. আলমগীর!
অপরদিকে বিরোধী দলের তথা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির বা ইসলামী দল হরতাল ডাকলে সরকারের পুলিশ বাহিনী হরতালে ২/৩ দিন আগে থেকেই তাদের রাড়ি-বাড়ি হামলা করছে, ধরে নিয়ে যাচ্ছে, মামলা করছে। পিকেটিং সে তো কল্পনাও করা যায় না। বাম দলের ডাকা হরতালের মতো রাস্তায় গানের আসর বসানো সে তো দূরের কথা পিকেটিং করা বা মিছিল করা এটা তো মহাপাপ এমনকি রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধের সামিল! বিরোধী দলের কাউকে রাস্তায় নামতে দেয় না, এমনকি তাদের অফিসেও বসতে দেয় না।
আল্লাহর যমীনের আল্লাহর শত্রু নাস্তিক মোরতাদেরা আর শয়তানের তল্পীবাহকেরা রাজত্ব করবে? আর আল্লার প্রেরিত খলীফা ইসলামের ধারক ও বাহকেরা তাদের দ্বারা নির্যাতিত হবে এটা হতে পারে না। যার ফলে ইসলামী আন্দোলনের সমমনা ১২টি ডানপন্থী দল নাস্তিক মোরতাদদের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ও তাদের ইসলাম বিরোধী ও অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধসহ ৭ দফা দাবিতে হরতাল ডেকেছে। এক্ষেত্রে দেখার বিষয় সরকার ও সরকারের পুলিশ কি আচরণ করে। ঢিল ছোঁড়লে বা স্রোত ধারা বইতে থাকলে চলমান গতিতে তাকে চলতে দিলে তেমন সমস্যা হয় না। যদি তাতে বাধা সৃষ্টি করা হয় তা হলে ঢিল উল্টোদিকে ধেয়ে আসে আর স্রোতধারাও তার গতি পরিবর্তন করে বইতে শুরু করে। অতএব যার যার গতিতে তাকে বইতে দেয়াই ভালো।
আমাদের দেশে বিভিন্ন মিডিয়ায় যারা টক শোতে অংশগ্রহণ করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি তথা ইসলামী রাজনীতি বন্ধের পক্ষে মতামত দিচ্ছেন তারা কিন্তু কেউই কোন আলেমকে টক শোতে ডাকেনি। অথচ আপনার মা-বাবা, দাদা-দাদী, ভাই-বোন বা আত্মীয়স্বজন মারা গেলে যে আলেমদেরকে ডাকেন, জানাযা পড়ান, দোয়া খতম পড়ান তারা কেন রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এতটা ফেলনার বস্তু হবেন? একবারও কি ভেবে দেখেছেন?
যারা নিজেদেরকে সেক্যুলার মনে করেন, নাস্তিক ও প্রগতিশীল মনে করেন তারা কামাল আতাতুর্কের মতো ঘোষণা করুন, কমপক্ষে সেক্যুলার ও নাস্তিক আহমদ শরীফের মতো ঘোষণা করুন যেন, মৃত্যুর পর আপনাকে ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী গোসল, দাফন কাফন, জানাযা ও কবরস্থ করা না হয়। অথবা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মতো ঘোষণা করুন আমি হিন্দু ও মুসলমান কোনটাই না। আপনি নাম ব্যবহার করবেন মুসলমানের, মরলে আপনাকে হুজুর ডেকে গোসল, দাফন, কাফন, জানাযা ও কবরস্থ করা হবে আর আপনার জন্যে দোয়া আর মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে। আল্লাহর সাথে এহেন প্রতারণা না করাই ভালো।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন