ব দ রু দ্দী ন উ ম র
ডিসেম্বরের ৯ তারিখে বিশ্বজিত্ দাস নামে একটি ছেলেকে লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে বহু লোকের উপস্থিতিতে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে সেটা যে দেশে ঘটতে পারে সে দেশের সমাজ অধঃপতনের কোন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে এ চিন্তা এক আতঙ্কজনক ব্যাপার। শুধু এই হত্যার ব্যাপারটিই যে আতঙ্কজনক তাই নয়, তার থেকেও বেশি আতঙ্কজনক ব্যাপার হলো, কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের হত্যাকারীদের বাধা না দিয়ে হত্যার দৃশ্য অবলোকন করা। এই ঘটনার মধ্যে শুধু সন্ত্রাসের বিস্তার, শাসকশ্রেণীর রাজনীতির বিপজ্জনক অপরাধীকিকরণই দেখা যায় না, দেশের সমাজ কতখানি বর্বর চরিত্র পরিগ্রহ করেছে তার নিদর্শনও এর মধ্যে পাওয়া যায়। এই বর্বর সমাজ যদি এই ধরনের হত্যাকাণ্ড ও হত্যাকারীর প্রতি বাস্তবত: ও কার্যক্ষেত্রে সহনশীল না হতো, তা হলে এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হওয়া সম্ভব হতো না। এ বিষয়টির তাত্পর্য ঠিকমত উপলব্ধি করলে এটা অবশ্যই বলা যায় যে, এই অবলোকনকারী জনগণের জয়গান করার কিছু নেই। এর মধ্যে শুধু এদের কাপুরুষতার পরিচয়ই নেই, আত্মস্বার্থ চিন্তায় এরা কতখানি মগ্ন ও নিমজ্জিত এবং অন্যদের স্বার্থ বিষয়ে কতখানি উদাসীন ও নিস্পৃহ তার প্রমাণও এর মধ্যেই নিহিত আছে। বাংলাদেশের শাসকশ্রেণীর সম্পূর্ণ অপরাধীকিকরণ ও ফ্যাসিস্ট চরিত্র গঠন যেভাবে হয়েছে সেটা সম্ভব হতো না যদি সমাজের অধঃপতন এই মাত্রায় এসে না দাঁড়াত। বাংলাদেশে প্রগতিশীল ও বিপ্লবী রাজনীতির বিকাশরহিত অবস্থার কারণও যে এর মধ্যেই পাওয়া যাবে এতে সন্দেহ নেই।
বর্তমানে জনগণের এই অবস্থার ওপর খুঁটি তৈরি করেই শাসকশ্রেণীর শোষণ-শাসন ও ফ্যাসিবাদের ইমারত দাঁড়িয়ে আছে। আবার এই অবস্থাও শাসকশ্রেণীরই তৈরি। ১৯৭১ সালের পরই তত্কালীন নব্য শাসকশ্রেণী ও তাদের সরকার নানা অপরাধমূলক তত্পরতার মাধ্যমে সমাজে যে পরিস্থিতি তৈরি করেছিল সেই পরিস্থিতিই জনগণের ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-ভাবনার মধ্যে এক নেতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছিল। তারই বিকাশ এখন আমরা দেখছি। যাই হোক, এটা এক স্বতন্ত্র আলোচনা।
৯ ডিসেম্বর বাহাদুর শাহ পার্কের পার্শ্ববর্তী স্থানে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার ঘটক কারা এ নিয়ে কোনো সংশয় নেই। টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের ফটোগ্রাফারদের ক্যামেরার সামনেই এ ঘটনা ঘটেছে। এর দৃশ্য টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে এবং সংবাদপত্রে ছাপানো হয়েছে। এই হত্যাকারীরা জগন্নাথ কলেজের ছাত্র এবং সরকারি দল ছাত্রলীগের সদস্য ও সাংগঠনিক নেতা। হত্যাকাণ্ডের সময় এদের ছবি এমনভাবে প্রচার মাধ্যমে এসেছে, যাতে এদের চিহ্নিত করার কোনো সমস্যা নেই। এই খুনিদের তিন জনের পিতা-মাতা এর মধ্যেই সংবাদপত্রকে (Daily Star 12.12.2012) বলেছেন যে, তারা নিজেরা তাদের এই ক্রিমিনাল সন্তানদের উপযুক্ত শাস্তি চান।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ জোট সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, তারা ৮ জনকে গ্রেফতার করেছেন, কিন্তু তার মধ্যে ছাত্রলীগের কেউ নেই! হানিফ নামে তাঁদের এক উটকো নেতা সংবাদপত্রকে বলেছেন যে, ওই খুনিদের কোনো দায়িত্ব তাঁরা নেবেন না!! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৮ কেন ৮শ’ জনকে গ্রেফতার করতে পারেন যারা তাঁদের দলের নয়। এই ভুয়ো গ্রেফতার থেকে প্রমাণ হয় না যে, ছাত্রলীগের কর্মীরা এই হত্যাকাণ্ড করেনি। তারাই এটা করেছে তার ভূরি ভূরি প্রমাণ আছে এবং তারা চিহ্নিত। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের ধরার ব্যবস্থা না করে কিছু নিরীহ লোককে গ্রেফতার করে বলছেন খুনিদের মধ্যে কোনো আওয়ামী লীগের লোক নেই! বিস্ময়ের ব্যাপার এই যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আটজনকে গ্রেফতারের কথা বললেও পুলিশের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তারা এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি!! এই ভেল্কিবাজির অর্থ কী? এর অর্থ হলো, সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একজন মিথ্যাবাদী ও ধাপ্পাবাজ। অনেক অপকর্ম করার পরও তিনি তাঁদের প্রধানমন্ত্রীর পেয়ারের লোক হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গদিতে সমাসীন হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আদেশ-নির্দেশকে কোনো দিকে না তাকিয়ে মান্য করে চলাই তাঁর কাজ। তাঁদের দল কিছু ছাত্রকে ক্রিমিনালে পরিণত করে যেভাবে অন্যদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে, সেভাবেই তারা কাজ করছে। ছাত্রদের অভিভাবকরা তাদেরকে বাইরে থেকে ঢাকায় পাঠিয়েছেন শিক্ষা ও সুশিক্ষার জন্য। কিন্তু শাসকশ্রেণীর রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পরিণত করছে ক্রিমিনালে এবং তাদেরকে দিয়ে নিজেদের হীন স্বার্থে ক্রিমিনাল কাজ করিয়ে নিচ্ছে। এই অবস্থায় তাদেরকে রক্ষা করা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অবশ্য কর্তব্য। তাদের ক্রিমিনাল কাজের দায়দায়িত্ব সরকার ও সরকারি দলের পক্ষে নেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এদিক দিয়ে তাদের আরেক নেতা ও মুখপাত্রের বক্তব্য খুবই স্বাভাবিক। পুলিশের উপস্থিতিতে হত্যাকাণ্ড হলেও কেন তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল সেটা বোঝার অসুবিধে নেই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক ৯ তারিখের হত্যাকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা শুধু যে তারই, এটা এক নির্বোধ চিন্তা। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি এবং ইন্ধন ছাড়া তাঁরা কোনো কাজ করেন না। এদিক দিয়ে তাঁর এই প্রচেষ্টাও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ীই তিনি করছেন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতাও লক্ষণীয়। এখানে বলা দরকার যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই অবস্থান শুধু জনগণের ব্যাপক অংশের মধ্যেই নয়, সংবাদ মাধ্যমেও বড় ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ১২ তারিখের দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠার হেড লাইন হলো ‘ওরা কেউ গ্রেফতার হয়নি’। এই দিন দৈনিক সমকালের প্রথম পৃষ্ঠার হেডিং হলো, ‘বিশ্বজিতের খুনিদের কি বাঁচাতেই হবে?’ অন্যসব পত্রিকার প্রতিক্রিয়াও একই প্রকার।
এটা খুব স্পষ্ট যে, সরকার ভালোভাবেই জানে বিশ্বজিতের খুনিরা ছাত্রলীগের সদস্য এবং তাদের দ্বারা প্রতিপালিত। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা বলছে এই খুনিদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই। এই খুনিদের দায়িত্ব তারা নিতে পারবে না!! এই অবস্থায় এই চিহ্নিত খুনিদের কোনো শাস্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম। এদের শাস্তির জন্য সমাজ ও প্রচার মাধ্যমের মধ্যে জোর দাবি এবং আওয়াজ না উঠলে এই হত্যাকাণ্ডের নায়করা সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ড থেকে নিয়ে আরও অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের নায়কদের মতোই শাস্তির বাইরে থেকে যাবে। সরকারের আদরের লোকরা সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের নায়ক হওয়ার কারণেই এ হত্যাকাণ্ডের কোনো তদন্ত ও বিচার তো হচ্ছেই না উপরন্তু একে কেন্দ্র করে নানা হেঁয়ালির ধূম্রজাল বিস্তার করা হয়েছে। প্রত্যেক সরকারি ক্রাইমের বেলাতেই এটা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সব কিছুরই সীমা আছে। দিবালোকে এবং বহু লোকের উপস্থিতিতে টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের ক্যামেরার সামনে বিশ্বজিেক যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তাতে প্রমাণের অভাব নেই। কাজেই এই হত্যাকাণ্ডের নায়কদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাদের বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক চরম দণ্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা না করলে সরকার দেশের ও সারা বিশ্বের জনগণের কাছে নিকৃষ্টতম এক ক্রিমিনাল সরকার হিসেবেই চিহ্নিত ও পরিচিত হবে।
লেখক : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
বর্তমানে জনগণের এই অবস্থার ওপর খুঁটি তৈরি করেই শাসকশ্রেণীর শোষণ-শাসন ও ফ্যাসিবাদের ইমারত দাঁড়িয়ে আছে। আবার এই অবস্থাও শাসকশ্রেণীরই তৈরি। ১৯৭১ সালের পরই তত্কালীন নব্য শাসকশ্রেণী ও তাদের সরকার নানা অপরাধমূলক তত্পরতার মাধ্যমে সমাজে যে পরিস্থিতি তৈরি করেছিল সেই পরিস্থিতিই জনগণের ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-ভাবনার মধ্যে এক নেতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছিল। তারই বিকাশ এখন আমরা দেখছি। যাই হোক, এটা এক স্বতন্ত্র আলোচনা।
৯ ডিসেম্বর বাহাদুর শাহ পার্কের পার্শ্ববর্তী স্থানে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার ঘটক কারা এ নিয়ে কোনো সংশয় নেই। টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের ফটোগ্রাফারদের ক্যামেরার সামনেই এ ঘটনা ঘটেছে। এর দৃশ্য টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে এবং সংবাদপত্রে ছাপানো হয়েছে। এই হত্যাকারীরা জগন্নাথ কলেজের ছাত্র এবং সরকারি দল ছাত্রলীগের সদস্য ও সাংগঠনিক নেতা। হত্যাকাণ্ডের সময় এদের ছবি এমনভাবে প্রচার মাধ্যমে এসেছে, যাতে এদের চিহ্নিত করার কোনো সমস্যা নেই। এই খুনিদের তিন জনের পিতা-মাতা এর মধ্যেই সংবাদপত্রকে (Daily Star 12.12.2012) বলেছেন যে, তারা নিজেরা তাদের এই ক্রিমিনাল সন্তানদের উপযুক্ত শাস্তি চান।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ জোট সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, তারা ৮ জনকে গ্রেফতার করেছেন, কিন্তু তার মধ্যে ছাত্রলীগের কেউ নেই! হানিফ নামে তাঁদের এক উটকো নেতা সংবাদপত্রকে বলেছেন যে, ওই খুনিদের কোনো দায়িত্ব তাঁরা নেবেন না!! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৮ কেন ৮শ’ জনকে গ্রেফতার করতে পারেন যারা তাঁদের দলের নয়। এই ভুয়ো গ্রেফতার থেকে প্রমাণ হয় না যে, ছাত্রলীগের কর্মীরা এই হত্যাকাণ্ড করেনি। তারাই এটা করেছে তার ভূরি ভূরি প্রমাণ আছে এবং তারা চিহ্নিত। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের ধরার ব্যবস্থা না করে কিছু নিরীহ লোককে গ্রেফতার করে বলছেন খুনিদের মধ্যে কোনো আওয়ামী লীগের লোক নেই! বিস্ময়ের ব্যাপার এই যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আটজনকে গ্রেফতারের কথা বললেও পুলিশের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তারা এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি!! এই ভেল্কিবাজির অর্থ কী? এর অর্থ হলো, সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একজন মিথ্যাবাদী ও ধাপ্পাবাজ। অনেক অপকর্ম করার পরও তিনি তাঁদের প্রধানমন্ত্রীর পেয়ারের লোক হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গদিতে সমাসীন হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আদেশ-নির্দেশকে কোনো দিকে না তাকিয়ে মান্য করে চলাই তাঁর কাজ। তাঁদের দল কিছু ছাত্রকে ক্রিমিনালে পরিণত করে যেভাবে অন্যদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে, সেভাবেই তারা কাজ করছে। ছাত্রদের অভিভাবকরা তাদেরকে বাইরে থেকে ঢাকায় পাঠিয়েছেন শিক্ষা ও সুশিক্ষার জন্য। কিন্তু শাসকশ্রেণীর রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পরিণত করছে ক্রিমিনালে এবং তাদেরকে দিয়ে নিজেদের হীন স্বার্থে ক্রিমিনাল কাজ করিয়ে নিচ্ছে। এই অবস্থায় তাদেরকে রক্ষা করা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অবশ্য কর্তব্য। তাদের ক্রিমিনাল কাজের দায়দায়িত্ব সরকার ও সরকারি দলের পক্ষে নেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এদিক দিয়ে তাদের আরেক নেতা ও মুখপাত্রের বক্তব্য খুবই স্বাভাবিক। পুলিশের উপস্থিতিতে হত্যাকাণ্ড হলেও কেন তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল সেটা বোঝার অসুবিধে নেই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক ৯ তারিখের হত্যাকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা শুধু যে তারই, এটা এক নির্বোধ চিন্তা। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি এবং ইন্ধন ছাড়া তাঁরা কোনো কাজ করেন না। এদিক দিয়ে তাঁর এই প্রচেষ্টাও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ীই তিনি করছেন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতাও লক্ষণীয়। এখানে বলা দরকার যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই অবস্থান শুধু জনগণের ব্যাপক অংশের মধ্যেই নয়, সংবাদ মাধ্যমেও বড় ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ১২ তারিখের দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠার হেড লাইন হলো ‘ওরা কেউ গ্রেফতার হয়নি’। এই দিন দৈনিক সমকালের প্রথম পৃষ্ঠার হেডিং হলো, ‘বিশ্বজিতের খুনিদের কি বাঁচাতেই হবে?’ অন্যসব পত্রিকার প্রতিক্রিয়াও একই প্রকার।
এটা খুব স্পষ্ট যে, সরকার ভালোভাবেই জানে বিশ্বজিতের খুনিরা ছাত্রলীগের সদস্য এবং তাদের দ্বারা প্রতিপালিত। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা বলছে এই খুনিদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই। এই খুনিদের দায়িত্ব তারা নিতে পারবে না!! এই অবস্থায় এই চিহ্নিত খুনিদের কোনো শাস্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম। এদের শাস্তির জন্য সমাজ ও প্রচার মাধ্যমের মধ্যে জোর দাবি এবং আওয়াজ না উঠলে এই হত্যাকাণ্ডের নায়করা সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ড থেকে নিয়ে আরও অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের নায়কদের মতোই শাস্তির বাইরে থেকে যাবে। সরকারের আদরের লোকরা সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের নায়ক হওয়ার কারণেই এ হত্যাকাণ্ডের কোনো তদন্ত ও বিচার তো হচ্ছেই না উপরন্তু একে কেন্দ্র করে নানা হেঁয়ালির ধূম্রজাল বিস্তার করা হয়েছে। প্রত্যেক সরকারি ক্রাইমের বেলাতেই এটা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সব কিছুরই সীমা আছে। দিবালোকে এবং বহু লোকের উপস্থিতিতে টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের ক্যামেরার সামনে বিশ্বজিেক যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তাতে প্রমাণের অভাব নেই। কাজেই এই হত্যাকাণ্ডের নায়কদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাদের বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক চরম দণ্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা না করলে সরকার দেশের ও সারা বিশ্বের জনগণের কাছে নিকৃষ্টতম এক ক্রিমিনাল সরকার হিসেবেই চিহ্নিত ও পরিচিত হবে।
লেখক : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন