বুধবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১২

মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার সমীপে


৭ ডিসেম্বর দৈনিক প্রথম আলোর উপসম্পাদকীয় পড়ছিলাম। চোখে পড়ল শিাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা ‘তোমরা যারা শিবির করো’।  যাকে এত শ্রদ্ধা করি, যিনি বিজ্ঞানভিত্তিক উদার চিন্তার জগতে বাস করেন তিনি কিনা কারো সাথে এমন আচরণ করেন? অসত্য তথ্য দেন যাচাই না করে? একতরফাভাবে একটি ছাত্রসংগঠনকে দোষারোপ করেন। তিনি বলেছেন, দুইজন ছাত্র যারা শিবির করে দুই কপি বিজ্ঞানভিত্তিক চমৎকার প্রকাশনা নিয়ে তার সাথে দেখা করতে চেয়েছে। তাদের সাথে তিনি রূঢ় আচরণ করেছেন, বই ফেরত দিয়েছেন। স্যার, আপনার মতো ব্যক্তিত্ব যদি তাদের সাথে ভালো আচরণ করতেন, বই দুইটি গ্রহণ করতেন, তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতেন তাহলে আপনার কি তি হতো? এতে কি আপনার উদারতা প্রকাশ পেত না? মুক্তভাবে চিন্তা করুন তো, যারা ছাত্রলীগ করে জয় বাংলা স্লেøাগান দেয়, তাদের বর্তমান অবস্থা, চরিত্র ও কর্মকাণ্ড কী রকম? তাদের হাতে স্বাধীন দেশের মা-বোনেরা যখন ক্যাম্পাসে ধর্ষিত হয়, ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে, তারা যখন ছাত্রীদের নেতাদের মনোরঞ্জনের জন্য পাঠায় তখন কী বলবেন? যখন রামদা, হকি স্টিক, রাইফেল, পিস্তল নিয়ে প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে নিজেদের এবং প্রতিপ  নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে, তখন কেমন উপলব্ধি হয়? যখন লেখাপড়া না করে তারা টেন্ডারবাজিতে লিপ্ত, তখন কী করবেন?

যদি কোনো দল তাদের সাথে সম্পৃক্তদের মেধাবী হিসেবে গড়ে তোলে, ঐশীজ্ঞান ও বিজ্ঞানচর্চায় ছাত্রদের উদ্বুদ্ধ করে, নারীদের কোনো ছাত্র বা নেতা যাতে ভোগের পণ্যে পরিণত না করে সেভাবে নিজেদের তৈরি করে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ গড়তে ছাত্রদের উপযুক্ত করে, এসব কর্মকাণ্ড কি ভালো বলা যায় না? আমরা দেখি, ছাত্রশিবির মেধার চর্চা করে, তাদের সংগঠনে ছাত্ররাই নেতৃত্ব দেয়। নেতৃত্ব নির্বাচনে গণতন্ত্রচর্চা করে। তারা চরিত্রবান ও রুচিশীল পেশাজীবী তৈরি করে। স্বাধীনতা দিবসে, বিজয় দিবসে, একুশে ফেব্র“য়ারিতে জাতীয় পতাকা নিয়ে দেশ রায় দৃপ্ত শপথে র‌্যালি করে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে শহীদদের জন্য দোয়া করে।
এই আন্দোলনে দিনাজপুরে যে কিশোরটিকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে, তার পিতা জামায়াতের উপজেলা প্রধান। চট্টগ্রামে যাকে চারতলার ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছে তিনি একজন জামায়াত নেতা ও জজ কোর্টের আইনজীবী। তারও অবুঝ তিনটি শিশু রয়েছে।
ডেসটিনি, হলমার্ক, ইউনিপেটু, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি ও পদ্মা সেতুর দুর্নীতিতে যারা জড়িত বলে অভিযোগ, তাদের সবাই বর্তমান সরকারের সমর্থক। সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল হারুন সাহেবও তাদের মধ্যে আছেন। আপনি বলেছেন, দু-একটি সংবাদপত্র ছাড়া অন্যরা শিবিরের পে ভালো কথা ও খবর ছাপায় না। যেসব চ্যানেল ও পত্রিকা অন্য আদর্শে বিশ্বাসী, তারা তাদের পে বলা অস্বাভাবিক।
সৈ¦রশাসকবিরোধী আন্দোলন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলন এবং জাতীয় নির্বাচন সবগুলোতে জামায়াত অংশগ্রহণ করেছে কি না। নির্বাচনে জনগণ অনেক আসনে তাদের বিজয়ী করেছে। তাদের দু’জন মন্ত্রী সততার নজির। বাংলাভাই, শায়খ আবদুর রহমানের বোমাবাজির বিরুদ্ধে মিছিল করেছে। বোমাবাজেরা ইসলামের নিকৃষ্টতম দুশমন এ কথা ঘোষণা করেছে। তাদের দলীয় প্রধান নির্বাচনে গণতন্ত্র চর্চা হয়।
যদি এগুলো করে থাকে, তাহলে কেন আপনি এবং আপনার মতো জ্ঞানীগুণীরা ভালো কাজগুলোকে স্বীকৃতি না দিয়ে অবিচার করবেন? শিবিরকে বলব, মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার তোমাদের কথা বলার সুযোগ না দিলেও তোমরা তার ভালো উপদেশগুলো গ্রহণ করো।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads