ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার মরিয়া মনোভাবই প্রকাশ পেয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে শাসক আওয়ামী লীগের সংলাপে। সেখানে রাখা প্রস্তাবে দল থেকে বহিষ্কৃত বা মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থীদের স্বতন্ত্র হিসেবেও নির্বাচনে দাঁড়ানো নিষিদ্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিরোধিতাও করা হয়েছে। এ দু’প্রস্তাবের পক্ষে তারা যেসব যুক্তি তুলে ধরেছেন, সেখানে বিদ্যমান আইনের অপব্যাখ্যা ছাড়া দলীয় কর্তৃত্ব অক্ষুণ্ন রাখার বিষয়টিই প্রাধান্য পেয়েছে। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা বিধানকে আরও পাকাপোক্ত করে গণতন্ত্রচর্চার বিপরীতে দলের ওপর ব্যক্তিনেতৃত্বের কব্জা জোরালো করার প্রয়াসের মধ্য দিয়ে দলটির গণতন্ত্রবিরোধী স্বেচ্ছাচারী অবস্থানই বড় হয়ে উঠেছে।
যদিও সংলাপে দলটির পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদের ৭টি উপ-নির্বাচন ও ছয় হাজারের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানের জন্য ইসির ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে; কিন্তু যে বিধি-বিধানে (আরপিও) এসব নির্বাচন হয়েছে, এখন সেখানেই কেন পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে—সেটা ভেবে দেখার বিষয়। উল্লিখিত নির্বাচনগুলোর বেশিরভাগেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ধরাশায়ী হয়েছেন দলের মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলের উপ-নির্বাচন ও তার আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয় ছাড়া দলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া অনিয়ন্ত্রিত কোন্দল মোকাবিলা করাই যে নেতাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে, সেটাও প্রতিফলিত হয়েছে ইসির সংলাপে দেয়া সুপারিশে। বিদ্যমান সব নিয়ম-কানুন ভেঙে গত সংসদ নির্বাচনে শুধু টাকার বিনিময়ে কেন্দ্র থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার বিরোধিতায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের শক্ত অবস্থানই যে শীর্ষ নেতৃত্বকে বিপাকে ফেলেছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। দল পরিচালনায় গণতান্ত্রিক ধারা উপেক্ষা করা গেলেও নির্বাচনের সময় ব্যাপক দলাদলি ও বিদ্রোহ এড়ানো অসম্ভব মনে করেই এখন নির্বাচন কমিশনের ওপর সওয়ার হতে হচ্ছে শাসক দলটিকে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধনের মাধ্যমে মনোনয়নবঞ্চিতদের নির্বাচন করার অধিকার কেড়ে নেয়া আর যা-ই হোক গণতন্ত্রসম্মত বলা যাবে না। দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত থাকলে কোনো প্রার্থীরই বিদ্রোহ করার প্রয়োজন হতো না; সে সুযোগও থাকত না। সচেতনভাবেই দলের ভেতরে গণতন্ত্রচর্চার বিষয় নিয়ে ইসি হাত গুটিয়ে রেখেছে। পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, কর্তার ইচ্ছা পালনই তারা কর্তব্য বলে মেনে নিয়েছে। সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি নিয়ে ইসি কী করে, সেটাও এখন দেখার বিষয় হয়ে উঠেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে যাদের নিন্দা করা হয়, সেই সেনাসমর্থিত অসাংবিধানিক সরকার গঠিত ইসি প্রণীত ২০০৮ সালের নির্বাচনী সীমানা অনুযায়ীই আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন চেয়েছে আওয়ামী লীগ। কারণটি পরিষ্কার। তত্কালীন বিএনপিবিদ্বেষী ইসি ও সরকার আওয়ামী লীগকে জিতিয়ে আনার পরিকল্পনার অংশ হিসেবই তাদের প্রয়োজনমত সংসদীয় আসন ভাঙা-গড়া করেছিল। এর ফলও পেয়েছে তারা। তাই অন্য সব দল বিষয়টি ইসির ওপর ছেড়ে দিলেও আওয়ামী লীগ ভরসা রাখতে পারেনি। তারা বিদ্যমান আইনের অপব্যাখ্যা করে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বর্তমান সীমানা বহাল রাখার বায়না ধরেছে। এক্ষেত্রে তারা সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ১৯৭৬-এর ধারার কথা উল্লেখ করলেও সেখানে ১০ বছর পর পর আদমশুমারি শেষ করার অব্যবহিত পরে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আসনগুলোর সীমানা নির্ধারণ করার সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে। এ অবস্থায় বর্তমান সরকারের আমলেই আদমশুমারি সম্পন্ন হলেও সেটা কেমন করে তারা বেমালুম ভুলে গেল—সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। সুতরাং এটা দেখাই যাচ্ছে, আইন অনুযায়ী আগামী নির্বাচনের আগে সীমানা নির্ধারণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির ওপর। ইসি প্রণীত নীতিমালায়ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসন বণ্টনের নির্দেশনা রয়েছে। এসব উপেক্ষা করেই শাসক আওয়ামী লীগ সঙ্কীর্ণ স্বার্থরক্ষা করতে ইসিকে চেপে ধরেছে। এ চাপের কাছে ইসি নতিস্বীকার করবে কি না, সেটাই এখন দেখার বাকি। তাহলে প্রমাণিত হবে, তাদের কাছেও গণতন্ত্র ও আইন নয়, স্বার্থই মুখ্য
।
যদিও সংলাপে দলটির পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদের ৭টি উপ-নির্বাচন ও ছয় হাজারের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানের জন্য ইসির ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে; কিন্তু যে বিধি-বিধানে (আরপিও) এসব নির্বাচন হয়েছে, এখন সেখানেই কেন পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে—সেটা ভেবে দেখার বিষয়। উল্লিখিত নির্বাচনগুলোর বেশিরভাগেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ধরাশায়ী হয়েছেন দলের মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইলের উপ-নির্বাচন ও তার আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয় ছাড়া দলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া অনিয়ন্ত্রিত কোন্দল মোকাবিলা করাই যে নেতাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে, সেটাও প্রতিফলিত হয়েছে ইসির সংলাপে দেয়া সুপারিশে। বিদ্যমান সব নিয়ম-কানুন ভেঙে গত সংসদ নির্বাচনে শুধু টাকার বিনিময়ে কেন্দ্র থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার বিরোধিতায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের শক্ত অবস্থানই যে শীর্ষ নেতৃত্বকে বিপাকে ফেলেছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। দল পরিচালনায় গণতান্ত্রিক ধারা উপেক্ষা করা গেলেও নির্বাচনের সময় ব্যাপক দলাদলি ও বিদ্রোহ এড়ানো অসম্ভব মনে করেই এখন নির্বাচন কমিশনের ওপর সওয়ার হতে হচ্ছে শাসক দলটিকে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধনের মাধ্যমে মনোনয়নবঞ্চিতদের নির্বাচন করার অধিকার কেড়ে নেয়া আর যা-ই হোক গণতন্ত্রসম্মত বলা যাবে না। দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত থাকলে কোনো প্রার্থীরই বিদ্রোহ করার প্রয়োজন হতো না; সে সুযোগও থাকত না। সচেতনভাবেই দলের ভেতরে গণতন্ত্রচর্চার বিষয় নিয়ে ইসি হাত গুটিয়ে রেখেছে। পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, কর্তার ইচ্ছা পালনই তারা কর্তব্য বলে মেনে নিয়েছে। সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি নিয়ে ইসি কী করে, সেটাও এখন দেখার বিষয় হয়ে উঠেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে যাদের নিন্দা করা হয়, সেই সেনাসমর্থিত অসাংবিধানিক সরকার গঠিত ইসি প্রণীত ২০০৮ সালের নির্বাচনী সীমানা অনুযায়ীই আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন চেয়েছে আওয়ামী লীগ। কারণটি পরিষ্কার। তত্কালীন বিএনপিবিদ্বেষী ইসি ও সরকার আওয়ামী লীগকে জিতিয়ে আনার পরিকল্পনার অংশ হিসেবই তাদের প্রয়োজনমত সংসদীয় আসন ভাঙা-গড়া করেছিল। এর ফলও পেয়েছে তারা। তাই অন্য সব দল বিষয়টি ইসির ওপর ছেড়ে দিলেও আওয়ামী লীগ ভরসা রাখতে পারেনি। তারা বিদ্যমান আইনের অপব্যাখ্যা করে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বর্তমান সীমানা বহাল রাখার বায়না ধরেছে। এক্ষেত্রে তারা সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ১৯৭৬-এর ধারার কথা উল্লেখ করলেও সেখানে ১০ বছর পর পর আদমশুমারি শেষ করার অব্যবহিত পরে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আসনগুলোর সীমানা নির্ধারণ করার সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে। এ অবস্থায় বর্তমান সরকারের আমলেই আদমশুমারি সম্পন্ন হলেও সেটা কেমন করে তারা বেমালুম ভুলে গেল—সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। সুতরাং এটা দেখাই যাচ্ছে, আইন অনুযায়ী আগামী নির্বাচনের আগে সীমানা নির্ধারণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির ওপর। ইসি প্রণীত নীতিমালায়ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসন বণ্টনের নির্দেশনা রয়েছে। এসব উপেক্ষা করেই শাসক আওয়ামী লীগ সঙ্কীর্ণ স্বার্থরক্ষা করতে ইসিকে চেপে ধরেছে। এ চাপের কাছে ইসি নতিস্বীকার করবে কি না, সেটাই এখন দেখার বাকি। তাহলে প্রমাণিত হবে, তাদের কাছেও গণতন্ত্র ও আইন নয়, স্বার্থই মুখ্য
।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন