ইংরেজি সিনেমার একটা দৃশ্য। মূল্যবান কিছু ডকুমেন্টস খুঁজছে ছবিটির হিরো। কু পেয়ে এক বাড়িতে ঢুকে পড়ে। বাড়িওয়ালার দিকে পিস্তল তাক করে তিনটি নির্দেশ প্রদান করে।
অর্ডার নম্বর ওয়ান : ঘরের দরজা বন্ধ করো।
অর্ডার নম্বর টু : সিন্ধুকের চাবিটি টেবিলের ওপর রাখো।
অর্ডার নম্বর থ্রি : দুই হাত পিঠের ওপর রেখে উপুড় হয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ো।
বাড়ির মালিক সাথে সাথেই দরজাটি বন্ধ করে এবং অতি দ্রুততার সাথে উপুড় হয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ে। ছবির নায়ক হাততালি দিয়ে বলে, ‘বাহ বা বাহ! দারুণ স্মার্ট তো তুমি। আমার এক ও তিন নম্বর নির্দেশটি অত্যন্ত সিনসিয়ারলি পালন করেছ। তবে আমার দুই নম্বর নির্দেশটি পালন করতে ভুলে গিয়েছ। ওঠো মাই ডিয়ার, পকেট থেকে চাবিটি বের করে টেবিলের ওপর রাখো । রাখো বলছি।’
ওপরের এই দৃশ্যটি একটু বড় ক্যানভাসে মঞ্চস্থ হচ্ছে। হিরো বিশ্বব্যাংক। বাড়ির মালিকের মতো একই ধরনের বেকায়দায় মহাজোট সরকার ওরফে দুদক। অনেকটা এই নায়কের কায়দায় বিশ্বব্যাংকের ‘নম্বর ওয়ান’ নির্দেশটি ছিল : পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির কথা স্বীকার করো। নম্বর টু : পালের গোদা বা আবুলদের চিহ্নিত করো। নম্বর থ্রি : তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে এসো।
বিশ্বব্যাংকের অভিযোগগুলোকে অত্যন্ত বড় গলায় প্রত্যাখ্যান করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এখানেই থেমে থাকেননি। প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিষদ বিশ্বব্যাংককে অনেক গালিগালাজ করেছেন। প্রকারান্তরে বিশ্বব্যাংকের এক নম্বর টার্গেট আবুলকে বলেছেন দেশপ্রেমিক। এই জগৎশেঠরা সেই সব ‘ফরগিভ’ করলেও কখনোই ‘ফরগেট’ করেনি। ‘চোরের মার বড় গলা’Ñ এই প্রবাদবাক্যটি প্রধানমন্ত্রী বারবার তার প্রতিপক্ষকে উদ্দেশ করে উচ্চারণ করেন। কিন্তু খেয়াল করেননি যে, প্রতিপক্ষের চেয়ে তার নিজের বেলায় কথাটি কতটুকু নির্মম সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাথাটি বের হয়ে আসবে বলেই নাকি কানটি ধরে টান দেয়া হচ্ছে না। এই ধারণা শুধু এখন বেগম খালেদা জিয়াই পোষণ করেন না। দেশের বেশির ভাগ মানুষের অনুমান এই ধারণার অত্যন্ত কাছাকাছি।
এই ধরনের সংবিধিবদ্ধ সতর্কতার কারণেই দুদক প্রথম ও তৃতীয় নির্দেশটি মানলেও দ্বিতীয়টি মানছে না। দুই আবুলকে বাইরে রেখেই মামলা করেছে। অর্থাৎ ওপরের সিনেমাটিক ল্যাঙ্গুয়েজে বলা চলে যে, সিন্ধুকের চাবিটি টেবিলে না রেখেই বিশ্বব্যাংককে খুশি করতে উপুড় হয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়েছে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন। সাগর-রুনি কেসে ‘প্রণিধানযোগ্য উন্নতির মতোই এই দুই আবুলের ওপর দুদকের বিশেষ নজরদারি বসানো হয়েছে। এখন এই ‘প্রণিধানযোগ্য নজরদারিতে’ বিশ্বব্যাংকের মন কতটুকু ভরানো যাবে তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের কোনো নির্দেশ না মানলে পদ্মা সেতু না পেলেও অন্তত ইজ্জত রক্ষা পেত। এখন দু’টি নির্দেশ মেনে এবং আরেকটি না মেনে আরো জটিল ও করুণ অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে। দুদকের এই লেফট-রাইটে আম (সেতু) ও ছালা (ইজ্জত ) দুটোই যাওয়ার উপায় হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তদন্তদলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ওগো বিদেশিনী’র এক নাতিকে দেখে অনেকেই বেশ আশান্বিত হয়েছিলেন। মহামহিম প্রতিনিধিদল সরকারকে বেশি চাপাচাপি করলে যুদ্ধাপরাধীরা এখান থেকে ফায়দা নিতে পারে। এ ধরনের আশঙ্কার কথা তুলে ধরলে রাবীন্দ্রিক ছোঁয়া পাওয়া বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলের মন কিছুটা নরম হতে পারে। সেই আশাও নিরাশায় পরিণত হয়েছে। দাদীর মনের সেই প্রেম-ভালোবাসা কিংবা বর্তমান দুনিয়ার ইসলামোফোবিয়া এই দু’টির একটুও সঞ্চারিত হয়নি এই কাঠখোট্টা নাতির অন্তরে।
কাজেই বিশ্বজিৎ আর বিশ্বব্যাংক দুটোই একই ধরনের বেকায়দা অবস্থার সৃষ্টি করে বসেছে। বিশ্বজিৎকে যেমন শিবির বানানো সম্ভব নয় তেমনি বিশ্বব্যাংককে জামায়াতে ইসলামীর বিশ্বআমির বানাতে পারছেন না অগ্নিকন্যা। সব কিছু দেখে একটা কথাই মনে পড়ে, পাপ বাপকেও ছাড়ে না। কারণ এমনভাবে ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে যার কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
কালো আর ধলো বাহিরে কেবল ভেতরে সবার সমান রাঙা। প্রকৃতির এই নিয়মটিও সঠিক বলে গণ্য হয়নি। মানুষের রক্তে একটা কালারকোড থাকা দরকার ছিল। যেমন শিবিরের রক্ত সবুজ, ছাত্রদলেরটি সাদা, ছাত্র ইউনিয়নেরটি লাল, ছাত্রলীগ নীল। এই ধরনের কালারকোড না থাকাতেই ছাত্রলীগ বিশ্বজিৎকে বিএনপি-জামায়াতের লোক গণ্য করেছে । বিশ্বজিতের রক্তমাখা শার্টটি গায়ে দিয়েই সবার সামনে দিয়ে গাজীর বেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে। এই তৃপ্তি থেকেই জবি ছাত্রলীগ সভাপতির জন্মদিনের পার্টিটিও বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছিল। সভাপতির মুখে কেক তুলে দিয়েছেন মাহফুজুর রহমান নাহিদ। সভাপতিও সেই একই আদর নাহিদকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এই পর্যন্ত সবাই ছিল ছাত্রলীগের কর্মী। কিন্তু যখন ভুলটি স্পষ্ট হয়ে পড়ল, তখন থেকেই তাদের গোষ্ঠীনামা খোঁজা শুরু হয়ে গেল।
প্রধানমন্ত্রীর অফিস আর্কিমিডিসের মতো চিৎকার দিয়ে উঠল, ইউরেকা-ইউরেকা! এই খুনিদের সাথে বিএনপি-জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া গেছে! কারো বাবা মাদরাসার প্রিন্সিপাল। কারো চাচা জামায়াতের কর্মী। কারো ভাই বিএনপির নেতা। অথচ এই আওয়ামী লীগ মাত্র কয়েক বছর আগে মির্জা আজমের সাথে শায়খ আবদুর রহমানের আপন শালা-দুলাভাইয়ের সম্পর্কটিকে কোনো সমস্যা মনে করেনি। তখন তারা মনে করেছিল একটা ফ্যামিলিতে এমন ভিন্ন মত ও ভিন্ন পথ থাকতেই পারে।
এই ভুলটি না হলে ছাত্রলীগের এই কর্মটি ‘জাতির বিবেকরা’ বোধ হয় এবারেও সইয়ে নিতেন। পত্রিকাগুলো শিরোনাম করতÑ জনতার প্রতিরোধে এক শিবিরকর্মী নিহত। তাদের আফসোস কর্মটির জন্য নয়। আফসোস এই ভুলটির জন্য। টিভিতে সেই দৃশ্য দেখে অনেক বিবেকবান মানুষ রাতে ঘুমুতে পারেননি। এই বিবেকবানদের হাতে কলম থাকাতে তাদের সেই বিনিদ্র রজনী যাপনের কথাও জনগণ জানতে পেরেছে। জাতির এসব বিবেকরা প্রশ্ন রেখেছেন, কেন মরতে হবে বিশ্বজিৎকে?
তাই তো, প্রশ্নটি তো ঠিকই করেছেন। আসলে চাপাতির কোপ খেয়ে এভাবে মরার কথা ছিল তো ছাত্রশিবিরের। নিদেনপক্ষে ছাত্রদলের কেউ। কিন্তু শেষমেশ মরল গিয়ে কিনা এই বিশ্বজিৎ!
এই ঘটনাটি ছিল লীগ অব কোম্পানিজদের জন্য একটা হ্যাটট্রিক অর্থাৎ একই ধারার তিন নম্বর ঘটনা। এর আগের ঘটনায় ভিকটিম ছিল নাটোরের বিএনপিদলীয় এক উপজেলা চেয়ারম্যান। ভিকটিম একজন গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রতিনিধি হলেও আবেদ খানদের রাতের ঘুমটি নষ্ট করতে পারেননি। আর প্রথম ঘটনাটি ছিল বহুল আলোচিত ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠার ঘটনা। এই ঘটনাটির ফসল (আন্দোলনের ফসল) হিসেবেই এক-এগারোর সরকার ক্ষমতায় এলেও সেই ঘাতকদের কখনোই খোঁজা হয়নি। সাপের মতো মানুষ মারার কথাটি ‘উদ্দিন’রা উচ্চারণ করলেও কারা মেরেছে সেই ভাসুরের নামটি তারা কখনোই উচ্চারণ করেননি।
প্রথম ও দ্বিতীয় ঘটনায় হিংস্রতা, ট্রাজিক উপাদান আরো বেশি ছিল এবং ঘটনার নায়কেরা ছিল একই। বিশ্বজিতের পুরো মরার দৃশ্যটি ক্যামেরায় ফুটে ওঠেনি। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় পেটাতে পেটাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশের ওপর উঠে ঘাতকেরা নেচেছে। তিনটি ঘটনাই ইউটিউবের বদৌলতে পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। তবে জাতির হুঁশ ফিরেছে তিন নম্বর ঘটনায়।
প্রথম দু’টি ঘটনায় আবেদ খানদের বিবেকটি একইভাবে নড়ে উঠলে বিশ্বজিৎকে আজ এভাবে মরতে হতো না। তার পরও আশার কথা হলো, দেরিতে হলেও আবেদ খানদের বিবেক জাগ্রত হয়েছে। একেবারে না জাগার চেয়ে দেরিতে জাগাও ভালো। অন্তরের অন্তস্তল থেকে ধন্যবাদ জনাব আবেদ খানদের নবজাগ্রত এই বিবেককে।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী একটা অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে জাতির মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। রাজাকার বাহিনী ছিল পাকিস্তান সরকারের একটা প্যারা মিলিটারি বাহিনী। নিয়োগের দায়িত্বে ছিলেন তখনকার এসডিও-ডিসি সাহেবরা। তাদের বড় একটা অংশ ছিল এই ভূখণ্ডেরই বাসিন্দা। কাজেই যারা ১৫০ টাকা বেতনের জন্য রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়েছে, তাদের চেয়েও বড় অপরাধী তাদের নিয়োগদাতা এসডিও, ডিসি সাহেবরা। আমাদের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যিনি রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছেন, হিসাব টানলে দেখা যায় তিনিও এই ধরনের কোনো একটি সাব-ডিভিশনের দায়িত্বে ছিলেন। তার হাত দিয়ে কতজন মানুষ রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন তার তথ্য তালাশ করা আমার উদ্দেশ্য নয়। অন্য একটা পরিসংখ্যানের দিকে তার মনোযোগ আকর্ষণের নিমিত্তে বিষয়টির উপস্থাপনা।
১৯৭১ সালে এসব এসডিও ও ডিসি সাহেবরা যতসংখ্যক রাজাকার নিয়োগ দিয়েছেন, সেই সংখ্যা থেকে গত একচল্লিশ বছরে তাদের জৈবিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক বৃদ্ধি ঘটেছে। সব কিছু মিলিয়ে তাদের বর্তমান সংখ্যা কোনোভাবেই দুই কোটির নিচে হবে না। পৃথিবীতে দেশ বা রাষ্ট্রের সংখ্যা দুই শতের ওপরে থাকলেও এই দুই কোটির ওপর জনসংখ্যা রয়েছে মাত্র ৫৭টি দেশের। অর্থাৎ মহিউদ্দীন খানদের এই দেশটিতে যতজন রাজাকার রয়েছে, পৃথিবীর বাকি পৌনে দুই শ’ দেশে ততসংখ্যক মানুষ নেই। গ্রিস ও পর্তুগালের মতো দেশে আছে এক কোটি করে মানুষ। কাজেই মহিউদ্দীন খান আলমগীরদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হলে পুরো গ্রিস আর পর্তুগালের সাকল্য জনসংখ্যার সমসংখ্যক মানুষকে হয় মেরে ফেলতে হবে অথবা বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দিতে হবে। জনতার মঞ্চের যত বড় পাহলোয়ানই হোন না কেন, এই দুই কোটি মানুষকে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে পারবেন না।
একবিংশ শতাব্দীতেও এসে এই ক্রেজি মানুষগুলো হয়েছে আমাদের শাসক। ক্ষমতা মানুষের দায়িত্ববোধের অনুভূতি বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এদের বাড়িয়েছে অহঙ্কার ও ঔদ্ধত্য। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় ভুলে গেছেন যে, এই দুই কোটি মানুষেরও তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ’৭১-এ ডিসি-এসডিও যা-ই থাকুন না কেন, সিঙ্গেল ইউনিটের চমৎকার এই জাতিরাষ্ট্রটিকে যারা এভাবে ভাগ করতে চাচ্ছেন তারাই আজ দেশপ্রেমিক। তারাই আজ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। আর পুরো জাতিকে যারা এক রাখতে চাচ্ছেন, তারাই উপহাস আর ঘৃণার পাত্র। বেগম খালেদা জিয়া কিংবা তার দল এই বাস্তবতাটি (কাউকে বঙ্গোপসাগরে ফেলা যাবে না ) মানেন বলেই মতিয়া চৌধুরীরা তাকে বৃহত্তর জামায়াতের মহিলা আমির বলে উপহাস করেন। এই অগ্নিকন্যার মাথাটি শুধু এখনই যে এমন খারাপ হয়েছে তা নয়, ১৯৭২-৭৫ সালের দিকে তার এই মাথাটিতে আগুন ছিল আরো বেশি। তিনি তখন মুজিবের শরীরের চামড়া দিয়ে জুতা বানাতে চেয়েছিলেন। জাতির পিতাকে তখন এই কমরেডরা জুতার ফিতা বলে উপহাস করতেন।
রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার সেই আহ্বানেই সাড়া দিয়েছে শাকিল, নাহিদ প্রমুখ। মাঝখানে ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। আমাদের সময়.কম-এ প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, পুলিশের রিমান্ডে থাকা মাহফুজুর রহমান নাহিদ, কিবরিয়া, কাইয়ূম মিয়া টিপু, সাইফুল, শাওন গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছে, বিশ্বজিৎকে হত্যার সময় জবি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সব কিছু দেখেছেন। তাকে মারার সময় বলেছে শিবির ক্যাডারকে ইচ্ছেমতো মারো। শাওন জানায়, ‘আমরা কেন্দ্রের নির্দেশে অবরোধবিরোধী মিছিল করেছি। তাদের নির্দেশ পেয়ে আরো হামলা করেছি। এখন বিপদে পড়েছি বলেই আমাদেরকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী মনে করছেন না। অথচ ঘটনার আগে আমাদের কদর ছিল বেশি।’
রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ড প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর বিচারক আসামি শাকিলকে জিজ্ঞাসা করেন তার আইনজীবী আছে কি না। না থাকলে তার কিছু বলার আছে কি না? জবাবে কান্নায় ভেঙে পড়েন শাকিল। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে বিচারককে বলেন, ‘আমার বাবা মারা গেছে। আমি দোষ স্বীকার করছি। আমার কেউ নেই।’
পুরো ঘটনার দিকে একটু ওপর থেকে দৃষ্টি ফেললে পুরো মানবিক ট্র্যাজিডিটি উপলব্ধি সহজ হবে। শাকিলের হতভাগা বাবাও সবার করুণা উদ্রেক করবে। শাকিলের কান্নাও হয়তো বা একপর্যায়ে অনেককে ভিজিয়ে ফেলবে।
উপসংহারে জাতির বিবেকদের কাছে একটাই আবেদন : জীবনে অনেক রাত পার করে এসেছেন। তার মধ্যে কিছু রাতে ঘুমুতে পারেননি তা-ও জানি। সামনের রাতগুলো থেকে না হয় আরো একটা রাত বিনিদ্র কাটিয়ে লিখে ফেলুন- শাকিলের বাবাকে কেন এভাবে হার্টফেল করে মরতে হবে?
আপনাদের এই একটি লেখা দেশের রাজনীতির পুরো চিত্রটি পাল্টে দিতে পারে। হতভাগা এই দেশটির ভাগ্যের চাকাটিও ঘুরে যেতে পারে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন