হরতালবিরোধীদের হাতে প্রকাশ্যে চাপাতির কোপে আর লাঠিপেটায় নিহত হলেন নিরীহ দর্জি দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিত্। টিভি ক্যামেরার বদৌলতে সারা জাতি খুনিদের শনাক্ত করতে পারলেও এ যাবত্ সরকার এবং তার আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের গ্রেফতারে কেবল নাটকই করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের একাধিক মন্ত্রী—খুনিরা ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমনটি প্রমাণে, এমনকি কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে পারিবারিক ইতিহাস ঘেঁটে তাদের সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াতের যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করেছেন।
বেচারা বিশ্বজিত্। পুলিশের চোখের সামনে নির্মমভাবে নিহত হওয়া এ ব্যক্তিটির জানের নিরাপত্তা দিতে যেমন ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র, ঠিক তেমনি রাষ্ট্রীয় কর্তাব্যক্তিরা ব্যর্থ হয়েছেন তার প্রতি ন্যূনতম শোক জ্ঞাপনেও। এ লজ্জা শুধু বিশ্বজিতের একার নয়—এ লজ্জা, এ ব্যথা গোটা জাতির।
প্রধান বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সিটি করপোরেশনের একটি ময়লাবাহী গাড়িতে হামলা করার জন্য গ্রেফতার হলেও প্রকাশ্যে চাপাতি ও লাঠি-উল্লাসে খুন হওয়া বিশ্বজিতের খুনিদের গ্রেফতারে পুলিশের তালবাহানা কিংবা বলা চলে নিস্পৃহতায় সমগ্র জাতি স্তম্ভিত; কিন্তু এতে বিবেকবান(!) সরকারের বিবেক এতটুকু আহত হয়েছে কিনা আমরা জানি না। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথোপকথনে আমরা যারপরনাই হতবাক হয়েছি। আওয়ামী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলেই বুঝি এভাবে আচরণ করতে হয়—একই ভাষায় একই শরীরী ভঙ্গিতে কথা বলতে হয়। সাহারা কিংবা ম খা আলমগীর যেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
আমরা ধিক্কার জানাতে চাই ওই খুনিদের, যারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চরম উল্লাসে এমন নৃশংসভাবে বিশ্বজিেক হত্যা করেছে আর ধিক্কার জানাই তাদের, যারা প্রকাশ্যে উস্কানি দিয়ে এই সোনার ছেলেদের(!) খুনি হতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
ছোটবেলা থেকেই আমরা যে বস্তুটির সঙ্গে সম্পর্কিত হই, তা হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা দু’ধরনের—একটি সুশিক্ষা আর অপরটি কুশিক্ষা। যে শিক্ষা আমাদের সন্ত্রাসী, লুটেরা এবং খুনি হতে উদ্বুদ্ধ করে সে শিক্ষাকে অবশ্যই আমরা কুশিক্ষা হিসেবে চিহ্নিত করব। কুশিক্ষিত একটি গোষ্ঠী কত নির্মম হতে পারে তার উদাহরণ শাকিল, লিমন কিংবা নাহিদ। আমরা এমন শিক্ষা চাই না। এইসব কুশিক্ষা যখন গোষ্ঠীর সীমা ছাড়িয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রবেশ করবে তখন জাতিরাষ্ট্র হিসেবে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব—এ প্রশ্নের উত্তর কি জানা আছে আমাদের কিংবা তাদের, যারা ‘প্রতিহত’ নামক শব্দের মোহমন্ত্রে—তাদের আদর্শে দীক্ষিত তরুণদের সেই পথে এগিয়ে চলার সাহস এবং শক্তি জোগাচ্ছেন? হত্যাকাণ্ডে উদ্বুদ্ধকরণ মামলায় যদি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভুট্টোর ফাঁসি হতে পারে তাহলে বিশ্বজিত্ হত্যায় উদ্বুদ্ধকারী আমাদের মন্ত্রীর কী হওয়া উচিত তা নির্ধারণের ভার জনতার ওপর ছেড়ে দিয়ে আমরা শুধু এতটুকু বলতে পারি, বিচারের বাণী চিরকাল কাঁদে না। পাপের সাজা একদিন না একদিন প্রত্যেককেই ভোগ করতে হয়। পার্থক্য শুধু এতটুকু—হয় আজ না হয় কাল।
শুরু করেছিলাম হতভাগ্য বিশ্বজিেক দিয়ে। টেলিভিশনের পর্দায় যতবার বিশ্বজিত্ বধের নগ্ন উল্লাসনৃত্য দেখেছি ততবার বিবেক দংশনে রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন, পত্রিকাগুলো সরকারের নেগেটিভ নিউজগুলোকে বড় করে আর বিরোধীদেরটা ছোট করে ছাপে তখন আমরা বিস্মিত হই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলছি— আপনার দেশের জনগণ কানা, বোবা কিংবা মূর্খ নয়। যা সত্য তা দেখা, বলা কিংবা বোঝার মতো শক্তি তাদের আছে। অ্যাম্বুলেন্সে ঢিল মারার দৃশ্য তারা দেখেছে কিন্তু এর পাশাপাশি প্রকাশ্যে বিশ্বজিত্ হত্যার বীভত্সতাও তাদের দেখার দুর্ভাগ্য হয়েছে। আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী। দলের বাইরে গিয়ে দেশের নেত্রী হিসেবে বলুন, অপরাধ কোনটায় বেশি হয়েছে? পত্রিকা কিংবা টিভি চ্যানেলের অধিকাংশই তো আপনার অনুসারী। তারাও কি তাহলে তাদের বোধশক্তি(!) হারিয়ে ফেলেছে?
বিশ্বজিত্ প্রসঙ্গ লিখতে লিখতেই খবর এসেছে ‘আমার দেশ’ পত্রিকা ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। একটি সংবাদের সূত্র ধরে তারা গ্রেফতার করতে যাচ্ছে পত্রিকাটির সম্পাদক নির্ভীক সত্যনিষ্ঠ মাহমুদুর রহমানকে। একটি স্বাধীন দেশে যখন সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় আঘাত আসে তখন প্রথমেই যে জিনিসটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা হচ্ছে—গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী দাবিদার কেউ যখন এ কাজটি করেন তখন তাতে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে কি?
এই তো কিছুদিন আগে যে প্রক্রিয়ায় পত্রিকাটি বন্ধ করা হয়েছিল—একটি গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে তা সম্ভব হতে পারে এমনটি কেউ কি ভাবতে পেরেছিল? দুর্ভাগ্য আমাদের, প্রকৃত গণতন্ত্রের(!) দাবিদার একটি সরকারই সে কাজটি সম্পন্ন করেছিল।
সম্পাদককে গ্রেফতার এবং পত্রিকা বন্ধের সে অধ্যায়টির যবনিকাপাত ঘটেছিল আদালতে। এবার তাই বোধ হয় আদালত থেকে শুরু। আমরা সেই আইনকে শ্রদ্ধা করি, যে আইন সত্যের পাশে দাঁড়ায়, যে আইন রাষ্ট্রের নাগরিকদের রক্ষা করে।
আমাদের বিশ্বাস, সরকারের রক্তচক্ষু ‘আমার দেশ’ কিংবা মাহমুদুর রহমানের প্রতি যত অমানবিক হবে, রাষ্ট্রের আইন ততটাই তাদের অর্থাত্ বিপন্ন মানবতার পক্ষে অবস্থান নেবে। সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী
।
বেচারা বিশ্বজিত্। পুলিশের চোখের সামনে নির্মমভাবে নিহত হওয়া এ ব্যক্তিটির জানের নিরাপত্তা দিতে যেমন ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র, ঠিক তেমনি রাষ্ট্রীয় কর্তাব্যক্তিরা ব্যর্থ হয়েছেন তার প্রতি ন্যূনতম শোক জ্ঞাপনেও। এ লজ্জা শুধু বিশ্বজিতের একার নয়—এ লজ্জা, এ ব্যথা গোটা জাতির।
প্রধান বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সিটি করপোরেশনের একটি ময়লাবাহী গাড়িতে হামলা করার জন্য গ্রেফতার হলেও প্রকাশ্যে চাপাতি ও লাঠি-উল্লাসে খুন হওয়া বিশ্বজিতের খুনিদের গ্রেফতারে পুলিশের তালবাহানা কিংবা বলা চলে নিস্পৃহতায় সমগ্র জাতি স্তম্ভিত; কিন্তু এতে বিবেকবান(!) সরকারের বিবেক এতটুকু আহত হয়েছে কিনা আমরা জানি না। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথোপকথনে আমরা যারপরনাই হতবাক হয়েছি। আওয়ামী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলেই বুঝি এভাবে আচরণ করতে হয়—একই ভাষায় একই শরীরী ভঙ্গিতে কথা বলতে হয়। সাহারা কিংবা ম খা আলমগীর যেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
আমরা ধিক্কার জানাতে চাই ওই খুনিদের, যারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চরম উল্লাসে এমন নৃশংসভাবে বিশ্বজিেক হত্যা করেছে আর ধিক্কার জানাই তাদের, যারা প্রকাশ্যে উস্কানি দিয়ে এই সোনার ছেলেদের(!) খুনি হতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
ছোটবেলা থেকেই আমরা যে বস্তুটির সঙ্গে সম্পর্কিত হই, তা হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা দু’ধরনের—একটি সুশিক্ষা আর অপরটি কুশিক্ষা। যে শিক্ষা আমাদের সন্ত্রাসী, লুটেরা এবং খুনি হতে উদ্বুদ্ধ করে সে শিক্ষাকে অবশ্যই আমরা কুশিক্ষা হিসেবে চিহ্নিত করব। কুশিক্ষিত একটি গোষ্ঠী কত নির্মম হতে পারে তার উদাহরণ শাকিল, লিমন কিংবা নাহিদ। আমরা এমন শিক্ষা চাই না। এইসব কুশিক্ষা যখন গোষ্ঠীর সীমা ছাড়িয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রবেশ করবে তখন জাতিরাষ্ট্র হিসেবে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব—এ প্রশ্নের উত্তর কি জানা আছে আমাদের কিংবা তাদের, যারা ‘প্রতিহত’ নামক শব্দের মোহমন্ত্রে—তাদের আদর্শে দীক্ষিত তরুণদের সেই পথে এগিয়ে চলার সাহস এবং শক্তি জোগাচ্ছেন? হত্যাকাণ্ডে উদ্বুদ্ধকরণ মামলায় যদি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভুট্টোর ফাঁসি হতে পারে তাহলে বিশ্বজিত্ হত্যায় উদ্বুদ্ধকারী আমাদের মন্ত্রীর কী হওয়া উচিত তা নির্ধারণের ভার জনতার ওপর ছেড়ে দিয়ে আমরা শুধু এতটুকু বলতে পারি, বিচারের বাণী চিরকাল কাঁদে না। পাপের সাজা একদিন না একদিন প্রত্যেককেই ভোগ করতে হয়। পার্থক্য শুধু এতটুকু—হয় আজ না হয় কাল।
শুরু করেছিলাম হতভাগ্য বিশ্বজিেক দিয়ে। টেলিভিশনের পর্দায় যতবার বিশ্বজিত্ বধের নগ্ন উল্লাসনৃত্য দেখেছি ততবার বিবেক দংশনে রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন, পত্রিকাগুলো সরকারের নেগেটিভ নিউজগুলোকে বড় করে আর বিরোধীদেরটা ছোট করে ছাপে তখন আমরা বিস্মিত হই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলছি— আপনার দেশের জনগণ কানা, বোবা কিংবা মূর্খ নয়। যা সত্য তা দেখা, বলা কিংবা বোঝার মতো শক্তি তাদের আছে। অ্যাম্বুলেন্সে ঢিল মারার দৃশ্য তারা দেখেছে কিন্তু এর পাশাপাশি প্রকাশ্যে বিশ্বজিত্ হত্যার বীভত্সতাও তাদের দেখার দুর্ভাগ্য হয়েছে। আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী। দলের বাইরে গিয়ে দেশের নেত্রী হিসেবে বলুন, অপরাধ কোনটায় বেশি হয়েছে? পত্রিকা কিংবা টিভি চ্যানেলের অধিকাংশই তো আপনার অনুসারী। তারাও কি তাহলে তাদের বোধশক্তি(!) হারিয়ে ফেলেছে?
বিশ্বজিত্ প্রসঙ্গ লিখতে লিখতেই খবর এসেছে ‘আমার দেশ’ পত্রিকা ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। একটি সংবাদের সূত্র ধরে তারা গ্রেফতার করতে যাচ্ছে পত্রিকাটির সম্পাদক নির্ভীক সত্যনিষ্ঠ মাহমুদুর রহমানকে। একটি স্বাধীন দেশে যখন সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় আঘাত আসে তখন প্রথমেই যে জিনিসটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা হচ্ছে—গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী দাবিদার কেউ যখন এ কাজটি করেন তখন তাতে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে কি?
এই তো কিছুদিন আগে যে প্রক্রিয়ায় পত্রিকাটি বন্ধ করা হয়েছিল—একটি গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে তা সম্ভব হতে পারে এমনটি কেউ কি ভাবতে পেরেছিল? দুর্ভাগ্য আমাদের, প্রকৃত গণতন্ত্রের(!) দাবিদার একটি সরকারই সে কাজটি সম্পন্ন করেছিল।
সম্পাদককে গ্রেফতার এবং পত্রিকা বন্ধের সে অধ্যায়টির যবনিকাপাত ঘটেছিল আদালতে। এবার তাই বোধ হয় আদালত থেকে শুরু। আমরা সেই আইনকে শ্রদ্ধা করি, যে আইন সত্যের পাশে দাঁড়ায়, যে আইন রাষ্ট্রের নাগরিকদের রক্ষা করে।
আমাদের বিশ্বাস, সরকারের রক্তচক্ষু ‘আমার দেশ’ কিংবা মাহমুদুর রহমানের প্রতি যত অমানবিক হবে, রাষ্ট্রের আইন ততটাই তাদের অর্থাত্ বিপন্ন মানবতার পক্ষে অবস্থান নেবে। সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী
।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন