মে. জে. (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক
আজ থেকে প্রায় তিন-চার মাস আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত ছিল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া তথা বিএনপির বিরুদ্ধে আনীত একটি অভিযোগ নিয়ে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বেগম খালেদা জিয়া পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই থেকে অনেক টাকা নিয়েছেন সংসদ নির্বাচন করার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে যাচ্ছেতাই বলে সমালোচনা করেছিলেন, কটূক্তি করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ উচ্চারিত হওয়ার পর, বিএনপির প থেকে অতি জোরালো কণ্ঠে প্রতিবাদ করা হয়েছিল এই মর্মে যে, তারা পাকিস্তান থেকে কোনো টাকাপয়সা নেয়নি বরং প্রধানমন্ত্রী অসত্য বলছেন। অভিযোগ এবং ওই প্রসঙ্গের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য প্রায় তিন-চার সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে। একপর্যায়ে পাকিস্তান সরকারের প থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দেয়া হয় এবং আদালতের নথিপত্র উপস্থাপন করা হয়। এরূপ বিবৃতি ও নথিপত্রগুলোর মাধ্যমে অকাট্যভাবে দেশবাসীর সামনে প্রমাণিত হয় যে, বিএনপি পাকিস্তান থেকে টাকা আনেনি। পাকিস্তানের আইএসআই অন্য কাউকে টাকা দিয়েছে যাদের লম্বা নামের সংপে করলে ইংরেজিতে বিএনপি দাঁড়ায়; কিন্তু এটা বাংলাদেশের বিএনপি নয়। এরপর বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চুপ হয়ে যান। কিন্তু একবারও কেউ অনুতাপ প্রকাশ করেননি বা দুঃখ প্রকাশ করেননি যে, বিরাট একটি অসত্য কথার ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুফান সৃষ্টি করা হয়েছিল। এরূপ মিথ্যাচারের সুরাহা হওয়া উচিত ছিল।
কলামের শিরোনামটি পড়লে, পাঠক হয়তো মনে করতে পারেন যে, সুপ্রিম কোর্ট ভবনে অথবা কোনো জেলা আদালতের ভবনে অথবা জ্যেষ্ঠ কোনো আইনজীবীর চেম্বারের ভেতরে কেউ বোমা ফাটিয়েছে অথবা ককটেল ফাটিয়েছে অথবা অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছে। আসলে আমি শিরোনামটি দিয়ে এটা বোঝাতে চাচ্ছি না। এই কলামটি লেখার হচ্ছে সোমবার ১০ নভেম্বর দুপুর। গত ৯ নভেম্বর ২০১২ রোববার এবং ১০ নভেম্বর ২০১২ সোমবারের আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কিত সংবাদগুলো পড়ার পর আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সুনাম ধ্বংস করার জন্য সরকারের ভেতরে এবং সরকারের বাইরে কিছু ব্যক্তি উঠেপড়ে লেগেছেন। তাই আমি মনে করি, এটি নাশকতামূলক কাজ।
ওপরের অনুচ্ছেদে আইএসআইয়ের টাকা ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গটি আনলাম এই জন্য যে, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এবং বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অবস্থানরত আহম্মেদ জিয়াউদ্দিনের মধ্যকার স্কাইপির মাধ্যমে কথাবার্তা ও ইমেইলের মাধ্যমে মতামত বিনিময়ের বিষয়টির সুরাহা করার জন্য। ঢাকা মহানগর থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের অন্যতম পাঠকপ্রিয় পত্রিকা আমার দেশ ৯ নভেম্বর ২০১২-তে যে বিবরণ প্রকাশ করেছে, সে সম্বন্ধে একটি সংপ্তি বা স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। স্বল্পমেয়াদি তদন্তে আমাদের আবিষ্কার করতে হবে যে, আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত বিবরণটি অথেনটিক বা নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে এসেছে কি না এবং আমার দেশ পত্রিকা হুবহু বা অরিজিনাল ভারসন প্রকাশ করেছে কি না। স্বল্পমেয়াদি তদন্তে দ্বিতীয় বিষয় যেটি আবিষ্কার করতে হবে সেটি হলো, সম্মানিত বিচারপতি মহোদয় স্বীকার করেন কি না যে, এই কথোপকথন বা আলোচনা এবং মতবিনিময় আসলেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। অপর পে দীর্ঘমেয়াদি তদন্তে আমাদের আবিষ্কার করতে হবে কয়েকটি বিষয়। যথা প্রথম বিষয়। বিচারপতি মহোদয় আদালতের বাইরে জনাব আহম্মেদ জিয়াউদ্দিনের সাথে এইরূপ আলোচনা করতে পারেন কি না। দ্বিতীয় বিষয়। বিচারপতি মহোদয় আলোচনা যদি করেই থাকেন তাহলে, ইকোনমিস্ট পত্রিকার প্রতিনিধির কাছে ৫ ডিসেম্বর তারিখে কেন স্বীকার করেননি এবং স্বীকার না করে নিজেকে অসত্য বক্তব্য প্রদানকারী হিসেবে স্থাপন করলেন কি না! তৃতীয় বিষয়। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম মহোদয়ের কথাবার্তায় অন্যান্য অনেক সম্মানিত ব্যক্তির নামধাম এসেছে, যার মধ্যে কয়েকজন বিচারপতিও আছেন। ওই সব সম্মানিত বিচারপতি সম্বন্ধে জনাব মোহাম্মদ নাসিম মহোদয় অনেক কথা বলেছেন, যেগুলো নেতিবাচক সমালোচনা বা বদনামের পর্যায়ে পড়ে। এই কথাগুলো সত্য কি না? চতুর্থ বিষয়। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের কথাবার্তা থেকে মনে হয় যে, বাংলাদেশের সরকারের মন্ত্রিপরিষদের কোনো-না-কোনো সদস্য তার সাথে যোগাযোগকরত রায় তাড়াতাড়ি দেয়ার জন্য চাপাচাপি করছেন। এই কথাটি সত্য কি না। পঞ্চম বিষয়। সম্মানিত ব্যক্তিগণকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে প্রক্রিয়ার অনেক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এগুলো সত্য কি না। ষষ্ঠ বিষয়। ১৬ ডিসেম্বর ২০১২-এর আগে বা অন্ততপে ডিসেম্বর মাসে একটি রায় দিলে, এটি বর্তমান রাজনৈতিক সরকারের অনুকূলে যাবে, এ ধরনের একটি মানসিকতা কথোপকথনের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। যদিও বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম মহোদয় মনে করেন যে, তাড়াহুড়ো করে রায় লেখা উচিত নয়। আসলে সরকার কী চায় সেটি আবিষ্কার করা উচিত। সপ্তম বিষয়। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম মহোদয়ের কথাবার্তা থেকে মনে হয় যে, জনাব মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বা তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত স্যাগুলো খুবই দুর্বল প্রকৃতির এবং এর মাধ্যমে জনগণের মনে প্রভাব বিস্তার করা যাবে না। তাহলে জনাব দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে কেন এই তৎপরতা, এটা আবিষ্কার করা প্রয়োজন। অষ্টম বিষয়। ইত্যাদি।
বাইরের লোকের সাথে কথা বলা বৈধ কি অবৈধ এটা আইনবিশারদগণ যতটুকু নিশ্চিতভাবে বলতে পারবেন, আমি হয়তো ততটুকু বলতে পারব না। তবে সাধারণ সচেতন নাগরিক হিসেবে বলতে পারি যে, যদি বিচারপতির নিজস্ব জ্ঞান না থাকে তাহলে তিনি দুর্বল এবং অযোগ্য। অতিরিক্ত এটাও বলতে পারি যে, বিচারপতি মহোদয় আইনগতভাবে বৈধ উৎস থেকে জ্ঞান-অর্জনে সহায়তা নিতে পারেন, কিন্তু যদি উৎস নির্বাচনে ভুল করেন তাহলেও বলতে হবে যে, তিনি দুর্বল এবং অযোগ্য। সম্মানিত বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এবং জনাব আহাম্মেদ জিয়াউদ্দিনের মধ্যকার কথোপকথন লিখিতভাবে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রকাশ করে দেয়ার কারণে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন আমার দেশ পত্রিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতেও পারেন এই মর্মে যে, “যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া বানচাল করার জন্যই, বাংলাদেশের ‘আমার দেশ’ পত্রিকা এই রূপ কথোপকথন প্রচার করেছে!” একটি সম্পূরক মন্তব্য হলো এই রকম যে, আলোচনাটা যদি আসলেই না হতো তাহলে দি ইকোনমিস্ট এই আলোচনার সূত্রপাত ঘটাত না বা আমার দেশ পত্রিকা আলোচনার বিবরণ, প্রকাশ করার সুযোগই পেত না। তাহলে যারা আলোচনা করেছেন তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি সম্মানিত বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম মহোদয় এবং জনাব আহাম্মেদ জিয়াউদ্দিন মহোদয়ের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনবেন যে, ‘যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া বানচাল করার জন্যই এই দুইজন ব্যক্তি এই সকল বিষয় আলোচনা করেছেন!”
ট্রাইব্যুনালসংক্রান্ত বিষয়াদি, ব্রাসেলসে অবস্থানরত একজন ব্যক্তির সাথে আলোচনা করার সময় সম্মানিত বিচারপতি জনাব নিজামুল হক নাসিম অনেক প্রকারের বিষয়ে এবং অনেক ব্যক্তির বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। এতে বহু লোকের ব্যক্তিগত সম্মানহানি হয়েছে, বিচার বিভাগের ভাবমর্যাদা দারুণভাবে তিগ্রস্ত হয়েছে, বিচার বিভাগের রাজনীতিকায়নের (ইংরেজিতে পলিটিসাইজেশন অব দি জুডিশিয়ারি) প্রচেষ্টার সমর্থন বা স্বীকৃতি উচ্চারিত হয়েছে। এই কাজগুলো অ-শারীরিক (ইংরেজিতে নন-ফিজিক্যাল) নাশকতা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এই অতি ুদ্র নিবন্ধে যা কিছু বললাম, তার ভিত্তি হচ্ছে প্রকাশিত কথোপকথন। যারা এখনো এগুলো পড়েননি, তারা আমার দেশ পত্রিকার হার্ড কপি বা ইন্টারনেটে আমার দেশ পত্রিকার আর্কাইভসে গিয়ে বিবরণগুলো পড়ে নিতেও পারেন। এ প্রসঙ্গে পত্রিকায় সমালোচনামূলক মন্তব্য ও বক্তব্য প্রকাশিত হচ্ছে। টেলিভিশন টক-শোতে অনেক ব্যক্তি সমালোচনা করছেন। সম্মানিত অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম এবং সম্মানিত অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্যগুলো গভীরভাবে প্রণিধানযোগ্য। টক-শোতে আলোচনা আরো হতেই থাকবে। ড. পিয়াস করিম অনেকটা এই রকম বলেছেন যে, “আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হতে পারে এই রূপ সম্ভাবনা বা আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও, আমি আমার কথাগুলো বলছি।” এই রূপ আরো অনেকেই সাহস করে এগিয়ে আসছেন এবং আসবেন সত্য কথাগুলো তুলে ধরার জন্য। আদালত যদি নিজের মান বা সম্মান নিজেরা রা করতে না পারেন, তাহলে অন্যরা কিভাবে রা করবে? আমার মতে, বিচারপতি জনাব নিজামুল হক নাসিম এবং জনাব আহাম্মেদ জিয়াউদ্দিনের মধ্যকার কথোপকথনে আদালত অবমাননার উপাত্ত থাকলেও বা না থাকলেও, বিচার বিভাগকে অবমাননার উপাত্ত এবং বিচারকগণকে অবমাননার উপাত্ত আছে বলে মনে হয়। আমি মনে করি, বাংলাদেশের জনগণের সামনে বিশেষত সুধী জনগণের সামনে এখন সময় এসেছে কয়েকটি বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে বিবেচনা করার জন্য। যথা প্রথম বিষয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচারপতি নিয়োগ কতটুকু হওয়া উচিত বা উচিত নয়। দ্বিতীয় বিষয়, বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ন্যূনতম কী কী যোগ্যতা থাকা উচিত বা কী কী শর্ত পূরণ করা উচিত। তৃতীয় বিষয়, বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য এই মুহূর্তে বিদ্যমান যেসব যোগ্যতা বা শর্ত প্রযোজ্য, সেগুলো কি পালিত হয়েছে? চতুর্থ বিষয়, যেকোনো একজন সম্মানিত বিচারপতি যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন বা দায়িত্ব পালনে অযোগ্যতার পরিচয় দেন বা শপথ ভঙ্গ করেন তাহলে, সম্মানিত বিচারপতিকে দায়িত্ব থেকে অপসারণের প্রক্রিয়া আরো সহজ হওয়া উচিত কি না।
বিচার বিভাগ নিয়ে অথবা কোনো সম্মানিত বিচারপতিকে নিয়ে আলোচনা কতটুকু করা উচিত বা উচিত নয়, এটি একটি স্পর্শকাতর, অমীমাংসিত এবং ক্রমেই উদ্ভাসিত বিষয়। আদালত অবমাননার তত্ত্বটিও ক্রমেই পরিমার্জনশীল। গত দুই-তিন বছরে আদালত অবমাননার তত্ত্ব এবং বাস্তবায়ন একাধিকবার মিডিয়ার আলোচনায় এসেছে। এ বিষয়টি হঠাৎ করে নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয় ক্রমেই নিষ্পত্তি হবে বলে বিশ্বাস করি। কিন্তু এটাও বাস্তব যে, আমরা সবাই উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রত্যাশা করছি। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের উচ্চতর আদালতে কিছু কিছু কাজ বা রায় বা হুকুম, জনগণের উপকারার্থে বলে প্রতিফলিত। উচ্চতর আদালত অনেক েেত্রই তথা কিছু কিছু জনহিতকর বিষয়ে, স্বপ্রণোদিত হয়ে মন্তব্য করেছেন বা রায় দিয়েছেন। এই রূপ অনেক ইতিবাচক উদাহরণ দেয়া যেতে পারে, কিন্তু শুধু দু’টি উল্লেখ করছি। যথা প্রথম। ঢাকা মহানগরের চতুর্দিকের বিখ্যাত নদীগুলোর সীমা নির্ধারণ যেন নদীখেকো লোভী মানুষগুলো নদীকে গ্রাস করতে না পারে। দ্বিতীয়। ধর্মীয় বিধানের অপব্যাখ্যাকরত নারীর ওপর নির্যাতন করার জন্য সালিশি ব্যবস্থার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
আমার এই কলামের মাধ্যমে, বাংলাদেশের ও আমাদের স্বাধীনতাপূর্ব পাকিস্তান নামের রাষ্ট্রের ইতিহাসে সব বাঙালি প্রখ্যাত জ্ঞানী জীবিত বা মরহুম সম্মানিত বিচারকমণ্ডলীর দতামণ্ডিত স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আমরা আশা করি, সুশাসিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ তাদের ভূমিকা অব্যাহতভাবে রাখবেন।
লেখক : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি
www.kallyan-ibrahim.com
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন