ধর্মের বিকল্প নেই। ধর্ম যা
দিতে পারে মানুষকে, দুনিয়াতে অন্য কিছু তা দিতে
পারে না। দর্শন, বিজ্ঞান, রাজনৈতিক মতবাদ, প্রযুক্তিগত
উৎকর্ষ বা শিল্পকলাÑ কোনো কিছুরই সে ক্ষমতা নেই।
তাই ধর্মের জায়গা দখল করার বা ধর্মকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সাধ্য নেই কোনো কিছুর। ধর্মের
কাছে মানুষের অতি প্রয়োজনীয় এমন পাঁচটি জিনিস আছে যা আর কারো কাছে নেই। এই
জিনিসগুলোর অভাবে মানুষের জীবন শূন্য, সঙ্কটাপন্ন ও
অর্থহীন হয়ে যায়। এক. ধর্মের কাছে জীবন, জগৎ ও অস্তিত্বের
ব্যাখ্যা আছে। একমাত্র ধর্মই বলে দিতে পারে আমি কে,
আমি কোথা থেকে এসেছি, এই বিশ্বচরাচরে
আমার অবস্থান কী, আমার কাজ কী দুনিয়াতে এবং
আমার জীবনের চূড়ান্ত পরিণতি কীÑ এসব প্রশ্নের
উত্তর ছাড়া জীবনের কোনো কিছুর মানে খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে জীবন হয়ে যায় একটা নিñিদ্র অন্ধকার গোলকধাঁধা। অন্ধকারে হাতড়ে কান্ত, বিপর্যস্ত ও হতাশা হয়ে যাওয়া ছাড়া গতি থাকে না। এই জীবনটা হয়ে যায়
শূন্য, শুষ্ক, যন্ত্রণাময় ও
মূল্যহীন। জীবনের অর্থ খুঁজে না পেয়ে সংবেদনশীল মানুষ আত্মহত্যা পর্যন্ত করে। দুই.
আপদ, বিপদ, দুঃখ, বেদনা, বঞ্চনা ও হতাশায় ভরা এই জীবনে
একমাত্র ধর্মই পারে মানুষকে সান্ত্বনা জোগাতে; আস্থা ও আশার
বাণী শোনাতে। জীবনে এমন অনেক পরিস্থিতি আসে যখন মানুষ আর কোনো অবলম্বন খুঁজে পায়
না। দুনিয়ার কোনো কিছুরই কোনো সান্ত্বনা দেয়ার বা আশা জোগানোর সাধ্য থাকে না সে
সময়। তেমন দুর্যোগের মুহূর্তে একমাত্র ধর্মের মধ্যে শান্তির আশ্রয় মেলে। জীবনে
এমন অনেক যন্ত্রণা আসে যখন সবচেয়ে মূল্যবান অবলম্বন হয় ধৈর্যটা। এটা একমাত্র ধর্মই
জোগান দিতে পারে। দুনিয়ার সবকিছুই অসহায় হয়ে দূরে সরে যায় তখন। অবিচল ও যথার্থ
সাহায্যকারী হিসেবে কাছে পাওয়া যায় কেবল ধর্মকেই। চরম মানসিক দ্বন্দ্ব ও যাতনার
মধ্যে ধর্মই পারে মানুষকে উন্মাদ হয়ে যাওয়া বা আত্মহত্যা থেকে বাঁচাতে। তিন. একমাত্র
ধর্মই পারে অধঃপতিত মানুষকে উদ্ধার করতে, তাকে ক্ষমা ও
সংশোধন করে সম্পূর্ণ নতুনভাবে গড়ে তুলতে; সে অধঃপতন যতই
দীর্ঘ বা গভীর হোক না কেন। যেকোনো সময়, যেকোনো
অবস্থায়ই তাকে ক্ষমা ও মুক্তির বার্তা শোনাতে পারে ধর্ম। রাষ্ট্রও অনেক সময় সবকিছু
ক্ষমা করতে পারে না। সমাজও পারে না। ব্যক্তি মানুষও পারে না। কিন্তু ধর্মের মধ্যে
ক্ষমার আয়োজন আছে। একবার নয়, বারবার ক্ষমা
লাভের সুযোগ আছে। যেকোনো অবস্থায় তাকে উদ্ধার করার ব্যবস্থা এবং সব কলুষ থেকে
মুক্ত হওয়ার উপায় আছে। দুনিয়ার সবকিছু তাকে ফেলে দিলেও ধর্ম তাকে ত্যাগ করে না।
ধর্মের কাছে সে সবসময় মূল্যবান। তাকে কাছে টেনে নিয়ে আপন করে নিতে ধর্ম সবসময়ই
প্রস্তুত। চার. মৃত্যুর পর কী হবে? এই মহা
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব কেবল ধর্মের কাছেই আছে। মৃত্যুর পর যে জীবন মানুষের
জন্য অপেক্ষা করছে তার জন্য কিভাবে তৈরি হতে হবে সে কথাও একমাত্র ধর্মই পারে বলতে।
মৃত্যুর পরের কথা ভেবে উদ্বিগ্ন হওয়া একান্তই স্বাভাবিক। যে কখনো তা নিয়ে ভাবে না
তাকে মানুষ বলাই যায় না। আর যে মনে করে মৃত্যুর পর আর কিছুই নেই বা তাচ্ছিল্যের
সাথে বলে মৃত্যুর পর কী হবে সে জন্য সে উদ্বিগ্ন নয়,
তার জ্ঞান-বুদ্ধির দুর্দশা প্রকাশ করার উপযুক্ত ভাষা খুঁজে পাওয়া
যায় না। পাঁচ. নানামুখী ও সংঘর্ষশীল আকর্ষণ ও প্রয়োজনের এই জটিল জীবনে একমাত্র
ধর্মই মানুষকে দিতে পারে একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্বেগহীন জীবনের ছক। এর অভাবে
মানুষের জীবন হয়ে যায় দ্বন্দ্বমুখর ও আত্মবিধ্বংসী। জীবনের বিভিন্ন দিক ও বিভাগের
মধ্যে থাকে না সংযোগ ও সমন্বয়। জীবন হয়ে পড়ে এলোমেলো, বিশৃঙ্খল ও অসংলগ্ন। এক ধরনের যুদ্ধ চলতে থাকে নিজের ভেতরে, বাইরে ও চতুর্দিকের আর সব কিছুর সাথে। দর্শন তো এক চমকপ্রদ
বুদ্ধিবৃত্তিক নিষ্ফলতা। দার্শনিকরা কেবল যুক্তিতর্কের জটিল জাল বুনতেই জানেন।
দার্শনিকদের মধ্যে যারা সৎ ও বিবেকবান তারা কান্তি ও হতাশার সাথে তাদের অসহায়
অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, মানুষের
বুদ্ধিবৃত্তির ওপর ভর করে বেশি দূর যাওয়া সম্ভব নয়;
সম্ভব নয় সত্যের নাগাল পাওয়া। বুদ্ধিবৃত্তির দর্প এভাবেই চূর্ণ হয়ে
যায়। দর্শন তাই কেবল বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের নিষ্ফল হাতড়ে বেড়ানোরই ইতিবৃত্ত।
বিজ্ঞানের কাজ বস্তু নিয়ে। কিন্তু মানুষ তো কেবল বস্তু নয়। মানুষের জীবনের অসংখ্য
গুরুত্বপূর্ণ দিক ও বিভাগ আছে যেগুলো বিজ্ঞানের আওতার বাইরে। বিজ্ঞান ব্যস্ত
বস্তুর ‘কি’ নিয়ে, ‘কেন’ নিয়ে নয়। অর্থাৎ তার কাছে কিছু জিনিসের কিছু বাহ্যিক বর্ণনা আছে।
সেগুলোর অস্তিত্বের ব্যাখ্যা বা তাৎপর্য কী বিজ্ঞানের তা জানা নেই। এটা বিজ্ঞানের
সাধ্যের বাইরে। বিজ্ঞান বস্তু সম্বন্ধে অল্প একটু জানতে হয়তো পারে, কিন্তু বুঝতে পারে না এসব বস্তুর অর্থ বা তাৎপর্য। জানা আর তাৎপর্য
বোঝা এক নয়। শুধু জেনে তেমন লাভ হয় না। বিশ্ব চরাচর সম্বন্ধে বিজ্ঞান আজ পর্যন্ত
যতটুকু জানতে পেরেছে তা সামান্য একটা বালুর কণার চেয়েও কম। তবে বিজ্ঞানও ইদানীং
অস্বস্তিতে পড়ে গেছে এবং নড়েচড়ে বসতে চাচ্ছে। বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞান। রহস্যময়
কথাবার্তা বলা শুরু করে দিয়েছে পদার্থবিজ্ঞান। এমন কথাও বলছে যে একটা জিনিস নড়েও
না, আবার একই জায়গায়ও থাকে না। এ ধরনের কথা ধর্মের কথার
চেয়ে কি কম রহস্যময়? বিজ্ঞানের ওপর ভর করে গড়ে ওঠা
প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ নিত্যনতুন কিছু ‘খেলনা’ই তৈরি করতে জানে শুধু। মানুষের অন্তরের মৌলিক প্রশ্নের আশপাশ
দিয়েও প্রযুক্তি হাঁটে না। প্রযুক্তির হাতের বানানো এসব খেলনা পুরনো হয়ে যায়, জরাজীর্ণ ও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এগুলো নিছক ঠুনকো খেলনা হলেও হয়তো
একটা কথা হতো। কিন্তু এগুলো যে মহা সর্বনাশও ডেকে আনতে পারে। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের
হাত ধরেই তো এই পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত। সব ধরনের
প্রাণের অস্তিত্ব মহা হুমকির মধ্যে। সে দিন মনে হয় আর খুব বেশি দূরে নয়, যখন চার দিকে প্রযুক্তির প্রবল উৎকর্ষের মধ্যে দাঁড়িয়েই মানুষ করুণ
আক্ষেপ করে বলবেÑ এর চেয়ে ভালো ছিল গরুর ও
ঘোড়ার গাড়ি, পাল তোলা নৌকা ও জাহাজ, ফালের লাঙল, হাতে বোনা তাঁতের কাপড়, ধীরস্থির ও শান্ত জীবন। বিশুদ্ধ একটু পানি ও নির্মল বাতাসের জন্য
বিলাপ করার দিন ইতোমধ্যেই এসে গেছে। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ মানুষকে ও অন্য সব ধরনের
জীবনকে যেভাবে বিপন্ন করে ফেলেছে সে জন্য মানুষ একে অভিশাপ বলে গণ্য করবে। মানুষের
মধ্যে যারা চিরকাল অবোধ রয়ে যায়, তারাই এসব
ঠুনকো ও বিপজ্জনক খেলনা নিয়ে আমৃত্যু মশগুল ও তৃপ্ত থাকতে পারে। মানুষের অন্তর যখন
একেবারে দেউলিয়া হয়ে যায় তখনই কেবল সে রাজনৈতিক মতবাদের মধ্যেই জীবনের সব সমস্যার
সমাধান খোঁজে। রাজনৈতিক মতবাদ মানুষকে কেবল হতাশ করে এসেছে। প্রতিটি মতবাদই দেখা
গেছে মারাত্মকভাবে সীমাবদ্ধ ও ভঙ্গুর। কোনোটিই মানব প্রকৃতি ও যথার্থ প্রয়োজন
ঠিকমতো উপলব্ধি এবং সে প্রয়োজন পুরনের উপযুক্ত পদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারেনি। কোনো
রাজনৈতিক মতবাদ এ পর্যন্ত বুঝতেই চায়নি যে মানুষের বেশির ভাগ সমস্যাই রাজনৈতিক নয়, সমস্যা মানুষের নিজের মধ্যেই। মানুষের আসল সমস্যা আধ্যাত্মিক।
ব্যাধি মূলত মানুষের অন্তরে। এর রাজনৈতিক চিকিৎসা নেই। আছে কেবল আধ্যাত্মিক
চিকিৎসা। রাজনীতিবিদরা সে চিকিৎসার সন্ধান জানেন না। বরং তারাই সবচেয়ে বেশি
ব্যাধিগ্রস্ত। তাদের নিজেদেরই চিকিৎসার প্রয়োজন অন্যদের চেয়েও বেশি। শিল্পকলার
মধ্যে মোহনীয়তা আছে, মাদকতা আছে এবং কোনো কোনো
ক্ষেত্রে সৌন্দর্য ও সুষমা আছে। শিল্পকলা মনকে কেড়ে নিতে পারে সহজে। কিন্তু জীবনের
মৌলিক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না। শিল্পকলা সহজে আবেশ ও মুগ্ধতার ঘোর সৃষ্টি
করতে পারে মাত্র। শিল্পকলার যারা তপস্যা করে তাদের মনের মধ্যে যতখানি আবেগের
আতিশয্য ও আত্মবিলাস আছে, তার তুলনায় স্বচ্ছ
বিচারবুদ্ধি ও বিবেচনা কম। সুস্থ মাথায় ও দায়িত্বশীলতার সাথে চিন্তা করলে এটা
বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, ঐশী ধর্মের বিকল্প নেই
পৃথিবীতে। হবেও না। ধর্ম যা দিতে পারে, তা আর কোনো
কিছু পারে না। মানুষের যোগ্যতা নেই ধর্ম তৈরি করার। সঠিক ও সার্থক ধর্মের জন্য যে
সর্বোব্যাপী পরিপূর্ণ জ্ঞান প্রয়োজন তা মানুষের এককভাবেও নেই, সামষ্টিকভাবেও নেই। নির্বোধ অথচ অহঙ্কারী মানুষ অবশ্য ধর্ম তৈরির
চেষ্টা করে দেখেছে। কিন্তু তার মধ্যে এত ফাঁকফোকর ও গোঁজামিল থেকে গেছে যে, তা আর কাজে আসেনি। ধর্ম ‘রচনাকারী’ মানুষগুলো কেবল হাস্যকর হয়েছে। ধর্ম আসতে হবে এই সৃষ্ট জগতের যিনি
মালিক এবং যার সব জানা আছে তার কাছ থেকেই। কারণ একমাত্র তিনিই জানেন মানুষের কী
প্রয়োজন, মানুষের জন্য কী উপযোগী।
অর্থাৎ ধর্ম হতে হবে ঐশী। ঐশী বলে স্বীকৃত যেসব ধর্ম আমাদের সামনে আছে, সেগুলোর মধ্যে ইসলামের প্রাধান্য তিনটি কারণে। এক. ইসলামের মূল
দলিল সব ঠিক আছে। বিকৃত হয়ে বা হারিয়ে যায়নি। এই দাবির জন্য যত ঐতিহাসিক প্রমাণ
প্রয়োজন সবই আছে। এ কারণে ইসলাম যে ঐশী ধর্ম এবং তা যে একেবারে অবিকৃত অবস্থায় আছে
এ নিয়ে সন্দেহ করার ভিত্তি নেই। দুই. ইসলামের জীবন ব্যাখ্যা পূর্ণাঙ্গ এবং বিভিন্ন
অংশের মধ্যে পুরোপুরি সঙ্গতিশীল। কোথাও ঘাটতি বা স্ববিরোধিতা নেই। তিন. ইসলামের
মধ্যে যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমুখী জীবনের সন্ধান পাওয়া যায়, তা এত পূর্ণাঙ্গ এবং ভারসাম্যপূর্ণ যে তার কোনো তুলনা মেলে না।
জীবনের দিক উপেক্ষিত হয়নি এতে। যে জিনিসের যতটুকু গুরুত্ব তা ঠিক ততটুকুই গুরুত্ব
পেয়েছে। ইসলামের ছোট-বড় প্রতিটি বিধিবিধানই তার মূলের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে সম্পৃক্ত
এবং নিজ নিজ স্থানে যথার্থ। এই তিনটি বিষয় ইসলামে যেমন সন্তোষজনকভাবে মেলে তেমন আর
কোথাও মেলে না। কিছু অর্বাচীন ও বেপরোয়া মানুষ মানুষের কাছ থেকে ইসলামকে কেড়ে নিতে
চায়। মানুষকে তাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ থেকে বঞ্চিত করতে চায়। মানুষকে আশ্রয় ও
অবলম্বনহীন করে দিয়ে দিশেহারা ও উ™£ান্ত
শরণার্থীতে পরিণত করতে চায়। এ ধরনের মানুষ আগেও ছিল। কিন্তু এখন তাদের সংখ্যা ও
সুযোগ বেড়েছে অনেক। এই মানুষগুলোর কিছু মিষ্টি বুলি আছে; আছে কিছু কটু গালি। মিষ্টি বুলি পটানোর জন্য, কটু গালি, যারা তাদের পটে না তাদের
লাঞ্ছিত করার জন্য। আজ আমরা দিন-রাত এসব শুনতে পাচ্ছি। এদের মিষ্টি বুলিতে যারা
ভুলেছে বা কটু গালিতে ঘাবড়ে গেছে তারা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত। মানুষকে যারা ধর্মহীন
করতে চায় তারা একটা বাস্তব সত্য সম্বন্ধে একেবারেই অজ্ঞ। তারা জানে না মানুষকে
ধর্মহীন করা যায় না কিছুতেই। কিছু না কিছু মেনেই মানুষকে জীবন চালাতে হয়। একটা
কিছু বোধ বা ধারণা তাকে আঁকড়ে ধরতেই হয়। সেটা হতে পারে প্রচলিত বা সমসাময়িক
ধ্যানধারণা বা তার নিজস্ব কামনা ও বাসনা বা এসবের সংমিশ্রণ। এটাই হয়ে দাঁড়ায় তার ‘ধর্ম’। নাম ধর্ম থাকুক না থাকুক
তাতে বাস্তব সত্যের হেরফের হয় না। সঠিক ধর্ম থেকে বিচ্যুত হলে মানুষ নিজের মতো করে
জগাখিচুড়ি ‘ধর্ম’ বানিয়ে নেবেই। উপাসনাও মানুষ না করে থাকতে পারে না। কিছু না কিছুর
প্রতি জীবনে সে অনুগত থাকবেই। এ জন্য অনেক ত্যাগও সে স্বীকার করতে প্রস্তুত। সেটাই
তার উপাস্য। সত্যিরকার অর্থে নাস্তিক বলে আসলে কেউ থাকার কথা নয়। সে বুঝুক না
বুঝুক, স্বীকার করুক আর না করুক, সেও কোনো কিছুকে সত্য জ্ঞান করে তার ওপর অটল থাকতে চায়। সেটাই তার
উপাস্য। নকল উপাস্যের অভাব নেই দুনিয়াতে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে কাছের ও মধুর হচ্ছে
মানুষের নিজের অহং। বাস্তব সত্য হলো, হয় সে যথার্থ
উপাস্যের উপাসনা করবে, না হয় সে অপাত্রের উপাসনা
করবে; হয় সঠিক ধর্ম অনুযায়ী চলবে, না হয় সে বেঠিক একটা কিছুকে ধর্মের মর্যাদায় বসিয়ে তার ওপর নির্ভর
করে চলবে। আসল প্রশ্ন হচ্ছে, উপাসনা যার
যথার্থ প্রাপ্য মানুষ কি তার উপাসনা করবে, না নকল কিছুকে
উপাসনা করবে? সে কি সঠিক ধর্মকে তার জীবনের
দিশারী হিসেবে গ্রহণ করবে, না হরেকরকম ভ্রান্ত পথে ঘুরতে
ঘুরতে জীবন পার করে দেবে। সঠিক উপাস্যের উপাসনা এবং সঠিক ধর্মকে অনুসরণ না করলে
নকল উপাস্যের ও ধর্মের ফাঁদে পড়তেই হবে মানুষকে। দুনিয়াজুড়ে আজ ‘বিশাল হাট’ বসেছে বাজে কথার। জাতিসঙ্ঘ
থেকে সাধারণ শিশুবিদ্যালয় পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। বাজে কথার ব্যাপারীরা বিপুল উৎসাহ
ও উদ্যমে তাদের কথার পশরা সাজিয়ে সে দিকে ডাকছে মানুষকে। প্রচণ্ড ও অনর্গল এ হাটের
কোলাহল। কিন্তু কাজের কথা আছে কেবল ধর্মের কাছে। বাজে কথার এই অনর্গল কান ফাটানো ও
উন্মত্ত কোলাহলে ধর্মের কণ্ঠ চাপা পড়ে যায় বা হারিয়ে যায়। ধর্মের অবশ্য তাতে ক্ষতি
হয় না, ক্ষতি হয় মানুষের। এই বিপদ থেকে বাঁচতে হলে বাজে
কথার এ বাজারকে তার আপন স্বরূপে আমাদের চেনা দরকার। বাজে কথার এই হাটের আকর্ষণীয়
মোড়কে জড়ানো পশরা খরিদ করা থেকে নিজেদের হেফাজত করা দরকার। মেহেরবান আল্লাহ তায়ালা
আমাদের সহায় হোন।
'আমার মনে হয় আবার ক্ষমতায় গেলে তিনি নতুন ভবন খুলে মানুষ হত্যা করবেন, মা-বোনের ইজ্জত নিয়ে দেশকে নতুনভাবে ধ্বংস করবেন' বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনার এই উক্তি কি আপনি শালীন মনে করেন ?
FIND US on FB
জনপ্রিয় লেখাসমুহ
-
আবার সেই লগি-বইঠার হুংকার !!! দেশবাসী সাবধান !!! জালিমরা আবার রক্ত পিয়াসের মরন নেশায় নেমেছ । বাচতে হলে হয় প্রতিরোধ করুন জীবনের তরে না...
-
দেশজুড়ে শিক্ষাঙ্গনে অপ্রতিরোধ্য সন্ত্রাস কায়েম করেছে ছাত্রলীগ। নিয়োগবাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নারীর শ্লীলতাহানিসহ পাবলিক ...
-
* যৌথ বিনিয়োগের বিষয়টি আমি জানি না-নৌ-পরিবহন মন্ত্রী * এ ধরনের বিনিয়োগ সম্পর্কে বোর্ড কিছু জানে না -বিনিয়োগ বোর্ড নির্বাহী * এই ঘটনা স...
-
ধূমকেতু : ’৯১-এ ক্ষমতায় আসার পর মেয়াদ শেষে ’৯৬ সালে বিএনপি তার সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চাইলে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগসহ অন্য...
-
বেগম খালেদা জিয়ার প্রকৃত নাম খালেদা খানম, ডাক নাম পুতুল। আগস্ট ১৫, ১৯৪৫ সালে জলপাইগুড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। তিন বোন এবং দুই...
-
দু’টি চাঞ্চল্যকর খবর ক্ষণিকের জন্য গণমাধ্যম তোলপাড় করে দেশ ও জাতির স্মৃতি থেকে দ্রুত মুছে যাচ্ছে বলে মনে হয়। খবর দু’টি হচ্ছে বাংলাদেশ থ...
-
বগুড়া শহরের প্রসিদ্ধ হোটেলের একটি আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল। ব্যবসার পাশাপাশি হোটেল কর্তৃপ ১০০ বছর ধরে রাতে ফ্রি খাবার দিয়ে মুসাফ...
-
আজ ১ সেপ্টেম্বর , ১৯৭৮ সালের এই দিনে জাতির মুক্তির লক্ষে স্বাধীনতা যুদ্ধের সুমহান ঘোষক , বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা , সংবাদপত্রের স্...
-
“...আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে যে বিজ্ঞানী - তা তো জানা ছিলো না!” [এবার থাকছে শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় কে নিয়ে ধারাবাহ...
-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম জাতিসঙ্ঘের ৬৮তম সাধারণ অধিবেশনেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা জাতিসঙ্ঘে ট...
Ad
মোট পৃষ্ঠাদর্শন
প্রজন্মের ভবিষ্যত
Blogger দ্বারা পরিচালিত.
আমার অনুপ্রেরনা
জাতীয়তাবাদী শক্তির কান্ডারী
আমার সম্পর্কে
পুরানো যত লেখা
-
►
2016
(170)
- ► সেপ্টেম্বর (8)
- ► ফেব্রুয়ারী (12)
-
►
2015
(299)
- ► সেপ্টেম্বর (21)
- ► ফেব্রুয়ারী (27)
-
►
2014
(654)
- ► সেপ্টেম্বর (37)
- ► ফেব্রুয়ারী (82)
-
▼
2013
(1305)
-
▼
অক্টোবর
(99)
- প্রতিহিংসার রাজনীতি বনাম জাতীয় সংহতি
- তত্ত্বাবধায়ক দাবির আদি নেতাদের বন্দি রেখে অর্থবহ ...
- দুই নেত্রীর টেলিসংলাপ এবং সংবিধান ও আইনের নির্দেশনা
- যে কারণে সরকার এত অনীহ
- সফল সংলাপের জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিবেশ
- বল আবার প্রধানমন্ত্রীর কোর্টে
- ক্ষমতা এবং আরো ক্ষমতা
- রাজনৈতিক দলন-পীড়ন এবং মিডিয়া সংস্কৃতি
- চুল তত্ত্ব থেকে ফোন তত্ত্ব : দুই নেত্রী নয় সংকটের...
- দুই নেত্রীর ফোনালাপ
- প্রধানমন্ত্রীর জন্য সঠিক কাজ একটাই এখন
- একটি নৈশভোজ ও একটি জাতির ভাগ্য
- নিছক সংলাপ নয় কেয়ারটেকার ব্যবস্থার পুনর্বহাল লক্ষ্য
- হত্যা হামলা ও গ্রেফতার বন্ধ করে আলোচনার পরিবেশ সৃষ...
- বেগম জিয়ার প্রস্তাব অবশ্যই গ্রহণযোগ্য
- সুশীল রাজনীতি, সংলাপ ও সহিংসতা
- গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দল
- সর্বদলীয় সরকার নামের নয়া ফাঁদ
- জাতীয়তাবাদীদের বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র
- তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে সৃষ্ট সঙ্কট ও জনস্বার্থ
- অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ৫ বছর
- সংলাপের সমস্ত পথ রুদ্ধ : সংঘাতের মুখে বাংলাদেশ
- টেলিফোনের রাজনীতি বনাম আন্দোলন
- তালগাছের মোহ ছাড়তে হবে
- ‘সুশীলদের টকশো এবং সরকার সমর্থকদের গাত্রজ্বালা’
- সমঝোতা কি ‘হনুজ দূরওয়াস্ত’- আসলেও অসম্ভব?
- কোন পথে রাজনীতি ও নির্বাচন
- একটি কলঙ্কিত ২৮ অক্টোবর ও লগি-বৈঠার নৃশংসতা
- ২৫ অক্টোবরের আগে ও পরে
- সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করলে সঙ্কট আরো মারাত্মক হবে
- প্রধানমন্ত্রীর টেলিভাষণ বনাম দেশের করুণ বাস্তবতা
- আদৌ কি হবে ভোট?
- প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ হতাশাব্যঞ্জক, অসত্য ও চাতুর্যপ...
- নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় সংসদ অধিবেশন চলতে পারে কি?
- বেগম জিয়ার কাছে জাতির প্রত্যাশা
- নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় সংসদ অধিবেশন চলতে পারে কি?
- তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যত ভয়
- উন্নয়নের ‘ধারাবাহিকতা’ রক্ষা ও ভাঙা নৌকায় পুনরায...
- বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনী প্রস্তাব
- পরাবাস্তব ডিজিটাল জগৎ বনাম অ্যানালগ বাস্তবতা
- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা
- প্রধানমন্ত্রীর সর্বদলীয় সরকার ও দেশের রাজনৈতিক বা...
- সংঘাত নয় শান্তি-সমৃদ্ধির জন্য দরকার সমঝোতা
- সংবিধান থেকে সরে এলেন প্রধানমন্ত্রী
- দেশে খুনের মহড়া : সরকার ঘুমিয়ে আছে?
- তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি রক্তপাতের মাধ্যমে জনতার অর্জন
- সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান
- সরকার যখন জনভয়ে ভীত
- সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব, না ফাঁদ?
- বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য দরকার বহুদলীয় মিডিয়া
- ঈমানদার হতাশ হতে পারে না
- বিবেকযন্ত্রণা ও দেশের রাজনীতি
- ছায়াযুদ্ধ এবং নির্বাচন
- ইভেন লেভেল প্লেইং ফিল্ড প্রসঙ্গে
- সমঝোতা না সংঘাতের ভয়ঙ্কর পরিণতি
- তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা পুনর্বহাল সরকারের নৈতিক দায়...
- ত্যাগের মহিমায় জীবন অর্থবহ হয়ে উঠুক
- সক্রেটিস থেকে কাদের মোল্লার বিচার প্রক্রিয়া একই রকম!
- শুধু উৎসব নয় ঈদুল আজহা আত্মত্যাগের অঙ্গীকার করার দিন
- উন্নয়নের ‘ধারাবাহিকতা’ রক্ষা ও ভাঙা নৌকায় পুনরায...
- ধর্মের কোনো বিকল্প নেই
- বিভেদের রাজনীতি ও চলমান সরকার
- ঈদুল আযহার শিক্ষা
- এটি কোনো নতুন কথা নয়
- সংশোধিত আইনটি ‘কালাকানুন’ ছাড়া কিছু নয়
- আল্লাহ তোমার দ্বীনের বিজয় পতাকা তুলে দাও ওদের হাতে
- সংসদের মেয়াদ বৃদ্ধি, সংসদ বাতিল এবং সংবিধানের ৫৭,...
- কিছুই বিশ্বাস হতে চায় না
- একটি নির্বাচন : অতঃপর...
- আরো বেশিদিন ক্ষমতায় থাকার ফন্দি-ফিকির
- ধর্মীয় বিষয়ে ধর্মনিরপেক্ষ আচরণ কেন?
- এই পুলিশ কি সেই পুলিশ?
- আওয়ামী লীগের রাজনীতি
- নাস্তিক্যবাদী ধ্বংসাত্মক চিন্তা থেকে বিপথগামী মানু...
- ২৫ অক্টোবরের পর পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে?
- নিয়োগ ও উদ্বোধনের হিড়িক
- আধুনিকতার শিকারে ঐশী আজ করুণার পাত্র
- ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার এখনই সময়
- গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ
- স্বাধীন দেশের প্রশাসনে জমিদারতন্ত্রের কালোছায়া
- স্বাধীন দেশের প্রশাসনে জমিদারতন্ত্রের কালোছায়া
- যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গ
- নির্বাচন ও রাজনীতি
- সেকুলার রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার
- নির্বাচনবাদী গণতন্ত্র বনাম সাংবিধানিক গণতন্ত্র
- প্রতিহিংসা সন্ত্রাস কেলেঙ্কারি ক্ষমতা দীর্ঘায়িত ক...
- ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি এবং রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কে...
- দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক
- নির্বাচনবাদী গণতন্ত্র বনাম সাংবিধানিক গণতন্ত্র
- বাকি হাসিটুকুও ফুরিয়ে যেতে পারে
- সরকার যখন জনমতের বিপরীতে
- একটি রায় নিয়ে এতো ঘটনা আর বিতর্কের কথা অতীতে কখন...
- ক্ষমতাসীনেরা কি দায়ী নয়?
- ভারত এ লজ্জা রাখবে কোথায়?
- আবারো প্রশ্নবিদ্ধ রায়!
- শ্রমিকদের অধিকার কি বাস্তবে রয়েছে?
- দারুণই দেখালেন বটে প্রধানমন্ত্রী
- সমাধানের পথ আগের মতোই কণ্টকাকীর্ণ
- ঘরের কথা বাইরে কেন? বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম
- ► সেপ্টেম্বর (107)
- ► ফেব্রুয়ারী (95)
-
▼
অক্টোবর
(99)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন