শিমুল বিশ্বাস
বিআইডব্লিউটিসি’র সাবেক চেয়ারম্যান ও বিরোধিদলীয় নেত্রীর বিশেষ সহকারী আওয়ামী
লীগের বর্তমান রাজনৈতিক ভূমিকায় দেশের সর্বস্তরের মানুষ আতঙ্কিত, বিশেষ করে তরুণসমাজ এবং প্রগতিশীল জনগোষ্ঠীর বিরাট একটি অংশ আজ
হতাশ। আওয়ামী লীগের জন্ম-পরবর্তী দীর্ঘ ৬৫ বছরের ইতিহাস যারা জানেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান কর্মকাণ্ডে তাদের অবাক হওয়ার কিছু নেই। বরং
আওয়ামী লীগ যদি এই তাণ্ডব, অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ও রক্তপাত না ঘটাত
সেটাই হতো আশ্চর্য ঘটনা। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের কথা মুখে মুখে বললেও ফ্যাসিবাদের
চর্চা করে আসছে পাকিস্তান আমল থেকেই। আওয়ামী লীগ সব সময় আন্দোলনের শত্রু-মিত্র
বাছাই বা রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ করেছে নিজেদের সুবিধামতো। সুবিধামতো কৌশল
নির্ধারণে দলটি নীতিবোধ কিংবা কোনো আদর্শিক দায়বদ্ধতার প্রতি কখনোই শ্রদ্ধাশীল ছিল
না। পাকিস্তান সৃষ্টির পর, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ
গার্ডেন ম্যানশনে পূর্ব পাকিস্তানের নিপীড়িত অধিবাসীরা ‘পাকিস্তান মুসলিম লীগ’ ভেঙে গড়ে তোলেন
‘অল পাকিস্তান মুসলিম আওয়ামী লীগ’। দলের প্রথম সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় উপমহাদেশের খ্যাতনামা
রাজনীতিবিদ মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে এবং সাধারণ সম্পাদক
নিযুক্ত হন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাত শামসুল হককে। মওলানা ভাসানী ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৭
পর্যন্ত দীর্ঘ আট বছর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানী ১৯৫৭ সালের ১৮ মার্চ আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ
থেকে পদত্যাগ করেন। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক ছিলেন
পূর্ব পাকিস্তানে সরকারবিরোধী রাজনীতিতে প্রথম সারির নেতা। তার জনপ্রিয়তা ছিল
উল্লেখযোগ্য। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৫৩
সালে কারামুক্তির পর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক
শামসুল হককে দল থেকে বিতাড়িত করা হয়। ঘটনার আকস্মিকতায় তার প্রচণ্ড মনোকষ্টের
সৃষ্টি হয়। ফলে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এই বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতার
নামও আওয়ামী লীগের দলীয় ইতিহাস থেকে ধীরে ধীরে মুছে ফেলা হয়েছে। একজন সৎ রাজনীতবিদ, যার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল বিভাগ-পূর্ব ভারতবর্ষে, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠায় যার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও ভূমিকা ছিল, তার এই করুণ পরিণতি খুবই বেদনাদায়ক। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা
নেতৃবৃন্দের প্রায় সবাইকে একইভাবে ষড়যন্ত্রমূলক অথবা অসম্মানজনকভাবে দল থেকে বিদায়
নিতে হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের নিপীড়িত জনগণের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি
শাসকগোষ্ঠীর অব্যাহত অবহেলা, উন্নাসিক
দৃষ্টিভঙ্গি, ন্যায্য দাবিদাওয়া পূরণে
অনীহা এবং মাতৃভাষা বাংলার ক্ষেত্রে মুসলিম লীগ সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির
বিরোধিতায় মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত দল আওয়ামী
মুসলিম লীগ। আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাকালে শেখ মুজিবুর রহমান নিযুক্ত হন
দ্বিতীয় যুগ্ম সম্পাদক। প্রথম যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমদ। একই সময়ে
পশ্চিম পাকিস্তানে পীর মানিক শরীফের নেতৃত্বে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়।
পরবর্তীকালে এই দুই দল একীভূত হয়ে অল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয় এবং
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এর আহ্বায়ক নিযুক্ত হন। পরে দলকে ‘অসাম্প্রদায়িক’ করার জন্য ১৯৫৩
সালে এক কাউন্সিল সভায় ‘অল পাকিস্তান মুসলিম আওয়ামী
লীগ’ থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেয়া হয়। ফলে দলটি নতুন নাম ‘অল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ হিসেবে পরিচিতি
লাভ করে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতালাভের পর সঙ্গত কারণেই এই রাজনৈতিক দলের নামকরণ করা
হয় ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’। বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগের নামকরণে রয়েছে তিন ভাষার তিনটি শব্দের মিশ্রণ। ‘বাংলাদেশ’ নিখাঁদ বাংলা শব্দ, ‘আওয়ামী’ হচ্ছে উর্দু শব্দ (যার অর্থ
জনগণ বা জনতা। মূল শব্দ আওয়াম, অর্থ জাতি) এবং
‘লীগ’ হচ্ছে ইংরেজি
শব্দ (যার অর্থ মৈত্রী বা দল)। ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষা বাংলার স্থলে যারা জোর করে
উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিল, তাদের
মাতৃভাষার শব্দ ‘আওয়ামী’ আজো অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলটি তার নাম থেকে মুছে ফেলতে পারেনি।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই উর্দু নামধারী এই দলটি তার নাম,
আওয়ামী লীগ ঠিক রাখলেও নীতি ও নেতৃত্ব পরিবর্তন করেছে সুবিধামতোই।
আওয়ামী লীগের ২৩ বছরের ঘোষিত ও লালিত স্বপ্ন ‘গণতন্ত্র
প্রতিষ্ঠা’র নীতি বদলে ফ্যাসিবাদী
চরিত্রের স্বরূপ জনগণের সামনে প্রথম প্রতিভাত ও উন্মোচিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার
পর ১৯৭২-৭৫ সময়কালে। ২০০৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী লীগের
ফ্যাসিবাদী চরিত্রের ভয়ঙ্কর রূপ এ প্রজন্ম আজ নতুনভাবে প্রত্যক্ষ করছে। বিভিন্ন
তথ্য সূত্রে জানা যায়, জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্রকে
পরিত্যাগ করে ফ্যাসিবাদ চর্চায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার
প্রত্যক্ষ মদদ ও সহায়তা কাজ করছে। আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবেই উগ্র প্রকৃতির একটি দল, তার সাথে যদি বিদেশী মদদ ও শক্তিগুলো একীভূত হয়, তাহলে কী ভয়ঙ্কর এক ফ্যাসিবাদের সৃষ্টি হতে পারে, বর্তমান আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড দেখে দেশের জনগণ তা ভালোভাবেই
বুঝতে পারছেন। বিজ্ঞানের নিরিখে বিষয়টা এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তিবিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে ইউরেনিয়াম ও প্লুটোনিয়াম ভারী মৌলের বিভাজন ঘটিয়ে ১৯৪৫
সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা শহরে বারো কিলোটনের পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ
ঘটানো হয়। মাত্র কয়েক কিলোটন বোমার আঘাতেই হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরের অবস্থা কী
ভয়াবহ হয়েছিল, বিষয়টি সবারই জানা। এই
ধ্বংসক্ষমতা ফ্যাসিবাদের প্রাথমিক স্তর। এরপর ইউরেনিয়াম ও প্লুটোনিয়ামের বিভাজন
থেকে যে ক্ষমতা উৎপন্ন হয় তা ব্যবহার করে তার চেয়েও অনেক বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি
বোমা তৈরি করে ১৯৫২ সালের ১৯ নভেম্বর পরীক্ষার জন্য বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল।
বোমাটির নাম ছিল হাইড্রোজেন বোমা। যার ক্ষমতা ছিল কয়েক হাজার কিলোটন। ১২ কিলোটন ও
কয়েক হাজার কিলোটনের মধ্যে অনেক পার্থক্য, এ কথা বলাই
বাহুল্য। আওয়ামী লীগও উল্লিখিত এমন উপাদানগুলো একীভূত করে নিজেদের শক্তিকে
হাইড্রোজেন বোমার মতোই ধ্বংসকারী করে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে আওয়ামী লীগের এই
শক্তি হলো বেলুন দিয়ে বানানো এক অন্তঃসারশূন্য হাইড্রোজেন-দানব। এই দানব দেখতেই
বিরাট ভয়ঙ্কর কিন্তু এর ক্ষমতা আসলে কিছুই নয়। কারণ বর্তমানে আওয়ামী লীগের
গণভিত্তি খুবই নড়বড়ে। আওয়ামী লীগের বৈশিষ্ট্যই হলো হত্যা, নিপীড়ন-নির্যাতন, গুম-খুন ও শোষণ
করা। আওয়ামী লীগ নিজেদের স্বার্থে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করতে
পরোয়া করছে না। আওয়ামী লীগের বর্তমান রাজনৈতিক কৌশল এক কথায় সুবিধাবাদী ও
রাষ্ট্রঘাতী। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী যখন বুঝতে পারেন তার প্রতিষ্ঠিত দল
আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের এজেন্টদের অনুপ্রবেশ ঘটছে, তারা জাতীয় ঐক্য ও জনগণের স্বার্থ ছিন্নভিন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে, তখনই তিনি আওয়ামী লীগ পরিত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
পৃথিবীতে ফ্যাসিবাদী নীতির প্রথম প্রয়োগ করেন ইতালির রাজনীতিবিদ বেনিতো মুসোলিনি।
তিনি ইতালির জনগণের মধ্যে এক কৃত্রিম জাগরণ সৃষ্টি করেন শুধু একটি মাত্র আবেগঘন
স্লোগান দিয়ে। আর তা ছিল, ‘রোমান সাম্রাজ্যের হারানো গৌরব
ফিরিয়ে আনতে হবে’। হাজার হাজার বছর আগে রোমান
বীরেরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শাসক ও যোদ্ধা ছিলেন। জ্ঞান-বিজ্ঞান, দর্শন, শিক্ষাদীক্ষায় রোমানরা ছিল
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। সুতরাং পৃথিবী জয় করার অধিকার ও যোগ্যতা আছে রোমানদেরই।
ফিরিয়ে আনতে হবে রোমানদের সেই যুগ, সেই সময়।
মুসোলিনির এসব আবেগপূর্ণ উন্মাদনাই ছিল ফ্যাসিবাদের মূলতত্ত্ব। মুসোলিনির আবেগঘন
বক্তব্য ইতালির জনগণ বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক আবেগ ও উত্তেজনা সৃষ্টি করে।
ভাবাবেগের সুযোগ নিয়ে মুসোলিনি ইতালির সব বিরুদ্ধ রাজনৈতিক মতামত কঠোর হাতে দমন
করেন। ভিন্ন মতের রাজনৈতিক দলগুলোকে একে একে স্তব্ধ করে দেয়া হয়। শক্তিশালী সামরিক
বাহিনী গঠন করা হয় অন্য দেশ আক্রমণ ও জয় করার জন্য। অন্য দিকে এই সময়ই ফ্যাসিজমের
তত্ত্ব জার্মানির এডলফ হিটলার আরো দক্ষতার সাথে প্রয়োগ করতে থাকেন তার ‘নাৎসি পার্টি’ ও ‘গোস্টাপো’ বাহিনী গঠনের মাধ্যমে। সেখানে
‘এক নেতা, এক দেশ’ নীতি কার্যকর করা হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর অবমানকর
ভার্সাই চুক্তির বোঝা বহন করতে গিয়ে জার্মানির জনগণ ভেতরে ভেতরে এমনিতেই অপমানের
জ্বালায় জ্বলছিল, সেখানে হিটলার অগ্নিতে
ঘৃতাহুতি দিলেন। হিটলার ঘোষণা করলেন, জার্মান জাতি
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। পৃথিবী শাসন করার জন্যই তাদের জন্ম হয়েছে। এই
ফ্যাসিবাদী আবেগ সমগ্র জার্মান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে। বিশেষ করে তরুণসমাজের মধ্যে
ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। হিটলারের একচ্ছত্র নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ নিয়ে নাৎসি
পার্টি জার্মানির সব বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা ও কর্মীদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা, নির্যাতন, গুম ও খুনের বিভীষিকা সৃষ্টি
করে। ইতালির চেয়ে জার্মানি সেই সময় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থনীতি, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও নতুন নতুন
আবিষ্কারে অনেক সমৃদ্ধ ছিল। এমনকি ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় হিটলারের
শাসনামলে জার্মানি ছিল সামরিক শক্তিতে এবং সামরিক বিজ্ঞান ও রণকৌশলে বিস্ময়করভাবে
শক্তিশালী একটি দেশ। এর পরের ঘটনা সবারই জানা। এখানে এই বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলো, শুধু আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের বর্তমান পর্ব বোঝানোর জন্য। এ বিষয়ে
বিস্তৃতভাবে লেখার দায়িত্ব ইতিহাসবিদ, কলামিস্ট, সাংবাদিক ও চিন্তাবিদদের। জার্মানি-ইতালি পৃথিবীর অন্যান্য দেশ
দখলের শক্তি অর্জন করেছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগের সে শক্তি
নেই। কেননা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের জন্ম তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নকামী দরিদ্র
দেশে। ভিন্ন দেশ দখল করার ক্ষমতা তারা কোথায় পাবে। সে মানসিকতার জন্যও একধরনের
নীতিবোধ ও সাহস থাকা দরকার। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে সব কিছু পেতে
অভ্যস্ত যুক্তিহীন, একচোখা বৈশিষ্ট্যের একটি
রাজনৈতিক দল। নিজের দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেয়া,
নিজ দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও মধ্যযুগীয় বর্বরতাই তাদের প্রধান কৌশল। হিটলার-মুসোলিনি
ফ্যাসিবাদের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের জনগণের ওপর নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে
দেশের সীমানা সম্প্রসারণের জন্য ভিন্ন দেশ দখলের দিকে এগিয়ে গিয়েছিল। আর আওয়ামী
লীগের ফ্যাসিস্টরা ব্যস্ত আছে নিজ দেশের জাতীয় ঐক্যকে ছিন্নভিন্ন করে জনগণের সম্পদ
লুণ্ঠন ও শান্তিপ্রিয় জনগণ এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের রক্ত ঝরানোর কাজে। অভ্যন্তরীণ
রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ মুসোলিনি-হিটলারের মতোই ফ্যাসিবাদী নীতি ও ভাবাবেগ অনুসরণ
করে আসছে। যেমন ‘তুমি কে? আমি কে? বাঙালি বাঙালি’, ‘একনেতা, একদেশ/ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ ধরনের একনায়কতান্ত্রিক ও ভাবাবেগসর্বস্ব স্লোগান তাদের মূলধন। এই
উগ্র স্লোগানের আড়ালে তারা নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে ভিন্ন মত। লুণ্ঠন করছে ও বিকিয়ে
দিচ্ছে জাতীয় সম্পদ। আজ তারা জগদ্দল পাথরের মতো বাংলাদেশের জনগণের ওপর চেপে বসেছে।
এই অপশক্তির পরাজয় ছাড়া বাংলাদেশের জনগণের মুক্তি নেই। এ কথা মনে রাখা দরকার, এই অপশক্তির সাথে আরো যুক্ত হয়েছে দেশী-বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহল
ও আন্তর্জাতিক মাফিয়া চক্র। সুতরাং বর্তমান আওয়ামী লীগের কাছ থেকে অত্যাচার-নির্যাতন, গুম, খুন ছাড়া জনগণের কী-ই বা
পাওয়ার আছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার মত্ততা এমনপর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এখন তাদের মাঝে বিনয়, সৌজন্য, ভদ্রতা ও কৃতজ্ঞতার লেশমাত্র যেন নেই। এই দলের বিভিন্নপর্যায়ের
নেতাকর্মীগণ বক্তৃতা-বিবৃতিতে যে ধরনের ভাষা, অঙ্গভঙ্গি, ঔদ্ধত্য ও দম্ভ প্রকাশ করে থাকেনÑ
তা আর যা-ই হোক কোনো সুস্থতার পরিচয় বহন করে না।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন