আলমগীর মহিউদ্দিন
ইতিহাস নিয়ে চিন্তাশীল মানবপ্রেমিকদের দু’টি ভাবনার একটি হলো, এখানে প্রধানত ক্ষমতার বর্ণনাই থাকে। দ্বিতীয়টি হলো, এই বর্ণনা দিয়ে থাকে বিজয়ীরা। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়ার বক্তব্যকে তাই তারা পুরোপুরি গ্রহণ করতে নারাজ। কারণ এখানে শাসিতদের কথা খুব কমই থাকে। থাকলেও তা যেন কথাচ্ছলে। বিজয়ীরা নিজেদের উজ্জ্বল দিকটা বর্ণনা করতে গিয়ে অনেক অসত্যও বলে থাকেন। তাদের অনুজ্জ্বল দিকটা থাকে একেবারে উহ্য। অথচ এই দিকটাই তাদের বিজয়কে ছিনিয়ে নেয় একপর্যায়ে। তবে একটা কথা সত্য, ইতিহাসের মধ্যমণি হচ্ছেÑ ক্ষমতার চর্চা। আজকের বিশ্ব পশ্চিমা ধ্যানধারণা দিয়েই মূলত চালিত হচ্ছে। এ ধারণার বাইরের বক্তব্যকে এখন মধ্যযুগীয়, পশ্চাৎপদ ও অন্যান্য নামে প্রচার করা হয়। এই ধারণায় ক্ষমতার কী স্থান, এ লেখার মূল বিষয় এটাই। এজন্য পশ্চিমা বিশ্বের রাষ্ট্রনায়ক, লেখক, দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও রাজনীতিবিদেরা ক্ষমতাকে কোন দৃষ্টিতে দেখেন, তা তাদের বক্তব্যের দু-একটি বাক্য নিয়ে আলোচনা করা যায়। পরিশেষে, এ যুগের ক্ষমতার বহুমাত্রিক দিকের উদ্গাতা ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়নের বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
এক কথায় এরা কেউই ক্ষমতাকে সুনজরে দেখেননি। এমনকি রাজনীতিবিদদের ক্ষমতার মোহের কথা বলেছেন। যেমন আব্রাহাম লিঙ্কন বলেছেন, ‘কোনো মানুষের চরিত্রের পরীক্ষা করতে চাইলে তাকে ক্ষমতা দাও।’ টমাস জেফারসন বলেছেন, ‘একজন সৎ মানুষ কখনো সঙ্গী নাগরিকের ওপর ক্ষমতা বিস্তার করে আনন্দ পায় না।’ জর্জ ওয়াশিংটন বলেছেন, ‘রাজনৈতিক উন্নতির জন্য ধর্ম ও নৈতিকতা অপরিহার্য।’ আর বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন বলেছেন, ‘শুধুমাত্র ধার্মিক ব্যক্তিগণই স্বাধীনতার যোগ্য’ (Only a virtuous people are capable of freedom)।
ক্ষমতা এবং রাজনীতি নিয়ে গুণীজনের মাঝে শেক্সপিয়র বলেছেন, ‘ক্ষমতা একবার যখন সীমাহীন হয়, কিছুই ঠিকমতো চলে না (When once our power is unbounded, nothing goes right)। কবি উইলিয়াম হ্যাজলিট বলেছেন, ‘নীতিহীনতাই ক্ষমতা’ (Want of principle)। জেমস এফ ব্রায়ান আরো চমৎকার করে বলেছেন, ‘ক্ষমতা মানুষকে মাতাল করে। মদের মাতলামি থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়, ক্ষমতার মাতলামি থেকে নয়’ (Power intoxicates men When a man is intoxicated by alcohol he can recover, but when intoxicated by power, he seldom recovers)। বার্ট্রান্ড রাসেল বলেছেন, ‘ক্ষমতা ও গৌরবের লালসাই হলো মানুষের সবচেয়ে বড় আকাক্সা’ (Of the infinite desires of men, the chief is the desire for power and glory)। জন স্টুয়ার্ট মিল বলেছেন, ‘ক্ষমতার ভালোবাসা এবং স্বাধীনতার ভালোবাসা দুটো একে অন্যের চিরশত্রু’ (The love of power and love of liberty are in eternal antagonism)। জর্জ ওরওয়েল বলেছেন, ‘ক্ষমতার উপাসনা রাজনৈতিক বিচারকে কলঙ্কিত করে’ (Power worship blurs political judgment)।
বিখ্যাত ইংরেজ লেখক হেনরি অ্যাডামস তাই ক্ষমতাকে বিষের সাথে তুলনা করে বলেছেন, ‘এটা এমন বিষ যা (এর ব্যবহারকারী) মানুষের নৈতিক অন্তর্দৃষ্টি অন্ধ করে দেয়। আর (সকল) নৈতিক উদ্যোগকে খোঁড়া করে ফেলে। এটা নানা রূপ ধারণ করে ক্ষমতাবানদের কত সুযোগ-সুবিধা দেয়া যায়, তার কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকে। ক্ষমতা এখন (আধুনিক যুগে) দুই রকমের : অর্থনৈতিক এবং সামরিক। তবে অতীতে ক্ষমতাটা শুধু সামরিকই ছিল।
ইউরোপের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোকে এই অর্থনৈতিক এবং সামরিক ক্ষমতার যোগাযোগের জন্য পূর্ণ কৃতিত্ব দেয়া যায়। তার সাথে প্রযুক্তির অবদান এক হয়ে ক্ষমতাবানদের কর্মকাণ্ডকে বহুমাত্রিকতা দিয়েছে। এখন এক দেশের ক্ষমতাবানেরা অন্য দেশের ক্ষমতাবানদের কখনো সাথে থেকে বা কখনো নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের ক্ষমতা উপভোগ করছে। জনগণকে ক্ষমতার অনাচারের ভার বইতে হয়।
তবে এসবের পেছনে প্রধানত ইউরোপীয় কয়েকজনকে ‘কৃতিত্ব’ দেয়া যায়। তাদের মধ্যে প্রধান হলেনÑ সিজার, হিটলার, মুসোলিনি, স্টালিন ও নেপোলিয়ন। আর নেপোলিয়নকে বলা যায় আধুনিক যুগের ক্ষমতাবানদের পথপ্রদর্শক। ফ্রান্সের এই নেতা এক দিকে রাষ্ট্র পরিচালনার অনুকরণীয় নিয়মনীতি তৈরি করেছেন, সৃষ্টি করেছেন প্যারিসের মতো সৌকর্যমণ্ডিত শহর, তেমনি অপর দিকে তার ক্ষমতার লালসা মেটাতে ইউরোপে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিলেন। তিনি ফরাসি বিপ্লব ও দেশপ্রেমের প্রতিভূ হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করে ইউরোপের ঐতিহ্যগত নিরঙ্কুশতাকে (ট্র্যাডিশনাল অ্যাবসলিউটিজম) নির্মূলের নামে সমাজের মাঝে অরাজকতা প্রচলন করেন। এর উদ্দেশ্য, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা। তিনিই প্রথম পথ দেখান, কেমন করে গণতান্ত্রিক পথ ও মানসিকতাকে ব্যবহার করে পূর্ণ স্বৈরাচারী ক্ষমতার অধিকারী হওয়া যায়, যা রাজতন্ত্রের চেয়েও নিরাপদ অথচ সমালোচনার ঊর্ধ্বে। নেপোলিয়ন স্বৈরতন্ত্র ও স্বেচ্ছাচারিতাকে ঠেকানোর নামে প্রতিবাদী ও প্রতিপক্ষদের কোনো উচ্চবাচ্য করার সুযোগ দেননি এবং জুলুমের নানা আঙ্গিক আবিষ্কার করেছেন। ফলে তখন ফরাসি বিপ্লবে স্লোগানটিও (স্বাধীনতা, ভ্রাতৃত্ব ও সমতা) হারিয়ে যায় সাময়িকভাবে। হয়ত প্রকৃতিই এর প্রতিবাদ করে কখনো কখনো; যেমন ফ্রান্সের এই ক্ষমতাধর ব্যক্তিটির ব্যাপারে। নেপোলিয়ন বহুমাত্রিকতার মানুষ ছিলেন। তার রাষ্ট্র পরিচালনার বিখ্যাত; কোড এখনো প্রযোজ্য যেমন যুদ্ধ বিগ্রহে তার কৌশল বিশ্বের সব সমর পাঠের অংশ। আর ক্ষমতার অঙ্গনে তার পথ এখনো অনুকরণীয়। ক্ষমতা নিয়ে তার বহু উক্তি, বহু কর্মকাণ্ড। যেমন ‘আমি ক্ষমতা ভালোবাসি, তবে একজন শিল্পীর মতো (I love power. But it is as an artist that I love it)। ক্ষমতা আমার প্রণয়িনীর মতো। একে পাওয়ার জন্য কঠিন পরিশ্রম করেছি। অন্য কাউকে একে আমার কাছ থেকে নিতে দেবো না।’ (Power is my mistress. I have worked too hard at her conquest to allow anyone to take her away from me)। আর ক্ষমতা পেলে, তখন কাউকে (জনগণকেও নয়) মেনে চলার প্রশ্নও আসে না। ক্ষমতা আমি ছাড়তে পারি না। (I can no longer obey. I have lasted command and I cannot give it up).
শুধু যদি নেপোলিয়নের ক্ষমতা সম্পর্কিত এ কয়েকটি বক্তব্য এবং আজকের রাজনীতিবিদ এবং ক্ষমতাবানদের ধ্যানধারণা ও আচরণ বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হবে, এগুলো কত বাস্তব। অর্থাৎ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তাদের বহু কাঠখড়ি পোড়াতে হয়েছে। অতএব সে ‘আমার প্রণয়িনী-নাগরী।’ তাকে ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু এখন তো রাজতন্ত্র নেই। এখন গণতন্ত্র। জনগণের মতামতই প্রধান। তখন আবার নেপোলিয়ন কাজে আসছেন। কেমনভাবে গণতন্ত্রকে ব্যবহার করে পূর্ণক্ষমতা ব্যবহার করা যায় তার ব্যবস্থাপত্রও দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘সাধারণ মানুষদের ভালো লাগা দোষগুলো (পাপ) উসকে দিয়ে তাদের খুব সহজে শাসন (পরিচালনা) করা যায়, তাদের গুণগুলো (পুণ্য) নয়। (Man are more easily governned through their vices than their virtues)। আজকের রাজনীতির কি চমৎকার বর্ণনা। খুন-খারাবি-গুম-আক্রমণ দিয়ে জনগণকে কেমন সহজে নিয়ন্ত্রণ এবং শাসন করা যাচ্ছে। নেপোলিয়নই বলেছেন, ‘মানুষকে দু’টি ‘লিভার’ দিয়েই চালানো যায়। তাহলো ভয় এবং ব্যক্তিস্বার্থ। (Men are moved by two levers only : fear and self-interest)।
ক্ষমতায় থেকে রাজনীতি নিয়ে তার বক্তব্য যেন এ যুগের নির্ধারিত স্বৈরাচারীদের জন্যই দেয়া। তার উপদেশ ও মন্তব্যগুলো, নির্বাচিত কর্মপন্থাগুলো সব ক্ষমতালিপ্সুর জন্য দিকনির্দেশক হয়ে রইল। তৃতীয় বিশ্বের ক্ষমতাধরেরা একে শুধু অনুসরণই করছে না, কিছু রঙও চড়িয়ে দিয়ে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে চাইছে। যেমন নেপোলিয়ন উপদেশ দিয়েছেন, ‘(রাজনীতিবিদেরা) কখনো পিছু হটবে না, ভুল স্বীকার করবে না, ও কথা (তা যত অবান্তরই হোক না কেন) প্রত্যাহার করবে না। ...আর রাজনীতিতে বোকামি কোনো প্রতিবন্ধকতা নয় (In politics never retreat, never retract... never admit mistake... In politics stupidity is not handicap)।
অন্য কথায়, অজ্ঞ-মূর্খ-অশিক্ষিত-শিক্ষার ভড়ংধারী সবাই রাজনীতি করতে পারবে এবং তা শুধু ক্ষমতার জন্যই। তাদের ভুল ও লালসা জনগণের ক্ষতি এবং যন্ত্রণার কারণ হলেও, তারা ‘রাজনীতি করছে জনগণের জন্য’ বক্তব্য দিয়ে পার পেয়ে যাবে। তারা রাজনীতিবিদ থাকবে এবং সব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারবে। সব প্রতিবাদ ও প্রতিবন্ধকতাকে প্রচার-ক্ষমতা-কৌশল দিয়ে দূর করার অধিকারও তাদের থাকবে। তাহলে নেপোলিয়ন কি মনশ্চক্ষে বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্ব, এমনকি আজকের প্রথম বিশ্বকে দেখতে পেয়েছিলেন? হ্যাঁ, পেয়েছিলেন।
সারা বিশ্বেই ক্ষমতাবানেরা শুধুই ক্ষমতা চাইছেন। ক্ষমতা এবং আরো ক্ষমতা। নতুবা তাদের শুরু করা আরব্ধ কাজগুলো অপূর্ণ থেকে যাবে। জনকল্যাণ বাধাগ্রস্ত হবে। পরাশক্তির দেশে এসব কাজগুলোর অর্থ হচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকাণ্ড। তৃতীয় বিশ্বে এগুলো হচ্ছে অনুগ্রহপ্রাপ্তদের মুনাফার কাজ, যার অংশ ক্ষমতাবানরাও পায়।
ক্ষমতাবানদের জন্য নেপোলিয়নের একটি চমৎকার উক্তি প্রণিধানযোগ্য। এরা প্রায়শঃই চাটুকার ও অনুগ্রহপ্রার্থীদের দ্বারা বেষ্টিত থাকে। সত্যবাদিতা এবং সৎপরামর্শ কখনো লোভ-লাভ-দখলের অংশ হয় না বলে, তাদের যোজন দূরে রাখা হয়। তাই তিনি সতর্ক করেছেন, ‘চাটুকারিতা যে জানে, সে নিন্দা করতেও জানে। (He who knows to flatter also knows how to slander)। তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেছেন। তবে এটা যেমন কঠিন, তেমনি মূল্যবান।
তিনি বলেছিলেন, অসম্ভব কথাটি আমার অভিধানে নেই। কিন্তু ‘ক্ষমতা, সুযোগ ও সুবিধাই কি সব’ প্রশ্নটির জবাব তার নিজের জীবনের বিনিময়ে দিয়েছেন। ফরাসিরা নেপোলিয়নের জীবন ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় মুগ্ধ হলেও তার ক্ষমতার লালসায় যুদ্ধ-বিগ্রহ এবং রাষ্ট্রীয় শক্তির অপব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। একপর্যায়ে তারা তাকে ইংরেজদের হাতে তুলে দেয়। তারা তাকে দ্বিতীয়বারের জন্য নির্বাসনে পাঠায়। এবার আটলান্টিক মহাসাগরের একটি দ্বীপ সেন্ট হেলেনায়। এখানে তার জীবনের শেষ ছয়টি বছর কাটে। নেপোলিয়ন বলেছিলেন, ‘স্পর্ধা ও ধৃষ্টতা দিয়ে যেকোনো জিনিস করার চেষ্টা করা যায়, তবে প্রতিটি জিনিস নয়।’ (With audacity one can undertake anything, but not do everything)। হ্যাঁ ক্ষমতাবানেরা জনগণকে ভুলে স্বার্থের জন্য সব কিছু দখলে রাখতে চায়। পরিণাম কখনোই ভালো হয় না। নেপোলিয়নের মতো বিশাল মানুষেরও হয়নি।
তাই দেখা যায়, নির্বাচন এলেই ক্ষমতালিপ্সুরা এই পদ্ধতিকে তথাকথিত আইনের এবং ঐতিহ্যের মোড়কে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। সেই চেষ্টায় অনৈতিক ও অগ্রহণীয় সব কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। অপর দিকে, মানবকল্যাণকামী চিন্তাশীলেরা শঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাদের দুর্বল সত্যও তখন ক্ষমতাসীনেরা সহ্য করতে পারে না। কারণ বিশাল শাসিত ও শোষিত গোষ্ঠী এই সত্যকে ধারণ করতে চায়। তাই জনগণ আধুনিক ক্ষমতার এই সিঁড়ি এগিয়ে এলেই ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতার দাপট ও অনাচারের চিত্র দেখতে পায়। এ সিঁড়ির নাম ‘নির্বাচন’।
বিখ্যাত মার্কিন টকশো হোস্ট নিল বুর্জট্স (Neal Boortz) তার চার দশকের রাজনৈতিক দর্শন এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণে First Rule of Political Dynamics-এ বলেছেন, ‘একজন ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদ তার ক্ষমতার কাল বাড়াতে চায়। যখন সে পুনর্নির্বাচনের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়, তখন সে হয় সবচেয়ে ভয়ঙ্কর।’ (A politician in power tends to remain power... when he is fixated on reelection he turns most dangerous)।
আসলে রাজনীতিবিদদের (অবশ্যই এক শ্রেণীর) চরিত্র বর্ণনা করা খুবই বিপজ্জনক; যদি তারা আবার ক্ষমতাসীন হয়। বিখ্যাত রোমান দার্শনিক মারকাস টালিয়াস সিসারো তার জীবন দিয়ে তা প্রমাণ করেন। একটি ধ্রুব সত্য তিনি উচ্চারণ করেছিলেন। Free Council of Rome-এ তিনি বক্তৃতা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘এমন কোনো সরকার হয়নি যেখানে মিথ্যাবাদী, চোর, ক্ষতিসাধক নেই।’ (Never was a government that was not composed of liars, malefactor, thieves)। তার বক্তৃতার শেষ প্রান্তে এক দর্শক তাকে খুন করে। সে লোক সরকারেরই একজন ছিল।
একটি উদ্ধৃতি থেকেই ধারণা করা যায়, পশ্চিমা ধারণা পরিচালিত ক্ষমতাবানেরা রাষ্ট্্র ও স্বার্থকে কেমনভাবে ব্যবহার করে। এটাকে ধারণ করে ক্ষমতাবানেরা কী করে, তাদের বিদগ্ধজনেরাই তার বর্ণনা দিয়েছেন। যাকে তারা তৃতীয় বিশ্ব বলে, এর অবস্থাটা শুধু অনুমেয়। তারা বিশ্ব বলেছে এ জন্য যে, এখানে তাদের আইনের মতো কোনো বাধানিষেধ নেই; যেমন ছিল না সেই রোমের জীবনে। রোমান আইনজ্ঞ কর্নেলিয়াস ট্যাসিটাস বলে গেছেন, ‘রাষ্ট্র যত দুর্নীতিপরায়ণ, সেখানে তত বেশি আইন।’ এটা খুঁজতে বেশি দূর যেতে হবে না।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন