ফলি মাছ ফুটুস কাটে এখানে, দম নেয় ২০ হাত দূরে। প্রধানমন্ত্রী রামপাল তাপবিদ্যুৎ কারখানার
ভিত্তিস্থাপন করলেন। কিন্তু তিনি রামপালে ছিলেন না,
ছিলেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়। বাংলাদেশের মানুষ সুন্দরবনের ধার ঘেঁষে
কয়লা জ্বালানো বিদ্যুৎকেন্দ্র চায় না, আন্তর্জাতিক
পরিবেশবাদীরাও এর ঘোরতর বিপক্ষে। তাদের মতে, কয়লা জ্বালানো
বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদূষণে সুন্দরবনের অনন্য ম্যানগ্রোভ অরণ্য ধ্বংস হয়ে যাবে, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে। বর্তমান
প্রধানমন্ত্রীকে ভিত্তি স্থাপনের রানী বলা চলে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে আমেরিকার ওয়াইল্ড
ওয়েস্টে আইন ছিল না। স্থানীয় প্রশাসকেরা নিয়ম করেছিলেন, আপনি যদি অন্য সবার আগে কোনো জমিতে গিয়ে একটা খুঁটি গেড়ে দেন তাহলে
সে জমি আপনার হয়ে যাবে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সে রকমেরই মনে করেন, তিনি একটা ভিত্তিপ্রস্তর গেড়ে দিলেই সে প্রকল্পটির অর্জন তার হয়ে
যাবে। বিগত পৌনে পাঁচ বছরে বহু ভিত্তি তিনি স্থাপন করেছেন, কিন্তু কয়টির কাজ সমাধা হয়েছে আর কয়টির কাজ শুরু হয়েছে জরিপ করতে
গেলে আপনাকে হতাশ হতে হবে। অথচ এই প্রধানমন্ত্রী আর এই সরকার ভিত্তি স্থাপনকে
নিজেদের সাফল্য হিসেবে জাহির করতে চান। কারণ বোধ হয় এই যে তারা পদ্মা সেতুটি গিলে
খেয়েছেন, তার কিছুটা অপপ্রভাব দূর করা
না গেলে নির্বাচনে কী মুখ দেখাবেন তারা। সে জন্যই সে দিন যখন রূপপুরে পারমাণবিক
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিস্থাপন করলেন, সরকারের অনুগত
মিডিয়া ঢাকঢোল পিটিয়ে সেটাকে সে প্রকল্পের উদ্বোধন বলে প্রচার করেছিল।
ভিত্তিস্থাপন আর প্রকল্পের উদ্বোধনের মধ্যে যে ব্যয়বহুল আর কষ্টসাধ্য
নির্মাণপ্রক্রিয়া অবশিষ্ট থাকে সেটা বেমালুম চেপে গিয়ে তারা দেশের মানুষকে বোকা
বানাতে চেয়েছে। শোনা যাচ্ছে, আগামী ক’দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আরো কয়েকটি অস্তিত্ববিহীন প্রকল্পের
ভিত্তিস্থাপন করবেন যেগুলোর মূলধন সংস্থান, স্থান নির্ধারণ, এমনকি নীলনকশাই হয়তো তৈরি হয়নি। সন্দেহ নেই যে, এই সরকারের সাফল্যের খাতার শূন্যপাতাগুলো মিথ্যা সাফল্য দিয়ে অংশত
পূরণ করা তাদের উদ্দেশ্য। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তি প্রধানমন্ত্রী রামপালে
গিয়ে স্থাপন করতে পারেননি। এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জাতীয় প্রতিরোধ খুবই
প্রবল। প্রতিবাদ জানাতে ঢাকা থেকে বিশিষ্টজনদের একটা লংমার্চ পথে থেমে থেমে রামপাল
পর্যন্ত গিয়েছিল। সর্বত্রই তারা স্থানীয় লোকদের প্রতিরোধ দৃঢ়তর করার চেষ্টা
করেছেন। ১৮ দলীয় জোটের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও বলেছেন, রামপালে কয়লা জ্বালানো বিদ্যুৎকেন্দ্র কিছুতেই হতে দেয়া হবে না।
রামপালে গেলে শেখ হাসিনার প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ার ভয় ছিল। হয়তো সে কারণেই তিনি
কাজটা রিমোট কন্ট্রোলে সারার চেষ্টা করেছেন। রিমোট কন্ট্রোলের নির্বাচন? রিমোট কন্ট্রোলের আরেকটা কাজও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রামপালের
ভিত্তিস্থাপন উপলক্ষে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সাথে ভিডিও লিঙ্কে
কথা বলেছেন। তার মাত্র আগের সপ্তাহে জাতিসঙ্ঘে তিনি ড. মনমোহন সিঙের সাথে সাক্ষাৎ
করেছেন। নতুন এমন কী জরুরি ব্যাপার ঘটল যে ভিডিও লিঙ্ক করে চমক আর চটক দেখাতে হলো
তাকে? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে
বলতে চেয়েছিলেন; আপনারা যা যা চেয়েছেন আমি
দিয়ে দিয়েছি, এবার আপনারা অনুগ্রহ করে
আমাকে ক্ষমতায় রাখার ব্যবস্থাটা করুন কোনো মতে। ভিত্তি স্থাপনের এই হিড়িক আর
ত্রস্ততা এবং আরো কিছু ব্যাপারস্যাপার থেকে মনে হচ্ছে, শেখ হাসিনা আরো একটা চমক দেখাতে যাচ্ছেন। জামায়াত-শিবিরকর্মীদের
গ্রেফতার বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিএনপি ও ১৮ দলের জোটের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের
নজরদারিও বেড়ে গেছে। শোনা যাচ্ছে ঈদের পরপরেই তাদেরও গ্রেফতার করে জেলে পোরা হবে।
সরকারি কর্মচারীদের জন্য হঠাৎ করে উদারভাবে ২০ শতাংশ মহার্ঘভাতা ঘোষণা করা হয়েছে।
এ দিকে প্রধানমন্ত্রী ও তার সামন্তরা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে
হুঁশিয়ারি ও গালিগালাজ তুঙ্গে তুলেছেন। লক্ষণীয় যে,
শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নতুন কোনো অপবাদ
আবিষ্কার করতে পারছেন না। এখন তিনি নিজের অপকর্মগুলো একে-দু’য়ে খালেদা জিয়ার ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছেন। এসব কি আপনাদের আসন্ন
কোনো চমকের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে না? মনে করা যেতে
পারে যে, ২৫ অক্টোবর থেকে নতুন আন্দোলন
করার সুযোগ খালেদা জিয়াকে দিতে চান না শেখ হাসিনা। সম্ভবত সে তারিখের আগেই তার
একদলীয় নির্বাচনের (এবিএম মূসার ভাষায় রিমোট কন্ট্রোলের নির্বাচন) ঘোষণা দিয়ে
দেবেন শেখ হাসিনা। সে জন্যেই ধর-পাকড়ের হিড়িক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার তাদের
একদলীয় নির্বাচনে একদলীয় বিজয়ের পথের কাঁটাগুলো সরিয়ে ফেলতে চায়। এটাই যদি সরকারের
পরিকল্পনা হয় তাহলে গোটা সিনেরিয়োটা কেমন হতে পারে?
স্বল্পতম সময়ের ব্যবধানে তারা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে। সরকার
জানে যে, ভোট দিতে বেশি লোক আসবে না।
সময়ের স্বল্পতার ও নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে মতানৈক্যের কারণে ভারত ছাড়া আর কোনো দেশ
থেকে পর্যবেক্ষকও সম্ভবত আসবেন না। ডুপ্লিকেট ব্যালট বাক্সগুলো আগে থাকতেই ভরাট
করে রাখা হবে। খালেদা জিয়া নির্বাচন প্রতিরোধ করার জন্য কমিটি গঠনের ডাক দিয়েছেন।
দলাদলির কারণে সরকারের শর্ট-নোটিশ নির্বাচনের আগে কমিটিগুলো গঠিত না ও হতে পারে।
হলেও ২০০৮ সালের মতো আওয়ামী লীগ ক্যাডার দিয়ে ভারাক্রান্ত গোয়েন্দা সংস্থার
সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য এবং সাধারণভাবেই ১৮ দলের জোটের
নেতাকর্মীদের ভয় দেখিয়ে আসবে, যাতে তারা ভোট
কেন্দ্রের ধারেকাছেও না যান। ষড়যন্ত্রের সম্ভাব্য সিনেরিয়ো তা সত্ত্বেও সাহস করে
যারা ভোটকেন্দ্র যাবেন কী দেখবেন তারা? তৃতীয় শক্তি
যদি ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে সরকারের ডাকে সাড়া নাও দেয় তাহলেও দলীয়কৃত পুলিশ, র্যাব, আওয়ামী লীগের ক্যাডার আর
বিজিবি দিয়ে কেন্দ্রগুলো ঠেসে রাখবে সরকার। বাংলাদেশে বহু লোক বিশ্বাস করে, বিডিআর বিদ্রোহের সময় এবং গত ৫ মে ভোর রাতে শাপলা চত্বরের অভিযানে
ভোল-বদলানো অন্যশক্তিও তৎপর ছিল। সে সবের পুনরাবৃত্তি যে সরকারের একতরফা ভোটের
দিনেও হবে না কে জানে? এখন আবার বিএসএফ-বিজিপি যৌথ
টহলের কথাবার্তা শুরু হয়েছে। এই যৌথ টহল কি ভোটের দিন নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতেও
প্রসারিত হবে? তারপর প্রশ্ন ওঠে ফলাফল নিয়ে।
বিএনপি’র ভেতরেও কিছু গদি ও অর্থলোভী
আছেন, যারা খালেদা জিয়ার বয়কটের ডাক সত্ত্বেও স্বতন্ত্র
প্রার্থী হিসেবে হলেও নির্বাচন প্রার্থী হবেন। তাদের দু-একজন এবং বামের জোটের
জনকয়েককে বিজয়ী ঘোষণা করে সরকার ফলাফলের ঘোষণা দেবে। ভারত ছাড়া বহু দেশের সরকারই
শেখ হাসিনার একতরফা নির্বাচনের ফলাফলকে বিশ্বাসযোগ্য মনে হলেও অবশেষে তারা সরকারের
ঘোষিত ফলাফলকে গ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা দেবে। বিগত দু-তিন বছরে বিএনপি এবং ১৮ দলের
জোটের নেতারা কূটনীতিকদের সাথে বহু বৈঠক করেছেন,
বহু খানাপিনা করেছেন। কিন্তু তাতে নিরপেক্ষ নির্বাচন এগোনোর বদলে
পিছিয়ে যাচ্ছে বলেই মনে হয়। খানাপিনা আর বৈঠকের কোনো মূল্য থাকলে সেই কবে
তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি স্বীকৃতি পেত, খালেদা জিয়ার
প্রধানমন্ত্রী হওয়া সুনিশ্চিত হয়ে যেত। আমার দৃঢ়বিশ্বাস, কূটনীতিকদের মতামতকে বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে বিএনপি এবং ১৮ দলের
জোট গুরুতর ভুল করেছে। সরকার পতনের আন্দোলন যখন তুঙ্গে উঠেছে, কূটনীতিকদের পরামর্শ শুনতে গিয়ে বিরোধী জোট তখন ক্ষ্যান্ত দিয়েছিল।
আমার তখন ছোটবেলায় পড়া সিরাজউদ্দৌলা নাটকের পলাশীর যুদ্ধের দৃশ্যের সে কথাগুলো মনে
হয়েছে। মীরজাফরের লোকেরা সাধারণ সৈনিকদের মধ্যে প্রচার করছিল, ‘শোন ওহে বন্ধুগণ, করো অস্ত্র
সংবরণ। নবাবের অনুমতি কালি হবে রণ।’ এ কলামে
একাধিকবার আমি বিরোধী জোটকে সতর্ক করেও দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আন্দোলনে একবার ভাটা পড়লে সে আন্দোলন নতুন করে জাগিয়ে তোলা কঠিন
হবে। ২০০৮ সালের মাস্টারপ্ল্যানের নির্বাচনে গদি দেয়ার বিনিময়ে ভারত শেখ হাসিনার
সরকারের কাছ থেকে অনেক কিছু আদায় করে নিয়েছে। শেখ হাসিনা দিল্লিতে স্বাক্ষরিত গোপন
চুক্তিগুলোতে কী কী দিতে রাজি হয়ে এসেছিলেন আমরা জানি না। সেসব চুক্তির বিবরণ কখনো
প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি সংসদ সদস্যদের কাছেও নয়। কিন্তু আমরা দেখেছি এশিয়ান হাইওয়ে, বিনা শুল্কে আমাদের সড়ক, রেল ও নদী পথে
করিডোর এবং আমাদের সমুদ্র বন্দর দুটোর অবাধ ব্যবহার দিল্লির সরকার আদায় করে
নিয়েছে। বাংলাদেশকে উলফাদের সাথে ঠেলে দেবেন না ’৭১-এ আমাদের
মুক্তিযোদ্ধারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ভারত তাদের পাকিস্তানের
হাতে তুলে দেয়নি। উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু মুক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশের কারাগারে হলেও
আশ্রয় পেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার সরকার একে-দুয়ে তাদের ভারতের হাতে ও সম্ভবত নিশ্চিত
মৃত্যুর মুখে তুলে দিয়েছে। সর্বশেষ আমাদের সুন্দরবন,
আমাদের পরিবেশের সর্বনাশ করে শেখ হাসিনা রামপালে কয়লা-জ্বালানো
বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অধিকার ভারতের হাতে তুলে দিলেন। কিন্তু এখানেই ভারতের
চাওয়ার শেষ নেই। বাংলাদেশকে হয় পুরোপুরি ভারতের সাথে মিশিয়ে দেয়া, নয়তো প্রাথমিকভাবে সিকিমের মতো করদরাজ্যে পরিণত করা ভারতের লক্ষ
বলে বহু দিন ধরেই পরিষ্কার হয়ে গেছে। শেখ হাসিনাকে আরেক মেয়াদে গদিতে রাখা গেলে সে
উদ্দেশ্যও সফল হবে বলে দিল্লি আশা করতে পারে। কিন্তু তার পরিণতি সম্বন্ধে ভারতের
পূর্ণ উপলব্ধি আছে কি না পরিষ্কার নয়। বাংলাদেশের মানুষ এবং বিদেশের মিডিয়া বেশ
কিছু দিন আগে থাকতেই বলে আসছে, আওয়ামী লীগ
পুরো গণসমর্থনহীন হয়ে গেছে। ভারতীয় মিডিয়া তো পরিষ্কার বলে দিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে। এমতাবস্থায় পচন ধরা
বর্তমান সরকারকে ফরমালিন ইনজেকশন দিয়ে আরো এক মেয়াদে গদিতে রাখার অর্থ হবে ভারত
বাংলাদেশের মানুষের সাথে বন্ধুত্ব এবং সুসম্পর্ক রাখার ইচ্ছা পুরোপুরি পরিত্যাগ
করেছে। শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের একপর্যায়ে রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে
প্রণব মুখার্জি নাকি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডকে সতর্কাবস্থায় রাখার
নির্দেশ দিয়েছিলেন। ভারতের বিশাল সামরিক শক্তির ভয় দেখানো অবশ্যই শেখ হাসিনার
সমর্থকদের একটা বড় ভরসা। একাত্তরেও পাকিস্তানিরা তাদের সমরশক্তির ভয় দেখিয়ে বাংলাদেশীদের
গণতন্ত্রের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। তখন যেসব ছেলে
পাকিস্তানিদের ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া গাড়ি চলাচল অসম্ভব করে দিয়েছিল তারা এবং তাদের
উত্তরসূরিরা এখনো বাংলাদেশেই আছে। আর নদীপথ ও সড়কগুলো অচল করে দেয়ার টেকনিকও
হারিয়ে যায়নি। জোর করে কাউকে আবারো গদিতে বসিয়ে দিল্লির সরকার যদি বাংলাদেশের
গণতন্ত্রের শিখাটি নিভিয়ে দিতে চায় তাহলে অবশ্যই এখানে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ শুরু
হয়ে যাবে এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তারা হাত
মেলাবে। বিচ্ছিন্নতাবাদে জর্জরিত ভারত উত্তর-পূর্বের সাত বোন নামে পরিচিত
রাজ্যগুলো সুবিচারের আশা পরিত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছে চার দশকেরও বেশি
আগে। ভারত তার বিশাল সমরশক্তি দিয়েও সে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেনি। বাংলাদেশের ভেতর
দিয়ে সে করিডোর নিচ্ছে সাত বোনের বিরুদ্ধে দলন প্রক্রিয়া শক্তিশালী এবং চীনের
বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে অরুণাচলে হিমালয়ের ওপর ভারী
অস্ত্রশস্ত্র পাঠানোর পথ সুগম করতে। শুধু উত্তর-পূর্বেই নয়, দিল্লি সরকারের সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে ভারতের অন্যান্য
অঞ্চলেও বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। বিহার ভেঙে ঝাড়খণ্ড হয়েছে।
পাঞ্জাব সেই কবে দুই টুকরো হয়ে হরিয়ানার জন্ম দিয়েছে। ১৯৮৪ সালের সামরিক অভিযানের
পরেও শিখদের পৃথক রাজ্যের দাবি মাঝে মধ্যেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। অন্ধ্রপ্রদেশ
মাত্র সে দিন দুই ভাগ হলো, জন্ম হলো নতুন রাজ্য
তেলেঙ্গানার। জলপাইগুড়ি আর দার্জিলিংকে পৃথক করে গোর্খাল্যান্ড করারও আন্দোলন
হচ্ছে। লক্ষ করার বিষয় যে, এগুলোর প্রত্যেকটি দাবি
বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সেসব দাবিতে অনিবার্যভাবেই সন্ত্রাস ও হানাহানি হয়েছে। এই
যেখানে অবস্থা সেখানে খণ্ডিত ভারতবর্ষকে আঠা দিয়ে জোড়া লাগানোর স্বপ্ন আহাম্মকেই
দেখতে পারে। বাংলাদেশের তথাকথিত প্রগতিবাদী পুঁটি মাছদের তড়পানি তারচেয়েও বড়
মূর্খতা। সাত বোন দিল্লির শিকল কাটিয়ে বেরিয়ে যাবেই। সে প্রক্রিয়ায় যদি
বাংলাদেশকেও ঠেলে দেয়া হয় তাহলে যে বিভীষিকা সৃষ্টি হবে দিল্লির কর্তারা এখনো তা
বুঝে উঠতে পারেননি। এবং তার সীমানা ছুঁয়ে সে রকম তোলপাড় আর উথাল-পাথাল দেখা দিলে
বেইজিং নীরব হয়ে থাকবে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। খালেদা জিয়া তার সিলেটের
ভাষণেও উল্লেখ করেছেন, চীন বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা
করতে চায়, বাংলাদেশের বন্ধু হতে চায়।
খালেদা জিয়া এখন কী করবেন? খালেদা জিয়া এখন কী করবেন? ঈদের জন্য দেরি না করেই একটা ঘোষণা তাকে প্রচার করতে হবে। যে
মুহূর্তে সরকার শেখ হাসিনার অধীনে একদলীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেবে সে মুহূর্ত থেকেই
নতুন কোনো নির্দেশের জন্য অপেক্ষা না করে সমর্থক ও কর্মীদের লাগাতার কর্মসূচির
মাধ্যমে গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী ঘোষণা অচল করে দিতে হবে। সে মুহূর্ত থেকে প্রতিরোধ
গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতারা টিটকারি করেন,
বলেন যে বিএনপিকে আন্দোলন করা শিখতে হবে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে।
তবে তাই হোক। লগি-লাঠি-বৈঠার আন্দোলনের ডাকে ২০০৬ সালে অক্টোবরে বাংলাদেশকে বন্ধ
করে দেয়া হয়েছিল। সরকারের নতুন চমকের জন্য দেরি না করে এখন থেকেই বিরোধীদলের পক্ষ
থেকে আগাম সে ঘোষণা দিয়ে রাখতে পারেন। তা না হলে আমার ভয় হচ্ছে, ক্ষমতা হয়তো চিরতরে বিএনপির নাগালের বাইরে বাকশালী স্বৈরতন্ত্রের
হাতে চলে যাবে।
'আমার মনে হয় আবার ক্ষমতায় গেলে তিনি নতুন ভবন খুলে মানুষ হত্যা করবেন, মা-বোনের ইজ্জত নিয়ে দেশকে নতুনভাবে ধ্বংস করবেন' বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনার এই উক্তি কি আপনি শালীন মনে করেন ?
FIND US on FB
জনপ্রিয় লেখাসমুহ
-
আবার সেই লগি-বইঠার হুংকার !!! দেশবাসী সাবধান !!! জালিমরা আবার রক্ত পিয়াসের মরন নেশায় নেমেছ । বাচতে হলে হয় প্রতিরোধ করুন জীবনের তরে না...
-
দেশজুড়ে শিক্ষাঙ্গনে অপ্রতিরোধ্য সন্ত্রাস কায়েম করেছে ছাত্রলীগ। নিয়োগবাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নারীর শ্লীলতাহানিসহ পাবলিক ...
-
* যৌথ বিনিয়োগের বিষয়টি আমি জানি না-নৌ-পরিবহন মন্ত্রী * এ ধরনের বিনিয়োগ সম্পর্কে বোর্ড কিছু জানে না -বিনিয়োগ বোর্ড নির্বাহী * এই ঘটনা স...
-
ধূমকেতু : ’৯১-এ ক্ষমতায় আসার পর মেয়াদ শেষে ’৯৬ সালে বিএনপি তার সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চাইলে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগসহ অন্য...
-
বেগম খালেদা জিয়ার প্রকৃত নাম খালেদা খানম, ডাক নাম পুতুল। আগস্ট ১৫, ১৯৪৫ সালে জলপাইগুড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। তিন বোন এবং দুই...
-
দু’টি চাঞ্চল্যকর খবর ক্ষণিকের জন্য গণমাধ্যম তোলপাড় করে দেশ ও জাতির স্মৃতি থেকে দ্রুত মুছে যাচ্ছে বলে মনে হয়। খবর দু’টি হচ্ছে বাংলাদেশ থ...
-
বগুড়া শহরের প্রসিদ্ধ হোটেলের একটি আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল। ব্যবসার পাশাপাশি হোটেল কর্তৃপ ১০০ বছর ধরে রাতে ফ্রি খাবার দিয়ে মুসাফ...
-
আজ ১ সেপ্টেম্বর , ১৯৭৮ সালের এই দিনে জাতির মুক্তির লক্ষে স্বাধীনতা যুদ্ধের সুমহান ঘোষক , বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা , সংবাদপত্রের স্...
-
“...আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে যে বিজ্ঞানী - তা তো জানা ছিলো না!” [এবার থাকছে শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় কে নিয়ে ধারাবাহ...
-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম জাতিসঙ্ঘের ৬৮তম সাধারণ অধিবেশনেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা জাতিসঙ্ঘে ট...
Ad
মোট পৃষ্ঠাদর্শন
প্রজন্মের ভবিষ্যত
Blogger দ্বারা পরিচালিত.
আমার অনুপ্রেরনা
জাতীয়তাবাদী শক্তির কান্ডারী
আমার সম্পর্কে
পুরানো যত লেখা
-
►
2016
(170)
- ► সেপ্টেম্বর (8)
- ► ফেব্রুয়ারী (12)
-
►
2015
(299)
- ► সেপ্টেম্বর (21)
- ► ফেব্রুয়ারী (27)
-
►
2014
(654)
- ► সেপ্টেম্বর (37)
- ► ফেব্রুয়ারী (82)
-
▼
2013
(1305)
-
▼
অক্টোবর
(99)
- প্রতিহিংসার রাজনীতি বনাম জাতীয় সংহতি
- তত্ত্বাবধায়ক দাবির আদি নেতাদের বন্দি রেখে অর্থবহ ...
- দুই নেত্রীর টেলিসংলাপ এবং সংবিধান ও আইনের নির্দেশনা
- যে কারণে সরকার এত অনীহ
- সফল সংলাপের জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিবেশ
- বল আবার প্রধানমন্ত্রীর কোর্টে
- ক্ষমতা এবং আরো ক্ষমতা
- রাজনৈতিক দলন-পীড়ন এবং মিডিয়া সংস্কৃতি
- চুল তত্ত্ব থেকে ফোন তত্ত্ব : দুই নেত্রী নয় সংকটের...
- দুই নেত্রীর ফোনালাপ
- প্রধানমন্ত্রীর জন্য সঠিক কাজ একটাই এখন
- একটি নৈশভোজ ও একটি জাতির ভাগ্য
- নিছক সংলাপ নয় কেয়ারটেকার ব্যবস্থার পুনর্বহাল লক্ষ্য
- হত্যা হামলা ও গ্রেফতার বন্ধ করে আলোচনার পরিবেশ সৃষ...
- বেগম জিয়ার প্রস্তাব অবশ্যই গ্রহণযোগ্য
- সুশীল রাজনীতি, সংলাপ ও সহিংসতা
- গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দল
- সর্বদলীয় সরকার নামের নয়া ফাঁদ
- জাতীয়তাবাদীদের বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র
- তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে সৃষ্ট সঙ্কট ও জনস্বার্থ
- অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ৫ বছর
- সংলাপের সমস্ত পথ রুদ্ধ : সংঘাতের মুখে বাংলাদেশ
- টেলিফোনের রাজনীতি বনাম আন্দোলন
- তালগাছের মোহ ছাড়তে হবে
- ‘সুশীলদের টকশো এবং সরকার সমর্থকদের গাত্রজ্বালা’
- সমঝোতা কি ‘হনুজ দূরওয়াস্ত’- আসলেও অসম্ভব?
- কোন পথে রাজনীতি ও নির্বাচন
- একটি কলঙ্কিত ২৮ অক্টোবর ও লগি-বৈঠার নৃশংসতা
- ২৫ অক্টোবরের আগে ও পরে
- সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করলে সঙ্কট আরো মারাত্মক হবে
- প্রধানমন্ত্রীর টেলিভাষণ বনাম দেশের করুণ বাস্তবতা
- আদৌ কি হবে ভোট?
- প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ হতাশাব্যঞ্জক, অসত্য ও চাতুর্যপ...
- নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় সংসদ অধিবেশন চলতে পারে কি?
- বেগম জিয়ার কাছে জাতির প্রত্যাশা
- নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় সংসদ অধিবেশন চলতে পারে কি?
- তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যত ভয়
- উন্নয়নের ‘ধারাবাহিকতা’ রক্ষা ও ভাঙা নৌকায় পুনরায...
- বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনী প্রস্তাব
- পরাবাস্তব ডিজিটাল জগৎ বনাম অ্যানালগ বাস্তবতা
- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা
- প্রধানমন্ত্রীর সর্বদলীয় সরকার ও দেশের রাজনৈতিক বা...
- সংঘাত নয় শান্তি-সমৃদ্ধির জন্য দরকার সমঝোতা
- সংবিধান থেকে সরে এলেন প্রধানমন্ত্রী
- দেশে খুনের মহড়া : সরকার ঘুমিয়ে আছে?
- তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি রক্তপাতের মাধ্যমে জনতার অর্জন
- সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান
- সরকার যখন জনভয়ে ভীত
- সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব, না ফাঁদ?
- বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য দরকার বহুদলীয় মিডিয়া
- ঈমানদার হতাশ হতে পারে না
- বিবেকযন্ত্রণা ও দেশের রাজনীতি
- ছায়াযুদ্ধ এবং নির্বাচন
- ইভেন লেভেল প্লেইং ফিল্ড প্রসঙ্গে
- সমঝোতা না সংঘাতের ভয়ঙ্কর পরিণতি
- তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা পুনর্বহাল সরকারের নৈতিক দায়...
- ত্যাগের মহিমায় জীবন অর্থবহ হয়ে উঠুক
- সক্রেটিস থেকে কাদের মোল্লার বিচার প্রক্রিয়া একই রকম!
- শুধু উৎসব নয় ঈদুল আজহা আত্মত্যাগের অঙ্গীকার করার দিন
- উন্নয়নের ‘ধারাবাহিকতা’ রক্ষা ও ভাঙা নৌকায় পুনরায...
- ধর্মের কোনো বিকল্প নেই
- বিভেদের রাজনীতি ও চলমান সরকার
- ঈদুল আযহার শিক্ষা
- এটি কোনো নতুন কথা নয়
- সংশোধিত আইনটি ‘কালাকানুন’ ছাড়া কিছু নয়
- আল্লাহ তোমার দ্বীনের বিজয় পতাকা তুলে দাও ওদের হাতে
- সংসদের মেয়াদ বৃদ্ধি, সংসদ বাতিল এবং সংবিধানের ৫৭,...
- কিছুই বিশ্বাস হতে চায় না
- একটি নির্বাচন : অতঃপর...
- আরো বেশিদিন ক্ষমতায় থাকার ফন্দি-ফিকির
- ধর্মীয় বিষয়ে ধর্মনিরপেক্ষ আচরণ কেন?
- এই পুলিশ কি সেই পুলিশ?
- আওয়ামী লীগের রাজনীতি
- নাস্তিক্যবাদী ধ্বংসাত্মক চিন্তা থেকে বিপথগামী মানু...
- ২৫ অক্টোবরের পর পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে?
- নিয়োগ ও উদ্বোধনের হিড়িক
- আধুনিকতার শিকারে ঐশী আজ করুণার পাত্র
- ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার এখনই সময়
- গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ
- স্বাধীন দেশের প্রশাসনে জমিদারতন্ত্রের কালোছায়া
- স্বাধীন দেশের প্রশাসনে জমিদারতন্ত্রের কালোছায়া
- যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গ
- নির্বাচন ও রাজনীতি
- সেকুলার রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার
- নির্বাচনবাদী গণতন্ত্র বনাম সাংবিধানিক গণতন্ত্র
- প্রতিহিংসা সন্ত্রাস কেলেঙ্কারি ক্ষমতা দীর্ঘায়িত ক...
- ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি এবং রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কে...
- দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক
- নির্বাচনবাদী গণতন্ত্র বনাম সাংবিধানিক গণতন্ত্র
- বাকি হাসিটুকুও ফুরিয়ে যেতে পারে
- সরকার যখন জনমতের বিপরীতে
- একটি রায় নিয়ে এতো ঘটনা আর বিতর্কের কথা অতীতে কখন...
- ক্ষমতাসীনেরা কি দায়ী নয়?
- ভারত এ লজ্জা রাখবে কোথায়?
- আবারো প্রশ্নবিদ্ধ রায়!
- শ্রমিকদের অধিকার কি বাস্তবে রয়েছে?
- দারুণই দেখালেন বটে প্রধানমন্ত্রী
- সমাধানের পথ আগের মতোই কণ্টকাকীর্ণ
- ঘরের কথা বাইরে কেন? বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম
- ► সেপ্টেম্বর (107)
- ► ফেব্রুয়ারী (95)
-
▼
অক্টোবর
(99)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন