সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৩

বিভেদের রাজনীতি ও চলমান সরকার


সত্যের কথা বলে বা প্রচার করে নির্যাতিত বা নিহত হননি এমন মহাপুরুষ জগতে খুব কম আছেন। রাজা রাজনীতি রাষ্ট্র সমাজপতি কেউই সত্যকে বাঁচাতে বা বাঁচতে দিতে চান না। রাজা রাজ্যের জন্য সত্যকে হত্যা করেন। রাষ্ট্রও সত্যের ভয়ে সত্যকে কারাগারে রাখে বা সহ্য করতে না পারলে হত্যা করে। রাষ্ট্র নিজেকে সত্যের হাত থেকে রা করতে চায়। রাজাও নিজের স্বার্থে সত্যকে হত্যা করেছেন অতীতে এবং এখনো করছেন। আমার নিজের ব্যাখ্যা হলো সত্য আর রাজনীতি, রাজা ও রাষ্ট্র একসাথে চলতে পারে না। প্রশ্ন হচ্ছে যারা রাজ্য চালান বা রাষ্ট্র চালান তারা কারা? উত্তর হচ্ছে তারা একদল মানুষ, যারা জনগণের সেবা বা কল্যাণের কথা বলে রাজ্য বা রাষ্ট্র মতা দখল করে। মতায় আরোহণের পর রাষ্ট্র বা রাজ্য নামক প্রতিষ্ঠানের প্রহরী হয়ে যায়। তখন তাদের প্রধানতম কাজ হয়ে যায় রাজ্য বা রাষ্ট্রকে জনগণের হাত থেকে রা করা। এ জন্য জনগণের নামে তারা সংবিধান ও আইন প্রণয়ন করে। যারা আইন প্রণয়ন করেন তারাও রাষ্ট্র নামক মহাকল্যাণকামী ফ্রাংকেস্টাইনের দাসে পরিণত হয়। তখন তারা আর জনগণকে দেখতে পান না। দেখতে পান শুধু রাষ্ট্রকে এবং যারা রাষ্ট্রপরিচালনা করেন তাদেরকে। জনগণের কিছু অংশকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বা নানা ধরনের সুবিধা দিয়ে নিজেদের পে রাখার চেষ্টা করে। কালক্রমে এক ধরনের মতালোভী শ্রেণীর জন্ম হয়। এই শ্রেণীই নানা দল ও মত হয়ে মতায় আসে আর মতা থেকে বাইরে যায়। এদের সাথে যোগ দেয় ব্যবসায়ী বুদ্ধিজীবী ও প্রশাসনিক যন্ত্র। তাই তো আওয়ামী লীগের নাসিম সাহেব বলেছেন, সরকারি কর্মচারীরা সরকারের কথা না শুনলে বাড়ি পাঠিয়ে দেবেন। এর মানে আওয়ামী লীগ আর সরকারের ভেতর এখন আর কোনো ফারাক নেই। ১৯৯৬ সালে আজকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তখনকার আমলা ম খা আলমগীর ও সাঙ্গোপাঙ্গরা বলেছিলেন, সরকারি কর্মচারীরা কারো ভৃত্য নয়। এমনকি তারা সরকারেরও কর্মচারী নয়। তারা রাষ্ট্রের সেবক। তাই কোনো সরকারের কথা শুনতে তারা বাধ্য নন। তখন আকবর আলি খানও জনতার মঞ্চকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। ১৯ জন সচিবকে নিয়ে তিনি রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করেছিলেন। নাসিম সাহেবের বক্তব্যের কোনো প্রতিবাদ সুশীলসমাজ এখনো করেননি। কথা বলছি সত্যের অবস্থান নিয়ে। বেশ কিছু বছর আগে নামজাদা সাংবাদিক মরহুম ফয়েজ আহমদ সত্যবাবু মারা গেছেন নামে একটি বই লিখেছেন। বইটা খুবই নাম করেছিল। বইটা ফয়েজ ভাই লিখেছিলেন বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেেিত। সত্যি কথা বলতে কি, সত্য সব সময়েই সরকার ও রাষ্ট্রের জন্যে বিপজ্জনক। রাষ্ট্র কখনো সত্য নির্ভর নয়। রাষ্ট্র বা সরকারের প্রধান কাজই হচ্ছে সত্যকে সহ্য না করা। আধুনিক বিশ্বে সব সরকারই সত্যকে গোপন রাখতে চায়। এমনকি আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার কাঠামো নিজেকে রার জন্য কখনো কখনো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীকেও হত্যা করে থাকে। চলমান সময়ে আমরা উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জ ও সিআইয়ের কর্মচারী স্নোডেনের অবস্থা দেখতে পাচ্ছি। সত্য প্রকাশ করার অপরাধেই দুজনই পলাতক। দুজনকেই নিজ দেশের সরকার খুঁজে বেড়াচ্ছে। ওরা নাকি রাষ্ট্রের গোপনীয় বিষয় ফাঁস করে দিয়েছে। গোপন বিষয় ফাঁস করার অপরাধে রাষ্ট্র বহু মানুষকে হত্যা করে। এই তো কদিন আগে নিউ ইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর স্যুটে গিয়ে একান্তে বলেছেন এমন কথা গোপনে রেকর্ড করে ধরা পড়েও পার পেয়েছেন বহুলপরিচিত সাংবাদিক মুন্নী সাহা। একই আদর্শ ও মতের প্রিয়জন হিসেবে হয়তো অনেক না বলা কথা বলেছেন মুন্নীর কাছে। মুন্নী নাকি সেসব না বলা কথা জানিয়ে গোপনে রেকর্ড করেছেন। এটি নাকি সাংবাদিকতার ইথিকসে পড়ে না। তাই সরকারি কর্মচারীরা মুন্নীর গোপন ভিডিও ক্যামেরা বা ক্যাসেটটা জব্দ করেছে। একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক নাকি মুন্নীকে ধরিয়ে দিয়েছে। তা হলে প্রধানমন্ত্রী কি এমন কথা বলেছিলেন, যা প্রকাশ করা যাবে না। আমার প্রশ্ন হলো, মুন্নীকে সাংবাদিক জেনেও প্রধানমন্ত্রী তার কাছে প্রকাশ যোগ্য নয় এমন কথা বলবেন কেন? এখন মুন্নীকে দেশে-বিদেশে অনেকেই বলতে পারে যে আপনি ওই কথাগুলো নিয়ে একটা রিপোর্ট তৈরি করেন আমরা ছাপব। সরকার পরিবর্তন হয়ে গেলে মুন্নী এমন কাজ করতেও পারেন। আমরা রিপোর্র্টার হিসাবে ৩০-৪০ বছর আগে যা বলতে পারিনি, তা এখন অনেক সময় কলামে লিখছি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমরা সবাই ভাবতে শুরু করলাম, এখন সরকারের কী সমালোচনা করব। দেশ আমাদের, নেতাও আমাদের। সবই তো আমাদের। শোষক নেই শোষণ নেই, শোষিতও নেই। সদ্য স্বাধীন দেশ, সবাই মিলে দেশ গড়ে তুলব। সাধারণ মানুষ রাষ্ট্র বা সরকারি ব্যবস্থার খুঁটিনাটি বুঝতে পারে না। তারা ভেবেছে পাকিস্তান নেই, সব কিছুই এখন আমাদের, বাঙালিদের। স্বাধীন দেশের মানুষের সহজ সরল এই আকাক্সার সাথে রাষ্ট্র আর সরকারের চিন্তা মিল খায়নি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধু নির্বাচনী প্রচারণায় যা বলেছিলেন বা ওয়াদা করেছিলেন তা সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত বাংলাদেশে চটজলদি করে বাস্তবায়ন করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক প্রতিপ তা বুঝতে নারাজ ছিল। সর্বত্র আওয়াজ উঠে গেল নাই নাই। কবি রফিক আজাদ লিখলেন, ‘ভাত দে হারামজাদা, না হয় মানচিত্র খাবো। মানে ভুখা মানুষের কাছে মানচিত্রের তেমন দাম নেই। অমর্ত সেন বলেছেন, চাল গম ছিল কিন্তু বিলি বণ্টনব্যবস্থা ঠিক ছিল না। তিনি বললেন, শুধু গুদামে প্রচুর খাদ্য থাকলেই চলবে না, তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। তখন বঙ্গবন্ধুর অতি আপন আমেরিকাপন্থী কাগজ জাল পরানো ভুখা বাসন্তীর ছবি ছেপেছে। সময় সুযোগ বুঝে অতি আপনজনেরা কেউই বঙ্গবন্ধুর সাথে ছিল না। শুনেছি, তিনি নিহত হলে কেউই মুখ খোলেনি। অনেক আপনজন তাকে অশোভন শব্দে আখ্যায়িত করেছে। আমার আজকের কলামের মূল বিষয় হলো সব যুগেই সত্যকে নিহত হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আমলে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হাজার মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এখন মানবতাবিরোধী বলে যাদের বিচার হচ্ছে, তারা যদি বলে মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারীদেরও বিচার হতে হবে তখন আমরা কোন সত্যকে গ্রহণ করব। যে নামেই হোক বা যে অভিযোগেই হোক নিহত হচ্ছে দ্বিখণ্ডিত জাতির সন্তানেরা। ১৬ কোটি মানুষের ভেতর হাজার মানুষ আছে যারা চুরি চামারি, মাস্তানি, ছিনতাইকারী, মতার জোরে সম্পদ লুণ্ঠনকারী ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত রয়েছে। এ জন্য দেশে আইন আদালত আছে, পুলিশ আছে। এমন কোনো আইন এখনো তৈরি হয়নি যে চোর-ডাকাতেরা ভোটার হতে পারবে না, জাতীয় পরিচয়পত্র পাবে না, পাসপোর্ট পাবে না। এমনকি চোর-খুনি হিসেবে প্রমাণিত হওয়ার পরও তারা ভোটার ও নাগরিক। রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশ এখন বিভক্ত। রাজনৈতিক ভাষায় বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের সপ শক্তি আর বিপ শক্তি। উভয়প সামাজিক জীবনে আত্মীয়তা করে। সেখানে কোনো রাজনীতি নেই। এমনকি জামায়াতের নেতাদের সন্তানদের সাথে আওয়ামী নেতাদের সন্তানদের বিয়েশাদি হচ্ছে। অনেকে পাকিস্তানি খানদানি পরিবারের সাথেও ইদানীং আত্মীয়তা করছেন। এমনকি সাধারণ মানুষ বলাবলি করে প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই সাহেবও একজন রাজাকার। এমনকি বাংলাদেশে মুক্তবুদ্ধির নামী-দামি মানুষেরা ধর্মের বাইরে গিয়ে মূর্তি পূজারিকেও বিয়ে করেন। এখন তো ধর্মহীন বিয়ের জন্য কাজীর অফিস খোলা হয়েছে। বিয়ে নিবন্ধনের জন্য ধর্মীয় পরিচয় দিতে হবে না। শুধু ফি দিলেই হবে। কাজী যেকোনো ধর্মের হতে পারবেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি যারা দলমত নির্বিশেষে জাতির উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাবে। না তা হয়নি। ৪২ বছরে জাতি এখন ষোলআনা বিভক্ত। ৯ কোটি ভোটের ভেতর পাঁচ কোটি এক দিকে আর চার কোটি আরেক দিকে। ১৪ দলীয় জোট চার কোটি ভোটের জোট। বহুধা বিভক্ত ১৮ দলীয় জোটের ভোট আছে পাঁচ কোটি। ১৪ দলীয় জোট নিজেদের সেকুলার (ধর্মহীন) বলে পরিচয় দেয়। ইসলামকে গৃহধর্ম হিসেবে রা করতে চায়। এ জোটের স্লোগান হলো ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। এর মানে হলো ধর্মীয়ভাবে বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান বা ইসলামপন্থী হলেও তাদের অধিকার ১০ ভাগের মতোই। ভোটের মাঠে সবার একটি করে ভোট। কিন্তু রাষ্ট্রের চিন্তা-চেতনায় মুসলমানদের ইসলামি চেতনা থাকতে পারবে না। সেকুলার শব্দটির ভূত এখন শিতি মুসলমানদের মাথায় বসবাস করতে শুরু করেছে। এদের কথা হলো, আমরা মুসলমান আছি তো। নবী মানি, কিতাব মানি ও আল্লাহ মানি। কিন্তু এ নিয়ে কিছু করতে চাই না। এমনকি এরা পরকালেও বিশ্বাস করে না। এরা ভারত ও পশ্চিমাদের আস্থাভাজন আরবি নামধারী মুসলমান। বিশেষ করে ভারত এদের খুব ভালবাসে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধ না করে রেডিও-টিভি ও পত্রিকায় কাজ করেও এরা মুক্তিযুদ্ধের সপরে শক্তি। এরা জিয়াউর রহমানকেও পাকিস্তানের এজেন্ট বলতে দ্বিধা করে না। এখন আমাদের ইতিহাস বিভক্ত, সংস্কৃতি বিভক্ত আর পুরো জাতি বিভক্ত। কারণ ভারত বাংলাদেশে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতিকে দেখতে চায়। তাতে তাদের অনেক সুবিধা। বিভক্ত জাতিকে প্রক্সিতে শাসন করতে সুবিধা। ভারত আশপাশের সব দেশেই তাবেদার সরকার চায়। আমি বলব, ভারত নিজ দেশের স্বার্থেই এ কাজটি করে। দিল্লি সঠিক কাজটিই করছে। আর বাংলাদেশের বেশ কিছু মানুষ দিল্লির এ পদপেকে সমর্থন করে। জেলারেল মইনের আমলে আমরা দেখেছি দিল্লি কত খোলামেলাভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তপে করেছে। শুনেছি আমাদের সচিবদের পোস্টিংয়ের ব্যাপারেও ভারতীয় হাইকমিশন হস্তপে করেছে। এক সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, তারা বাংলাদেশে বন্ধু সরকার চান। এর মানে বাংলাদেশে যারা দেশ চালাবেন তাদের ভারতের সাথে বাধ্যতামূলকভাবেই বন্ধুত্ব রাখতে হবে। কূটনীতিতে সব দেশই পরস্পরের বন্ধু যদি কোনো কারণে পরিবেশ পরিস্থিতির অবনতি না হয়। কিন্তু বাংলাদেশের েেত্র ভারতের বন্ধুত্ব মানে একতরফা। বাংলাদেশ একতরফাভাবে ভারতের স্বার্থ রা করে চলবে। ৪২ বছর ধরে আমরা তাই দেখে আসছি। বাংলাদেশে ভারতের বেশ কিছু বন্ধু আছেন যারা ভারতের সাথে অধীনতামূলক মিত্রতা চান। যে কোনো অবস্থায় ভারতকে খুশি রাখতে চান। আমার প্রশ্ন, ভারতের সাথে প্রতিবেশী কার বন্ধুত্ব আছে? নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, চীন, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ কার সাথে ভারতের সুসম্পর্ক আছে? না, কারো সাথে নেই। কারণ ভারত সমপর্যায়ের সমমর্যাদার বন্ধুত্ব চায় না। ভারত চায় অধীনতামূলক মিত্রতা। কারণ ভারত নিজেকে বাঘ মনে করে আর প্রতিবেশীকে বিড়াল মনে করে। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেনÑ ‘হাজার সাল কা বদলা লিয়া। তিনি কেন এ কথা বলেছিলেন, তা আমাদের তরুণসমাজকে বুঝতে হবে। ৭১১ সালে মুহম্মদ বিন কাশিমের সিন্ধু জয়ের মাধ্যমে মুসলমানদের ভারত অভিযান শুরু হয়েছিল। ১৯৭১ সালে জেনারেল নিয়াজির পরাজয় ও জেনারেল মানেকশর বিজয়ের মাধ্যমে এক হাজার বছরের প্রতিশোধ নিয়েছেন ইন্দিরাজী। এসব হচ্ছে ইতিহাসের কথা। যে ইতিহাস আমাদের তরুণসমাজ জানে না বা জানতে চায় না। একজন মুসলমান হিসেবে নিজের অস্তিত্ব নিয়ে কথা বলা নাকি সাম্প্রদায়িকতা। বাপ-দাদার ভায়া দলিলের কথা বললেই নাকি সাম্প্রদায়িকতা হয়ে যায়। এখন নাকি সবাই বাঙালি এবং এই শব্দের ভেতরেই ধর্মীয় পরিচয় বিলীন হয়ে গেছে বা বিলীন করে দিতে হবে। বাংলাদেশে এখন সত্যের দাফনকার্য অবিরত চলছে। রাষ্ট্র না হয় নিজের স্বার্থেই মিথ্যা বলে এবং অবিরত মিথ্যাকে হত্যা করে। কিন্তু জ্ঞানীগুণী, কবিসাহিত্যিক, শিক বুদ্ধিজীবীসহ ভালো মানুষ বলে বহুলপ্রচারিত নামী-দামি লোকেরা কী করছেন। মহামতি সক্রেটিস একজনই তখনকার গ্রিসের সন্ত্রাসী সরকারের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি সত্যের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। তাই তাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। ইমামে আজম হজরত আবু হানিফাকে প্রাণ দিতে হয়েছে সত্যকে রা করতে গিয়ে। কবি ও সুফিবাদের প্রথম শহীদ মনসুর হাল্লাজকে প্রাণ দিতে হয়েছে। মনসুর নাকি নিজেকে খোদা দাবি করেছিলেন। এমন মিথ্যা অভিযোগেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। মনসুর বলেছিলেন, ‘আমি হচ্ছি সে যাকে আমি ভালোবাসি। এবং যাকে আমি ভালোবাসি সে হচ্ছে আমি।এ কথাগুলো তখন শাসক ও আলেমসমাজ বুঝতে পরেননি। অথবা বুঝেও নিজেদের হীন স্বার্থে মনসুরকে টুকরো টুকরো করে হত্যা করে তার দেহকে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল। যুগে যুগে রাষ্ট্র সরকার, রাজা মহারাজা ও বাদশাহরা সত্যকে হত্যা করে নিজেদের বা রাষ্ট্রকে রা করতে চেয়েছিল। সেসব রাষ্ট্রও নেই, রাজারাও নেই। শুধু বেঁচে আছে সত্য। সত্যের মরণ নেই। তাই যুগে যুগে সে ফিরে আসে এবং নিজের অস্তিত্ব ঘোষণা করে সব শব্দ আকাশে নিপে করে। হে আল্লাহর বান্দা ও রাসূল সা:-র উম্মতগণ কোথাও ফাঁসি বা হত্যার খবর পেয়ে তোমরা বিচলিত হয়ো না। রাজ্য রাষ্ট্রনীতি, বিচার আইন আদালতই শেষ কথা নয়। 


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads