রবিবার, ৩ মার্চ, ২০১৩

আওয়ামী লীগের রাজনীতির বৈশিষ্ট্য ও বাংলা দেশের ভবিষ্যৎ


আওয়ামী লীগের রাজনীতির বৈশিষ্ট্য ও বাংলা দেশের ভবিষ্যৎ
 আওয়ামী লীগের রাজনীতি বেশ রহস্যময়। বর্তমান আওয়ামী লীগের অতীত নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। পাকিস্তান মুসলিম লীগ নেতাদের অগণতান্ত্রিক মনোভাবের ও সরকারি নীতির প্রতিবাদে ১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন ঢাকায় টিকাটুলির কাজী বশীরের বাস ভবন রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান ‘‘আওয়ামী মুসলিম লীগের’’ জন্ম হয়। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন পরিচালনার জন্য ‘‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’’ গঠন করেন।
আওয়ামী লীগ শুরচ থেকেই জাতির সাথে প্রতারণা করেছে। এক সময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতার অংশীদার হয়। সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রী হয়ে বলতে লাগলেন, ‘‘স্বায়ত্তশাসনের দাবি  একটি রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছু নয় । পূর্ব বাংলা শতকরা ৯৮ ভাগ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে।’’ মওলানা ভাসানী এ কথার সাথে একমত হতে পারলেন না। তিনি আলাদাভাবে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করেন। এভাবে দলটি  দ্বিধা বিভক্ত হয়ে আওয়ামী লীগ ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে পরিণত হয়। মওলানা ভাসানী তার দল গঠন করতে গিয়ে তিনি এবং তার সহযোগীরা  আওয়ামী লীগের ঝটিকা বাহিনীর হাতে  অপদস্ত হয়েছিলেন।
সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের হাল ধরেন। তখন থেকেই  বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী অপতৎপরতা শুরচ হয়। বাংলাদেশোত্তরকালে স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান রক্ষী বাহিনীসহ বিভিন্ন ঠ্যাংগাড়ে বাহিনী গঠন করে তাদের মাধ্যমে বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন চালান। তিনি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে  বাকশাল গঠন করে ভিন্ন সকল দলের অস্তিত্ব বিলোপ, চারটি সংবাদপত্র ব্যতীত  অন্য সকল সংবাদপত্রের বিলুপ্তি, নিরঙ্কুশ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল  এবং জেলা গবর্নর নিয়োগের মাধ্যমে দেশে ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অতীত ও বর্তমান সব আওয়ামী সরকারের আমলে একই অভিন্ন কৌশলে দেশে হিটলারি শাসন প্রতিষ্ঠার পাঁয়তারা চলছে।
আওয়ামী লীগ চরিত্রের প্রথম বৈশিষ্ট্য জাতিকে ভাওতা দেয়া। জাতি লক্ষ্য করছে যে,  ১৯৯৬-এর জুন নির্বাচনের ফলাফল তাদের অনুকূলে আনার জন্য আওয়ামী নেতারা জনগণের কাছে নানাভাবে কান্নাকাটি করেছিলেন। করজোড়ে অতীত অপরাধ ও কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা ভিক্ষা করেছিলেন এবং অতি বিনয়ের সাথে নরম সুরে কাকুতি-মিনতি করে বলেছিলেন, ‘‘একটি বারের জন্য আমাদেরকে সুযোগ দিন এবার আমরা আপনাদের যথাযথভাবে  সেবা করব।’’
 স্বার্থ উদ্ধারে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনে আওয়ামী লীগের জুড়ি নেই। স্বার্থ হাসিলে ধর্মকে অস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করতে আওয়ামী লীগের  ভয়-ডর নেই।  ’৯৬-এর নির্বাচনী প্রচারে নেমে  বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা হেজাব পরেছিলেন। জায়নামাযে বসে তিনি আল­­াহর দরবারে মোনাজাত করছেন- এ রকম একটা পোস্টার দেশের আনাচে-কানাচে সেঁটে দেয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য, মানুষকে বলা, দেখ হাসিনা কত ধার্মিক এবং ইসলামের কত বড় দরদী।    
অসহিষ্ণুতা ও প্রতিপক্ষের প্রতি বিদ্বেষ আওয়ামী রাজনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য।  প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু প্রকাশ্য জনসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘‘নকশাল দেখলেই গুলী কর।’’ একজনকে নকশাল সন্দেহে গুলী করা গণতন্ত্রসম্মত কোনো ব্যবস্থা নয়। বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে উচ্চারিত ঐ একই ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে বর্তমান আওয়ামী নেতাদের কন্ঠে, ‘‘জামায়াত-শিবির দেখলেই গুলী কর’’। আওয়ামী লীগের চরিত্রের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের এককালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব নাসিম অত্যন্ত দম্ভোক্তি করে বলেছিলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ তো এখনও কিছু শুরচই করেনি। শুরচ করলে বুঝতে পারবেন আওয়ামী লীগ কি জিনিস।’’ অওয়ামী লীগ কি জিনিস তা জানতে জাতির এখন আর  বাকি নেই।
বিরোধী দলের কর্মকান্ড করে দেয়া, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকে  কারাগারে নিক্ষেপ করা, হত্যা, খুন খারাবীর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ভিন্ন মত পোষণকারীদের রাজনীতির মঞ্চ থেকে অপসারিত করা, আইনের শাসনের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর আইন প্রতিষ্ঠার জন্য নিজ দলীয় বিচারক নিয়োগ ও তাদের ওপর প্রভাব বিস্তারই অওয়ামী লীগের পরিচয়। এই আওয়ামী লীগের হাতে পূর্বে ৪২ হাজারেরও বেশি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী নিহত হয়েছে বলে প্রকাশ। বর্তমান শাসনকালে তাদের অত্যাচারের রেকর্ড অতীতকে হার মানিয়েছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের একটি চমৎকার রূপ হল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিরপরাধ লোককে গ্রেফতার করে এনে পুলিশকে বলে তাদের বিরূদ্ধে ভুয়া মামলা দায়ের করান। এসব বিছুই হল হিটলারের প্রেতাত্মার কর্কশ চিৎকার, যা আজ বাংলাদেশের সর্বত্র প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। 
আওয়ামী লীগের ইচ্ছা সবাই তাদের সাথে গলা মিলিয়ে সুরে বেসুরে গান করচক। তাদের সাথে গলা মিলিয়ে গান না করতে পারলেই আপনি পাপী, রাজাকার। তাইতো যে মতিউর রহমান নিজামী তাদের সাথে একত্রে সৈরাচারবিরোধী আন্দেলন করার কারণে  এক সময় ফেরেশতা ছিলেন তিনি আজ যুদ্ধাপরাধী, আবার তাদের সাথে এক সুরে গান গাইতে না পারায় তাদের কাছ থেকে বাঙ্গালীর গৌরব মেজর জলিল রাজাকার ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী যুদ্ধাপরাধীর তকমা অর্জন করেছেন। এক কথায় আওয়ামী বন্দনাকারী, তোষামোদকারী ও চাটুকারীরা ছাড়া সবাই তাদের দৃষ্টিতে স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী।
পৃথিবীতে দেখা গেছে স্বৈর শাসকেরা তাদের প্রতিপক্ষকে বা অপজিশনকে দমন করার জন্য নানা ধরনের কৌশলের আশ্রয় নেয়। হিটলার রাইখস্টাগে আগুন দিয়ে বক্তৃতায় বললেন, কমিউনিস্টরা গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চাচ্ছে। তারপর কমিউনিস্ট দমনের জন্য হিটলার তৎপরতা শুরচ করলেন। ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করার জন্যই অজুহাত বা পরিবেশ সৃষ্টি করা, জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নেয়ার জন্যই এই ঘটনাগুলোর অবতারণা করা হয়েছিল। একইভাবে আওয়ামী লীগ তাদের অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক, পররাষ্ট্রনীতিসহ সমস্ত ব্যর্থতা আড়াল করার ফন্দী হিসেবে যুদ্ধাপরাধী ইস্যু গ্রহণ করেছে।  যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে মাঠ গরম করে জাতির দৃষ্টি ভিন্ন দিকে টানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ইস্যুটিকে তাদের নির্বাচনী বৈতরণী পার হবার অস্ত্র  হিসেবে গ্রহণ করেছে।
আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য বিরোধী দল বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীকে নিশ্চিহ্ন করা। গত ১৬ নবেম্বর বুধবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্যই জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছেন। কিন্তু আন্দোলন করে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে পারবে না।’’ এ বক্তব্যের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের থলের বিড়াল বের হয়ে পড়েছে, তারা তাদের কল্পিত যুদ্ধপরাধীদেরকে কতল করতে চায়। 
বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনসহ অতীত ইতিহাস সাক্ষী, ভারতীয় সম্প্রসারণবাদী ব্রাহ্মণ্যবাদীরা কোনোদিন বাংলাদেশকে স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করে নিতে চায়নি। যখন ইতিহাসের গতি ধারায় স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ হয়েই গেল তখন তারা স্থায়ীভাবে বাংলা দেশে অস্থিতিশীলতা জিইয়ে রেখে বাংলাদেশকে তাদের তাবেদার রাষ্ট্র হিসেবে টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। আর এ জন্য তারা বার বার বেছে নেয় আওয়ামী লীগকে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় ২৬ এপ্রিল  জ্যোতি মালহোত্রা বলেছিলেন, ‘‘হাসিনা মুজিবের কন্যা বলেই নয়, কিংবা ১৯৯৯-এর কমনওয়েলথ সম্মেলনে বাজপেয়ী হাসিনার কাছ থেকে পচাত্তরের আগস্টের  লোমহর্ষক কাহিনী শোনার কারণেই শুধু নয় বরং বাংলাদেশে ২০ বছরের সামরিক শাসনের পর ৫ বছর হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন যে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা ভারতের হৃদয় জয় করেছে এবং ভারতের অনুকূলে গেছে। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, তার ফলে ভারতের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের মনোভাবকে তিনি পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন। অতএব, তাকে আরেকটি সুযোগ দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে, তার আরেকটি নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে- তার আরেকটি ৫ বছরের মেয়াদের  প্রয়োজন রয়েছে’’।  এ কথা থেকে প্রমাণ, ভারত তার স্বার্থে হাসিনাকে তাদের প্রয়োজন অনুয়ায়ী মেয়াদকাল ক্ষমতায় রাখতে আগ্রহী । 
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য এ দেশ থেকে চিরতরে ইসলামী শক্তির বিনাশ। এজন্য আওয়ামী সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করে জামায়াত নেতা-কর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১০ সালের ফেব্রচয়ারি মাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংঘর্ষে ফারচক হত্যাকে  কেন্দ্র করে ৬৪টি জেলা থেকে জমায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেফতার করে তাদের ওপর বর্বরোচিত নির্যাতন চালানো  শুরচ হয় যা এখনো চলছে। আবার জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিরচদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে প্রহসনের বিচার বন্ধ ও মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন কালে ১৯ সেপ্টেম্বর  পুলিশ বিনা উস্কানিতে জামায়াতে ইসলামীর মিছিলে হামলা চালালে এক অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। সে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রমনা থানার এসআই ১২০ জনকে আসামী অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযুক্তদের শতাধিক কারাগারে   এবং  বাকিরা  এখনও  গা ঢাকা দিয়ে আছেন।  যারা গা ঢাকা দিয়ে  আছেন তারা সবাই কেন্দ্রীয় ও সম পর্য়ায়ের নেতা। করাগারে আটক নেতাদের ওপরে নির্লজ্জভাবে চালানো হচ্ছে হিংস্র দানবীয় অমানুষিক নির্যাতন। এসব কিছু করা হচ্ছে জামায়াতে ইসলামীকে এ দেশ থেকে নির্মূল করার উদ্দেশ্যে।  মিথ্যা মামলা, নির্যাতন ও দমন নীতির পাশাপাশি পুত-পবিত্র চরিত্রের নেতাদের চরিত্রকে মসিযুক্ত করার লক্ষ্যে শক্তিপ্রয়োগ ও বিত্ত বিলিয়ে তাদের বিরচদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী জোগাড় করা হচ্ছে। এসব কিছুর আয়োজন জামায়াত নিধনযজ্ঞ পালনের জন্য। প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী নেতৃবৃন্দের জবান নিসৃত বাণী থেকে আজ আর কারই তাদের মনের গোপন লালিত উদ্দেশ্য বুঝতে বাকি নেই।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নের্তৃবৃন্দকে ধরণী থেকে চির তরে বিদায় দেয়াই যে আওয়ামী লীগের খায়েশ তা প্রধানমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নয়তো আওয়ামী পরিকল্পিত বানোয়াট মামলায় বিশ্বনন্দিত নেতৃবৃন্দকে আওয়ামী নির্মিত বিচারশালায়  পূর্ব প্রস্ত্তত রায় প্রকাশ হওয়ার পূর্বেই  প্রধানমন্ত্রী কি করে বললেন যে বিচারাধীন নেতৃবৃন্দকে কেউ বাঁচাতে পারবে না ?  তাই প্রধানমন্ত্রীর কথায় প্রমাণ হয় যে, তারা পূর্বেই ঠিক করে রেখেছেন যে তারা জামায়াত নেতাদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলাবেনই। নমরচদ যেমন একজন নিরপরাধ সাধারণ নাগরিককে রাজদরবারে ডেকে নিয়ে জনগণের সামনে তার মাথা দ্বিখন্ডিত করে দম্ভভরে ইবরাহিমকে বলেছিল, ‘‘দেখ, আমিও তোমার খোদার মতো জীবিতকে মারতে পারি।’’ তেমনি বাংলাদেশের বর্তমান জালেম শাসকরা জামায়াত নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নিজেদের খোদায়িত্ব জাহির করার উল­­­াসে মত্ত হয়ে উঠেছেন।  কিন্তু তাদের নির্মিত ট্রাইব্যুনাল যখন এ সব নেতাদের বিরচদ্ধে অপরাধ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে তখন তারা তাদের  উদ্দেশ্য সফল করার জন্য যুব শক্তিকে মাঠে নামিয়ে দেশময় নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালাচ্ছন। ঝাঁকে-ঝাঁকে আলেম-মুসল­xসহ নিরপরাধ আদম সন্তানদেরকে মানবিক আচার বহির্ভূতভাবে গুলী করে হত্যা করা হচ্ছে। বন্দীদের বন্দী অবস্থায় পায়ে-বুকে গুলী করে তারা পাকিস্তান আর্মি ও নাৎসী বর্বরতাকে হার মানিয়েছে।  
আওয়মী লীগ তারস্বরে চিৎকার দিয়ে বলছে, তখনকার জামায়াতের লোকেরাই ছিল রাজাকার-আলবদর। এ এক গোয়েবলসীয় মিথ্যা প্রচার। রাজাকার, আলবদর সম্পর্কে  আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ তার ‘ফ্যাক্টস এন্ড ডকুমেন্টসঃ বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড’ গ্রন্থের ৮১ পৃষ্ঠায় বলেন, রাজাকার বাহিনী ছিল সরকারি বাহিনী এবং এর পরিচালনার দায়িত্বে নিয়েজিত আবদুর রহীমকে স্বয়ং বঙ্গবন্ধুই প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারিয়েটের প্রধান নিয়োগ করেছিলেন। এই গ্রন্থের ৮৩ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে,  ১৯৭০ সাল থেকেই পাকিস্তান আর্মির প্যারামিলিটারি হিসেবে গঠিত হয়েছিল আলবদর বাহিনী। এর অন্যতম সংগঠক মুসলেহ উদ্দীনকে বঙ্গবন্ধুই এন এসআই-এর গুরচত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত করেছিলেন। একই গ্রন্থের ৫০ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে, বঙ্গবন্ধু  শান্তিবাহিনী প্রধান খাজা খয়ের উদ্দিনকে জেল থেকে বের করে এনে নিজ বাসায় খাইয়ে দাইয়ে টিকেট কাটিয়ে পাকিস্তান প্রেরণ করেছিলেন। যে খাজা কায়সার চীনস্থ পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মাওসেতুঙ ও চৌ এন লাই-এর সঙ্গে হেনরি কিসিঙ্গারের বৈঠকের বন্দোবস্ত করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের তৎকালীন দুই বৈরী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন, সেই খাজা কায়সারকে বঙ্গবন্ধুই  বার্মার রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করেছিলেন।
শুধু তাই নয়  বঙ্গবন্ধু স্বয়ং ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন সকল ব্যক্তির প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন এবং তারই ব্যক্তিগত নির্দেশে সকলকে এক সপ্তাহের মধ্যে মুক্ত করে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩ জাতির উদ্দেশে বেতার ও টেলিভিশন ভাষণে তার সাধারণ ক্ষমার উদ্দেশ্যকে ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘আমরা প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ গ্রহণের নীতিতে বিশ্বাসী নই। তাই মুক্তিযুদ্ধের শত্রচতা করে যারা ‘দালাল’ আইনে অভিযুক্ত ও দন্ডিত হয়েছিলেন, তাদের সাধারণ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের নাগরিক হিসেবে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে আবার সুযোগ দেয়া হয়েছ। আমি বিশ্বাস করি, অন্যের প্ররোচনায় যারা বিভ্রান্ত হয়েছেন  এবং হিংসার পথ গ্রহণ করেছেন, তারা অনুতপ্ত হলে তাদেরও দেশ গড়ার সুযোগ দেয়া হবে।’’ বঙ্গবন্ধুর এসব দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কর্মকান্ডকে বর্তমান আওয়ামী সরকার কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন জানি না।  কিন্তু শেখ সাহেব থেকে আগ বাড়িয়ে বর্তমান আওয়ামী সরকার মূল অপরাধীদের স্পর্শ করতে ব্যর্থ হয়ে রাজাকার আলবদরদের সব  দায়দায়িত্ব ইসলামপন্থী বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর ওপর চাপিয়ে দিয়ে তাদের ওপর নানা নির্যাতন চালাচ্ছে কোন শক্তির ইঙ্গিতে তা জাতির পক্ষে বোঝা কঠিন নয়। আশঙ্কা হচ্ছে আওয়ামী লীগ কখন না জানি বঙ্গবন্ধুকে উপরোক্ত ঘোষণার জন্য দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্তদের ক্ষমা করার অপরাধে (?) যুদ্ধাপরাধী বলে  আবার তোহমৎ লাগায়।
ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিদার আওয়ামী লীগ। এটি আওয়ামী লীগের ভাওতাবাজির ফসল । গোড়ারদিকে মুজিব নগরে ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার যে সনদ ঘেষণা হয়, তাতে তিনটি মৌলনীতি উলে­­খ করা হয়েছিল-সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার। পরবর্তী পর্যায়ে ভারতীয় প্ররোচনা ও চাপে মুজিব নগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরচল ইসলাম বলা শুরচ করলেন যে, সেকুলারিজম বাংলাদেশের অন্যতম রাষ্ট্রীয় আদর্শ। এখানে প্রসঙ্গক্রমে বলা বাঞ্ছনীয় যে, ১৯৭০-এ অনুষ্ঠিত পাকিস্তান ভিত্তিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে তারা বলেছিল যে, তারা কখনই কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থী কোনো আইন প্রণয়ন করবে না। কিন্তু ব্রহ্মণবাদী ও তার ক্রীড়নকদের ফাঁদে আটকা পড়ে  ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধিদের সম্মেলনে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ তার মেনিফেস্টোর বিঘোষিত নীতিকে বিসর্জন দিয়ে কুরআন-সুন্নাহর পরিপন্থী কোনো আইন প্রণীত হবে না- এই ঘোষণাকে অস্বীকার করে তারা হঠাৎ করে সেকুলারিজমের একটি বক্তব্য নিয়ে  আসলেন এবং সেই সেকুলারিজমের নামে তারা যে ব্যাখ্য দিলেন তার সাথে ইউরোপীয়  ইতিহাসের সেকুলারিজমের সাথে কোনো মিল নেই। তৌহিদী জনতা সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের ওপরে জোর করে সেকুলারিজম চাপিয়ে দেয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়া আজ সমাজ-রাষ্ট্রের সর্বত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশে যে সেকুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে চালাবার চেষ্টা অতীতে  হয়েছে ও  বর্তমানে চলছে তা মূলত হচ্ছে ধর্মের ব্যঙ্গ করা , ধর্মহীনতাকে প্রচার করা , নাস্তিকতাকে প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করা। আর এ সত্যই দিন দিন ফুটে উঠছে নাস্তিকদের উস্কানি ও মদদ প্রদানসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্ম তৎপরতার মধ্য দিয়ে।
আওয়ামী লীগ সেকুলারিজম প্রতিষ্ঠার জন্য এ দেশ থেকে ইসলামকে ধুয়ে মুছে ফেলতে চায়। সে জন্যই তারা শুরচতেই দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়েছে। তারা ‘জাহাঙ্গীর নগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়’ ‘সলিমুল­াহ মুসলিম হল’-এর মত প্রতিষ্ঠানের নামকরণ থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেয়ার মত অপকর্ম করেছে। এবারে ক্ষমতায় এসে সংবিধান থেকে আল­­­াহর ওপর অবিচল নিষ্ঠা ও গভীর বিশ্বাসকে ঝেটিয়ে বিদায় দিয়েছে। এ কারণে তারা তাদের পথের কাঁটা ইসলামপন্থী বিশেষ করে জামায়াত ইসলামীকে খতম করার সব ধরনের পরিকল্পনা করছে। 
আওয়ামী লীগ কুরআন-সুন্নাহর বিরূদ্ধে লড়ছে, আর তারা এটাও মিথ্যা দাবি করছে বাংলাদেশের জনগণ তাদের পক্ষে,  জামায়াতের বিপক্ষে। কিন্তু  ইতিহাস তা বলে না। ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রাপ্ত ভোট ও শতকরা হার ছিল  যথাক্রমে ২৩ লাখ ৮৫ হাজার ৩শ’ ৬১ ও ৪.২৮%, প্রাপ্ত আসন ১৭টি। ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রাপ্ত ভোট ও শতকরা হার যথাক্রমে ৩২ লাখ ৮৯ হাজার ৯শ’ ৬৭ ও ৪.৭০% । এ উপাত্ত থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে যে জাতির কাছে জামায়াতের গ্রহণযোগ্যতা মোটেই হ্রাস পায়নি বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।  আর তাইতো আওয়ামী লীগ মরিয়া হয়ে উঠেছে জামায়াত নিধন নিসূদন যজ্ঞে।
জামায়াতের বিরচদ্ধে আওয়ামী তৎপরতা স্মরণ করিয়ে দেয় রোমানদের হাতে খ্রিস্টান নির্যাতনের ইতিহাস। রোমানদের হাতে খ্রিস্টানগণ বিভিন্ন সময় কয়েদ হয়েছে, বেত্রাঘাত ভোগ করছে, নির্বাসিত হয়েছে এবং মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়েছে।  এমনকি স্বয়ং যীশুকে তারা প্রাণদন্ডে দন্ডিতের হুকুম দিয়েছে। যীশুর করচণ বিচারের মহড়ার সাথে বেশ মিল দেখা যায় আওয়ামী লীগের জামায়াত নেতাদের বিচার প্রহসনের সাথে। যীশুকে  দেশাধ্যক্ষের সামনে দাঁড় করান হলো। দেশাধ্যক্ষের রীতি ছিল, এমন বিচার পর্বের সময় এমন একজন বন্দিকে মুক্ত করতেন যাকে তারা চাইত।  সে সময় তাদের এজন প্রসিদ্ধ বন্দি ছিল, তার নাম বারাববা। অতএব তারা একত্রে হলে দেশাধ্যক্ষ পীলাত  তাদেরকে জিজ্ঞাসা করল, তোমাদের ইচ্ছা কি, আমি তোমাদের জন্য কাকে মুক্ত করব? বারাববাকে, না যিশুকে?  তারা সকলে চিৎকার দিয়ে বলে উঠল যিশুকে ক্রুশে দেয়া হোক। হায়রে অবিচার!  বিচারের ছলে দুর্ধর্ষ ডাকাত  বারাববাকে মুক্ত করে দেয়া হল আর অন্যদিকে একজন নবীকে মৃত্যু দন্ডাদেশ দেয়া হল। একইভাবে  আমাদের দেশের ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলানোর চক্রান্ত চলছে অন্যদিকে নিজ দলের খুনের মামলায় দন্ডিত আসামীদের দন্ড থেকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে।  
আওয়ামী শাসককুলকে অনুরোধ করা হচ্ছে তারা যেন ইতিহাসের পাতায় চোখ বুলিয়ে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় হকপন্থীদের ওপরে  নির্যাতনকারীরা যতোই কঠোর নির্যাতন চালাক না কেন তা করে জালেমরা বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না। পতন তাদের শীঘ্রই ঘনিয়ে আসে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় রোমানরা নববই বছর বয়স্ক খ্রিস্টান বিশপ পথিনাসের ওপর এমন নির্যাতন চালায় যে জেলখানায় তার  মৃত্যু ঘটে। খ্রিস্টান সমাজে পথিনাসের পরেই ছিল এটলাসের স্থান। তাকে উত্তপ্ত লোহার চেয়ারে বসিয়ে দেয়া হয় এবং তিনি জ্বলে-পুড়ে মৃত্যুবরণ করেন। ডায়োক্লিটিয়ান ও গ্যালেরিয়াস ৩১১ সাল পর্যন্ত খ্রিস্টানদের ওপর এভাবে নির্যাতন চালাতে থাকেন। অবশেষে গ্যালেরিয়াস পরমতসহিষ্ণুতার বিধি ঘোষণা করতে বাধ্য হন। ৩১৩ সালের গোড়ার দিকে গ্যালেরিয়াসের মৃত্যুর পর তার সম-শাসক কনস্ট্যানটাইন এবং লিসিনাস মিলান রাজাজ্ঞা নামক এক নির্দেশ বলে সাম্রাজ্যের অন্যান্য ধর্মের মতো খ্রিস্টবাদকে একটা বৈধ ধর্ম রূপে মেনে নেন।
বিভিন্ন দেশের নানা কালের ইতিহাস পর্যালোচনার জায়গা এটা নয়, তাই বলছি, সাম্প্রতিককালের ইরানের ইতিহাস, তুরস্ক,  মিসর,  আলজেরিয়া ও তিউনেসিয়াসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশের প্রতি উদার নজর দিন। বিভিন্ন দেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, ‘‘দিকে দিকে পুনঃজ্বলিয়া উঠেছে দ্বীন-ই- ইসলামী লাল মশাল।’’ বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই আওয়ামী সরকারের উচিত তাদের গর্হিত হিংস্র আচরণকে পরিত্যাগ করে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরমতসহিষ্ণুতার নীতি অবলম্বন করে ‘আদল ও ইহ্সানের’ শাসন প্রতিষ্ঠা করা। স্কটল্যান্ডের বুদ্ধিজীবী জর্জ বুকানন বলেছেন, ‘মানুষের শারীরিক অস্তিত্ব যেমন স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভরশীল, তেমনি সুবিচার অব্যাহত রাখার মধ্যেই সমাজের সার্থকতা।’
আওয়ামী লীগ ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতি ধ্বংস করা, ইসলামী রাজনীতি বন্ধ করার সাথে সাথে  প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে বিভিন্ন জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি করে দেশটিকে ভিন্ন দেশের তল্পীবাহক রাষ্ট্রে পরিণত করার ফন্দিতে মেতে উঠেছে। আর যারাই এই রাষ্ট্রের ভারতীয় স্বার্থের বিরচদ্ধে কথা বলছে তাদেরকে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে  তাদেরকে নিপাত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আফসোস,  আজকে যারা স্বাধীনতার পক্ষ বিপক্ষের কথা বলছেন, এই উপমহাদেশে ইতিহাসের বিবর্তন, ইতিহাসের অতীত ও ইতিহাসের সঠিক ব্যাখ্যা তাদের উপলব্ধি ও চেতনায় নেই। স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ বিভাজনটি চাঙ্গা করার পেছনে যে একটি বিরাট অভিসন্ধি কাজ করছে তাতে সন্দেহের লেশমাত্র নেই। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাবলী এই অভিসন্ধিকে আরও জোরদার করেছে। গত ৫ ফেব্রচয়ারি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আব্দুল কাদের মোল­­াকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়ার পর ভারত মদদে পুষ্ট শাহবাগ আন্দোলন শুরচ হয়। এই আন্দোলনের ডামাডোলে ২৭ ফেব্রচয়ারি পর্যন্ত পুলিশের গুলীতে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হয়েছে জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির নেতা-কর্মীসহ অসংখ্য তৌহিদী জনতা । শাহবাগ আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ভারতের বিভিন্ন সংগঠন। তাই তাদের অভিসন্ধি সম্পর্কে যদি জাতি এখনই সাবধান না হয় তা হলে জাতির ভবিষ্যৎ তমসাচ্ছন্ন হয়ে যাবে।      
আজ দেশের গোটা মজলুম জনতা গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে বলছে, জুলুমবাজি বন্ধ করচন, নিজ দলের সোনার ছেলেদের নিয়ন্ত্রণে আনুন, জাতিকে বোকা ভেবে দেশটাকে বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়া থেকে বিরত থাকুন, দেশে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করচন ; ইসলামের বিরচদ্ধাচরণ থেকে বিরত থাকুন। তা হলে জাতি আপনাদের শ্রদ্ধার সাথে যুগ যুগ স্মরণ করবে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads