দেশ আজ এক ভয়ঙ্কর মৃত্যুপুরী। চারিদিকে মৃত্যু আর মৃত্যু। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত মৃত্যুর মিছিল। প্রতিদিনই কোন মায়ের সন্তান, কোন স্ত্রীর স্বামী অথবা কারো প্রিয়তমা স্ত্রী শামিল হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলে। এতিম শিশু, বিধবা স্ত্রী আর সন্তানহারা মায়ের বুকফাটা আর্তনাদে দেশের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। বারচদের গন্ধে বাতাস গন্ধময়। গুলীর শব্দে দেশ প্রকম্পিত। চারদিকে আতঙ্ক। সকালে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষটি ঘরে না ফেরা পর্যন্ত চিন্তামুক্ত হতে পারছে না স্বজনেরা। জামায়াত-শিবির, বিএনপি, আওয়ামী লীগ, মসজিদের ইমাম, নিরীহ পথচারী, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য, অসহায় নারী ও শিশু কেহই রেহাই পাচ্ছে না হত্যাকান্ড থেকে।
এ প্রেক্ষাপটে একটি প্রশ্ন সর্বত্রই উত্থাপিত হচ্ছে- এ মৃত্যুর দায়িত্ব কার? কে দায়ী এত মৃত্যুর জন্য? এ মৃত্যুর জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন অযোগ্য সরকারই দায়ী। অযোগ্য নেতৃত্ব সম্পর্কে কবি মাহফুজ ফারচক লিখেছেন-
‘‘ছাগল এখন রাস্তাঘাটে শেয়াল চরায়
গাধা দেখে সিংহমামা ভীষণ ডরায়
এইতো দেশের হাল
সাধেই কি মা নূন আনতে ফুরায় ভাতের চাল।’’
সত্যিই দেশের অবস্থা এ রকম। মহিউদ্দীন খান আলমগীরের মতো লোকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে নির্যাতন চালায় দেশপ্রেমিক নাগরিকদের উপর, মামলা করে মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নামে। মাহবুব-উল-আলম হানিফের মতো হাইব্রিড নেতারা এবিএম মূসা, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও ড. কামাল হোসেনের মতো ব্যক্তিদের অপমানজনক কথা বলে। জনবিচ্ছিন্ন কমিউনিস্টরা হয় মন্ত্রী আর আঃ জলিল, আঃ রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমুরা হন রাজনীতি থেকে নির্বাসিত। শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন কচিকাঁচার আসরের মন্ত্রীরা তাদের নিজেদের অযোগ্যতাকে বাকপটুতা আর হঠকারিতা দিয়ে ঢাকতে গিয়ে দেশকে পরিণত করেছেন ভয়ঙ্কর মৃত্যুপুরীতে।
- যুদ্ধাপরাধ ইস্যুকে রাজনীতিকরণ :
এ সরকার শুরচতেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো একটি জাতীয় ইস্যুকে রাজনৈতিক ইস্যুতে রূপান্তরিত করেছে। বিচার প্রক্রিয়ার শুরচতেই সরকার সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচারের পরিবর্তে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা বলে।
চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী বলতে সরকার জামায়াতের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকেই বুঝিয়ে থাকেন। এমন কি সরকারের সমালোচনা করার কারণে বঙ্গবীর কাদের সদ্দিকীকেও রাজাকার বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে এই সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা শহীদ জিয়াউর রহমানকেও রাজাকার বলতে দ্বিধা করেনি এমনকি তার স্ত্রী বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও রাজাকার বানানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। তাই, আওয়ামী লীগাররা রাজাকার বলতে যে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকেই বুঝান তা আজ সকলের কাছে স্পষ্ট।
০ ট্রাইব্যুনাল ও আইনকে বিতর্কিত করা : সরকার প্রথমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা বললেও তারা যখন দেখলেন যে, ১৯৭১ সালে ছেড়ে দেয়া পাকিস্তানী আর্মির ১৯৩ জন অভিযুক্তের বিচার করতে হবে আগে। তাই সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ এড়িয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। ১৯৭১ সালের পরেও এ দেশে অনেক মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠিত হয়েছে। অথচ প্রক্রিয়াটিকে শুধুমাত্র ১৯৭১ সালে সংঘঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে সম্পর্কিত করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে দেশের আনাচে-কানাচে প্রতিটি এলাকায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সে মোতাবেক এবং বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দাবি অনুযায়ী অপরাধীর সংখ্যা কম হলেও ৫/৬ হাজার হবে। কিন্তু বিচারের উদ্যোগ নেয়া হলো মাত্র ১০/১২ জন বিরোধী নেতার। অন্যদিকে একই ধরনের অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতার নামে। সর্বশেষ বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী তথ্য প্রমাণসহ বর্তমান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দীন খান আলমগীরের নামে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তুলে মামলা করার দাবি করেন এবং নিজে সাক্ষী হওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে মামলা না করে এখন মানহানি মামলা দিয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে হয়রানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একই অপরাধে জামায়াত নেতাদের বিচার করা আর নিজ দলের নেতাদেরকে রক্ষা করার দ্বিমুখী নীতির কারণে দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সরকার আসলে মানবতাবিরোধীদের বিচারের নাম করে প্রতিপক্ষ নির্মূলের চিক্রান্ত করছে।
বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম ও ব্রাসেলস প্রবাসী ঘাদানিক নেতা জিয়াউদ্দীনের মধ্যকার স্কাইপি সংলাপ লন্ডনের দ্য ইকোনমিস্ট ও পরবর্তীতে আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে দেশের মানুষ জানতে পারে যে বিচার নয় আসলে সরকার বিচারের নামে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের আয়োজন করছে। এ খবরে দেশ ও বিদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিতর্কের মুখে পড়ে। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের বিরচদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে সরকার সহজেই বিতর্কের অবসান ঘটাতে পারত। কিন্তু সে পথে না হেঁটে সরকার বরং সংবাদটি প্রকাশ করার অপরাধে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের নামে মামলা করে। মনে হচ্ছে, চুরি করা নয় বরং চোর ধরা ও চোরকে চোর বলাটাই হলো বড় অপরাধ। জনগণের বুঝতে বাকি থাকে না বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম যা করেছেন সরকারের নির্দেশেই করেছেন।
ট্রাইব্যুনালের আইন ও বিচার প্রক্রিয়া চরম বিতর্কিত। সাক্ষীকে আদালতে আনতে না পারলে তদন্ত কর্মকর্তার নিকট প্রদত্ত জবানবন্দীকে স্বাক্ষ হিসেবে গ্রহণ করার বিধান করেছে সরকার যেখানে মিথ্যাচারের সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ। অন্যদিকে আসামী পক্ষকে একই সুযোগ দেয়া হয়নি এমনকি সাক্ষী সংখ্যা নির্দিষ্ট ও সীমিত করে দিয়ে আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের আইন বার বার সংশোধনের উদ্দেশ্য যে ন্যায়বিচার নয় বরং আসামীদের ফাঁসি দেয়ায় যে আসল উদ্দেশ্য তা সর্বশেষ নগ্নভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ে আঃ কাদের মোল্লার রায়ের পর। নিজেদের পছন্দমত রায় না পাওয়ায় সরকার শাহবাগ নাটক সাজিয়ে অজুহাত সৃষ্টি করে আবারও আইন সংশোধন করে যাতে আঃ কাদের মোল্লাসহ সকলের ফাঁসি নিশ্চিত করা যায়। বিচার চলাকালে এমনকি দুটি মামলার রায় হয়ে যাওযার পরে বাদীপক্ষের পছন্দমত আইন সংশোধনের নজির পৃথিবীতে আর একটিও নেই। আবার সর্বশেষ সংশোধনীতে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনেরও বিচার করার আইন করা হয়েছে। সরকার যখন বুঝতে পেরেছে যে, গুটিকয়েক কেন্দ্রীয় নেতাকে ফাঁসি দিয়ে জামায়াতের তেমন কোন ক্ষতি করা যাবে না বরং কেন্দ্রীয় নেতাদের শাহদাতের ঘটনায় উজ্জীবিত হয়ে জামায়াত আরও শক্তিশালী হতে পারে সরকার তখনই এমন উদ্যোগ নিল; এমনটাই দেশবাসীর ধারণা। আ. কাদের মোল্লার রায় পরবর্তী সংশোধনীর মাধ্যমে শুধু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নয় বরং বাংলাদেশের সমগ্র বিচারব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে।
বিচার কার্যক্রম শুরচ হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির এই ট্রাইব্যুনালের আইন ও ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত আখ্যায়িত করে এবং নিজ দলের নেতাদেরকে নির্দোষ দাবি করে তাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। শুরচতে এ আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা সক্রিয় হলেও আমজনতার তেমন কোন অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়নি। এটা আদালতের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধার ফল। কিন্তু এই সরকার আদালতকে বিতর্কিত করতে করতে এমন পর্যায়ে নিয়ে এসেছে যে, দেশের মানুষ এই মুহূর্তে নিশ্চিত হয়েছে যে, এই সরকার কোনভাবেই ন্যায়বিচার হতে দেবে না। ঠিক এই প্রেক্ষাপটেই দেশের সাধারণ মানুষ জামায়াতের চলমান আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেছে এবং বিভিন্ন স্থানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। একমাত্র রাজধানী ঢাকা ছাড়া দেশের সর্বত্র এ অবস্থা দেখা গেছে।
আইন প্রয়োগে পক্ষপাতিত্ব:
জামায়াত-শিবিরের আন্দোলনের শুরচ থেকেই সরকার তাদের ওপর নির্যাতনের স্টীম রোলার চালায় এবং অজুহাত হিসেবে বলতে থাকে যে, জামায়াত-শিবির আদালতের বিরচদ্ধে আন্দোলন করছে তাই তাদেরকে কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হচ্ছে না। অথচ একই আদালতের বিরচদ্ধে আন্দোলনকারী শাহবাগীদেরকে সরকার বাধা না দিয়ে বরং বিরিয়ানির প্যাকেট, কোমল পানীয়, বিশুদ্ধ পানি ও ভ্রাম্যমাণ টয়লেটসহ তাদের জন্য যাবতীয় আনন্দ ফূর্তির ব্যবস্থা করেছে। এমনকি যে পুলিশের দায়িত্ব দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা পুলিশকে সে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে এনে শাহবাগীদের জন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হয়েছে। শাহবাগী বগাররা আল্লাহ ও তার রাসূল (সাঃ) এর ব্যাপারে অবমাননামূলক কথা লিখে বগের মাধ্যমে তা প্রচার করলেও সরকারের চোখে তা অপরাধ হয় না এবং আদালতের নির্দেশনা থাকলেও বগারদের ব্যাপারে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা তো নেয়া হয় না বরং দেয়া হয় তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা। অপরদিকে শাহবাগীদের এমন অপকর্মের কথা প্রচার করে সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করার অপরাধে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের নামে দায়ের করা হয় পাঁচটি মামলা।
শাহবাগী নাস্তিকদের বিরচদ্ধে আন্দোলনকারী আলেমদের মিছিলে গুলী চালিয়ে তাদেরকে খুন করা হচ্ছে। অথচ একই ইস্যুতে শাহবাগীদের পক্ষে মিছিল করলে সরকার তার পুলিশ বাহিনী দিয়ে নিরাপত্তা দেয়। একই ব্যক্তির ফাঁসি দাবি করলে সরকার নিরাপত্তা দেয় অথচ মুক্তির দাবি করলে গুলী চালায়। তখন দেশবাসীর মনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে একই ব্যক্তির ফাঁসির দাবি করা বৈধ হলে তার মুক্তির দাবি করা অবৈধ হবে কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেশের মানুষ আজ জানতে পেরেছে যে, এই সরকার আসলে একটা ফ্যাসিবাদী সরকার। তারা বিরোধী মতের অস্তিত্ব সহ্য করতে পারে না।
গণহত্যা ও দায়ভার : যুদ্ধাপরাধ ইস্যুকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নির্মূলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। ট্রাইব্যুনাল ও ট্রাইব্যুনাল আইনকে বিতর্কের শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়ে এবং একই ইস্যুতে আন্দোলনকারী এক পক্ষকে নিরাপত্তা প্রদান করে অপর পক্ষকে গুলী করে হত্যা করার মাধ্যমে এই সরকার তাদের ফ্যাসিবাদী আচরণের চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।
দেশ যখন ফ্যাসিবাদ দ্বারা আক্রান্ত তখন তিতুমীর-শরীয়তুল্লাহ-দুদুমিয়ার বংশধর, রফিক, সালাম-বরকত ও জাহাঙ্গীর-হামিদুর-মতিউরের উত্তরসূরি এই জাতি ঘরে বসে থাকবে না- এটাই স্বাভাবিক। ঠিক এমনই প্রেক্ষাপটে দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরচদ্ধে আন্দোলনে নামে। এ সময় দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় আলেম আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরচদ্ধে ফরমায়েশী রায় ঘোষিত হলে সারা দেশে গণবিস্ফোরণ ঘটে। আন্দোলনকারী জামায়াত-শিবিরের সাথে রাজপথে নেমে আসে দেশের সাধারণ মানুষ। এমনকি নারীরাও নেমে আসে ঝাড়ু হাতে এই সরকারকে ঝাটাপেটা করে তাড়াতে। লাখো-কোটি মানুষের গগনবিদারী স্লোগান। প্রকম্পিত হয় সারা দেশ। কেঁপে ওঠে ফ্যাসিবাদী সরকারের ক্ষমতার মসনদ। সরকার তার মসনদ ও তাদের লাইফ সাপোর্ট গণজাগরণ মঞ্চ রক্ষা করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয় গুলী চালাতে। মাত্র কয়েকঘণ্টার মধ্যে পুলিশের গুলীতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শতাধিক মানুষ। সৃষ্টি হয় নতুন ইতিহাস। ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেয় আরও একটি দিন ২৮ ফেব্রচয়ারি ২০১৩। গণহত্যা দিবস। সরকার পুলিশকে গুলী করার কৈফিয়ত তলব না করে তাদেরকে আরো সহিংস হওয়ার জন্য উস্কে দিতে থাকে। সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্য মন্ত্রীদের বক্তব্যই তার প্রমাণ। তাদের কথায় পুলিশ একশ’ জন মানুষ খুন করার মাধ্যমে যথেষ্ট ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছে। এবং তারা এই বলেও সতর্ক করে যে পুলিশ আগামীতে এত সহনশীলতা দেখাবে না। অর্থাৎ আরো বেশি গুলী চালাবে। আরো বেশি মানুষ খুন করবে। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের এহেন বক্তব্যে পুলিশ আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে- এমনকি বিভিন্ন জায়গায় গণজাগরণ মঞ্চের কয়েকটি বাঁশের খুঁটি ও ব্যানার রক্ষা করতে গিয়ে গুলী চালিয়ে মানুষ খুন করতেও তারা দ্বিধা করে না।
উপরের আলোচনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, সরকার নিজেই তার একের পর এক ফ্যাসিবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর মাধ্যমে জনগণকে আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং নিজেদের ক্ষমতা রক্ষা করতে জনগণের ওপর পুলিশবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে হত্যা করেছে দেশের প্রায় পৌনে দুইশ’ মানুষকে। তাই এই সরকারকেই সকল মৃত্যুর দায়ভার গ্রহণ করতে হবে। বর্তমান বিচারে যাই ঘটুক।
ইতিহাসের আদালতে দায়ী থাকবে এই সরকার এবং ২৮ ফেব্রচয়ারি অভিহিত হবে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন