ইবরাহিম রহমান :
আওয়ামী শব্দের অর্থ গণ। লীগ অর্থ দল। আওয়ামী লীগ অর্থ গণদল। শাব্দিক অর্থে গণজাগরণ মানে আওয়ামী জাগরণ। গত ৫ ফেব্রচয়ারি থেকে শাহবাগের কিছু তরচণের উপস্থিতি ও কোন বিশেষ গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের সংহতি প্রকাশের ধরন থেকে প্রমাণিত হয়েছে শাহবাগ মঞ্চ মানে আওয়ামী মঞ্চ। গণজাগরণ অর্থ আওয়ামী জাগরণ। এই পর্যন্ত আওয়ামী ঘরানার বাইরে একমাত্র বি-চৌধুরী ব্যতীত আর কোন লোক শাহবাগ মঞ্চের সাথে সংহতি প্রকাশ করে নাই। স্কুল-কলেজ থেকে কোমলমতি বাচ্চাদের জোর করে এনে সংহতি প্রকাশের কলেবর বাড়ানো হচ্ছে। এদিকে খাওয়া-দাওয়া টাকা-পয়সা ও ফূর্তির সুযোগ করে দিয়ে মঞ্চের আয়ু বাড়ানো হচ্ছে। ফলে এই সমাবেশকে আন্দোলন বলা যায় না। কারণ আন্দোলন বরাবরই সরকার বিরোধী হয়ে থাকে। সরকারের ছত্রছায়ায় পুলিশ প্রহরার এই সমাবেশকে কোনভাবেই আন্দোলন বলা যায় না। এই সমাবেশ জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে কোন সমাবেশে নয়। বগাররা যে উদ্দেশ্যে এখানে সমবেত হয়েছে তা কোন বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে নয়, শুধুমাত্র একটি গোষ্ঠীর স্বার্থে। গোষ্ঠী স্বার্থে আন্দোলন কোন গণ আন্দোলন হতে পারে না। যেখানে জনগণের স্বার্থ দাবি-দাওয়া নেই সেই আন্দোলন তো জনগণের আন্দোলন হতে পারে না, জোর করে গণআন্দোলনের প্রলেপ দিলেই তা গণআন্দোলন হয়ে যায় না। গণআন্দোলনের চরিত্র হবে সার্বজনীন স্বার্থ, লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী। এক গোষ্ঠীকে আরেক গোষ্ঠীর বিরচদ্ধে লেলিয়ে দেয়াকে গণআন্দোলন বলা যায় না গণজাগরণ বলার তো প্রশ্নই উঠে না। গণআন্দোলন বরাবরই সরকার বিরোধী হয়ে থাকে। ইতিহাস তাই বলে। একটি ব্যর্থ সরকারকে রক্ষার আন্দোলনকে কোনভাবেই গণআন্দোলন বলা যায় না। উদারহরণ স্বরূপ ৬০-এর দশকের আন্দোলনের কথা ধরা যাক। ১৯৬৬-এর ৭ জুন ৬ দফার দাবিতে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের একক ডাকে হরতাল পালিত হয়। পরবর্তীকালে ৬ দফাকে গণআন্দোলনের রূপরেখা বা জনগণের দাবি বলে গ্রহণযোগ্য করা যাচ্ছিল না। বামপন্থীরা প্রশ্ন তোলে ৬ দফায় জনগণের দাবি স্থান পায় নাই। ৬ দফার স্বায়ত্তশাসনের ফর্মূলা মাত্র। এ ফর্মুলাকে জনগণের দাবিতে রূপান্তরিত করতে হবে। এই পটভূমিতে ছাত্রসমাজ, শ্রমিক, কৃষক তথা সকল স্তরের মানুষের দাবি-দাওয়া সন্নিবেশিত করে ১১ দফা দাবি প্রণয়ন করা হয়। ফলে ৬ দফা হয়ে যায় ১১ দফা দাবির অন্যতম একটি দাবি মাত্র। ঐতিহাসিক ১১ দফা দাবি যারা প্রণয়ন করেছেন তাদের অনেকেই এখনো জীবিত আছেন। তাদের মধ্যে ফেরদŠস আহমদ কোরেশী, তোফায়েল আহমেদ, শামসুদ্দোহা, মোস্তফা জামাল হায়দার, মাহবুব উলvহ, আল মুজাহিদী, নূরে আলম সিদ্দিকী প্রমুখ এখনো জীবিত আছেন। তারা ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের প্রধান নায়ক। তোফায়েল আহমেদ তখন ডাকসুর সহ-সভাপতি। ছাত্র সমাজের একচ্ছত্র নেতা। তোফায়েল আহমেদ ছিলেন তখন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক। মূলত: তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বেই তীব্র গণআন্দোলন গড়ে ওঠে। সেই আন্দোলন ছিল সরকারের বিরচদ্ধে, জনগণের আন্দোলন সেই আন্দোলনে ছাত্র-শ্রমিক, কৃষক তথা সকল স্তরের জনগণ সম্পৃক্ত হয়। ছাত্রদের মিছিলে পুলিশের গুলীতে আসাদ নিহত হয়। মূলত: আসাদের মৃত্যুর মধ্য দিয়েই আন্দোলন দানা বাঁধে যা পরে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
আজ শাহবাগের সমাবেশকে যারা গণজাগরণ বলতে চায় তাদের উপলব্ধি করা উচিত এই সমাবেশ একটি গোষ্ঠীর দাবিকে তুলে ধরছে মাত্র আমজনতার দাবি তাদের মুখে আসে না। গণতন্ত্র, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং দুর্নীতির প্রসঙ্গে এই সমাবেশের অন্যতম সংগঠক জনৈক বগার বলেছেন, আমরা বাংলায় পরীক্ষা দিতে এসেছি অংকের কথা ভাবছি না। তার জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুলvহ বলেছেন, এক বিষয়ে পরীক্ষা দিলে তো সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না। সার্টিফিকেট পেতে হলে সব বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয়। অর্থাৎ গণআন্দোলন বা গণজাগরণ বলতে হলে জনগণের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলতে হবে। একমাত্র সেক্ষেত্রেই সকল স্তরের জনগণ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হবে। তখন স্কুল-কলেজের কোমলমতি বাচ্চাদের ধরে আনতে হবে না। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। যেমনটি হয়েছিল ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে এমনকি সেদিনের ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের ক্ষেত্রে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গণআন্দোলন বা গণজাগরণ সৃষ্টি করা যায় না। মিসরের তাহরির স্কোয়ার তার প্রমাণ। তাহরির স্কোয়ার স্বৈর সরকারের বিরচদ্ধে গণজাগরণ হয়। সেখানে গণজাগারণ উত্তাল থেকে উত্তালতর হয়ে ওঠে। শাহবাগের সমাবেশ পুলিশ প্রহরায় হচ্ছে। তিনস্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনি ও সিসিক্যামেরায় পাহারা দেয়া হচ্ছে। প্রথমে জনগণ বিভ্রান্ত হলেও এখন জনগণ সচেতন হয়ে গেছে। জনগণ এখন প্রতিবাদমুখর। শাহবাগ এখন জনবিচ্ছিন্ন।
বিমানবালার হাসি
দেশের মানুষের আকাঙক্ষা বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে রায় দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১০ ফেব্রচয়ারি জাতীয় সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এই অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরচ করেছি। বিচারের রায় দেবে ট্রাইব্যুনাল। তার পরও তাদের অুনরোধ করবো, মানুষের আকাঙক্ষা তারা যেন বিবেচনায় নেন। দৈনিক নয়াদিগন্ত, ১১ ফেব্রচয়ারি-২০১৩। প্রধানমন্ত্রীর এই অনুরোধ নির্দেশ বলেই গণ্য হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দলীয় বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে এবং মন্ত্রীদের বক্তব্য ট্রাইব্যুনালকে প্রভাবিত করে। রায়ও শাহবাগের সমাবেশের দাবি অনুসারেই হয়েছে। ৫ তারিখে কাদের মোলvর যাবজ্জীবন কারাদন্ড ঘোষণার পর থেকে বগাররা শাহবাগে সমবেত হলেও ১০ ফেব্রচয়ারি পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী মুখ খোলেননি। অবস্থাদৃষ্টে প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ বিমানবালার হাসির সঙ্গেই তুলনা করা যায়। বিমানবালার হাসি যেমন স্বতঃস্ফূর্ত নয় প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধও তেমনি স্বতঃস্ফূর্ত নয়। অর্থাৎ বগারদের দাবির সাথে শেখ হাসিনা একমত নন।
প্রথমত: প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা জামায়াতকে ১৮ দল থেকে বের করে এনে আলাদাভাবে নির্বাচনে উৎসাহিত বা বাধ্য করা। সেক্ষেত্রে ইসলামী রাজনৈতিক দল বন্ধ করার প্রশ্নই ওঠে না। ইসলাম ধর্মীয় আবেগকে আগামী নির্বাচনে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে তিনি সংবিধানে ৭২-এর সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার ধারা পুনঃসংযুক্ত করার জন্য আলvহ্র নাম বাদ দিলেও বিসমিলvহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে অক্ষুণ্ণ রেখেছেন শুধুমাত্র নির্বাচনে ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগানোর জন্য। প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে অনেকে ‘‘গাছের গোড়া কেটে আগায় পানি দেয়ার সাথে তুলনা করে সমালোচনা করেছেন। সংবিধান থেকে আলvহর নাম বাদ দেয়াকে অনেকে প্রধানমন্ত্রীর ঈমান বিসর্জন দেয়ার সামিল বলে আখ্যায়িত করেছেন। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী ঈমানের চাইতে নির্বাচনকে বেশি গুরচত্ব দিয়েছেন। সেই লক্ষ্যেই তিনি বার বার বলেছেন, যুদ্ধাপরাধী কয়েকজন ব্যক্তির বিচার করছি জামায়াতে ইসলামীর নয়। তাছাড়া যুদ্ধাপরাধী কয়েজন ব্যক্তি ছাড়া জামায়াত ও শিবিরের বর্তমান নেতৃত্ব যুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্মের হাতে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরী যাকে রাজাকার বলে গালি দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী সেই ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলের কাছে প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিয়ে দিয়েছেন একই কারণে। কাজেই শাহবাগের আন্দোলন যে তার পক্ষে নয়, এই আন্দোলন যে তার ভোটের পরিমাণ ব্যাপকভাবে হ্রাস করবে তিনি তা ঠিকই বুঝতে পারেন কিন্তু তার কিছুই করার নেই। বিমান বালার হাসির মত তিনি তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করে চলছেন। তিনিও জানেন এই আন্দোলনের পিছনে কারা কলকাঠি নাড়ছেন।
আন্দোলনকে কৌশলে স্তিমিত করার জন্য ৩টা-১০টা রচটিন ঘোষণার সাথে সাথে বগার আহমেদ রাজীব হায়দার ওরফে থাবা বাবাকে হত্যা করা হয়। সাথে সাথে ৩টা-১০টা রচটিন পরিবর্তন করে লাগাতার ঘোষণায় বাধ্য করা হয়। আন্দোলনকে চাঙ্গা রাখা ও জনজীবনে দুর্ভোগকে অব্যাহত রাখার জন্য আন্দোলনের নেপথ্য নায়করা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
ইসলামের বিরচদ্ধে বামপন্থীদের অবস্থান আজকের নতুন নয়। এবার কোমলমতি বগাররা তাদের সুযোগ করে দিয়েছে। বামপন্থীরা এর সুযোগ গ্রহণ করেছে। ফলে একটি সংগঠিত গোষ্ঠীর সমর্থনে ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এরা ইসলামের বিরচদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই আন্দোলনের সুযোগে মুরববীদের দাড়ি ধরে টানার সাহস পাচ্ছে। শেখ হাসিনা এই বিষয়টা দেখেও না দেখার ভান করছেন বলেই মনে হয়। অর্থাৎ তিনি বিষ খেয়ে বিষ হজম করছেন। বামপন্থীরা তাকে এমনভাবে ঘেরাও করে ফেলেছেন যে, তিনি ইচ্ছা থাকলেও কিছু করতে পারছেন না।
যতদূর জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন সমঝোতার ভিত্তিতে বিচারের রায় প্রদান করতে। জামায়াতকে ১৮ দল থেকে বের করে আনতে পারলে তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছা সহজ হতো। এই উদ্দেশ্যে গোপনে যোগাযোগও চলছিল। কিছুটা আশারও সঞ্চার হয়েছিল। সেই লক্ষ্যেই কাদের মোলvর যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এবং রায়ের পর কাদের মোলvর দুই আঙ্গুলে ওঠহ প্রদর্শনও তাৎপর্যপূর্ণ। সকল মহলই এই ওঠহ এর তাৎপর্য বুঝতে পেরেছে। সমস্যা সৃষ্টি করেছে ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন এবং জাসদের মইনুদ্দিন আহমেদ বাদল। কাদের মোলvর রায়টি যে সমঝোতার ভিত্তিতে হয়েছে সংসদে এই দুই বামপন্থী নেতা তা প্রকাশ করে দিয়েছেন। সংসদে রাশেদ খান মেনন বলেছিলেন সাপের মুখে চুমো দিতে নাই। চুমো দিলেও সাপ সময়মতো ছোবল মারবেই।’’ মইনুদ্দিন খান বাদল বলেন, আমি আমার মায়ের সতীত্ব নিয়ে হবমড়ঃরধঃব করতে পারি না, আমি আমার বোনের সতীত্ব নিয়ে হবমড়ঃরধঃব করতে পারি না, আমি দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে হবমড়ঃরধঃব করতে পারি না বলতেই সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর অনুরোধে সংসদে এই আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। কাদের মোলvর রায় যে সমঝোতার ভিত্তিতে হয়েছে দুই নেতা তা ফাঁস করে দিলেন।
শাহবাগ সমাবেশের পটভূমি :
৭৫ এর পরিবর্তনের পর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই শেখ হাসিনাকে নির্বাসিত জীবন থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন। তারপর থেকে শেখ হাসিনা বিরোধী দলে অবস্থান করলেও গণতন্ত্রে বিরোধীদলের যে ভূমিকা হওয়া উচিত সেভাবেই বিরোধী ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় বিএনপি জামায়াতের সাথে যুগপৎ আন্দোলন করেছে। আবার বিএনপিকে বাদ দিয়ে জামায়াত এরশাদের বিরচদ্ধে নির্বাচনও করেছেন।
৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি আওয়ামী লীগ জামায়াত যুগপৎ নির্বাচন করেছে। জামায়াতের সমর্থন নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে। জামায়াতের সমর্থন নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় আসায় শেখ হাসিনার মধ্যে এক ধরনের মনোভাব গড়ে ওঠে যে, জামায়াতের সমর্থন নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় যেতে পারলে জামায়াতের সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে পারবে না কেন! মূলত সেই চিন্তা থেকেই বিচারপতি বদরচল হায়দার চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করে তিনি জামায়াতের সমর্থন চাইলেন। জামায়াতের ১৮টি ভোট পাওয়ার জন্য তিনি অধ্যাপক গোলাম আযমের সাথে সাক্ষাৎ করে জামায়াতের ১৮টি ভোট প্রার্থনা করেন। শোনা যায় বাবার বন্ধু হিসেবে শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ তিনি অধ্যাপক গোলাম আযমের পা ছুয়ে সালাম করেছিলেন। যতটুকু জানা যায়, অধ্যাপক গোলাম আযম শেখ হাসিনাকে সবিনয়ে বলেছেন, জামায়াত বিএনপির সাথে ক্ষমতার অংশীদার। তাছাড়া জামায়াতের ১৮ ভোট দিলেও তো বদরচল হায়দার চৌধুরী পাস করবে না। শেখ হাসিনা অধ্যাপক গোলাম আযমের কথায় সন্তুষ্ট না হলেও হতাশ হননি।
তারপর শুরচ হয় জামায়াতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার পালা। এরই মধ্যে অধ্যাপক গোলাম আযম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাবনা তুলে ধরলে এই প্রস্তাবকে লুফে নিল আওয়ামী লীগ। আন্দোলন শুরচ করে দিল আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই করতে হবে। সাথে নিল স্বৈরাচারী এরশাদের দল জাতীয় পার্টিকে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের থিউরী আর অধ্যাপক গোলাম আযমের রইল না। এটা হয়ে গেল শেখ হাসিনার থিউরী। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন সফল হলো। আওয়ামী লীগ, জামায়াত, বিএনপি আলাদাভাবে নির্বাচন করল। আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল না। জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে হল। এদিকে জামায়াত সিট পেল মাত্র তিনটি। জামায়াতের উপলব্ধি হল এককভাবে নির্বাচন করলে ফলাফল এমনটিই হবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন