এপ্রিলের শুরুতে কর্মসপ্তাহের তৃতীয় দিনে আবারো লিখছি সকাল-সন্ধ্যা হরতালের মধ্যে। সদ্যবিগত স্বাধীনতাবার্ষিকীর মাস মার্চে পুরোটা গেছে একাত্তরের মতোই। এক দিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামধারী সহযোগে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, অন্য দিকে চলছে নতুন ধারার অসহযোগ তথা জনপ্রতিরোধ ও সহিংস হরতালের মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতা দিবসেও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সমানে চলেছে। রাজধানীতে ছাত্র শিবিরের স্বাধীনতা দিবসের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় গুলি চালিয়ে পুলিশ ২১ জনকে গুলিবিদ্ধ করেছে, টিয়ার গ্যাস আর গ্রেনেড ছুড়ে জখম করেছে শতাধিক ছাত্রকর্মীকে, গ্রেফতার করেছে উপস্থিত শিবির নেতাদের। দুপুর থেকেই রাজধানীতে চলেছে বাস পোড়ানো, টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় আগুন। স্বাধীনতা দিবস-পরবর্তী ৩৬ ঘণ্টা এক টানা হরতালের প্রস্তুতি নিতে ঢাকাসহ সব মহানগর শহর-বন্দরে ১৮-দলীয় জোটের মিছিল বেরিয়েছে মহল্লায় মহল্লায়। স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে জামালপুরের সরিষাবাড়ী, ফেনী ও খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষ হয়েছে। সরিষাবাড়ীতে সংঘর্ষকালে পুলিশের গুলিতে এক বিএনপিকর্মী নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।
রাজধানীতে যেমন মফস্বলেও তেমনি এসব মিছিলে দৃশ্যত ছিল ১৮-দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে শিবিরকর্মীদের প্রাধান্য। আওয়াজের ঐকতান ছিল সরকার পতনের ডাক। নেতৃস্থানীয়রা কর্মীদের বলেছেন : দেশের জনগণ ১৯৭১ সালে শহীদ জিয়ার ডাকে যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করেছিল, সেভাবে এবার দেশনেত্রীর ডাকে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি কিংবা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিলের দাবি এখন গৌণ কিংবা সরকার পতনের আনুষঙ্গিক হয়ে গেছে।
এই লেখা যখন লিখছি সেই দোসরা এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের পটভূমি : ৩৬ ঘণ্টা হরতালের অবসানে ২৯ মার্চ শুক্রবার যখন একটু স্বস্তি পাবে বলে ভেবেছে মানুষ, তখন পুলিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-অনুমোদিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের অভিযানের সুযোগে গ্রেফতারবাণিজ্যের মতলব এঁটেছে। অজ্ঞাতনামা হাজারো মানুষের নামে গ্যাংকেসের মামলা সাজিয়ে পয়সাওয়ালা গৃহস্থের জওয়ান ছেলেমেয়েকে ওই মামলায় ফাঁসিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেয়া এখন মহানগর পুলিশের মতো মফস্বল পুলিশেরও রমরমা ব্যবসায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই কায়দায় ২৯ মার্চ শুক্রবার ভোর রাতে ‘আসামি’ ধরার অভিযান চালাতে গিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শ্যামপুরে গোপালনগর মোড়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন মসজিদের মাইকে ‘গ্রামে ডাকাত পড়েছে’ বলে ঘোষণা দেয়। এ ঘোষণায় গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশকে ঘেরাও করে এবং সাতজন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে। তাদের উদ্ধার করতে ভোর ৫টায় অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি এসে তাড়া করলে গ্রামবাসীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং আহত হন ৩০ জন।
একই দিনে সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস পুলিশকে নির্দেশ দিলে পুলিশ চার-পাঁচটি হোন্ডাযোগে সিভিল পোশাকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মধুপুর বাজারে চা দোকানদার জামায়াতকর্মী হাবিবুর রহমানকে আটক করে। খবর পেয়ে এলাকাবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে এগিয়ে এলে পুলিশ দ্রুত আসামিসহ থানায় চলে আসে। থানাপুলিশ ফিরে এসে গ্রামবাসীর ঐক্য দেখে দোকানিকে ছেড়ে দিতে চাইলে মন্ত্রীর ছেলেসহ কিছু আওয়ামী সন্ত্রাসী ও সশস্ত্র পুলিশ অতর্কিতে গুলিবর্ষণ করতে করতে এগোতে থাকে। অবিরাম গুলিবর্ষণে অন্তত ৩০ জন আহত হন। গুরুতর আহত ১৫ জনকে হাসপাতালে নেয়ার পথে দু’জন মারা যায়। অন্য দিকে খুলনায় যুবলীগ ক্যাডারদের হাতে বিএনপির দুই নেতা নিহত হয়েছেন। এসব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও খুলনায় সকাল-সন্ধ্যা এবং সিরাজগঞ্জে আধা বেলা হরতাল পালিত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে শনিবার ব্যাপক জনবিােভ ও দোয়া দিবস পালিত হয়।
৩০ মার্চ শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টর্নেডোর আঘাতে তিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকার সারা দেশে মানুষ হত্যা শুরু করেছে। আপনারা দেখেছেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় এমনকি শুক্রবারও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জে মানুষ হত্যা করেছে। সেখানে গ্রামের মানুষ লাঠিসোঁটা, মা-বোনেরা ঝাড়– নিয়ে বের হয়ে এসেছে। তাদের ধাওয়া করে সরকার মানুষ হত্যা করছে। সরকারের লজ্জা যদি থাকত তাহলে এত দিনে মতা ছেড়ে দিত। এরা বেহায়া। এদের দুই কান কাটা। তাই কোনো কিছু দেখেও না, শোনেও না। এরা চুরি-দুর্নীতি-লুটপাট করে দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে। সব শ্রেণিপেশার মানুষ সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বললেও তারা সে দিকে কোনো কর্ণপাত করছে না। তাই এই ব্যর্থ সরকারকে বিদায় দেয়ার সময় এসেছে। ৩১ মার্চ রাতদুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় ল্য করে দুর্বৃত্তরা গুলিবর্ষণ করেছে। রাত পৌনে ১২টায় মোটরসাইকেল আরোহী একদল দুর্বৃত্ত খালেদা জিয়ার কার্যালয় ল্য করে তিন রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায়। এ সময় বেগম জিয়া কার্যালয়ের ভেতরেই অবস্থান করছিলেন।
খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে গুলি করার খবর শুনেই ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা দলে দলে সেখানে ছুটে যান। তারা কার্যালয়ের সামনে সরকারের বিরুদ্ধে বিােভ প্রদর্শন করেন। গুলির ঘটনা শুনে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরাও আসেন। তারা আশপাশে তল্লাশি চালান।
গুলিবর্ষণের দুই ঘণ্টা আগে বেগম খালেদা জিয়া তার কার্যালয়ে ১৮-দলীয় জোটের শীর্ষনেতাদের নিয়ে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠক শেষে ২ এপ্রিল সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল এবং ১০ এপ্রিল ঢাকায় সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। গুলির ঘটনার ফলে রাতদুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা গুলশান কার্যালয়ে আবার মিলিত হয়ে ১ এপ্রিল সোমবার সকাল ১০টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদসভার সিদ্ধান্ত হয় চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে । সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরদিন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিােভ সমাবেশে আবার ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। কয়েক শ’ নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশ শুরু হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের বক্তব্যের শেষ দিকে হঠাৎ পরপর কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। কার্যালয়ের সামনে রাখা বেসরকারি টেলিভিশনের একটি মাইক্রোতে অগ্নিসংযোগ ও দু’টি গাড়ি ভাঙচুর হয়। সন্ধ্যায় গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে সরকারের লোকজন সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। গণমাধ্যমের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের সাথেও সরকারের লোকজন জড়িত। আমরা এই ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। বিরোধীদলীয় নেতার গুলশান কার্যালয়ে গুলি ও সমাবেশের হামলা একই সূত্রে গাঁথা।’
অন্য দিকে ৩১ মার্চ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলাওয়ার হোসেনকে বেলা দেড়টায় শ্যামলীর এক বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। প্রতিবাদে ছাত্রশিবির দেশব্যাপী বিােভ এবং মঙ্গলবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছে। অবিলম্বে তাকে মুক্তি না দিলে লাগাতার হরতালসহ কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে ছাত্রশিবির। স্পষ্টত মতাসীন দল বিরোধী সব পকে উসকানি দিয়ে চলেছে। শিবিরের হরতালের ডাক টেলিভিশনে এসেছে ১৮ দলীয় জোটের হরতাল ঘোষণার বেশ আগেই। সোমবার হরতালের পে পিকেট চলেছে দেশজুড়ে। রাজশাহীতে শালবাগান এলাকায় শিবির কর্মীরা এক পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুত্বভাবে আহত করেছে। হরতালের সমর্থনে ১৮-দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিােভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলাওয়ার হোসেনের মুক্তি দাবিতে বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় কর্মীরা। এসব ঘটনায় ৬০ জন আহত হয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ১৪০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়া সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পিকেটিং করতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় এক শিবিরকর্মী নিহত হয়। হরতালের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে, রেললাইন উপড়ে ফেলার ফলে ইঞ্জিনসহ ছয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। যাত্রীরা আহত হয়েছেন। সহিংস হরতাল চলেছে দেশজুড়ে।
এসব রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি আরো রয়েছে ৬ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের ডাকে সারা দেশ থেকে ঢাকায় লংমার্চের কর্মসূচি। লংমার্চ ঠেকাতে সরকারের বিভিন্ন ধরনের চাপ আর টোপ নিষ্ফল হয়েছে। এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ছয় সিনিয়র মন্ত্রী আর দলীয় যুগ্মসচিব মিলে নেপথ্যমতাধর কিচেন ক্যাবিনেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে : সরকারের তিন দফা শর্ত মানলে হেফাজতে ইসলাম ঢাকায় লংমার্চ ও মহাসমাবেশ করতে পারবে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ বিরোধীদলীয় জোটের বৃত্ত ছেড়ে তারিখ পরিবর্তন করে কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া ব্লগারদের শাস্তির দাবির পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি করতে হবে। কিন্তু সরকারের দেয়া শর্ত না মানলে সহিংসতার আশঙ্কায় সরকার ৬ এপ্রিল আহূত লংমার্চ কর্মসূচি পালন করতে দেবে না। ঢাকায় আসার জন্য দেশের যে যে প্রান্তে গণজমায়েত করা হবে, সেখানেই বাধা দেয়া হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর প্রকাশ্যে আরো ঘোষণা দিয়েছেন : দেশ থেকে ‘মৌলবাদী’দের মূলোচ্ছেদ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সহজ বাংলায় এর তর্জমা হলোÑ শুধু অস্ত্রধারী জেহাদি বা ‘ঘাতক দালাল’ নয়, ইসলামি মৌলিক শিায় বিশ্বাসী সবাইকেই তিনি নির্মূল করার উদ্যোগ নিয়েছেন। শাহবাগীদের চেয়েও কঠিন শপথ তার।’
বাস্তবিক জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে মতাসীন দল ও তার সপশক্তি। এভাবেই কথাটা বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাষ্ট্রের দমনমতাকে এভাবে জনসাধারণের বিরুদ্ধে প্রয়োগের চলমান দুরাচার এখন আন্তর্জাতিক মহলেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের রায়ের ফলে ফেব্র“য়ারি থেকে চলমান সহিংসতা দ্রুত বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ উপায়ে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞ দল। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডবিষয়ক বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান ক্রিস্টোফ হেইনস বলেছেন, সম্প্রতি যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার সুষ্ঠু, নিরপে ও দ্রুত তদন্তের জন্য বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, তাদের বাড়িঘর ও উপাসনালয় এবং গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলায় জাতিসঙ্ঘ বিরক্ত। সংখ্যালঘুবিষয়ক বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান হেইনার বেলফেল্ড বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। আইন বিভাগের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান গ্যাব্রিয়েলা নাউল বলেন, সরকারের উচিত অতীতের মানবাধিকার আইন ভঙ্গের কারণে নির্যাতিতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। গ্যাব্রিয়েলা নাউল ও ক্রিস্টোফ হেইনস বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে স্বচ্ছতার বিষয়টি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত আবুল কালাম আযাদের রায়ের বিষয়ে তারা বলেন, একজন পলাতক আসামিকে ফাঁসির রায় দেয়াটা স্বচ্ছ বিচারব্যবস্থার উদাহরণ হতে পারে না।
তবে এসব বৈদেশিক সমালোচনা বা সৎপরামর্শ শোনার মতো মেজাজমর্জি সম্ভবত মতাসীনদের কারো মধ্যেই আর নেই। হরতালে বড় রকমের কোনো অঘটন ঘটলে আবারো টানা হরতাল হবে। তারপর ৬ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ বাধা পেলে রয়েছে লাগাতার হরতালের আশঙ্কা। আতঙ্কগ্রস্ত নাগরিকেরা ভাবছেন, শাহবাগীরা দুই মাস ধরে নিরাপত্তাবেষ্টিত মেকি গণজাগরণের মহড়ার প্রতিক্রিয়ায় দেশব্যাপী যে তাহরির স্কোয়ারের সঙ্ঘাত ডেকে এনেছে একরোখা হাসিনা সরকার, সেটা সামলাবে কী করে?
লেখক : বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন