মো: আশিকুর রহমান (রাজীব)
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের সুনাম ও ঐতিহ্য বাংলাদেশ ছাড়িয়ে দেশের বাইরেও। আমরা কিশোরগঞ্জের সব সরলমনা ধর্মপ্রাণ মুসলমান প্রতি বছরই এই ময়দানে ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকি। প্রতি বছর ঈদের কিছু দিন আগে থেকেই স্থানীয় মুসলমানের মাঝে সুপ্রাচীন ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হতে থাকে। বিগত কয়েক বছরে ক্ষমতাসীন দলীয় চাপে স্থানীয় প্রশাসন ঐতিহাসিক এই ঈদগাহ ময়দানকে নিয়ে যে ভূমিকা রেখেছে, এতে কিশোরগঞ্জবাসী ভীষণ ুব্ধ। স্থানীয় মুসলমানদের দাবি ও মতামত অগ্রাহ্য করে এবং নিয়মরীতি ও ঐতিহ্য ভঙ্গ করে এবং নোংরা দলীয়করণের মাধ্যমে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের নিয়মিত ইমাম মাওলানা মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহকে বাদ দিয়ে বহুল বিতর্কিত মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদকে ঈদের নামাজ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাকে নিয়োগের পর থেকে আমরা দেখতে পেয়েছি, কঠোর পুলিশি প্রহরায় শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে তাকে প্রবেশ করতে হয়েছে; যা আমরা কিশোরগঞ্জবাসী অতীতে কখনো দেখিনি।
বাস্তবতা হলো, কিশোরগঞ্জের সরলমনা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতের ইমাম হিসেবে এই ব্যক্তিকে কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, বর্তমান প্রেক্ষাপটে শাহবাগে গিয়ে মহলবিশেষের ব্লগারদের সাথে প্রকাশ্যে একাত্মতা ঘোষণা করায় মাসউদ সারা দেশে আরো বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন। কিছু দিন আগে নয়া দিগন্তের অনুসন্ধানমূলক রিপোর্টে বেরিয়ে আসে তার বহুল বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের খবর। অবস্থা এখন এমনই যে, কিশোরগঞ্জের মুসলমানদের কাছে ফরিদ উদ্দিন মাসউদের গ্রহণযোগ্যতা নেই। স্বাভাবিকভাবেই আলেমসমাজ তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। কিছু দিন আগে কিশোরগঞ্জের শহীদী মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ওলামা কনভেনশনে জেলার সব আলেম মাসউদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। দলমত নির্বিশেষে কিশোরগঞ্জের গণমানুষের গর্ব ও ঐতিহ্যের প্রতীক শোলাকিয়া ময়দান। আমরা এখানে ঈদের নামাজ পরিচালনায় ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিযুক্ত ও বিতর্কিত কাউকে ইমাম হিসেবে দেখতে চাই না। ঈদগাহ ময়দানের আগের ইমামকে ফিরিয়ে এনে ইমামতির দায়িত্ব দিয়ে সব বিতর্কের অবসান ঘটানো এবং ময়দানের সুনাম ও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়াই ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রাণের দাবি।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন