তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতির প্রথম নির্বাচনে জয়ী হয়ে ১৯৯৬ সালের জুনে শেখ হাসিনা প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন। গোড়ার দিক থেকেই আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী গঠন শুরু হয়। আমি তখন অন্য একটি পত্রিকায় কলাম লিখি। একাধিক প্রবন্ধে শেখ হাসিনাকে আমি হুঁশিয়ার করে দিয়েছিলাম, বলেছিলাম কাজটা স্বল্প ও দীর্ঘ উভয় মেয়াদে দেশের জন্য ভয়াবহ প্রমাণিত হবে।
তখনই আমি হুঁশিয়ার করে দিয়েছিলাম, চোর-ডাকাত ও খুনিরা শেখ হাসিনার ক্যাডারের ছত্রছায়ায় তাদের দুষ্কৃতিগুলো বাড়িয়ে তুলবে, দেশে চুরিডাকাতি ও খুনখারাবি বেড়ে যাবে। আরো বলেছিলাম, আওয়ামী লীগ যদি অস্ত্রবলে রাজনীতি করে তাহলে বিরোধীদেরও কোনো না কোনো পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের কথা ভাবতে হবে। প্রকৃতির নিয়মটা পদার্থ বিজ্ঞানীরা যুক্তিতর্ক আর হিসাব-নিকাশ করে প্রমাণ করেছেন : ‘এভরি অ্যাকশন হ্যাজ ইটস রি-অ্যাকশন’ প্রতিটি ক্রিয়ারই প্রতিক্রিয়া হবে।
ক্যাডারদের ভয়াবহ তৎপরতা শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের আমলেও সবাইকে চিন্তাগ্রস্ত ও উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। মিডিয়ায় ক্যাডারদের গডফাদার হিসেবে ফেনীর জয়নাল হাজারী, লক্ষ্মীপুরের আবু তাহের, নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমান এবং ঢাকার কয়েকজনের নাম তখন ব্যাপকভাবে উল্লেখ করা হতো। এদের উৎপাত সম্বন্ধে প্রশ্ন করায় এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের রীতিমতো তিরস্কার করেছিলেন। অনেক রাজনৈতিক হত্যার জন্য সাধারণভাবেই এরা দায়ী বলে বিশ্বাস করা হতো। বর্তমান দফায় ক্ষমতায় এসে সরকার এদের সবাইকেই পুনর্বাসিত করেছে। সে সময়ের রাজনৈতিক হত্যার জন্য প্রাণদণ্ডপ্রাপ্ত ২১ জনের দণ্ড এই সরকার মওকুফ করে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নিজেও রাজনৈতিক হত্যার বিরোধী ছিলেন বলে মনে হয় না। চাটগাঁর আওয়ামী লীগ নেতাদের তিনি ‘একটির বদলে দশটি লাশ ফেলা’র তাগিদ দিয়েছিলেন, ব্যঙ্গ করে তাদের শাড়ি পরার পরামর্শ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় দফায় গদি পাওয়ার লক্ষ্যেও আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক হত্যার আশ্রয় নিয়েছিল। ২০০৬ সালের অক্টোবরে লগি-লাঠি-বৈঠার লাগাতার হরতালে পিটিয়ে অনেকগুলো মানুষের হত্যার কথা এ প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে।
বর্তমান দফায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সময় থেকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ প্রভৃতি আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যেন সশস্ত্র ক্যাডারদের সাথে মিশে একাকার হয়ে গেছে। হত্যার রাজনীতি অনেকটা স্বাভাবিক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। হল দখল, ভর্তিবাণিজ্য, সরকারের বিরোধীদের সম্পত্তি ও ব্যবসায় দখল ইত্যাদি বাবদ বহু হত্যা তো হয়েছেই, তার ওপরও বেছে বেছে (সিলেকটিভ) বহু হত্যা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন সাংবাদিক আছেন। সরকারের, শাসক দলের এবং সে দলের কিংবা কোনো না কোনো অঙ্গসংগঠনের সমালোচনা করে সাংবাদিকেরা যেন নিজেদের মৃত্যুর পরোয়ানাই লিখে দিয়েছিলেন।
গ্রেফতার, নির্বিচার হত্যা ও গুম-খুন
সরকার এক দিকে বিরোধী দলের হাজার হাজার কর্মী এবং শীর্ষ সারির শতাধিক নেতাকে সাজানো মামলায় কারারুদ্ধ করে রেখেছে, অন্য দিকে গত সপ্তাহে প্রকাশিত মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সরকারের আমলে ৪২৬ জনকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। গুম হয়েছেন ১৫৬ জন। এদের মধ্যে ২৮ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেলেও আজ পর্যন্ত অন্যদের কোনো খোঁজখবর পাওয়া যায়নি। নিখোঁজদের মধ্যে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ইলিয়াস আলী এবং ঢাকার ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার চৌধুরী আলম। ইলিয়াসের মুক্তির জন্য বিভিন্ন বন্ধুদেশ বাংলাদেশ সরকারকে বারবার অনুরোধ করলেও সরকারের দিক থেকে সাড়া মেলেনি। মনে হচ্ছে হত্যা, গুম ও কারারুদ্ধ করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের রাজনীতির অঙ্গন থেকে সরিয়ে দিয়ে সরকার আগামী নির্বাচনে বিজয়ের পথ সুগম করতে চায়।
বর্তমান সরকারের আমলে সম্পূর্ণ দলীয়কৃত পুলিশ বাহিনীও যেন সশস্ত্র ক্যাডারদের পরিপূরক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সভা-সমাবেশ কিংবা রাজনৈতিক মিছিলে শান্তি বজায় রাখা পুলিশের কাজ। কিন্তু সরকার এখন পুলিশের পাশাপাশি তাদের ক্যাডারদের এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগকেও মোতায়েন করছে। প্রকৃত প্রস্তাবে অশান্তি এরাই সৃষ্টি করছে। এরা বিরোধী দলগুলোর বিধিসম্মত সমাবেশ কিংবা মিছিলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে, খুন-জখম করছে, আর পুলিশ যেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে। বিশ্বজিৎ হত্যার ব্যাপারেও দেখা গেছে, ছাত্রলীগের কর্মীরা যখন চাপাতির আঘাতে লোকটাকে খুন করছিল পুলিশ তখন নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পরিহাস এই যে, ক্যাডারদের আর পুলিশের সৃষ্ট অশান্তির জন্য সরকার বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের হুকুমের আসামি করছে, তাদের জেলে বন্দী রেখে সরকার আশা করছে, বিরোধী দলের আন্দোলন তারা এভাবেই ঠেকাবে।
নিজের সৃষ্ট কুকাণ্ডগুলোর কারণে দেশে এখন সরকারের কোনো জনসমর্থন নেই। আইনশৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতির ওপরেও ইসলামি সন্ত্রাস দলনের নামে টুপি-দাড়ি পরিহিত ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও হয়রানি, যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে বিতর্কিত ট্রাইব্যুনালে সরকারের বিরোধী কয়েকজন নেতার বিচার, তাদের প্রাণদণ্ড দিতে বিচারকদের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে কিছুসংখ্যক সন্দেহজনক চরিত্রের লোককে দিয়ে শাহবাগে একটা দঙ্গল সৃষ্টি, শাহবাগীদের কয়েকজনের ইসলামবিরোধী কুৎসা রটনার খবর ফাঁস এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদীদের ওপর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করে একটা গণহত্যাÑ ইত্যাদি কারণে বর্তমান সরকার দেশবাসীর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, সাধারণ মানুষ সরকারের পতন চায়।
দেশবাসী রুখে দাঁড়িয়েছে
পাঠকেরা অবশ্যই লক্ষ করে থাকবেন, সাম্প্রতিক কিছু দিনে এখানে-সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে চার-পাঁচজন ছাত্রলীগ কর্মী মারা গেছেন। এই সরকারের আমলে কোনো দুষ্কৃতেরই সঠিক তল্লাশি হয় না, প্রকৃত দুষ্কৃতকারীরা ধরা পড়ে না। পুলিশ সরকারের রাজনৈতিক হুকুম তামিল করতে এতই ব্যস্ত থাকে যে, অপরাধ নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় তাদের থাকে না। তবে ধরে নেয়া যেতে পারে, ছাত্রলীগের এত দিনের ‘অ্যাকশনের’ (সহিংসতার) ‘রি-অ্যাকশন’ (প্রতিক্রিয়া) শুরু করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক বন্দীর সংখ্যা লাখখানেক বলে অনুমান করা হয়েছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ কিংবা ক্যাডারদের তৃণমূল সদস্যরা বহু ক্ষেত্রেই পুরনো অসদ্ভাব অথবা বহু ক্ষেত্রে শুধু শোনা কথার ওপর ভিত্তি করে এর-তার দিকে আঙুল তুলেছে এবং সরকারের পুলিশ এসে তাদের ধরে নিয়ে গেছে। এই গ্রেফতার ব্যাপারটা পুলিশের জন্যও রীতিমতো একটা বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে।
কোথাও কোনো রাজনৈতিক অশান্তি ঘটলে পুলিশ কোনো রকম সাক্ষ্যপ্রমাণ, এমনকি প্রত্যক্ষ কোনো অভিযোগ ছাড়াই অজ্ঞাত পরিচয় হাজার হাজার মানুষের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে রাখছে। এই মামলাগুলোকে তারা হাঁড়িভর্তি জিওল মাছের মতোই ব্যবহার করছে। গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে তারা নিরীহ-নির্দোষ মানুষের কাছ থেকে ‘চাঁদা’ আদায় করছে। চাঁদা না দিলে বিএনপি কিংবা জামায়াতের কর্মী অপবাদ দিয়ে তাদের গ্রেফতার করছে।
এরও প্রতিক্রিয়া ঘটতে শুরু করেছে দেশজুড়ে। বিগত কিছু দিনে এক ডজনেরও বেশি স্থানে দেখা গেছে, পুলিশ কাউকে ধরতে এলে গ্রামবাসী ও স্থানীয় জনতা তাদের ওপর চড়াও হচ্ছে। স্থানীয়রা বুঝে গেছে পুলিশ কোনো দুর্বৃত্ত কিংবা দুষ্কৃতকারীকে ধরতে আসছে না, আসছে সরকারের হুকুমে কোনো রাজনৈতিক কর্মীকে গ্রেফতার করতে, অথবা নিজেদের গ্রেফতারবাণিজ্যের অংশ হিসেবে ঘুষের আশায় কোনো নিরীহ ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যেতে। এসব অত্যাচার সহ্য করতে দেশের মানুষ আর রাজি নয়। এ কারণেই রাজধানীর বাইরে গ্রামগঞ্জে যেতে পুলিশ এখন ভয় পাচ্ছে।
বিরোধী দল কিংবা আন্দোলনকারীরা কোনো কর্মসূচি দিলে সরকার রাজধানীতে আসার সব পথ ও যানবাহন বন্ধ করে দিচ্ছে। তারা ভাবছে স্ব-আরোপিত অবরোধে রুদ্ধ রাজধানীতে তারা অবরুদ্ধ দুর্গের সৈন্যদের মতোই নিরাপদ থাকবে। কিন্তু ৬ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের সমাবেশেও দেখা গেছে, রাজধানী ও আশপাশের মানুষও সরকারের বিরোধী হয়ে পড়েছে। সুতরাং অবরুদ্ধ রাজধানীতে তারা আর বেশি দিন নিরাপদ থাকবে না।
গার্মেন্টকর্মী দিয়ে নারী সমাবেশ
হেফাজতের সাফল্যের বিরুদ্ধে যে তাদেরও জনসমর্থন আছে, তা জাহির করার জন্য রাজধানীতে নারী মহাসমাবেশ ডেকেছে সরকার। কিন্তু তার ভেতরের রহস্য সম্বন্ধে কতটুকু জানে সাধারণ মানুষ? কিছু দিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল থেকে এক ছাত্রী ই-মেইলে আমাকে জানিয়েছিলেন, শাহবাগীদের কয়েকজন তাদের হলে ঢুকে ছাত্রীদের শাহবাগীদের সমাবেশে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়ে গেছে; হুমকি দিয়ে গেছে যে, না গেলে পরিণতি ভালো হবে না। সরকারের কোনো কোনো মন্ত্রীও বলেছেন, নারী সমাবেশে যোগদান সব ছাত্রীর জন্য বাধ্যতামূলক। সরকার গার্মেন্ট শিল্প মালিকদের বলেছে, তাদের হাজার হাজার নারীকর্মীকে প্রস্তাবিত নারী সমাবেশে হাজির করতে। তাদের টোপ দেয়া হয়েছে তাহলে হাতিরঝিলে গার্মেন্ট মালিক সমিতির বহুতল ভবনটি ভাঙা হবে না। ভাড়াটে জনতা দিয়ে জনপ্রিয়তা দেখানোর পুরনো টেকনিকে বাংলাদেশের মানুষ এখন আর ভোলে না।
ছাত্রলীগ-যুবলীগ এখন আর আগের মতো বিনা বাধায় তাদের অত্যাচার-নির্যাতন চালাতে পারছে না। পুলিশ বাহিনীর মতো তারাও ক্রমেই বেশি করে স্থানীয় জনসাধারণের কোপে পড়ছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি ঘটেছে ফটিকছড়ির ভূজপুরে। ছাত্রশিবির সেদিন সেখানে একটা সমাবেশ ডেকেছিল। ছাত্রলীগ, যুবলীগ আর আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের একটি বিরাট বাহিনী দুই শ’রও বেশি মোটরসাইকেল এবং কয়েকটি গাড়ি নিয়ে শিবিরের সমাবেশের ওপর হামলা করতে আসে। স্থানীয় জনতা তাদের ঘিরে ফেলে। তিনজন হানাদার মারা গেছে, আহত হয়েছে শতাধিক। দুই শতাধিক মোটরসাইকেল ও কয়েকখানি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় জনতা।
সাধারণ ও স্বাভাবিক অবস্থায় আশা করা যেত যে, এই ঘটনা থেকে সরকার শিক্ষা নেবে। কিন্তু এ সরকার সাধারণ কিংবা স্বাভাবিক নয়। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী কোনো কিছু কিংবা কারো কাছ থেকে শিক্ষা নিতে নারাজ। গত সপ্তাহে তিনি বলেছেন, ছাত্রলীগই শিবিরের মোকাবেলা করবে। প্রধানমন্ত্রীর এই উক্তিকে দেশের মানুষ হুমকি বলেই মনে করবে এবং তারা রীতিমতো আতঙ্কিত হবে।
ফসল কাটা হলো কিন্তু গোলায় উঠল কই?
এ কথা কারোই অজানা নয় যে, আওয়ামী লীগের ক্যাডার এবং ছাত্রলীগের হাতে এখন বহু আগ্নেয়াস্ত্র আছে। প্রয়োজন বোধে অস্ত্র সংগ্রহ করা শিবিরের জন্যও অসম্ভব হবে না। দেশব্যাপী একটা বন্দুক-রাইফেলের যুদ্ধের আশঙ্কা লুকিয়ে আছে প্রধানমন্ত্রীর উক্তিতে। মনে হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী এখন ব্যালটের জোরে বিজয়ের আশা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছেন। এখন তিনি বুলেটের জোরে গদি আঁকড়ে থাকতে চান। কিন্তু বন্দুকের যুদ্ধের ফলাফলের ওপর নির্ভর করা বিপজ্জনক হতে পারে। ইতিহাসে বহু দেশ ও বহু শাসক জয়ের আশা নিয়ে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন, কিন্তু ভাগ্য শেষ পর্যন্ত তাদের ওপর প্রসন্ন থাকেনি।
আরেকটা প্রশ্ন নিশ্চয়ই অনেকের মনে আসবে। দেখা যাচ্ছে, দেশের সর্বত্র মানুষ এখন সরকারের বিপক্ষে চলে গেছে। কিন্তু বিএনপি এবং বিরোধী জোট কেন এখনো এ পরিস্থিতির পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করতে পারছে না? কেন তারা সরকারের পতন ঘটাতে পারছে না? অবস্থাটা যেন মাঠভর্তি ফসল কেটে বিছিয়ে রাখা হয়েছে, কিন্তু সে ফসল কৃষকের গোলায় উঠছে না। অতীতে এ সমালোচনা শোনা গেছে যে, খালেদা জিয়া অকান্ত পরিশ্রম করলেও দলীয় নেতৃত্বের একাংশ যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন না। এমনকি কেউ কেউ নাকি আন্দোলনে পিছুটান দিচ্ছেন।
এখন আবার সাজানো মামলা দিয়ে শতাধিক শীর্ষ নেতাকে জেলে বন্দী রাখা হয়েছে। কিন্তু তাতেই যদি আন্দোলন বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সে আন্দোলনকে সার্থক আন্দোলন বলা যাবে না। আমার এখনো মনে আছে, ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতার আন্দোলনে গান্ধী-নেহরু থেকে শুরু করে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ রাখা হয়েছিল; কিন্তু কংগ্রেসের স্বাধীনতার আন্দোলন থেমে যায়নি। বরং নি¤œতর স্তরের নেতারা, এমনকি স্থানীয় কর্মীরাও দ্বিগুণ উদ্যমে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সে রকম প্রত্যয় না থাকলে কোনো আন্দোলনই সত্যিকারের সাফল্য অর্জন করতে পারে না।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন