ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য বিরোধী দলকেই দায়ী করা হচ্ছে। বিরোধী দলের ডাকা হরতালের সমালোচনা করা হচ্ছে। এ কথা সত্য যে, হরতাল মানেই দেশের অর্থনীতির জন্য বিপর্যয়ের খড়গ নেমে আসা। ইতোমধ্যে বিরোধী দলের ডাকা কয়েক দফা হরতালে ব্যবসায়-বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। রফতানি বাণিজ্য, বিশেষ করে দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরী পোশাকের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকেও হরতাল প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বিরোধী দলের সামনে এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়া ছাড়া আর কী-ই বা করার আছে। সভা-সমাবেশের অধিকার হরণ করে গ্রেফতারের মাধ্যমে যখন বিরোধী দলকে দমনের চেষ্টা করা হয়, তখন এ ধরনের কর্মসূচির পথে বিরোধী দল পা বাড়ায় এবং দেশে সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ ধরনের পরিস্থিতির দায় ক্ষমতাসীনদের নিতে হবে।
আমরা লক্ষ করছি, বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা বিরোধী দলকে নিপীড়নের মাধ্যমে দুর্বল করার কৌশল অবলম্বন করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীর গ্রেফতারের পাশাপাশি গুম ও খুনের ঘটনাও ঘটেছে। ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকেরা ভাবছেন, এর মাধ্যমে বিরোধী দলকে দুর্বল করে ফেলা যাবে, আর ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করা যাবে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষীÑ অত্যাচার, নির্যাতন ও দমনমূলক কর্মকাণ্ড বিরোধী দলকে নয় বরং ক্ষমতাসীন দলের ভিত্তিকেই দুর্বল করে দেয়। আপাতদৃষ্টিতে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে খানিকটা দুর্বল মনে হলেও দমনপীড়নের ফলে বিরোধী দলের ওপর জনসমর্থন বাড়তে থাকে। যত বেশি দমনপীড়ন চালানো হয়, ক্ষমতাসীনদের শেষ পরিণতি তত বেশি খারাপ হয়। আমরা আশা করব, বর্তমান ক্ষমতাসীনেরাও অতীত থেকে শিক্ষা নেবেন। বিরোধী দলের নেতাদের জেলবন্দী করা বা নিপীড়ন চালানোর পথ থেকে সরে এসে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের উদ্যোগ নেবেন।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন