আমাদের পূর্বপুরুষ, বাপ-দাদারা এই দেশটি আবাদ করে আমাদের দিয়ে গেছেন আমানত হিসেবে। এই দেশটি আমাদের কাছে বাপ-দাদার আমানত। পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া বায়া দলিল। যে সন্তান বা ওয়ারিশেরা বায়া দলিলের হেফাজত করে না, তারা সেই মালিক থাকতে পারে না। একদিন তারা নিজের সম্পদ ও জমিজমা থেকে উচ্ছেদ হয়ে যায়। বাংলাদেশে আজ এমন একটি অবস্থা বিরাজ করছে, যাতে আমাদের স্বাধীনতা থাকবে কি না, সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দেশ থাকলেও ইসলাম থাকবে কি না, সে প্রশ্ন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে। দিল্লি, কলকাতায় অনেকেই বলেন, মুসলমানদের টুপি থাকলেই চলেÑ পাছার কাপড় আছে কি না, দেখে না। এর মানে মুসলমানেরা বেকুব। কলকাতায় আমার এক মাড়োয়ারি বন্ধু আছে, সে বলে কাউকে বানাতে হলে আমরা বলি উসকো টুপি পহেনা দো। এর মানে যারা টুপি পরে তারা সবাই বোকা। মহাজ্ঞানী আল বিরুনির বিখ্যাত গ্রন্থ ভারত তত্ত্বে বলেছেন, ভারতীয় মায়েরা শিশুদের মামদো ভূতের গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াতেন। তখন বিদেশী ইসলাম প্রচারক মুসলমান, বাদশাহ, সৈনিক, দরবেশ যারা ভারতে এসেছেন তাদের সবার পোশাক ছিল লম্বা জুব্বা, মাথায় পাগড়ি, মুখে লম্বা দাড়ি। ভারতে এ ধরনের পোশাক পরিচিত ছিল না। তখন নাকি ভারতীয়রা সেলাই করা পোশাক পরতে জানত না। খাদ্যের ব্যাপারেও তারা তেমন সচেতন ছিল না। মুসলমানেরাই পোশাকের রীতিনীতি, সুস্বাদু খাদ্য, ইতিহাস রচনা, উচ্চাঙ্গসঙ্গীত সাধনা ভারতে নিয়ে এসেছেন।
আমাদের পূর্বপুরুষ বাপ-দাদারাই আমাদের দিয়ে গেছেন উচ্চতর ধর্মের জীবনব্যবস্থা ও ভারতীয় জীবনের বর্ণবাদ থেকে মুক্তির সনদ। আর সেটাই হলো ইসলামের সাম্যবাদ, যেখানে মানুষে মানুষে নেই কোনো ভেদাভেদ। মসজিদের একই কাতারে দাঁড়িয়ে রাজা-প্রজা আল্লাহর সম্মুখে দাঁড়িয়ে নামাজ বা সালাত আদায় করে। ইসলাম হাজার ঈশ্বরের পূজা থেকে মানুষকে মুক্তি দিয়েছে। ইসলামই মানুষকে শোষণ থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে। ফলে অখণ্ড বঙ্গদেশকে একটি আধুনিক দেশে পরিণত করেছে মুসলমান শাসকেরা। কালক্রমে এই দেশটি মুসলমানদের মাতৃভূমিতে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বঙ্গের পূর্বাঞ্চলে মুসলমানদের আবাদি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। মাতৃভাষা বাংলাকে অচ্ছুতের ভাষায় পরিণত করেছিল হিন্দু শাসক ও ব্রাহ্মণেরা। মাতৃভাষা শিা লাভ করা তাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। এই তো মাত্র চার শ’ বছর আগে বাংলার মুসলমান কবি আবদুল হাকিম লিখেছেন,
‘যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী
সে সবার কিবা জন্ম নির্ণয় ন জানি।’
কবি তার নুরনামা কাব্য গ্রন্থটি লেখার জন্য ভাষার কথা চিন্তা করছিলেন। সে সময়ে মুসলমান কবিরা কাব্যচর্চা করতেন ফার্সি অথবা সংস্কৃত ভাষায়। বাংলা ছিল ইতরজনের ভাষা। দরবারে এর কোনো স্থান ছিল না। হোসেনি আমলে বাংলা ভাষার কদর বাড়ে। নবাব বা বাদশাহরা সংস্কৃত ও ফার্সি থেকে বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করান। হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থগুলো সংস্কৃত ছাড়া অন্য ভাষায় বাংলা ভাষায় পড়া নিষিদ্ধ ছিল। যদি কেউ পড়ত তাদের শাস্তি দেয়া হতো। বিশেষ করে হরিজন বা অচ্ছুৎদের ধর্মচর্চার অধিকার ছিল না। সে অবস্থা থেকে অচ্ছুৎদের মুক্তি দিয়েছে মুসলমান শাসক ও দরবেশেরা। আধুনিক ভারতের প্রতিষ্ঠাতা পণ্ডিত জওয়াহেরলাল নেহরু নিজেই বলেছেন, মুসলমানেরাই ভারতে উন্নত সভ্যতা নিয়ে এসেছেন। এর ভেতর রয়েছে উচ্চাঙ্গসঙ্গীত, সঙ্গীতযন্ত্র, ইতিহাস রচনা, বাগানচর্চা, পয়ঃপ্রণালী, স্থাপত্যশিল্প। সারা ভারতে এখনো ছড়িয়ে আছে মুসলমানদের স্থাপত্য কর্মের নিদর্শন। ওস্তাদ আমীর খসরুই ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পিতা। ইসলাম এবং মুসলমানেরা ভারতে এসেছে সপ্তম খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে। ৭১১ সালের দিকেই মুহম্মদ বিন কাশেম সিন্ধু বিজয় করে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। পুরো ভারতে মুসলমানদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় ১৩ শ’ সালের দিকে। শেষ হয় ১৮৫৮ সালে বাহাদুর শাহের পরাজয়ের মাধ্যমে। ইংরেজরা বাংলা দখল করে নেয় হিন্দুদের সহযোগিতায় ১৭৫৭ সালে। ’৭১ সালে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, ‘হাজার সালকা বদলা লিয়া’। আপনারা গভীরভাবে অনুধাবন করুন, কেন ইন্দিরা গান্ধী এ কথা বলেছিলেন। পাকিস্তানকে পরাজিত করে তিনি হাজার বছরের মুসলিম শাসনের প্রতিশোধ নিয়েছিলেন। ইন্দিরাজীর এই বক্তব্যের মাধ্যমে ভারতের শাসকগোষ্ঠীর ইতিহাস চেতনা কী, তা সুস্পষ্ট।
ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব বাবু এক সময় বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন। সে সময় যত দূর মনে পড়ে আমি নিউনেশনে কাজ করতাম। প্রণব বাবুর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি হাসতে হাসতে বললেন, ’৭১-এ তোমরা বাঙালি হতে চেয়েছিলে, তাই আমরা তোমাদের সমর্থন করেছি। এখন দেখছি, তোমরা মুসলমান হওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছ। যদি মুসলমানই থাকতে চাও তাহলে পাকিস্তান ছাড়লে কেন? সে সময় মোরারজি দেশাই হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ মানে আরেকটি পাকিস্তান। এখন দেখছি, মিস্টার দেশাইয়ের কথাই ঠিক।’ আবারো হাসতে হাসতে বললেন, রিপোর্ট করো না। সত্যিই তো, ভারত আমাদের শুধুই বাঙালি হিসেবে দেখতে চায়। শুধু বাঙালি হলে হয়তো ভারতের খুবই সুবিধা হয়। তাহলে আমাদের সংস্কৃতি আর পশ্চিম বাংলার সংস্কৃতিতে কোনো ফারাক থাকে না। আসলে দিল্লি মনে করে বাঙালি সংস্কৃতি মানে কলকাতার হিন্দুদের সংস্কৃতি।
৪২ বছরে বাঙালি সংস্কৃতির নামে পশ্চিম বাংলার সংস্কৃতি বাংলাদেশের তথাকথিত শিতি সেকুলার সমাজকে প্রায়ই দখল করে নিয়েছে। মিডিয়াও বাংলাদেশের মুসলমান বাঙালিদের সংস্কৃতি ভুলতে বসেছে। ভারতীয় চ্যানেলের বদৌলতে আমাদের শিশুরা এখন হিন্দি গান গায়, হিন্দিতে কথা বলে। উর্দুর ভয়ে আমরা পাকিস্তান ত্যাগ করেছি। এখন হিন্দি আমাদের সব কিছু দখল করে নিচ্ছে।
আর কত বছর লাগবে তা জানি না, একদিন হয়তো আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বলে আর কিছু থাকবে না। ভারতীয় সব চ্যানেলই এখন বাংলাদেশে দেখানো হয়। ভারতীয় সাহিত্যিক, কবি, গায়ক-গায়িকারা সারা বছরই বাংলাদেশে আসছে। ভারতীয় বই তিন গুণ দামে বাংলাদেশে বিক্রি হয়। ভারতীয় কাপড়-চোপড়ের দোকান এখন ঢাকার সর্বত্র। দিল্লি তো আর বাঙালিরা শাসন করে না। তারা জানে, বাংলাদেশের মুসলমানদের খাঁটি ষোলয়ানা বাঙালি বানাতে কী করতে হবে। হিন্দুয়ানি কায়দায় পয়লা বৈশাখ পালন, একুশের অনুষ্ঠান, কবিগুরুর জন্ম ও মৃত্যু দিন পালন, বসন্ত উৎসবের নামে হোলিখেলা, শহীদ মিনারে মরদেহ নিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া ইত্যাদি করতে যত টাকা দাও। সারা বছর গান্ধী, ঈশ্বরচন্দ্র, বঙ্কিকমচন্দ্র, নেহরুসহ আরো অনেকের স্মরণ সভা করার জন্য টাকা দাও। ব্যাটারা বাংলা ভাষা চেয়েছিল এখন হিন্দি বলতে বলতে কাহিল হয়ে যাবে। মঙ্গল প্রদীপ জ্বালাবে, উলুধ্বনি দেবে, কৃষ্ণ মিছিল করবেÑ মনে করবে এর সবই বাঙালি সংস্কৃতি বা কালচার। মেয়েরা এখন গলায় এক রকম গামছা জড়িয়ে রাখে ফ্যাশন হিসেবে। ওড়না বা পর্দার জন্য নয়। এরা এখন জিন্সের প্যান্ট পরে, টি-শার্ট বা গেঞ্জি গায়ে দেয়।
মুম্বাই বা কলকাতায় যে ফ্যাশন চালু হচ্ছে তাই ঢাকা বা বাংলাদেশে চালু হচ্ছে। ছেলেরাও কম যায় না। তারা মেয়েদের মতো ফ্যাশন করে পোশাক পরে। তারাও এখন পার্লারে যায় চুলের ফ্যাশনের জন্য, নিজেদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য। রাজধানীতে এখন বিবাহিত দশজন মেয়ের ভেতর আটজনই ডিভোর্সি বা তালাকপ্রাপ্ত। রাজধানীতে তালাকের মহামারী লেগে গেছে। ধনী পরিবারগুলোতে গিয়ে খবর নিন। জানবেন, তাদের একটি মেয়েও সংসার করছে না। তারা নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। নারী অধিকারে বিশ্বাস করে। নারীনীতিতে জরায়ুর স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। মা হওয়া না হওয়ার স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। ছেলেমেয়েদের নাম এমনভাবে রাখা হচ্ছে, আপনি কখনোই বুঝতে পারবেন না এরা মুসলমান কি না। বিশেষ করে সাংস্কৃতিক জগতে ইসলাম আর মুসলমানিত্বকে বহু তালাক দিয়েছে নাট্যব্যক্তিত্বরা। এরাই আবার বিজ্ঞাপন কোম্পানির মালিক। মোবাইল কোম্পানির বিজ্ঞাপন করে নাট্যনেতারা কোটি কোটি টাকা কামাই করে, যা তারা বাঙালিয়ানার আন্দোলনে খরচ করে। বাংলাদেশ একটি দেশ, যেখানে বিজ্ঞাপন মডেলরাও বুদ্ধিজীবী এবং জাতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মত প্রকাশ করে। এরাই আর্ট ফিল্মের নামে সরকারি অনুদান নিয়ে ইসলাম এবং মুসলমানবিরোধী সিনেমা বানায়। এসব সিনেমা বিদেশ থেকে পুরস্কারও পায়। এসব পরিচালককে দেশ জাতি নমঃনম করে মাথায় তোলে। এরা নিজেদের বাংলাদেশী বলতে লজ্জা পায়। এরা হিন্দুয়ানি ধর্মীয় কার্যকলাপকে বাঙালি মুসলমানের সংস্কৃতি বলে চালিয়ে দিচ্ছে। এরাই রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে দিল্লির নির্দেশ মোতাবেক সরকার নির্বাচন করতে চায়। পরিস্থিতি ও পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে, দিল্লি হাসিনাকে মতায় রাখার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। একই কারণে হাসিনাও মরিয়া হয়ে উঠেছে। দুই মাসে দুই শ’ মানুষ হত্যা করার পরেও হাসিনা নির্বিকার, তার মন্ত্রীরা নির্বিকার। যদিও চার বছর তিন মাসে চলমান সরকার কয়েক হাজার লোককে হত্যা ও গুম করেছে। তার প্রিয় পিতা বঙ্গবন্ধুর শাসন আমলেও হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে।
আরেক দফা মতা থাকার জন্য হাসিনা চলমান হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভারতও চায় যেভাবেই হাসিনা আরেকবার মতায় আসলে তাদের স্বার্থ রা চিরস্থায়ী হবে। প্রধান স্বার্থ হচ্ছে ১৫ কোটি মানুষকে সুকৌশলে ইসলাম ভুলিয়ে দেয়া। পাঠ্যপুস্তক, ইতিহাস, সংস্কৃতি সবখানে মুসলমানিত্ব বিদায় করে বাঙালি কালচারের নামে হিন্দুয়ানিকে প্রতিষ্ঠা করা। ঢাকাস্থ ভারতীয় কালচারাল সেন্টার বিগত ৪২ বছরে সেই ল্েযর অর্ধেক হাসিল করে ফেলেছে। শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপে রাষ্ট্র বানাতে হবে। সে ল্েয তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এর মানে হচ্ছে বাংলাদেশকে বাধ্যতামূলক একটি ধর্ম চেতনাহীন বাঙালি রাষ্ট্রে পরিণত করা। পশ্চিম বাংলার সাথে সীমান্ত ছাড়া আর কোনো ফারাক থাকবে না। আগামী জেনারেশন বা তার পরের জেনারেশন বলবে, আমরা আধুনিক ও প্রগতিশীল। ধর্ম আমাদের কাছে একেবারেই ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা ভগবানের সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক। তাই মসজিদ, মাদরাসা, মক্তব, ধর্মীয় ওয়াজ, ধর্মীয় আলেম-ওলামার কোনো প্রয়োজন নেই। ওরকমেরই একটি স্লোগান এখনি চালু হয়ে গেছে। ধর্ম যার যার,রাষ্ট্র সবার। এর মানে ধর্মের ব্যাপারে রাষ্ট্র চুপ থাকবে, কোনো ভূমিকা পালন করবে না। ইতোমধ্যেই মসজিদকে টয়লেট বানাবার প্রস্তাব এসেছে ব্লগারদের কাছ থেকে।
সরকারের অজান্তেই হঠাৎ একদিন শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর চালু হয়ে গেল। সরকার বুঝতেই পারেনি। সত্যিই অবাক বিষয় সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ জানলেও সরকারকে বা শেখ হাসিনাকে সেভাবে ব্রিফ করেনি। হাসিনা যখন বুঝতে পারলেন এর পৃষ্ঠপোষক ও উদ্যোক্তা ভারত এবং ভারতের প থেকে বাংলাদেশের শিল্পপতিরা চালাচ্ছেন। অজানা অচেনা ইমরান সরকার আজ মহাশক্তিধর একজন ব্যক্তি। শাহবাগের সরকার যা নির্দেশ দিচ্ছে রাষ্ট্রের সরকার তা বাস্তবায়ন করছে। শাহবাগের কারণেই বাংলাদেশে আজ ইসলাম ও রাষ্ট্র মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। চার দিকে স্লোগান উঠেছে নাস্তিক বনাম ইসলাম। সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছে শাহবাগ। সরকার কোন দিকে থাকবে, ইসলামের পে না ধর্মদ্রোহিতার প।ে প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। কারণ ভারত এখন এটাই চায়। ’৭১ সালে ভারত পাকিস্তান ভেঙেছে, বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। কারণ দিল্লি জানত বাংলাদেশকে শুধুই মুসলমানের দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে দেয়া যাবে না। ইসলাম যদি বাংলাদেশে শক্তিশালী হয়ে যায় তাহলে এখানে ভারতের প্রভাব একেবারেই মুছে যাবে। তাই ভারত জেনেশুনেই কঠিন কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবারেই ফায়সালা করে ফেলতে হবে। ফায়সালা হলো বাংলাদেশকে কিছুতেই মুসলমান বা ইসলামি দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে দেয়া যাবে না। ভারত জানে বাংলাদেশের মানুষ যদি ইসলামের দিকে ঝুঁকে পড়ে তাহলে মুসলিম বিশ্বের সাথে তার সম্পর্ক আরো গভীরতর হয়ে যাবে। আমি এখানে ’৭৪ সালের ঘটনা উল্লেখ করতে চাই। পাকিস্তানের লাহোরে সে বছর ওআইসির যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে অংশগ্রহণের জন্য দাওয়াত নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন আলজেরিয়ার বুমেদিন ও ফিলিস্তিনের ইয়াসির আরাফাত। পাকিস্তান স্বীকৃতি দিলে তিনি সম্মেলনে অংশ নিতে রাজি হলেন। পাকিস্তান কালবিলম্ব না করেই স্বীকৃতি দিল। কিন্তু ভারত কঠোরভাবে এর বিরোধিতা করেছে। ভারত তখন থেকেই অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে গেছে বাংলাদেশকে পাকিস্তান ও মুসলিম বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার জন্য। সে সময়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা মতায় থাকলে তিনি ওআইসি সম্মেলনে যেতেন না। বঙ্গবন্ধু মতায় থাকাকালে ইসলামবিরোধী কোনো পদপে গ্রহণ করেননি। তিনি নিজেকে মুসলিম দেশের নেতা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ জন্যই বঙ্গবন্ধুকে জগৎ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা হয়তো ভেতরের খবর জানে। তাই সে নিজের জান রার জন্যই ভারতের পে গিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর ইসলাম ও বাংলাদেশবিরোধী একটি মঞ্চ। এই মঞ্চের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক দল শাক্তিশালী কোনো অবস্থান নিতে পারেনি। হেফাজতে ইসলামই শক্তিশালী অবস্থান নিয়ে সরকার ও শাহবাগের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতার পরে শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রকাশিত করেছে। হে মহান পরোয়ারদেগার, আপনি আমাদের দুর্বল ঈমানকে শক্তিশালী করে দিন। আমাদের পবিত্র মাতৃভূমিকে সব প্রকার তাগুতি শয়তানি শক্তির হাত থেকে রা করুন। আমিন।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন